তুই শুধু আমার
Faria Siddique
Part 3
আমি গাড়ি নিয়ে আমার গোডাউনে পৌছে গেলাম।
গিয়ে দেখি আমার শিকারকে বেধে রাখা হয়েছে।
আমিঃরাজ আর কোন ইনফরমেশন পেয়েছ?
রাজঃমেম এই শালায় তো মুখই খুলতাছে না।
আমি আর কিছু না বলে লোকটার সামনে গিয়ে বসলাম।
আমিঃদেখ আমি চাই না ওতোটা খারাপ হতে কিন্তু কি করব তোরা আমাকে ভালো থাকতেই দিচ্ছিস না।
এই বলেই একটা ছুরি লোকটার হাতে ঢুকিয়ে দিলাম।
লোকঃআহহহহহহহহহহ।(চিল্লিয়ে)
আমিঃহুশশশশ।আমার সামনে এতো জোরে চিল্লাস না।তা এখন বল ওইদিন হসপিটালে তুই ঠিক কি কি করেছিস? আর তোকে কে এসব করতে বলেছিল?
লোকঃআমি জানি না।
আমিঃআচ্ছা তোর পরিবারে মনে হয় তোর মা আর একটা ছোটবোন আছে????
লোকঃপ্লিজ ওদের কিছু করবেন না।।(কান্না করে)
রাজঃতাহলে তারাতারি বল।
লোকঃআমি বলছি…………
তারপর লোকটা আমাকে সব বলল।
সব শুনে আমার চোখ দুটো লাল হয়ে গেল।
আমিঃরাজ এইটাকে মেরে ফেল।তারপর ওর মা আর বোনকে আমাদের আশ্রমে রেখে আসবি।
লোকঃপ্লিজ মেম আমাকে মারবেন না আপনার বোন বেচে আছে আর তার বাচ্ছাও বেচে আছে।
আমি এই কথা শুনার পর চেয়ারে ধপ করে বসে যাই।চোখ দুটো যেনো আজ কোন বাধা মানছে না।
আমিঃরাজ আপু কোথায় আছে সব কিছু জেনে নিয়ে আমাকে জানা।
রাজঃওকে মেম।
আমি আর কোন কথা না বলে বাড়িতে চলে আসলাম।আজ আমি খুব খুশি।আমার বোন আর বোনের বাচ্ছা দুইজনই বেচে আছে।
আমি এসব ভাবতে ভাবতেই রুদ্রের কল আসলো। আমি কলটা ধরলাম।
আমিঃহ্যালো
রুদ্রঃবউ শুনো তুমি রেডি হয়ে থেক।
আমিঃকেন?
রুদ্রঃআরে মা বাবা বলেছে কালকে আমাদের বৌভাত করবে।
আমিঃকিইইইইই!!!(চিল্লিয়ে)
রুদ্রঃকি হলো এভাবে গরুর মতো চিল্লাচ্ছো কেন???
আমিঃকিইই আমি গরুর মতো চিল্লাই??(রেগে)
রুদ্রঃ আমি তো মজা করতেছিলাম।(হেসে)
আমিঃঅ আচ্ছা।কিন্তু এসব করার মানে কি?আপনি কি দিন দিন বাচ্ছা হয়ে যাচ্ছেন?আপনি বুঝতে পারছেন না আমি আপনাকে কোনোদিনও ভালবাসতে পারব না।আমি অন্য একজনলে ভালোবাসি।
রুদ্রঃঅন্য একজনটা কে?(রেগে)
আমিঃজানি না।সেই ছোটবেলায় তাকে হারিয়ে ফেলেছি।(আনমনেই বলে দিলাম)
রুদ্রঃকি বললা?
আমিঃকিছু না।
রুদ্রঃদেখ বউ আমি যদি আর কোনদিন আমার নাম ছাড়া অন্যকারোর নাম তমার মুখে কোনদিন শুনি তাহলে তোমাকে তো শাস্তি দিবই দিব আর তাকেও মেরে ফেলব।তাই নিজের মুখে আমার নাম ছাড়া আর কারোর নাম আনবে না।আর শুনো তারাতারি রেডি হও আমি আসছি।
আমিঃহুম।
রুদ্রঃআর শুনো আমার আমি আমার বোনকে আনতে যাচ্ছি এয়ারপোর্টে। ও তোমাকে দেখার জন্য লন্ডন থেকে আসছে।
আমিঃতো আমি কি করব?
এই বলে কলটা কেটে দিলাম।কল কেটে দিয়ে আমি বাবার রুমে গেলাম।গিয়ে দেখি বাবা যেন কার সাথে কথা বলছে।
আমিঃবাবা আসব??
বাবাঃআরে আয় আয়।
আমিঃবাবা আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই।
বাবাঃআমি জানি তুই কি বলবি।
আমিঃকি বলব?
বাবাঃরুদ্র আমাকে সব বলেছে।।
আমিঃবাবা প্লিজ আমি পারব না ওই লোকটার সাথে থাকতে।আমি যাকে ভালোবাসি না তার সাথে সারাজীবন আমি কিভাবে কাটাবো?আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে আমাকে এই বিয়ে করতে হয়েছে।তুমি জানো বাবা রুদ্র আমাকে বলেছে…….
বাবাঃআহ মামনি।তোমার এখন বিয়ে হয়ে গেছে তাই তুমি না চাইলেও তোমাকে রুদ্রের কাছেই থাকতে হবে আর ওর কথাই শুনতে হবে তোমাকে।
আমিঃকিন্তু বাবা….
বাবাঃআমি আর কোন কথা শুনতে চাই না।যাও গিয়ে রেডি হয়ে নাও
আমি আর কিছু না বলে কান্না করতে করতে বের হয়ে এলাম।
বাবাঃআমাকে ভুল বুঝিস না মা।তোর ভালোর জন্যই আমাকে এসব করতে হচ্ছে।আর আমি জেনে শুনেই তোর আর রুদ্রের বিয়ে মেনে নিয়েছি।আমি জানি রুদ্র যা করবে তোর ভালোর জন্যই করবে।কিন্তু এখন আমার চিন্তা হচ্ছে স্রোত(আমার ভাইয়া)কে নিয়ে ওকে কিভাবে বুঝব?যা রগচটা ছেলে।যদি জানতে পারে তোর মত ছাড়া তোকে এখানে বিয়ে দেওয়া হয়েছে তাহলে দুনিয়া শেষ করে দিবে।কারন দুনিয়া একদিকে আর ওর বোন একদিকে।কি করি এখন।আচ্ছা যা হবার হবে আমি স্রোতকে সব বুঝিয়ে বলব।
অন্যদিকে
রুদ্র এয়ারপোর্টে চলে এসেছে।এসে ভিতরে ঢুকল আর তার বোনকে খুজতে লাগলো।
রুদ্রঃওই তো রুশা….রুশায়ায়ায়া বলে ডাক দিল।
রুশাঃভাইয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া
বলেই দৌড়ে এসে রুদ্রকে জড়িয়ে ধরল।
রুদ্রঃকেমন আছে আমার বোনটা?
রুশাঃভালো আছি ভাইয়া।তুমি কেমন আছ??
রুদ্রঃভালো।চল এবার যাওয়া যাক।
রুশাঃহা যাব কিন্তু ভাবি আসে নাই?
রুদ্রঃনা। তোকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে ওকে নিয়ে আসবো।
রুশাঃঠিকাছে।চল যাওয়া যাক।
তারপর তারা দুইজন চলে আসল।রুশাকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়েই আমাকে কল করল রুদ্র।
রুদ্রঃতুমি রেডি তো?
আমিঃহুম(বিরক্তির সুরে)
রুদ্রঃগুড।আমি আসছি।(মুচকি হেসে)
এই বলে কলটা কেটে দিল।
রুদ্রঃআমি জানি জানপাখি তুমি একদিন আমাকে ভালোবাসবেই।আর তুমি না বাসলেও আমার কিছু যায় আসে না কারন আমি একাই তোমাকে ভালবাসব।আর কাল যেটা করতে পারি নি আজ সেটা করব জানপাখি।(বাকা হেসে)
এসব ভাবতে ভাবতে রুদ্র গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেল।
এদিকে
আমি নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও রেডি হতে হচ্ছে।
আজ আমি লাল সিল্কের একটা শাড়ি পরেছি কালো কালারের ব্লাউজ দিয়ে।হাতে লাল চুড়ি পরেছি।কানে সাদা স্টোনের বড় ঝুমকো পরেছি।চুল গুলা ছেড়ে দিয়েছি আর চোখে একটু কাজল পরেছি।ব্যস আমার হয়ে গেল।
আমি রেডি হতেই দেখি রুদ্র দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে আর আমার দিকে নেশার দৃস্টিতে তাকিয়ে আছে।
আমিঃএভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?
আমার কথায় রুদ্রের হুশ এলো।।
রুদ্রঃ দেখছি আমার বউকে শাড়িতে কত সুন্দর লাগে।অবশ্য শাড়ি ছাড়াও তোমাকে সুন্দর লাগবে।(এক চোখ মেরে)
আমিঃআপনি যে ভীষণ রকমের অসভ্য সেটা কি আপনি জানেন?
রুদ্রঃতাই নাকি।আচ্ছা আমি যখন অসভ্যই তোমার সাথে আজকে একটু অসভ্যতামি করি।
আমিঃদেখুন ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
রুদ্রঃআচ্ছা যাও এখন ছেড়ে দিলাম কিন্তু আজ রাতে।আজ রাতে তোমার কি হবে বউ?(বাকা হেসে)
আমিঃআপনি সত্যিই অসভ্য।
আমি এই বলেই রুম থেকে বের হয়ে চলে আসলাম।আমার পিছন পিছন রুদ্রও বের হয়ে আসল।
তারপর আমরা বাবার থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে আসলাম।
আমি পিছনে বসতে গেলেই রুদ্র বলে উঠল
রুদ্রঃআমাকে কি তোমার ড্রাইভার মনে হয়!(রেগে)
আমিঃদেখুন আমি সামনে বসব না।
রুদ্রঃআচ্ছা।
এই বলেই রুদ্র আমাকে কোলে করে নিয়ে সামনে বসিয়ে দিল
রুদ্রঃআমাকে রাগানোর ফল তুমি রাতে পাবে(বাকা হেসে)
তারপর আমরা বেরিয়ে পরলাম।
চলবে……