তুই শুধু আমার পর্ব-৩২+৩৩

0
1899

#তুই শুধু আমার
#Writer_মারিয়া
#Part : 32+33

মি. মুবিন এবং রাহুল চৌধুরী ম্যানশনে এসেছে বিয়ের কথা ফাইনাল করতে। সবাই ড্রইংরুমে আছে। জিহাদ চৌধুরী, মায়া চৌধুরী, কবির চৌধুরী, কেয়া চৌধুরী, আজিজ চৌধুরী, আহিয়া চৌধুরী, মি. মুবিন সবাই কথা বলাবলি করছে। আশফি, নেহা, আরসাল, সেহের, রাহুল তাদের কথা শুনছে। আরসাল সেহেরের দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে। সেহের আরসালের দিকে তাকাচ্ছে নাহ, তাই আরসালের তাকিয়ে থাকতে কোনো সমসস্যা হচ্ছে নাহ। সবাই সেহের আর রাহুলের বিয়ের অনুষ্ঠান, দিন নিয়ে কথা বলছে। হঠাৎ সেহের জিহাদ চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” বড় আব্বু!”

–” হুম মা বল। কিছু বলবি?”

–” বড় আব্বু আমার কিছু চাওয়ার আছে।”

–” কি চাস বল?”

–” বড় আব্বু আমি চাই, এই বিয়েটা খুব তাড়াতাড়ি যেনো হয়ে যায়। সম্ভব হলে এই সপ্তাহের মধ্যে। আরও একটা কথা, আমি চাই নাহ আমার বিয়েতে বাড়তি কোনো অনুষ্ঠান হোক। সর্বোচ্চ গেলে গায়ে হলুদ টাহ করতে পারো।”

–” কিন্তু সেহের?”

–” প্লিজ বড় আব্বু। তোমরা যদি তাও অন্যান্য অনুষ্ঠান করতে চাও, করতে পারো। কিন্তু আমি বিয়ে ছাড়া আর কোনো কিছুতে এটেন্ড করবো নাহ। আর হ্যা বিয়েটাহ এই সপ্তাহে হলেই ভালো হয়।”

–” কিন্তু সেহের।”
রাহুল জিহাদ চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” আংকেল।”

–” হ্যা বাবা বলো!”
রাহুল সেহেরের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে, সেহেরের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” আংকেল সেহের যাহ বলছে তাই করুন। গায়ে হলুদ আর বিয়ে ছাড়া অন্য কোনো অনুষ্ঠানের দরকার নাই। আর বিয়েটাহ এই সপ্তাহেই হবে। বৃহস্পতিবার গায়ে হলুদ আর শুক্রবার বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করুন।”

–” ঠিক আছে তোমরা দুইজনেই যখন এইটায় চাও, তাহলে এইটায় হোক, বৃহস্পতিবার গায়ে হলুদ এবং শুক্রবার বিয়ে ফাইনাল।”
আরসাল জিহাদ চৌধুরীর কথা শুনে কোনোদিকে নাহ তাকিয়ে সোজা নিজের রুমে চলে যায়। সবাই আরসালের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।

★★★
রাতে আমান বাসায় এসে দেখে আশা বসে বসে কিছু চিন্তা করছে। আশাকে এভাবে চিন্তা করতে দেখে আমান ভ্রু কুঁচকে তাকায় আশার দিকে। আশার যেনো কোনোদিকে কোনো খেয়ালই নাই। আমান আশার পাশে বসে আশার কাধে হাত দিতেই আশা চমকে উঠে। আশা পাশে তাকিয়ে দেখে আমান ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে আছে। আমান বলে ওঠে,
–” কি হয়েছে তোর? কি ভাবছিস এতো মনোযোগ দিয়ে?”

–” কেনো? তুমি কি কিছু জানো নাহ?”

–” কি জানবো?”

–” আরসাল ভাইয়ার সাথে কথা হয় নাহ তোমার?”

–” আসলে এই দুইদিন অফিসে অনেক প্রেসার। আরসালের সাথে কোনো কথা হয় নি। কেনো কি হয়েছে?”

–” সেহেরের বিয়ে ঠিক হয়েছে।”
আশার কথা শুনে আমান খুশি হয়ে বলে ওঠে,
–” সত্যি? আরসাল আর সেহেরের বিয়ে! ওয়াও!”

–” নাহ। আরসাল ভাইয়া আর সেহেরের নাহ। সেহের আর রাহুল ভাইয়ার।”

–” মানে?”

–” মানে রাহুল ভাইয়ার সাথে সেহেরের বিয়ে ঠিক হয়েছে।”
কথা গুলো শুনতেই আমানের হাসি মিলিয়ে যায়। অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আশার দিকে। আমান বলে ওঠে,
–” আরসাল সব মেনে নিচ্ছে কিভাবে?”‘

–” আরসাল ভাইয়া নিজে বিয়েতে অস্বীকার জানিয়েছে।”

–” মানে কি? আমি কিছুই বুঝতেছি নাহ। প্লিজ একটু ক্লিয়ার করে বল।”
আশা আমানকে সব কিছু বলে দেয়, আরসালের বিয়েতে অস্বীকার করার কথা সব বলতেই আমান বলে ওঠে,
–” আরসাল সেহেরকে বিয়ে করতে অস্বীকার জানিয়েছে। বিশ্বাস হচ্ছে নাহ। আরসাল সেহেরকে বিয়ে করতে চায় নাহ। হাউ পসিবল?”

আমান আরসালকে ফোন দেয়। প্রথমে কল রিসিভ হয় নাহ। আবারও কল দেয় আমান এইবার কল রিসিভ করে আরসাল বলে ওঠে,
–” আমান বল।”

–” কোথায় তুই?”

–” বাসায়। আমার রুমে।”

–” কাল ফ্রি থাকবি?”

–” হুম! কিন্তু কেনো?”

–” কথা আছে তোর সাথে।”

–” আচ্ছা কাল দেখা করিস। বাই।”
আরসাল ফোন কেটে দেয়। আমান ফোন রেখে আশার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” কিছু একটা কারন তোহ আছেই। কারন আরসাল সেহের কে বিয়ে করতে অস্বীকার জানাবে এইটা একদম ইম্পসিবল।”

★★★
সেহের বারান্দায় দাড়িয়ে আছে আর দুচোখ বেয়ে পানি পড়ছে। সেহের কখনো ভাবতেও পারে নি তার জীবনে এমন দিন আসবে। সেহের বারান্দার রেলিং ঘেসে বসে পড়ে আর মনে মনে বলতে থাকে,
–” কেনো করলে এমন? কি ক্ষতি করেছিলাম আমি তোমার? ভালোবেসে ছিলাম এইটায় কি আমার অপরাধ? কেনো করলে এমন? আমি যে আর সহ্য করতে পারছি নাহ। আমি যে তোমাকে বড্ড ভালোবাসি। অনেক কষ্টে নিজেকে শক্ত রেখে বিয়েতে রাজি হয়েছি। কিন্তু পারছি নাহ আর। দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। থাকবে যখন নাহ তাহলে কাছে কেনো এসেছিলে? শুধু মাত্র প্রতিশোধের তাড়নায়। এতোটাহ ঘৃনা করো আমাকে।”

সেহের হাটুতে মুখ গুজে কান্না করতে থাকে।

★★★
আরসাল অফিসে নিজের কেবিনে কাজ করছে। হঠাৎ কেবিনের দরজায় আওয়াজ শুনে তাকিয়ে দেখে আমান। আমান আরসালের সামনে এসে বসে। আরসাল ল্যাপটপে তার মতো করে কাজ করে যাচ্ছে। আমান একভাবে আরসালের দিকে তাকিয়ে আছে। এতে আরসাল ঠিক মতো কাজ করতে পারছে নাহ। আরসাল কাজ বন্ধ করে দিয়ে আমানের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” তুই এইভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছিস কেনো?”

–” কেনো করছিস এইসব?”

–” কি করছি?”

–” তুই জানিস নাহ তুই কি করছিস?”

–” বুঝতে পারছি নাহ, কোন বিষয়ে কথা বলছিস?”

–” আরসাল কেউ জানুক বাহ নাহ জানুক। আমি খুব ভালো করেও জানি তুই সেহেরকে কতটাহ ভালোবাসিস। কতটা চাস সেহেরকে। তাই বাচ্চা ভোলানো কথা নাহ বলে এখন বল, কেনো করছিস এইসব?”
আরসাল কিছু নাহ বলে কেবিনের একসাইডে পুরো থাইগ্লাস, সেখানে গিয়ে বাইরের ব্যাস্ত শহরের দিকে তাকিয়ে থাকে। আমান আরসালের পিছনে দাঁড়িয়ে বলে ওঠে,
–” আরসাল আমি এইটাও বিশ্বাস করি যে, তোর এইসব করার পিছনে কোনো কারন আছে। প্লিজ আরসাল কেনো করছিস এইসব? বল আমাকে।”

–” আমি আর এখন সেহেরকে ভালোবাসি নাহ।”

–” চোখের সামনে সেহেরকে রাহুলের হতে দেখতে পারবি তোহ?”
আমানের কথা শুনে আরসাল চমকে আমানের দিকে তাকায়। আমান মুচকি হাসি দিতেই আরসাল আবার অন্য দিকে ফিরে যায়। আমান আবার বলে ওঠে,
–” আরসাল আমি জানি নাহ তুই এই কাজ গুলো কেনো করছিস? কারন কি? কিন্তু একটা কথা আরসাল সেহেরের সাথে যদি রাহুলের বিয়ে একবার হয়ে যায়, তাহলে পরে আফসোস করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে নাহ।”

কথা গুলো বলেই আমান চলে যায়। আরসাল আমানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে আর মনে মনে ভাবতে থাকে,
–” কি করবো আমি? আমার হাত পা যে বাঁধা।”

★★★
আজ সেহের আর রাহুলের বিয়ের শপিং করতে যাবে সবাই। কিন্তু সেহের বলেছে সে যাবে নাহ শপিংমলে। বাকি সবাই যেনো যায়। সেহেরকে কেউ জোর করে নাহ শপিং যাওয়ার জন্য।
সময়টাহ বিকাল, চারিদিকে মেঘ জমেছে। সারাদিন ভালোই রোদ ছিলো। হঠাৎ মেঘের আগমন। পুরো বাসায় সেহের একা। হঠাৎ দরজায় কলিংবেলের আওয়াজ পেয়ে সেহের দরজা খুলে দেখে আরসাল। এইসময় আরসাল কে বাসায় দেখে সেহের কিছুটাহ অবাক হলেও, কিছু বলে নাহ। আরসাল সেহেরের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” বাসায় কেউ নেই?”

–” নাহ, সবাই শপিংয়ে গেছে।”

–” শপিং? কিসের শপিং?”

–” আমার আর রাহুলের বিয়ের শপিং।”
কথাটাহ শুনতেই আরসালের মেজাজ টাহ একদম বিগড়ে যায়। আর কিছু নাহ বলে নিজের রুমে চলে যায় আরসাল। সেহের আরসালের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে অশ্রুসিক্ত নয়নে।
চারিদিকে বজ্রপাত সহ ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। আরসাল নিজের রুমে কিছু ফাইল চেক করছিলো। হঠাৎ একটা বিকট আকারে বজ্রপাতের আওয়াজে আরসালের সেহেরের কথা মাথায় আসে। সেহের তোহ মেঘের আওয়াজ অনেক ভয় পায়। বাসায় তোহ আর কেউ নাই। আরসাল আর কিছু নাহ ভেবেই সেহেরের রুমে এসে দেখে সেহের বিছানার উপর ভয়ে জড়ো হয়ে আছে। আরসাল সেহেরের কাছে যেতেই সেহের কিছু নাহ ভেবেই আরসাল কে জড়িয়ে ধরে। আরসালও সেহেরকে জড়িয়ে নেয় নিজের সাথে। সেহের আরসালকে জড়িয়ে বুকে মাথা দিয়ে আছে। হঠাৎ সেহেরের কানে যায় হৃদপিণ্ডের ধক ধক আওয়াজ। সেহেরের এমন মনে হচ্ছে আওয়াজ টাহ যেনো তার নামই নিচ্ছে। চোখ বন্ধ করে আওয়াজ টাহ শুনতে থাকে সেহের। হঠাৎ সেহেরের খেয়াল হয় সে আরসালকে জড়িয়ে ধরে আছে। তাড়াতাড়ি আরসালের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় সেহের। আরসাল সেহেরকে এরকম সরে যেতে দেখে প্রচুর রাগ উঠে। আরসাল সেহেরের হাত ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বলতে শুরু করে,
–” আমাকে এভোয়েড কেনো করছিস?”

–” ছাড়ো ভাইয়া। কি হচ্ছে এইসব?”

–” কি হচ্ছে মানে? এইটা তোহ আমার তোকে বলা উচিত। আমাকে এইভাবে এভোয়েড কেনো করছিস?”

–” তাতে তোহ তোমার খুশি হওয়ার কথা। আর আমাকে এইভাবে ধরেছো কেনো? আমি একদিন পর অন্য একজনের বউ হবো ছাড়ো আমাকে।”

–” খুব শখ নাহ রাহুলের বউ হওয়ার?”

–” সেইটা আমার ব্যাপার। প্লিজ ছাড়ো আমাকে। তুমি এখন আমাকে এইভাবে ধরতে পারো নাহ।”
সেহেরের কথা শুনে আরসাল সেহেরকে আরও জোরে নিজের সাথে চেপে ধরে বলে ওঠে,
–” যার জন্য চুরি করছি সেই আমাকে চোর বলছে। বাহ!”

–” মানে?”

–” বলবো। সময় আসতে দে। আর একটা কথা মাথায় রাখ, #তুই_শুধু_আমার। আমিও দেখি তোকে এভাবে আর কে ধরতে পারে। আমি আবারও বলছি, #তুই_শুধু_আমার।”

–” আমি আর কখনোই তোমার হবো নাহ। পুতুল পেয়েছো আমাকে তাই নাহ? যাহ খুশি তাই করবা। কখনো নাহ। এতোটাহও সস্তা হয়ে যায় নি। আমি আর তোমার কখনোই হবো নাহ।”

–” সে তোহ সময় বলে দেবে কে কার হবে।”
কথাটা বলেই আরসাল সেহেরকে ছেড়ে দিয়ে নিজের রুমে চলে যায়।

চলবে………………🌹

কেটে যায় আরও একটা দিন। আজ সেহের আর রাহুলের গায়ে হলুদ। সেইদিনের পর থেকে সেহের আরসাল কে আর দেখে নি। খুব মিস করছে আরসালকে সেহের। কিছু সময় পর সেহেরকে সাজাতে পার্লার থেকে লোক আসবে। আশা সেহেরের রুমে এসে দেখে সেহের জানালা দিয়েে বাইরে তাকিয়ে আছে। আশা সেহেরের কাছে এসে সেহেরের কাধে হাত রাখতেই সেহের চমকে পাশে তাকিয়ে দেখে আশা দাঁড়িয়ে আছে। আশা সেহেরের মুখে হাত রেখে বলে ওঠে ,
–” কিরে, এখানে এভাবে দাড়িয়ে আছিস কেনো?”

–” এমনি।”

–” আরসাল ভাইয়াকে ভালোবাসিস?”
আশার কথা শুনে সেহের আশার দিকে তাকিয়ে আর নিজেকে সামলে রাখতে নাহ পেরে আশাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিয়ে বলে ওঠে,
–” ওহ আমাকে বুঝলো নাহ আশা। আমার ভালোবাসাকে বুঝে নি। আমার ভালোবাসা ব্যার্থ হয়ে গেছে। আমি কি করে ভুলবো ওকে?”

–” তাহলে বিয়েতে রাজি কেনো হলি?”
সেহের আশার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে বলে ওঠে,
–” নিজেকে সম্মান দেওয়ার জন্য। আমার কি কোনো সম্মান নেই? তাই এই বিয়েতে রাজি হয়েছি। নাহলে নিজেকে খুব সস্তা মনে হচ্ছিলো।”

আশা কি উত্তর দিবে বুঝে উঠতে পারছে নাহ। সেহেরকে কখনো চাচাতো বোন হিসাবে দেখে নি আশা। সবসময় নিজের বোনের মতো আগলে রেখেছে। আজ সেই বোন টাহ কত কষ্ট পাচ্ছে। আশা সেহেরের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” কিছুক্ষণ পরেই পার্লার থেকে লোক আসবে সাজাতে। রেডি হয়ে নিস গায়ে হলুদের জন্য।”

কথাটাহ বলেই আশা রুম থেকে বেরিয়ে যায়। আর সেহের আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে থাকে।

★★★
চৌধুরী ম্যানশন আজ আলোয় আলোয় ভরে গেছে চারিদিকে। গার্ডেনে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে চারিদিকে। সেহেরকে বসিয়ে রাখা হয়েছে স্টেজে। সেহেরকে ঠিক একটা পরির মতো দেখাচ্ছে। সেহেরের পরনে আজ লাল পাড় গাঢ় হলুদ কালারের শাড়ি, চুলগুলো সামনে হালকা পাফ করে বেনি করে সামনে রাখা হয়েছে এবং ফুল লাগানো, হালকা মেকাপ, কাচা ফুলের গয়নায় সেহেরকে পরির মতো লাগছে। চারিদিকে তাকিয়ে দেখে আরসালকে কোথাও দেখা যাচ্ছে নাহ। তার মানে আরসাল এখানে আসে নি। হঠাৎ সব লাইট অফ হয়ে যায়। সবাই চমকে উঠে। তার মাঝেই কারো মাথার উপর একটা হালকা ব্লু সেডের লাইট জ্বলে উঠে। সবাই ভালোভাবে তাকাতেই দেখে মানুষটাহ আরসাল, গিটার হাতে নিয়ে বসে আছে। বেজে উঠে গিটার। পুরো গার্ডেনে একটা লাইট আরসালের উপর ফেলা হয়েছে। সবার নজর আরসালের দিকে। আরসাল গিটার বাজাতে বাজাতে চোখ বন্ধ করে গেয়ে উঠে,

,,,,,পাছ আইয়ে,,,,,
,,,,,,,দোরিয়ান ফির বিহ কাম নাহ হুই,,,,,,,
,,,,,,,,,,,,এক আধুরি,,,,,,,,
,,,,ছি হামারি কাহানি রাহি,,,,,,
,,,,,,,আছমান কো জামিন,,,,,,,,,
,,,,,,,,ইয়ে জারুরি নাহি,,,,,,,
,,,,,,,,,,,জা মিলে,,,,,,জা মিলে,,,,,,,,,
,,,,,,ইশকে সাচ্চা ওয়াহি,,,,,,
,,,,,,,,,,,জিসকো মিলতি নাহি,,,,,,,
,,,,,মানজিলেন,,,,,,মানজিলেন,,,,,,,
,,,,,,রাং থে নুর থা,,,,,,,,
,,,,,,,,,,,জাব কারিব তু থা,,,,,,,,
,,,,,,,এক জান্নাত ছা থা ইয়েহ জামান,,,,,,,
,,,,,,,,ওয়াকত কি রে পে,,,,
,,,,,কুছ মেরে নাম ছা,,,,,,,
,,,,,,লিখ কে ছুড গায়া,,,,,,,,
,,,,,,,,,,,,,,,তু কাহান,,,,,,,,,,,,,,,,,
,,,,,,হামারি আধুরি কাহানি,,,,,
,,,,,হামারি আধুরি কাহানি,,,,,,,,( 3x )

{{ বাকি টাহ নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন😊 }}

আরসালের গান শেষ হতেই সব লাইট জ্বলে উঠে। সবাই হাত তালি দিয়ে উঠে। সেহের ছল ছল চোখে তাকিয়ে আছে আরসালের দিকে। আরসাল গিটার টাহ পাশে রেখে সেহেরের দিকে এগিয়ে যায়। বাড়ির সবাই + নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আরসালের দিকে। সেহেরেও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আরসালের দিকে। আরসাল সেহেরের সামনে দাড়িয়ে সেহেরে দিকে হালকা ঝুকে বাটি থেকে একটু হলুদ নিয়ে সেহেরের মুখে লাগিয়ে দেয়। সেহেরের চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে আরসালের ছোয়ায়। দৃশ্যটাহ দেখতেই নেহা রেগে অস্থির হয়ে উঠে। আরসাল আর কারো দিকে নাহ তাকিয়ে সোজা নিজের রুমে চলে যায়। এরপর বাকি সবাই সেহেরকে হলুদ মাখাতে থাকে। কিন্তু সেহেরের যেনো কোনোদিকে খেয়াল নেই।
আরসালকে বাসার ভেতর যেতে দেখে নেহাও আরসালের পেছনে পেছনে আসে। আরসাল রুমে এসে পেছনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে নেহা দাঁড়িয়ে আছে। আরসাল নেহাকে দেখে কিছু নাহ বলে অন্যদিকে ফিরে যায়। নেহার এতে আরও রাগ উঠে যায়। নেহা এগিয়ে এসে আরসালকে নিজের দিকে ফিরিয়ে রাগী গলায় বলে ওঠে,
–” তুমি কি ভুলে যাচ্ছো সব কিছু?”

–” কিছুই ভুলি নি।”

–” তাহলে ফাংশনে যাহ করছিলে সেইসব কি ছিলো আরসাল?”

–” তার কৈফিয়ত কি আমাকে এখন তোমাকে দিতে হবে?”

–” আরসাল তুমি জানো নাহ আমি কি কি করতে পারি।”

–” You are wrong, Neha. আমি সব জানি তুমি কি কি করতে পারো। আর তোমার ক্ষমতা কতটুকু। কিসের ভয় দেখাচ্ছো আমাকে? সেহেরের ঐ ফটো গুলোর? নেহা তুমি নিজেও জানো ফটো গুলো তুমি ভাইরাল করতে পারবে নাহ। কারন আমি সেহেরকে বিয়ে করতে অস্বীকার জানাবো এইটায় কন্ডিশন ছিলো। অন্য কিছু নাহ। আমি আমার কাজ করছি। এরপরও যদি ফটো গুলোর কিছু হয়, তাহলে তুৃমিও জানো নাহ আমি কতটাহ ভয়ংকর হতে পারি। সব সহ্য করবো কিন্তু সেহেরের কোনো ক্ষতি সহ্য করবো নাহ। মাইন্ড ইট!”
কথা গুলো বলেই আরসাল ওয়াশরুমে চলে যায়। নেহাও রাগে গজগজ করতে করতে নিজের রুমে চলে যায়।

★★★
পরনে গায়ে হলুদের সাজে শাওয়ারের নিচে বসে আছে সেহের। দুচোখের পানি শাওয়ারের পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে। গায়ে হলুদের ফাংশন অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। আর সহ্য হচ্ছিল নাহ এই গায়ে হলুদের সাজ। নিজেকে হালকা করার জন্য কান্না করছে। খুব কান্না করছে সেহের। নিজের কষ্টকে যেনো শাওয়ারের পানিতে ধুয়ে দিতে চাইছে সেহের।
প্রায় দেড় ঘন্টার মতো শাওয়ার নিয়ে, নিজের বিছানায় বসে আছে। আহিয়া চৌধুরী সেহেরের রুমে এসে দেখে, সেহেরের চুল ভেজা, ফ্লোরে গায়ে হলুদের শাড়ি ভেজা অবস্থায় পড়ে আছে, ফুলের গহনা গুলোও ভিজে পড়ে আছে ফ্লোরে, মেয়েকে এমন অবস্থায় দেখে আহিয়া চৌধুরীর বুকের ভেতরটাহ মোচড় দিয়ে উঠে। আহিয়া চৌধুরী এগিয়ে এসে সেহেরের পাশে বসে সেহেরের মাথায় হাত রাখে। সেহের পাশে তাকিয়ে দেখে তার মা। সেহের আস্তে আস্তে আহিয়া চৌধুরীর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে। আহিয়া চৌধুরী কিছুই জিজ্ঞাসা করে নাহ সেহেরকে, সেহেরের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে শুরু করে। সেহের চোখ বন্ধ করে মায়ের কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে।

★★★
রাহুল দাড়িয়ে আছে, সেহেরের সেই হাসি মুখের ফটোর সামনে। রাহুল হাত বাড়িয়ে সেহেরের ফটোর উপর হাত রেখে বলে ওঠে,
–” আর আজকের রাত টাহ। কাল থেকে তুমি আমার। শুধু আমার। কাল থেকে আমি তোমাকে বলতে পারবো সেহের #তুমি_শুধু_আমার। I love you, Seher. I love you very much. আমার সব স্বপ্ন কাল পুরন হতে চলেছে। আমার ভালোবাসা পূর্ণতা পেতে চলেছে। I am so happy. এতো টাহ আনন্দ লাগছে যে বলে বোঝাতো পারবো নাহ। পাগল পাগল লাগছে নিজেকে। আমি তোমাকে অনেক সুখে রাখবো সেহের। তোমার জীবন ভালোবাসায় পরিপূর্ণ করে দিবো। তোমার জীবনে কোনো কষ্ট আমি আসতে দিবো নাহ। সেহের, তোমাকে দেখার পর আমি বুঝেছি ভালোবাসা কি? ভালোবাসার অনুভূতি কি? শুধু এইটুকুই বলতে চাই, অনেক ভালোবাসি তোমাকে। অতিরিক্ত ভালোবাসি। আমার ভালোবাসায় কোনো খাদ নেই। নিখুঁত ভালোবাসা আমার।”

★★★
আরসাল বারান্দায় দাড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আর ভাবছে কি হয়ে গেলো সবকিছু। আরসাল মনে মনে ভাবতে থাকে,
–” হারিয়ে ফেলবো তাহলে তোকে সেহের। কি করবো, তোর সম্মান টাহ যে বেশি ইম্পর্টেন্ট আমার কাছে। অনেক ভালোবাসি সেহের। অনেক বেশি ভালোবাসি তোকে। খুব করে চেয়েছিলাম তোকে। কিন্তু?”

হঠাৎ আরাসাল কিছু একটা মনে পড়ে যায়। আরসাল তাড়াতাড়ি রুমে এসে ল্যাপটপ ওপেন করে কিছু একটা বের করেই দেখতেই আরসালের ঠোঁটে বাঁকা হাসি ফুটে উঠে।

★★★
আমান ল্যাপটপে কাজ করছে। আশা ঘুমানোর জন্য বিছানা রেডি করছে। আশার মন টাহ ভালো নেই। শুধু সেহেরের সকালের সেই কান্না আর তার বলা কথা গুলো মনে পড়ছে। হঠাৎ আশার ফোনে একটা ম্যাসেজ আসার শব্দে ফোন টাহ হাতে নিয়ে দেখে একটা আননোন নাম্বার থেকে ম্যাসেজ এসেছে। ম্যাসেজ টাহ ওপেন করতেই দেখে লিখা আছে, ” তোমার সুখের সংসার শেষ হয়ে যাওয়ার সময় এসে গেছে।” ম্যাসেজ টাহ দেখে আশা অনেক ভয় পেয়ে যায়। হঠাৎ আমানের চোখ যায় আশার দিকে। আশাকে দেখে মনে হচ্ছে অনেকটাহ ভয় পেয়ে আছে। আমান ল্যাপটপ টাহ বন্ধ করে আশার সামনে এসে আশার কাধে হাত রেখে বলে ওঠে,
–” কি হয়েছে?”

আমানের কথায় চমকে উঠে আশা। আশাকে এমন করে চমকে উঠতে দেখে আমান বলে ওঠে,
–” রিলাক্স! এতো ভয় পেয়ে আছিস কেনো?”

–” আমান এইটা দেখো।”
আমানের দিকে ফোন টাহ এগিয়ে দিয়ে বলে ওঠে আশা। আমান ফোন টাহ হাতে নিয়ে ম্যাসেজ টাহ দেখে আশার দিকে তাকায়। আশা যে ম্যাসেজ টাহ দেখে অনেক ভয় পেয়েছে তাহ তার মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে। তাই আমান আশাকে স্বাভাবিক করার জন্য বলে ওঠে,
–” আরে ভয় পাচ্ছিস কেনো? আমার মনে হয় এইটা কেউ ইচ্ছা করে তোর সাথে মজা করছে। এইটা নিয়ে এতো ভাবার কিছু নাই।”

–” কিন্তু আমান?”

–” কোনো কিন্তু নাহ। আচ্ছা চল, এই ভয় টাহ কে দুরে সরিয়ে অন্য ভয় নিয়ে আসি তোর মাঝে।”

–” মানে?”

–” মানে!”
কথাটাহ বলেই আমান বাঁকা হাসি দিয়ে আশাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। আশার শাড়ির নিচ দিয়ে কোমর চেপে ধরে আমান। আশা জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে। আমান আশার সামনের চুল গুলো কানে গুজে দিয়ে কপালে একটা চুমু দেয়। আশা আমানের স্পর্শে চোখ বন্ধ করে নেয়। আমান আশার বন্ধ করা দুই চোখের উপর চুমু দেয়। আশার পুরো শরীর কাঁপতে থাকে। আমান আশার চুলের নিচে দিয়ে আশার কাধে হাত দিয়ে মুখ টাহ এগিয়ে নিয়ে এসে নিজের ঠোঁটের সাথে আশার ঠোঁট মিলিয়ে দেয়। আশা যেনো হারিয়ে যাচ্ছে আমানের ভালোবাসায়। আশা এক হাত দিয়ে আমানের টিশার্টের কলার্ট আর এক হাত দিয়ে নিজের শাড়ি চেপে ধরে রাখে। কিছুক্ষন পর আমান আশার ঠোঁটের স্পর্শ ত্যাগ করে আশাকে কোলে তুলে বিছানায় শুয়ে দেয়। আশা আমানের দিকে তাকিয়ে আছে। আমান রুমের লাইট অফ করে দেয় এবং হালকা গ্রিন সেডের ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে দেয়। আমান আশার উপর আধশোয়া হতেই, আশা আমানের মুখে হাত রেখে আমানের কপালে একটা চুমু দেয়। আমানও আশার কপালে একটা চুমু দিয়ে বলে ওঠে,
–” আশা!”

–” হুম!”

–” একটা নতুন মানুষ আনলে কেমন হয়? যে আমাকে পাপা বলে ডাকবে আর তোকে মাম্মাম।”
আশা কিছু নাহ বলে আমানকে জড়িয়ে ধরে। আমান মুচকি হেসে বলে ওঠে,
–” আপনি কি রাজি ম্যাম?”

আশা কিছু নাহ বলে আমানের বুকে একটা চুমু দিতেই আমান তার উত্তর পেয়ে যায়। আমান আশার কপালে একটা চুমু দিয়ে আশার ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। আশার এক হাত আমানের চুল আকড়ে ধরে। আমান আশার শাড়ির আঁচল সরিয়ে দিয়ে আশার গলায় মুখ ডুবায় আমান। উষ্ণ ভালোবাসায় ভরিয়ে দিতে থাকে আশাকে। আস্তে আস্তে সরে যেতে থাকে আমান আর আশার মাঝের সব আবরন। আশাকে নিয়ে নতুন স্বপ্নের জ্বাল বুনতে থাকে আমান। ভালোবাসায় ভরিয়ে দিতে থাকে আশাকে। আমান আর আশা ভেসে যেতে থাকে এক ভালোবাসার রাজ্যে।

★★★
সেহেরের আজ খুব ভোরেই ঘুম ভেঙে গেছে। আজ সেই দিন, আজ সেহের পুরোপুরি অন্য একজনের হয়ে যাবে। তার উপর সৃষ্টি হবে নতুন একজনের অধিকার। সেহেরের ভালেবাসার বলি হবে আজ। সেহের কি মনে করে যেনো আরসালের রুমের সামনে আসে। সেহের হালকা চাপ দিয়ে দরজা খুলে দেখে আরসাল উবুড় হয়ে বিছানায় ঘুমিয়ে আছে। আরসালকে পুরো একটা বাচ্চার মতো দেখাচ্ছে। আরসালের ঘুমন্ত ফেস সেহেরের প্রচন্ড ভালো লাগে, মনে হয় যেনো কোনো বাচ্চা ঘুমিয়ে আছে, অনেক কিউট দেখায় আরসালকে। সেহের আরসালের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে ওঠে,
–” আজ আমি পুরোপুরি অন্য কারো হয়ে যাবো। তোমার আর কোনো অধিকার থাকবে নাহ আমার উপর। আমার ভবিষ্যত অন্য একজন হবে৷ তুমি তোহ আমাকে ভালোবাসোয় নাহ। ঘৃনা করো আমাকে। কিন্তু আমি যে তোমাকে বড্ড ভালোবাসি। আমার ভালোবাসা হেরে গেলো ভাইয়া। যেখানে কোনো দোষ করি নি, তাও তার দোষী হয়ে গেলাম। তোমাকে বোঝাতেই পারলাম নাহ, কতটাহ ভালোবাসি তোমাকে। তুমি ভালো থেকো! আমি তোমার জন্য সবসময় দুর থেকেই দোয়া করবো।”

সেহের এগিয়ে এসে আরসালের কপালে একটা চুমু দেয়। কারন এইটায় হয়তো আরসালকে দেওয়া তার শেষ ছোয়া। আর তোহ কখনো পারবে নাহ আরসালকে ছুতে, তাই আর নিজেকে সামলাতে পারে নি সেহের। সেহেরের চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। সেহের চোখ মুছতে মুছতে আরসালের রুম থেকে বেরিয়ে আসে।
সেহের চলে যেতেই আরসাল চোখ মেলে সেহেরের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।

★★★
সেহের বউ সাজে রেডি। কিছুক্ষণের মাঝেই রাহুলরা চলে আসবে। সেহেরকে পুরো পুতুলের মতো দেখাচ্ছে। সেহেরকে একটা লেহেঙ্গা পরানো হয়েছে। যার টপ গোলডেন কালারের, ঘাগরা লাল রং এর, দোপাট্টা লাল কালারের, এবং ঘোমটা গোলডেন কালারের, ভারি মেকাপ, চুল গুলো সামনে পাফ করে পেছনে খোপা করে ফুল লাগানো, আর সোনার গহনায় সেহেরকে একদম পুতুলের মতো লাগছে। আয়ানায় নিজের দিকে তাকিয়ে আছে সেহের। নিজেকে কার জন্য সাজাতে চেয়েছিলো আর কার জন্য সাজলো, তাই ভেবে তাচ্ছিল্যের হাসি দিচ্ছে। হঠাৎ নিচে ব্যান্ড পার্টির আওয়াজে সেহেরের বুঝতে দেরি হলো নাহ রাহুলরা এসে গেছে। সেহের জানালার কাছে দাড়াতেই দেখতে পাই সবাই রাহুল কে ওয়েলকাম করছে। রাহুল একদম বর বেশে এসেছে। মুখে মিষ্টি হাসি ফুটে উঠেছে রাহুলের। সেহের ভাবছে আজ থেকে তার নতুন জীবন শুরু কিন্তু সেইটা আরসালের হাত ধরে নাহ, রাহুলের হাত ধরে।

চলবে………………..🌹

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে