তুই আমার ২ পর্বঃ২

0
4905

#তুই আমার ২
#পর্বঃ২
#Tanisha Sultana

মিষ্টি আর জীম সামনে তাকিয়ে দেখে একটা মেয়ে গাড়ির খুব কাছি চলে এসেছে। জীম তারাতাড়ি গাড়ি ব্রেক করে নেয় যায় ফলে মেয়েটা মারতে মরতে বেচে যায়। সামনে থাকা মেয়েটা ততক্ষণে বুঝতে পেরেছে কি হতে যাচ্ছিলো। জীম গাড়ি থেকে নেমে মেয়েটার কাছে যায়

“এই মেয়ে তোমার সমস্যা কি?? চোখে দেখতে পাও না নাকি কানে শুনো না?? আর একটু হলেই তো এক্সিডেন্ট করতে

মেয়েটা করুন সুরে বলে

” সরি আসলে কানে হেডফোন ছিলো তাই শুনতে পাই নি

“আজব মেয়েতো তুমি কানে হেডফোন দিয়ে কেউ রাস্তা পার হয়

” ভুল হয়ে গেছে নেক্সট টাইম আর হবে না

“ওকে যাও

মেয়েটা চলে যায়। জীম গাড়িতে বসে।

” দাভাই মেয়েটা খুব ভালো তাই না

“কি করে বুঝলি

” তুমি এতো কথা শোনালে আর আপুটা জাস্ট সরি বললো। আমি হলে তো সরি না বলে উল্টে আরও কথা শুনিয়ে দিতাম

বোনের কথা শুনে জীম একটু হাসে।
একটা পার্কের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় মিষ্টি খেয়াল করে অভি একটা মেয়ের হাত ধরে পার্কে হাটে

“আচ্ছা দাভাই অভির গার্লফ্রেন্ড আছে

জীম একবার মিষ্টির দিকে তাকিয়ে বলে

” হুম গার্লফ্রেন্ড আছে। জানিস অভি মেয়েটা ভিষণ ভালোবাসে। ওর কাছে পুরো পৃথিবীর একদিকে আর ওই মেয়েটা একদিকে।

ভাইয়ের কথা শুনে মিষ্টির একটু খারাপ লাগে। মিষ্টি অভিকে ভালোবাসে। মিষ্টি অভিকে অনেক বার দেখেছে। কিন্তু অভি আজকেই প্রথম দেখলো। অভি যখন জীমের সাথে ওদের বাড়িতে যেতো মিষ্টি আড়াল থেকে দেখতো কখনো সামনে যায় নি।

অভির গার্লফ্রেন্ড থাকতে পারে বা অন্য কাউকে ভালোবাসাতে পারে এমটা কখনো ভাবে নি।

“আচ্ছা দাভাই ধরো আমি কাউকে খুব ভালোবাসি। হঠাৎ জানতে পারলাম সে অন্য কাউকে ভালোবাসে। তখন আমার কি করা উচিৎ। তাকে ভুলে যাবো না কি লড়াই করবো

মিষ্টির এমন অদ্ভুত প্রশ্নে ঘাবড়ে যায় জীম কি উওর দেবে ভেবে পাচ্ছে না।
জীমকে চুপ থাকতে দেখে মিষ্টি বলে

” কি হলো বলো

“সেটা তোর ভালোবাসার ওপর নির্ভর করে। যদি তুই তাকে এতোটাই ভালোবাসিস যে তাকে ভুলে যাওয়া পসিবল না। তাহলে তুই লড়াই করবি।
আর যদি সে তোর মোহ থাকে তাকে ভুলে যেতে পারবি তাহলে ভুলে যাওয়াই ভালো
তবে একটা কথা ভালোবাসা কখনো জোর করে পাওয়া যায় না।
তোর ভালোবাসার মানুষটা যদি অন্য কারো সাথে ভালো থাকে তাহলে মুক্ত করে দিতে হয়। বুঝলি

” হুম বুঝলাম। ভালোবাসা খুব খারাপ একটা Addiction. I wish যদি আমি কখনো এই ভালোবাসা নামক Drug এ Addiction না হতাম
মিষ্টি বিরবির করে বলে।

“বোন কি বিরবির করছিস

” কিছু না
ওরা বাড়ি চলে আসে।
মিষ্টি নিজের রুমে গিয়ে ফোনটা হাতে নেয়। অভিরাজ চৌধুরী নাম দিয়ে সার্জ দেয়। তারপর অভির ফেসবুক ঘাটতে থাকে। ফেসবুকে ওই মেয়েটার সাথে অভির অনেক ছবি। মেয়েটাকে দেখে মিষ্টির ভালো লাগে না। একটু বেশিই স্মার্ট মেয়েটা। বেশ কিছুখন ছবি দেখে মিষ্টি সিদ্ধান্ত নেয় আর অভির কথা ভাববে না। ফোনটা বিছানায় ছুরে দিয়ে সুয়ে পড়ে।
একটু পরে রুশা (মিষ্টি আর জীমের মা)
“মিষ্টি তারাতারি রেডি হয়ে নাও

” কেনো কোথাও যাবে না কি??

“হ্যাঁ। তোমার বাপির এক ফ্রেন্ডের মেয়ের বার্থডে তো আমরা সেখানেই যাবো

” আমি যাবো না। আমার ভালো লাগছে না।

“মিষ্টি কথা বারিও না তারাতারি রেডি হয়ে নাও

রুশা চলে যায়। মিষ্টি রেডি হয়ে বাবা মায়ের সাথে বার্থডে পার্টিতে যায়।

রুশা আবির সবার সাথে গল্প করছে। জীমও কোথাও একটা চলে গেছে। মিষ্টির একা একস বোরিং লাগছে তাই এদিক সেদিন ঘুরে ঘুরে দেখছে। হঠাৎ মিষ্টি দেখতে পায় অভির গার্লফ্রেন্ড অন্য একটা ছেলের সাথে হাত ধরে হাসাহাসি করে কথা বলছে। মিষ্টি প্রথমে বন্ধু ভেবে পাত্তা দেয় না। কিন্তু একটু পরে অভি ওদের কাছে যেতেই দুজন ভয় পেয়ে যায়।এবং কিছুটা দুরে দাড়ায়। মিষ্টি বুঝতে পারে মেয়েটা সুবিধার না।

মিষ্টি দুরে দাঁড়িয়ে দেখছে ওদের। আর ভাবছে এই মেয়েটা অভিকে ঠকাচ্ছে। কিন্তু অভি বুঝতেও পারছে না।

” মিষ্টি তুমি এখানে কেনো

মায়ের ডাকে হুস ফেরে মিষ্টির।

“তোমাকে কতবার বলছি আমার সাথে নসহয় জীমের সাথে থাকতে

” সরি মামনি আর হবে না

মিষ্টি একবার পেছন দিকে তাকিয়ে মায়ের সাথে চলে যায়।

সবার সাথে পরিচয় করার পরে মিষ্টি জানতে পারে অভি তার বাবার বন্ধু ছেলে। আর তার ভাইয়ের বেষ্ট ফ্রেন্ড। যার বার্থডে পার্টিতে এসেছে সে হলো অভির বোন মাইসা।
মিষ্টি মাইসাকে দেখেই চিনতে পারে
মনে মনে বলে
“এইটা তো বিকেলের সেই মেয়েটা যে আমাদের গাড়ির নিচে পড়তে পড়তে বেচে গেছে।

মিষ্টি গাড়িতে থাকায় মাইসা মিষ্টিকে দেখতে পায় নি

পরিচয় শেষে মিষ্টি একটা জুসের গ্লাস হাতে নিয়ে এদিক সেদিন সেই মেয়ে আর অভিকে খুজছে কিন্তু কোথাও পাচ্ছে না

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে