#তুই আমার ২
#পর্বঃ৮
#Tanisha Sultana
বিকেলে মেহেদী অনুষ্ঠান শুরু হয়। সাথীকে সাজাতে পার্লার থেকে লোক এসেছে। সাথির সাজ কমপ্লিট হওয়ায় পর সাথির কিছু কাজিন সাজে। এখন মাইসা সাজবে তাই মিষ্টিকে ডাকতে এসেছে।
“মিষ্টি তারাতাড়ি চলো সবার সাজ কমপ্লিট এখন আমি আর তুমি বাকি
মিষ্টি সোফায় বসে ফোন দেখছিলো। মাইসার দিকে একবার তাকিয়ে মন খারাপ করে বলে
” তোমরা তো লেহেঙ্গার পড়বা কিন্তু আমার তো কোনো লেহেঙ্গার নেই।
মাইসারও মন খারাপ হয়ে যায়।
তখন সৌরভ আসে হাতে কয়েকটা ব্যাগ নিয়ে।
“মিষ্টি এখানে কয়েকটা লেহেঙ্গার আছে তোমার যেটা ভালো লাগে সেটাই পড়ো।
” তুমি কোথায় পেলে এগুলো??
মিষ্টির প্রশ্নে সৌরভ ঘাবড়ে যায়। আমতাআমতা করে বলে
“আসলে জীম তো চলে গেছিলো আর আমাকে বলে গেছিলো তোমার জন্য ড্রেস কিনতে তাই আর কি
সৌরভের কথা মিষ্টি কোনোভাবেই হজম হলো না। মনের মধ্যে খুদখুদ করছে।
” মিষ্টি পবলেম সলভ এবার তো চলো।
মাইসা মিষ্টিকে একটা লেহেঙ্গার চুজ করে দেয়। মিষ্টিকে টেনে নিয়ে যায়।
মিষ্টি চলে যাওয়ার পরে সৌরভ একটু মুচকি হেসে বলে
“তুই আমার মিষ্টি। শুধু আমার।
অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যায়। সবাই নাচানাচি করছে। মিষ্টি জীমের পাশে চুপ করে বসে আছে। জীম মিষ্টির হাতে মেহেদী দিয়ে দিচ্ছে। অভি একটু দুরে বসে আছে।
মিষ্টির মেহেদী নেওয়া শেষ। একটা ফাঁকা জায়গায় বসে আছে।
মাইসা জীমের হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
” মাইসা কি হচ্ছে এসব কোথায় নিয়ে যাচ্ছ।
মাইসা কোনো কথা বলে না। ছাদে এসে জীমকে ছেড়ে দেয়।
“আমাকে এখানে নিয়ে আসলে কেনো??
” কিছু কথা বলার জন্য
“তারাতাড়ি বলো। বোন একা আছে
” আই লাভ ইউ
” what
“হ্যাঁ। আমি আপনাকে ভালো বাসি। খুব ভালোবাসি (জীমের হাত ধরে) প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না।
জীম এক ঝটকায় মাইসার হাত ছাড়িয়ে বলে
” আমি তোমাকে ভালোবাসি না। আর কখনো ভালোবাসবোও না।
“কেনো আমার পবলেম কি?
” তোমার কোনো পবলেম নেই। তুমি খুব ভালো একটা মেয়ে। আমার চেয়ে অনেক ভালো ছেলে পাবে।
“আমার তোমাকেই চায়।
” মাইসা আই হেঁট লাভ
“কিন্তু কেনো
” মাইসা প্লিজ। তুমি যদি এরকম করতে থাকো তাহলে আমি আমার বোনকে নিয়ে চলে যাবো।
জীম চলে যায়। মাইসা , ওখানে বসে কান্না করে।
মিষ্টির খুব পানি পিপাসা পায়। কিন্তু দুহাত ভর্তি মেহেদী তাই পানি খেতে পারছে না। আশেপাশে চেনা জানা কাউকে দেখতে পায় না। অনেক খোজার পরে অভিকে পায়। অভি ভিডিও কলে রিনির সাথে কথা বলছে।
“অভি বেবি
” মিষ্টির ডাক শুনে অভি হকচকিয়ে যায়। রিনিকে বাই বলে ফোন কেটে দেয়। ফোনটা পকেটে রেখে পানজাবির হাতাটা একটু উচু করে বলে
“কি সমস্যা
” তেমন কিছু না।
“তাহলে ডাকছো কেনো
“দশ টা না পাঁচ না একটা মাএ বফ তাকে ডাকবো না
” এই ইডিয়েট আমি তোমার কোন কালের বফ
“কোন কালের আবার এই কালের। কেনো মনে নাই কাল রাতে আমাকে লাভ ইউ বললে
” তুমি জোর করে বলিয়েছো
“বলেছো তো
” হ্যাঁ কিন্তু
“কোনো কিন্তু নয়। আমার পানি টেষ্টা পেয়েছে পানি খাওয়াও
” পারবো না
“খাওয়াবে না কি তোমার পানজাবিতে মেহেদী লাগাবো
” দাড়াও আনছি
অভি মিষ্টিকে বকতে বকতে চলে যায়। মিষ্টি ওখানে দাড়িয়ে মিষ্টি করে হাসে।
“এই নাও পানি
অভি মিষ্টির দিকে পানির বোতল এগিয়ে দেয়।
” আমার দু-হাতে মেহেদী খাবো কি করে
“আমি কি জানি
” প্লিজ খাইয়ে দাও
মিষ্টি হা করে আর অভি পানি খাইয়ে দেয়
“গুন্ডা মেয়ে
” গুন্ডা হতে পারি কিন্তু ময়দা সুন্দরী না
“আমার রিনিকে একদম ময়দা সুন্দরী বলবা না
” তো কি বলবো
“ভাবি বলবে
মিষ্টি হো হো করে হেসে দেয়
” গরুর মতো হাসছো কেনো
মিষ্টি হাসি থামিয়ে বলে
“আমার ভাই কখোনোই ওই ময়দা সুন্দরীকে বিয়ে করবে না
” তোমার ভাই কেনো বিয়ে করবে
“তুমিই তো বললা ভাবি বলতে। আর আমার ভাই তো জীম তাহলে জীম না বিয়ে করলে ভাবি হবে কেমনে
” অতিরিক্ত বুঝো তুমি। আমার কথা বলছি। আমি বিয়ে করবো
“তুমি আবার আমার ভাই হইলা কবে
” তোমার সাথে কথা বলাটাই ভুল। ইডিয়েট একটা
“আপনি কি হ্যাঁ ময়দা সুন্দরীর বফ। আর কথাই বলবো না তোর সাথে।
” উফফ বাঁচা গেলো
মিষ্টি ভেংচি কেটে চলে যায়।
মাইসা মন খারাপ করে বসে আছে।
“আপি কি হয়েছে??
মাইসা চোখ মুছে বলে
” কই কিছু না তো
“কিছু তো হয়েছেই। তুমি আমাকে বলবা না তাই বলো।
কিছুখন চুপ থেকে মিষ্টি বলে
” দাভাই তোমাকে রিফিউজ করেছে তাই তো
মিষ্টির কথায় মাইসা চমকে ওঠে
“তুমি
মিষ্টি একটু মুচকি হেসে বলে
” তুমি দাভাইকে নিয়ে গেলে তখন আমি দেখেছি
মাইসা মিষ্টিকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে
“মিষ্টি আমি কি দেখতে এতোই খারাপ বলো। আমি জীমকে খুব ভালোবাসি।
” আপি শাম্ত হও। কান্না থামাও
মিষ্টি মাইসার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে
“আমার না তোমাকে খুব ভালো লাগে। ভাবছি বাপিকে বলবো তোমাকে পারমানেন্টলি আমাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে।
” কিন্তু তোমার ভাই তো
“আমার ভাই আমাকে ভিষণ ভালো বাসে। আমার কোনো ইচ্চে অপুর্ন রাখে না। তো আমি শিওর আমার এই ইচ্চাটাও পুরোন করবে। কিন্তু হ্যাঁ আমাকেও কিন্তু ভালোবাসতে হবে। আমার দাভাই কিন্তু তোমার থেকে আমাকে বেশি ভালোবাসবে তখন কিন্তু আমাকে হিংসা করতে পারবে না।
চলবে