#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্ব১৯
নিপু আর বর্ষার জন্য একটা রুম বরাদ্দ।টেডিটা নেই বলে নিপুকে টেডি বানিয়ে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে বর্ষা।
নিপু ঘুম থেকে উঠে নড়াচড়া করতে পারছেনা।বাধ্য হয়ে বর্ষাকে ডাকে নিপু।
এই বর্ষা আপু! উঠো,আপু!
বর্ষা ঘুরে অন্য পাশ হয়ে শুয়ে ঘুম জরানো কন্ঠে বলে নিপু ডিস্টার্ব করিসনা ঘুমোতে দে।
নিপু বর্ষার কথা শুনে হাসতে হাসতে বিছানা ছেড়ে উঠে যায়।
বর্ষা আবার ঘুমিয়ে পরে।
এদিকে বর্ষণ আর রাফসান এক রুমে ঘুমিয়েছে। একচুয়েলি বর্ষণ রাফসানের রুমে নয় বরং বর্ষণের জন্য যে রুমটা দেওয়া হয়েছে, রাফসান বুকে বালিশ জরিয়ে সেই রুমে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে।তারপর দুজন অনেক গল্প গুজব আর আড্ডা দিয়ে শেষ রাতের দিকে ঘুমিয়ে পরে। প্রায় বেলা ১০ টা বাজতে চললো তবুও এখনো ঘুম ভাঙেনি তাদের।
বেলা ১০ টা..
বর্ষা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কিচেনে চলে যায়। সেখানে খালামনি মামনী সবাই আছে সাথে কাজের লেকেরাও কাজ করছে।তারা সবাই রান্না বান্না নিয়ে ব্যাস্ত।আবার কেউ কেউ আড্ডা খাওয়া দাওয়া নিয়ে ব্যাস্ত। তবে যাই হোক বাড়িতে এক জমজমাট পরিবেশ।
ঋতু নিপুকে পাঠিয়েছে বর্ষণ আর রাফসানকে ডাকতে। সবাই সকালের খাবার খেয়ে নিয়েছে। শুধু ঋতু, রোহিত,বর্ষা, বর্ষণ, নিপু আর রাফসান বাঁকি আছে।রাফসান বর্ষণ নিচে আসাতে একসাথে ব্রেকফাস্ট করছে সবাই।
প্রায় সকল গেস্ট ই চলে এসেছে।গ্রাম থেকে রাফসানের দাদু দিদা,চাচা চাচীরাও চলে এসেছে। শুধু এক চাচী আসে নাই সে আসবে বিকেলে।তিনি আবার সব বিষয়ে একটু খুঁতখুঁতে টাইপের।
ছাঁদ সাজানো হয়েছে সুন্দর করে এই ছাঁদেই আজ মেহেদী পরানোর ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। আগামীকাল হলুদের আয়োজন টা এখানেই করা হবে।
বিকেল থেকে সবাই ব্যাস্ত কে কি সাজ দেবে তা নিয়ে আবার কেউ কেউ ছুটেছে পার্লারের দিকে কারণ এই অনুষ্ঠানে কোনো বিউটিশিয়ানকে ডাকা হয়নি সাজুগুজু করার জন্য।যারা এসেছে তারা শুধু মেহেদীই পরাবে। অবশ্য এটা জেনে বুঝেই করা হয়েছে।
নিপু, ঋতু, বর্ষা বসে বসে সবার সাজের বহর দেখছে আর তিনজনে মিলে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। তাদের সাথে এসে যোগ দেয় বর্ষণ আর রাফসান।
সন্ধ্যার পরে ঋতু, বর্ষা আর নিপু রেডি হতে চলে যায়। আর রোহিত,বর্ষণ রাফসানকে নিয়ে যায় রেডি করতে সাথে তারাও রেডি হয়ে নেবে।
মেহেন্দি অনুষ্ঠানে সব মেয়েরা লেহেঙ্গা পড়বে আর ছেলেরা পান্জাবি।কারণ মেহেদী পরানোর সাথে সাথে একটু নাচ গানও হবে তাই জন্য এমন ড্রেসআপের ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
সবাই রেডি হয়ে নিচে বসে আছে শুধু পাত্তা নেই তিন মহারাণীর। রোহিত ডাকতে জাবে তখনি তিনজন সিঁড়ির দরজা খুলে ছাঁদে আসে। বর্ষণ আর রোহিত তো হা করে তাকিয়ে আছে।
আর শুধু এরা দুজন নয় অনুষ্ঠানের প্রায় লোকই তাকিয়ে আছে ওদের তিনজনের দিকে কারণ তারা সেম কালার সেম ড্রেস সেম পড়েছে। আর সাজুগুজু ও সেম। আর চেহারায় তো তিনজনই মাশাআল্লাহ।
তাই সবাই তাকিয়ে থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক। যে যেমন পেরেছে সাজুগুজু করেছে বাট এরা তিনজন আলাদা।
রাফসান বললো কিরে তোরা আর কতক্ষণ বসিয়ে রাখবি আমায় বলতে পারিস?
ঋতু হাসতে হাসতে বললো আর বসে থাকতে হবেনা এবার মেহেদী পরতে পারিস ভাই।
রাফসানঃ এতো সহজে বললে তো হবেনা। এতোটা সময় বসিয়ে রেখেছিস আপু,শাস্তি টা নিবিনা?
ঋতুঃ শাস্তি! কিসের শাস্তি?
রাফসানঃ তোরা ডান্স করবি আমি মেহেদী পরবো, এটাই তোদের শাস্তি।
রোহিত- ঋতু, বর্ষা-বর্ষণ মিউজিকের তালে তালে ডান্স করছে। নিপু একপাশে দাঁড়িয়ে আছে। সবার মাঝ থেকে একটা ছেলে হাত বাড়িয়ে দেয় কিন্তু নিপু হাতটা না ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। ছেলেটি বললো বিশ্বাস করতে পারো।
নিপু বর্ষণের দিকে তাকায় বর্ষণ অনুমতি দিলে নিপুও ছেলেটির সাথে ডান্স করে।
মেহেদী পরানো শেষ,রাফসান সহ সবাই সারপ্রাইজড হয়ে যায়। সবাই একসাথে বলে ওঠে সবুজ! তুই কখন আসলি।এইতো দুদিন আগেই বললি আসতে পারবিনা, এখন আবার চলে এলি?
সবুজঃ হুম চলে এলাম। আসলে আমার অফিসের বস টা খুব ভালো তাই নিজে থেকে আমাকে ছুটি দিয়েছে। বর্ষণের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হেসে কথাটা বললো সবুজ।
সবুজের কথা শুনে রাফসান ও বর্ষণের দিকে তাকিয়ে বর্ষণকে ছোট্ট করে একটা থ্যাঙ্কস জানিয়ে দেয় কারণ সবুজ যে বর্ষণের কোম্পানির মালয়েশিয়ার শাখার দায়িত্বে আছে সেটা শুধু রাফসান, বর্ষণ আর সবুজ ই জানে।
সবুজের সাথে নিপুকে ডান্স করতে দেখে রাফসানের খুত খুঁতে চাচির গায়ে জ্বালা ধরে যায়।জ্বালা ধরবেইনা বা কেনো বলেন,ছেলেটা তো তার ই।
রাফসানের চাচী নিপুকে দেখিয়ে রমা বেগমকে বললো এটা তোমাদের বাড়িতে বড় হওয়া সেই এতিম মেয়েটা না? তা মেয়েটা এখনো তোমাদের ঘাড়েই থাকে নাকি? তোমরা পারোও বটে বাড়িটা একেবারে আশ্রম বানিয়ে ফেলেছো।
রমাঃ শুনুন, আপনি আমার আত্নীয়, বোনের জা হন। আমি চাইনা আপনি অসম্মানিত হন।আমি কোনো ভাবে আপনাকে হার্ট করতে চাইনা কিন্তু তার মানে এটা নয় আপনি আমার কাছের মানুষদেরকে, আমার ভালোবাসার মানুষগুলোকে অপমান করবেন, যা নয় তাই বলবেন আর আমি সেটা মেনে নিবো।
নিপু আমার সন্তান। বর্ষণ যেমন আমার ছেলে, নিপুও তেমন আমার মেয়ে।বর্ষণের মতো নিপুও নিজের অধিকারেই থাকে আমার বাড়িতে। আপনাদের মতো মামী আছে বলেই আজ মামীদের নামের পাশে ট্যাগ লাগানো।
নিপু পাশ থেকে সবকিছুই শুনেছে, কিছু না বলে শুধু চোখের জল মুছতে মুছতে ছাঁদ থেকে নেমে আসে।বর্ষাও নিপুকে ডাকতে ডাকতে নিপুর পিছু পিছু আসে।আজ বর্ষার ও বড্ড মন খারাপ। কারণ কথাগুলো বর্ষার ও গায়ে লেগেছে।
বর্ষণ জবাব দিতো কিন্তু যেখানে তার মম জবাব দিয়ে দিয়েছে সোখানে বর্ষণের আর জবাব দেওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা।
বিশেষ করে বড়দের মুখে মুখে তর্ক করার শিক্ষাটা ছোটবেলা থেকে পায়নি সে।
সবুজ তো তার মায়ের কথা শুনে স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না। তবুও মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললো মা তুমি আর পরিবর্তন হলেনা। এখনো এসব ধারণা নিয়ে চলো তুমি? মা এবার নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করো কথাটা বলে সবুজ নিচে নেমে আসে।
একে একে উপর থেকে সবাই নিচে চলে আসে। ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে নেয়। নিপু খেতে চায়নি তবে বর্ষাও ছাড়েনি। একসাথে বসে খাবার খেয়েছে।
ঋতু,বর্ষা আর নিপু একসাথে বর্ষার রুমে মানে বর্ষা আর নিপুর জন্য যে রুমটা বরাদ্দ সেই রুমে বসে কথা বলছে। হঠাৎ নিপু বললো আপু তোমরা কথা বলো আমি আসছি বলে হাঁটতে হাঁটতে ছাঁদে চলে যায়।
অন্যদিকে
বর্ষণ, সবুজ, রাফসান আর রোহিত বর্ষণের রুমে বসে কথা বলছে। সবুজ বার বার তার মায়ের হয়ে ক্ষমা চাইছে বর্ষণের কাছে। রোহিত বলে ওঠে ওর কাছে নয় শালাবাবু, অন্যায় টা যার সাথে হয়েছে ক্ষমাটাও তার কাছেই চাইতে হবে।
ঋতু আর বর্ষা ও ওদের সাথে আড্ডায় যোগ দেয়।ঋতু বলে চলো আমরা আজ রাতে ছাঁদে আড্ডা দেই সবাই তাতে হয়তো সবার মন ভালো থাকবে।ঋতুর কথায় সবাই রাজি হয়ে যায়।
ছাঁদে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে নিপু চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি পরছে।
–সরি,
কারও কথা কানে আসতেই পেছনে ঘুরে তাকালো নিপু।
চলবে…..
#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্ব২০
নিপু পেছনে তাকিয়ে দেখে সবুজ সরি বলছে। নিপু সবুজের দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে বললো আপনি! আপনি এখানে কেনো এইসময়?
সবুজ নিপুর জবাবে বললো তোমার কাছে এসেছি, আমার মায়ের হয়ে ক্ষমা চাইতে।আসলে আমার মা যা যা বলেছে, সেগুলো একদমি তার বলা উচিৎ হয়নি। তাই আমার মার হয়ে আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি।প্লিজ ক্ষমা করে দাও!
নিপু এক ধ্যানে সবুজের দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে, াছেলেটা কতো সহজ সরল আর কতোটা ভালো অথচ তার মা! আচরণের কোনো মিল নেই মা ছেলের।
নিপু চোখের জল আড়াল করে বললো না না এভাবে কেনো বলছেন বলুনতো! আর আপনার মা তো ঠিকি বলেছে। আমি তো এতিম আশ্রিতা। আম্মা আর বাবাই খুব ভালো মানুষ তাই আমাকে এতো আদর যত্নে লালন পালন করেছেন। কখনো বুঝতে দেয়নি মা বাবার অভাব। আমি তো ভুলেই গেছিলাম যে আমি একটা এতিম।
সবুজঃ নিপুর সামনে হাত জোর করে ক্ষমা চাইছে আর বলছে প্লিজ নিপু! এভাবে বলোনা। তুমি এভাবে বললে আমার খুব কষ্ট হয়।
সিঁড়ি দিয়ে ছাঁদে উটছে ঋতুরা সবাই সবুজের কথা শুনতে পেয়ে ঋতু বলে হ্যা হ্যা তা তো কষ্ট পাবেই, আমার ভাইয়ের সুর তো এখন অন্য কিছু বলছে।
ঋতুর কথা শুনে সবুজ আর নিপু দুজনেই ঘুরে তাকায়। নিপু বলে আপু তোমরা সবাই এখানে! ঋতু বললো হুমমমম এলাম বলেই তো এতো সুন্দর মনোমুগ্ধকর একটা দৃশ্য স্বচক্ষে দেখতে পেলাম, নাহলে তো সব মিস করে যেতাম।ঋতুর কথা শুনে ঋতু সহ সবাই হেসে ওঠে শুধু নিপু লজ্জা পেয়ে লাল হয়ে যায়। আর সবুজ মাথা নিচু করে ঠোঁট বাকিয়ে হাসে আর মাথার পিছনের দিকের চুলে হাত দিয়ে চুল নাড়তে থাকে।
রাফসান সবুজের কাছে গিয়ে বলে হয়েছে ভাই আমার, আর লজ্জা পেতে হবেনা। ভাগ্যিস আমরা এ কয়জনি আছি অন্য কেউ এখনে আসেনি।
চল সবাই বসে পরি বলেই রাফসান প্যান্ডেলের নিচে যেখানে মেহেদির জন্য বসার ব্যাবস্থা করা হয়েছিল সেখানে বসে পরে। তার পাশে ঋতু, বর্ষা,নিপু বর্ষণ, সবুজ,রোহিত এভাবে একজনের পাশে একজন সিরিয়াল করে গোল হয়ে বসে পরে।
ঋতুঃ চল আমরা সবাই একটা গেম খেলি এইযে এই ছোট বক্সে কিছু কাগজের টুকরো আছে এতে সবার নাম আছে, এটা থেকে একটা কাগজ তুলতে হবে যার নাম উঠবে তাকে প্রশ্ন করা হবে।কে প্রশ্ন করবে তা সবাই মিলে ডিসাইড করা হবে।একেক জনকে তিনটি করে প্রশ্ন করা যাবে তবে এর কম ও করা যাবে। আর হ্যা যে প্রশ্নই করা হোকনা কেনো? তার ঠিক ঠিক জবাব দিতে হবে নো চিটিং।
সবাই মিলে বললো ওকে ঠিক আছে তাই হবে।
বর্ষণঃআমাদের সকলের মুরুব্বি যখন সব কিছু ঠিক করেই রেখেছে সেখানে আমাদের না বলার তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
ঋতুঃবর্ষণণণণণণণ… তুই আমাকে বুড়ি বললি! আজ তোকে আমি, দাড়া দেখাচ্ছি মজা বলেই উঠে গেলো বর্ষণের কাছে। বর্ষণ ও ছেড়ে দেবার পাত্র নয় হুহ্।যেই না ঋতু বর্ষণের কাছাকাছি গেলো।বর্ষণ উঠে দিলো এক দৌড়।
বর্ষণকে আর পায় কে । ঋতু ও হার মানার পাত্রি নয়। বর্ষণ আগে আগে দৌড় ঋতু পিছে পিছে দৌড়।
অনেকক্ষণ দৌঁড়ানোর পর বর্ষণ রোহিতের পেছনে গিয়ে লুকিয়ে পরে। রোহিত থামিয়ে দেয় ঋতুকে।
বর্ষা ঋতুকে বলে আচ্ছা আপু আমি বুঝতে পারছি না আমরা এখানে কানামাছি খেলতে এসেছি নাকি হাডুডু। তোমরা দুই ভাই বোন মিলে যা শুরু করেছো তাতে বোঝাই যাচ্ছে দৌড়ের উপরেই রাত কেটে যাবে।
রাফসান ফিক করে হেসে বলে আরে বর্ষা তুমি তো জানোনা ওরা ম্যারথনে নাম লিখিয়েছে তাই এইটুকু পূর্ব প্রস্তুতি।
রাফসান আর বর্ষার কথায় হাসতে হাসতে সবাই আবার যে যার জায়গায় বসে পরে।
ঋতু বক্সটা ঝাঁকিয়ে নিয়ে নিপুর সামনে ধরে বলে আমাদের টিমে তুই সবার থেকে ছোট তাই তুই কাগজ উঠাবি।
নিপু সবার দিকে একবার তাকিয়ে বক্সে হাত দিয়ে একটা কাগজ উঠায় তাতে নাম লেখা আছে রোহিত।
বর্ষণঃ কারও কোনো আপত্তি না থাকলে দুলাভাইকে কি প্রথম প্রশ্নটা আমি করতে পারি?
সবাই হ্যা বলাতে বর্ষণ রোহিতকে জিজ্ঞেস করলো- দুলাভাই বিবাহিত জীবনে কতোবার মার খেয়েছেন আমাদের এই লক্ষি ডাইনি কিউট আপুর হাতে?
রোহিতঃ যাহা বলিবো সত্য বলিবো, আমি তোমার আপুর হাতে কখনো মার খাইনি তবে হ্যা জীবনে অনেক দৌড়াইতে হইছে বর্ষণের মতো, এতে আমি শিউর যে আমার ডায়াবেটিস এর সম্ভাবনা খুবই কম।
বর্ষা বললো আমি একটা প্রশ্ন করতে চাই দুলাভাইকে। সবাই সম্মতি দিলো।
বর্ষাঃকখনো কি এমন পরিস্থিতি হয়েছে যে রেগে গিয়ে দুজন আলাদা থেকেছেন কিংবা কখনো আলাদা থাকার চিন্তা করেছেন?
রোহিত একটু হেসে বললো সংসারে রাগ অভিমান তো থাকবেই। বিপরীত কিছু না থাকলে তার মূল্য টা বোঝা যায় না। ভালো মন্দ যেমন মুদ্রার দুটি পিঠ। একটাকে ছাড়া, অন্যটা ভাবা যায়না, তেমন অভিমান আর ভালোবাসা ও মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।অভিমান না থাকলে ভালেবাসার মূল্য টা কেউ বুঝতোনা।
আমাদের মাঝেও এমন অভিমান হয়েছে কিন্তু কেউ কাউকে ছেড়ে থাকা তো দুরের কথা। এমন চিন্তা মাথায়ই আসেনি কখনো। রোহিতের বলা শেষ হলে সবাই বাহবা দিতে থাকে।
নিপু বক্স থেকে আবার কাগজ তুলে।কাগজের নাম দেখে হা হয়ে আছে নিপু কারণ তার নিজের নামটাই উঠেছে এবার।
সবুজ বললো নিপুকে কি আমি প্রশ্ন করতে পারি? সবাই হেসে বললো অবশ্যই।
সবুজঃ কাউকে লাইক করো? ভালোবাসো কাউকে? কেউ যদি ভালোবাসার দাবি নিয়ে সামনে দাঁড়ায় কখনো তখন কি করবে?এক দমে প্রশ্ন তিনটি করে দম ফেলে সবুজ। ওর প্রশ্ন শুনে সবাই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে সবুজের দিকে।
নিপু জবাব দিলো, না লাইক না লাভ কোনোটির জায়গা নেই আমার লাইফে।আর এসব নিয়ে কখনো ভাবিনি আমি, সত্যি বলতে এসব ভাবার প্রয়োজন মনে করিনি কখনো।
একটু তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে নিপু তৃতীয় প্রশ্নের জবাব দিলো কেউ ভালোবাসার দাবি নিয়ে সামনে দাঁড়ালে তার জবাব ও না ই হবে।
নিপুর প্রথম দুটি জবাব শুনে তো সবুজের মনে লাড্ডু ফাটতে শুরু করে কিন্তু তৃতীয় নম্বর জবাবটা শুনে আবার চুপসে যায়। মুখটা ছোট হয়ে যায়।
বক্স থেকে এবার কাগজ উঠালো, নাম উঠলো রাফসানের।
নিপু প্রশ্ন করলো ভাবির সাথে এ পর্যন্ত কতোবার দেখা করেছো ভাইয়া? আর ব্রেকআপ করেছো কতোবার? তুমি আগে সরি বলেছো নাকি ভাবি আগে সরি বলেছে?
রাফসানঃ কতোবার দেখা করেছি গুনে শেষ করতে পারবো না তবে তিন চার বার ব্রেকআপ হয়েছে যদিও দোষটা ঈশুর ছিলো তবুও সরিটা সর্বপ্রথম আমিই বলতাম। কারণ ওর ইগোটা একটু বেশি ও চাইতো সরিটা আমার তরফ থেকেই হোক।তবে এমনটা এখন আর হয়না। এখন দুজনেই দুজনকে সরি বলে দেই।
এবার বক্স থেকে নাম উঠলো বর্ষার।
ঋতু প্রশ্ন করলো কাউকে জড়িয়ে ধরেছো কখনো কিংবা অন্য কেউ জড়িয়ে ধরেছে তোমায় কখনো? বর্ষা মাথা নিচু করে জবাব দিলো হুমমম।
বর্ষার জবাব শুনে সবাই একসাথে বললো কিইইইইইইইই!
বর্ষা তখন বলে, না ম মা মানে স্বপ্নে। একবার স্বপ্ন দেখেছিলাম একটা বজ্জাত ছেলে আমার হাত ধরে টানাটানি করছে আর একটা রাজকুমার এসে ছেলেটাকে মেরে আমাকে তার বুকে জরিয়ে রেখেছে।
এবার রোহিত বলে ওহ্ তাই বলো। এক্ষুনি তো হসপিটালে যাওয়ার ব্যাবস্থা করছিলে।
এবার এলো ঋতুর পালা।
প্রশ্ন করলো রাফসান। বললো আচ্ছা আপু যদি দুলাভাই কখনো দ্বিতীয় বিয়ে করে তোর সামনে দাঁড়ায় তখন তুই কি করবি?
ঋতুঃ খুনননন করে ফেলবো। আগে ওকে মারবো তারপর ঐ মেয়েটাকে মারবো। না না আগে ঐ মেয়েটাকে মারবো তারপর তোর দুলাভাইকে মারবো।
রোহিতঃ শালাবাবু কেনো এসব কথা বলে আমার আয়ু কমিয়ে দিচ্ছো বলোতো!
সবাই রোহিতের কথা শুনে হা হা হা করে হেসে ওঠে।
এবার এলো সবুজের পালা।
প্রশ্ন করলো বর্ষণ। সবুজ তুই কি ভালোবাসিস আমার বোনকে? ভালো রাখতে পারবি ওকে?
সবুজ বর্ষণের প্রশ্ন শুনে যেনো আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে। মুখটা মুহুর্তে ই উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। সবুজ জবাব দিলো হুমম খুব ভালোবাসি। আমার সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করবো ওকে ভালো রাখার। শুধু একটাবার আমায় বিশ্বাস করতে বল তোর বোনকে।
বর্ষণের প্রশ্ন শুনে তো নিপু বর্ষণের দিকে তাকিয়ে আছে। ভাবছে তার ভাইয়া কি পাগল হয়ে গেছে নাকি কি সব বলছে এগুলো?
এবার শুধু বাকি আছে একজন বর্ষণ।
সবাই মিলে তো আশায় আছে প্রশ্ন করবে।রোহিত বললো যেহেতু তোমার নাম টা শেষে তাই আমাদের যা খুশি যতগুলো খুশি প্রশ্ন করতে পারি।
বর্ষণ বললো ঠিক আছে তাই হবে।
প্রথম প্রশ্ন করলো
রোহিতঃ আচ্ছা শালাবাবু তুমি কি ভালোবাসো কাউকে?
চলবে……….
(রি চেইক হয়নি)
হ্যাপি রিডিং 🥰