#তুই আমার ২
#পর্বঃ৪
#Tanisha Sultana
পার্টি শেষে ওরা সবাই বাড়ি চলে আসে।
“মিষ্টি জীম যাও মায়ের সাথে দেখা করে আসো (রিয়াকে মা বলে)
” মামনি আমি খুব টায়ার্ড সকাল দেখা করবো
“জীম আমি তো তোমাদের বলেছি প্রতিদিন চার বার মায়ের কাছে যাবে। তো আজ একবারও কেনো যাও নি
খুব রেগে কথাগুলো বলে রুশা।
” মায়ের কাছে যেতে ভালো লাগে না আমার। গেলেই আমাকে জয় বলে ডাকবে। আমি তো জীম এটা কেনো বোঝে না।
আচ্ছা মামনি জয় কে
“দাভাই থাক না চলো মায়ের সাথে দেখা করে আসি
রুশা কিছু বলতে যানে তার আগেই আবির বলে
” জীম বাবা অনেক রাত হয়েছে কথা বারিয়ো না।
জীম আর মিষ্টি রিয়ার রুমে যায়। গিয়ে দেখে রিয়া জয়ের ছবির সামনে বসে খাচ্ছে। আবিরের মা রিয়াকে খাইয়ে দিচ্ছে।
জীম মিষ্টিকে দেখে রিয়া এগিয়ে এসে বলে
“আমি তোদের সাথে কথা বলবো না। তোরা খুব পঁচা।
” মা আমরা কি করেছি?? খুব বিজি ছিলাম তাই তোমাকে দেখতে আসতে পারি নি
জীমের কথা শুনে রিয়ার মা এগিয়ে এসে বলে
“দাদুভাই যতই বিজি থাকো মাকে তো একবার দেখে যাবো। সেই সকাল থেকে তোমাদের কথা বলে যাচ্ছে। তোমরা তো সারাদিন ঘুরো ফেরো বাইরে থাকো। কতো মানুষের সাথে কথা বলো। কিন্তু আমার মেয়েটার তো তোমরা ছাড়া কথা বলার মতো কেউ নেই।
মিষ্টি রিয়াকে জড়িয়ে ধরে বলে
” সরি মা আর কখনো এমন হবে না।
রিয়া খিলখিল করে হেসে দেয়।।
রিয়া এখন আগে চেয়ে একটু সুস্থ। মিষ্টি আর জীম ছাড়া আর কারো সাথে কথা বলে না। জীমকে জয় বলে ডাকে
“জয় তুমি সব সময় আমাকে কষ্ট দাও একটুও ভালো বাসো না শুধু রুশাকে ভালোবাসো
জীম মাকে জড়িরে বলে
” আমি তোমাদের দুজকেই ভালো বাসি। মা তুমি আর কখনো মামনিকে হিংসা করবে না ওকে
রিয়া কিছু বলে না। শুধু হাসে। হয়ত জীমের কথা বুঝতে পারেনি।
সকালে
মিষ্টি স্কুল ড্রেস পড়ে তারাহুরো করে নিচে নামে। খাবার টেবিলে দেখে আবির আর জীম বসে আছে।
মিষ্টি চেয়ারে বসতে বসতে বলে
“সরি লেট হয়ে গেলো
” ইটস ওকে তারাতারি খাও নাহলে ক্লাস মিস করবে।
অল্প কিছু খেয়েই মিষ্টি উঠে পরে। জীম মিষ্টিকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে নিজের কলেজে চলে যায়। মিষ্টি ক্লাস নাইনে পড়ে। আর অভি জীম ওরা অনার্স 3rd ইয়ারে।
মিষ্টির দুটো বেষ্ট ফ্রেন্ড তিথি আর তাওহিদ।
ক্লাস শেষে মিষ্টি তুথি আর তাওহিদের সাথে নদীর পাড়ে ঘুরতে যায়। এটা ওদের প্রতিদিনকার রুটিন। এক টাই ক্লাস শেষ হয়। ওরা দু’ঘন্টা ঘুরাঘুরি করে তিনটাই গনিত পাইভেট পড়ে বাসায় যায়।
তো আজকেও ঘুরছে। হঠাৎ নদীর পাড়ে গাছের নিচে রিনি আর রেহানকে দেখে মিষ্টি। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আছে। মিষ্টি সময় নষ্ট না করে ভিডিও করে নেয়। তিথি আর তাওহিদকে দারাতে বলে রিনির কাছে যায়।
তারপর রিনির সামনে গিয়ে বলে
“হাই আমার কিউটি আপু
” হেলো। কেমন আছো
“এই তো ভালোই। তুমি
” বিন্দাস
“আপু উনি কে?? তোমার ভাইয়া না কি
” না না ও আমার কাজিন
“ওহহ তোমার কাজিনটা কিন্তু খুব স্মার্ট। একদম তোমার মতো পারফেক্ট। তুমি এনাকে চুজ না করে ওই বলদটাকে কেনো চুজ করলে বলো তো। জানো কিউটি তোমার চয়েস খারাপ
” রিনি ও কে
“রাহাত ও আমার বেষ্ট বোন। কালকে আলাপ হয়েছে। খুব সুন্দর করে কথা বলে
একটু হেসে বলে রিনি
“হুম তা তো দেখতেই পাচ্ছি। তো নাম কি তোমার??
” আফরা ইবনাত মিষ্টি৷ তোমরা কেমন গো বাচ্চা একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে আর তাকে বসতে বলছো না।
“ওহহ সরি বসো
রাহাত নিজের পাশে জায়গা করে দেয় মিষ্টি কে। কিন্তু মিষ্টি দুজনের মাঝখানে বসে
” তারপর কিউটি বলো কবে বিয়ে করবে অভিদাকে? বয়স তো আর কম হলো না
“করবো খুব তারাতারি
” হুম ভালো। যাকে ভালোবাসো তাকে কখনো অপেক্ষা করাতে নেই। কখন কি হয়ে যায় বলা তো যায় না। এখন কার ছেলেরা তো আর একজনকে নিয়ে থাকে না। বেশি অপেক্ষা করালে দেখবে সে অন্য একজনকে নিয়ে ভেগেছে।
কী ভাইয়া ঠিক বলছি তো??
“একদম ঠিক
রিনি মুখটা কালো করে কিছু ভাবছে। মিষ্টি তা দেখে একটু হাসে।
” কিউটি যদি কখনো কোনো হেল্প লাগে আমাকে বলবা। আমি দেখতে ছোট হতে পারি কিন্তু বুদ্ধি বড়দের থেকেও বেশি
রিনি মনে মনে একটু ভরসা পায়।
তারপর কিছুখন গল্প করে মিষ্টি চলে যায়
কোচিং করে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আছে মিষ্টি। জীম নিতে আসবে বলে। মিষ্টি মনোযোগ দিয়ে একটা ফেক আইডি খুলছে। রিনির আইডি কপি করে হুবহু একরকম করে আইডি খুলছে
“এই মিষ্টি
মিষ্টি সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে অভি গাড়িতে বসে আছে।
” উঠে পড়ো তোমার দাভাই তোমাকে বাসায় ড্রপ করে দিতে বলেছে
মিষ্টি গাড়িতে বসে। ইচ্ছা করেই সিট বেল লাগায় না।
“আচ্ছা অভিদা তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে
অভি গাড়ি চালাতে চালাতে বলে
” না গার্লফ্রেন্ড নাই কিন্তু প্রেমিকা আছে
“তোমার গার্লফ্রেন্ড থাকলেও আমার কোনো পবলেম।
“হুম তাইতো
” আচ্ছা অভি প্রপোজ কিভাবে করে
“কেনো কাউকে করবে না কি
” হুম বলো
“আই লাভ ইউ বলে
অভিকে থামিয়ে
” লাভ ইউ টু
“আমি বলতে চাইছিলাম
” কিছু বলতে হবে না এখন শুধু আমি বলবো। তুমি জানো আমার যখন দশবছর পাঁচ মাস সাত দিন বয়স সেদিন তোমায় ফাস্ট দেখেছি। আর সেদিন থেকেই তোমাকে ভালোবাসি। কখনো তোমার সামনে যায় নি। ভেবেছিলাম আমি যখন কলেজে পড়বো তখন ভালোবাসি বলবো। কিন্তু তার আগেই তুমি আমাকে কিডনাপ করলে। তুমি জানো তুমি যখন আমাদের বাড়িতে যেতে আমি আড়াল থেকে তোমাকে দেখতাম।
মিষ্টির কথা শুনে অভি অবাক এই মেয়ে বলে কি
“খুব পাকা হয়ে গেছো তুৃমি তাই না। দাড়াও তোমার বাপি আর দাভাই কে বলে তোমার ভালোবাসার ভুত ছাড়াবো
” তুমি কিছুটা ঠিক বলেছো ভালোবাসা সত্যি ভুতের মতো। ভুত তো ছেড়ে যায় কিন্তু ভালোবাসা কখনো ছাড়ে না।
“বা বা মিষ্টি খুব কথা শিখেছো তো। তা কে শেখায় এইসব।
” রাধাকৃষ্ণ সিরিয়াল দেখে শিখেছি।
“আর সিরিয়াল দেখবা না।
” আপনি যদি আমাকে একসেপ্ট করেন তো আর দেখবো না।
“আমি তোমাকে কখনোই একসেপ্ট করবো না কজ আমি রিলেশনসিপ এ আছি
” যদি ব্রেকআপ হয়ে যায় তো
“কখনো ব্রেকআপ হবে না
” আমিও হাল ছাড়বো না। তুই আমার। শুধু আমার
“তোমার বাড়ি এসে গেছে নামো
” তুমিও চলো। বাপিকে না বলবে
“পরে বলে দেবো
” না চলো এখনই বলবে
মিষ্টি অভির হাত ধরে টেনে বাড়িতে নিয়ে যায়। জীম গেমস খেলছে আবির আর রুশা চা খাচ্ছে আর টিভি দেখছে।
মিষ্টি অভি নিয়ে ভেতরে ঢুকে বলে
“বাপি দাভাই মামনি আমি আজ কে অভি কে প্রপোজ করেছি
আবির বিষম খায়। জীমের হাত থেকে ফোন পড়ে যায়
” অভি বলছিলো তোমাদের কাছে আমার নামে কমপ্লেন করবে। তো আমিই বলে দিলাম। এবার বলো আমি কোনো ভুল করেছি কি??
একজন মানুষের তো আর একজন মানুষকে ভালো লাগতেই পারে তাই না বাপি
আবির কি বলবে বুঝতে পারছে না
তুতলিয়ে বলে
“হ্যাঁ হ্যাঁ তাই তো
” দেখলে অভি বাপিও বললো। আই লাভ ইউ অভি। সবার সামনে বলেছি এখন বলো আর কার কাছে কমপ্লেন করবে
অভি ভয়ে ভয়ে বলে
“আর কারো কাছে না কিন্তু আমার গার্লফ্রেন্ড আছে
” তো কেউ তোমার কাছে জানতে চেয়েছে??
অভি মাথা নাড়ায় নাা
“তাহলে আগ বাড়িয়ে বলছো কেনো?? যাইহোক তুমি এখন আসতে পারো
” কি
“বাড়ি যাও এখন
অভি মিষ্টিকে বকতে বকতে চলে যায়।
চলবে