#তুই আমার ২
#পর্বঃ১৩
#Tanisha Sultana
টিচারকে দেখে মিষ্টি হা হয়ে যায়।
সৌরভ ওদের টিচার।
ক্লাস শুরু হয়ে যায়। মিষ্টি তো সৌরভের দিকে এক বস্তা রাগ নিয়ে বসে আছে। কেনোনা সৌরভ মিষ্টিকে চিনতেই পারছে না। সৌরভও বারবার আড় চোখে মিষ্টিকে দেখছে।
“এই বিদেশি দাড়ান
সৌরভ মিষ্টিকে বলে।
মিষ্টি এদিকে সেদিক তাকায়
” এদিক ওদিক তাকানোর কিছু নেই আপনাকেই বলছি।
মিষ্টি দাড়ায়।
“জি বলো থুক্কু বলুন
” আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেনো??
“আসলে আপনাকে জোকারের মতো লাগছে তাই দেখছিলাম আর কি।
মিষ্টির কথা শুনে সবাই মুখ টিপে হাসে। সৌরভ ভেবাচেকা খেয়ে যায়। গলা পরিষ্কার করে বলে
” তো বলো আমি এখন কি ক্লাস নিচ্ছি??
“ওমা আপনি জানেন না?
” আমি জানি আপনি কি জানেন??
“আমিও জানি?
” তো বলেন এটা কি ক্লাস নিতে এসেছি আমি
মিষ্টি কিছুখন ভেবে বলে
“ইংলিশ
” কিহহহ। ইন্টার কি নকল করে পাস করেছো??
“নাহহ। বয়ফ্রেন্ডের তা দেখে দেখে লিখে পাস করছি।
” বয়ফ্রেন্ড ?
“হ্যাঁ। আমার সাথে সিট পড়ছিলো। জানেন কি বাজে ছেলে প্রথমে তো আমাকে দেখাবেই না পরে আমি ভুলিয়ে ভালিয়ে বয়ফ্রেন্ড বানিয়ে ছিলাম। তারপর থেকে ও যা যা লিখছে আমাকে দেখাইছে
সৌরভ সহ সবাই অবাক হয়ে মিষ্টির কথা শুনছে।
” তা বয়ফ্রেন্ডটা কি এখনো আছে।
“এক্সামও শেষ প্রেম ও শেষ
” মা তুমি যদি দয়া করে একটু চুপ করো তো আমি ক্লাসটা নিতে পারি।
“আপনিই তো জানতে চাইলেন।
” আমার ঘাট হয়ে গেছে
মিষ্টি বসে পড়ে। সৌরভ ক্লাস নেয়
ক্লাস শেষে সৌরভ ক্লাস থেকে বের হয়ে যায়। মিষ্টি সৌরভের পেছন পেছন যায়।
“এই যে সৌরভ দা
মিষ্টির কথায় সৌরভ পেছনে তাকায়।
” তুমি মিষ্টি না??
“না মিষ্টির ফটোকপি
সৌরভ একটু মুচকি হেসে বলে
” সরি আমার মন বলছিলো তুমি মিষ্টি বাট শিওর ছিলাম না
“তুমি কেমন মানুষ? আমাকে চিনতে পারলে না। আমি তো তোমায় ঠিক চিনলাম
” সরি তো। চলো কোথাও বসে কথা বলি।
“এখন না। এখন বাসায় যাবো
” চলো তোমায় পৌঁছে দেয়।
মিষ্টি সৌরভের সাথে গল্প করতে করতে বাসায় পৌঁছে যায়। ফ্রেশ হয়ে একটু ঘুমায়।
বিকেলে মিষ্টি একাই হাঁটতে বের হয়। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরেই দেখতে পায় একটা ছাগল আম গাছের পাতা খাওয়ার জন্য লাফালাফি করছে। কিন্তু গাছটা একটু উঁচু হওয়ায় ছাগলটা খেতে পারছে না।
মিষ্টি এগিয়ে গিয়ে আম গাছটা একটু নিচু করে দেয় যার ফলে ছাগলটা আরাম করে পাতা খেতে খায়।
“তুমি এটা কি করছো??
কারো ধমক শুনে মিষ্টি তার দিকে তাকায়। অভি প্রচন্ড রেগে মিষ্টির দিকে এগিয়ে আসছে।
“কি করলে তুমি??
” পরোপকার করলাম
“মানে
” মানে ছাগলটাকে খাওয়ালাম। জানো বেচারা কতো লাফালাফি করছিলো খাওয়ার জন্য কিন্তু খেতে পারছিলো না তাই আমি হেল্প করলাম। কত ভালো আমি দেখছো??
“হ্যাঁ তুমি যে কত ভালো তাতো দেখতেই পাচ্ছি। আমার এতো শখের আম গাছটা তুমি ছাগলকে খাওয়ালে।
“আম গাছের কোথাও তো আপনার নামটা লেখা দেখলাম না
” আমার নাম লেখা থাকবে কেনো
“নাম লেখা না থাকলে বুঝবো কি করে এটা আপনার গাছ। কাকু এটা কি তোমার বাড়ি।
” হ্যাঁ কেনো??
মিষ্টি ওভিদের বাড়ির ভেতরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়
“এই মেয়ে কোথায় যাচ্ছ
” ভাইবোন দের দেখতে
“আমাদের বাড়িতে তোমার ভাইবোন আসবে কোথা থেকে??
” আরে কাকু আপনার সাথে সাথে দেখি আপনার বুদ্ধি ও বুড়ো হয়ে গেছে। আপনি আমার কাকু লাগেন তো আপনার বাচ্চারা তো আমার ভাই বোন লাগে তাই ওদের সাথে দেখা করতে যাচ্ছি।
মিষ্টি আবার হাটা শুরু করে। অভি মিষ্টির হাত ধরে
“ও কাকু কি হলো?? খালি হাতে যাচ্ছি বলে বাসায় ডুকতে দেবেন না
” মিষ্টি তুমি আমার গোলাপ ফুল ছিঁড়েছো
“এই সেরেছে এখন যদি জানতে পারে আমাকে তো তাজা গিলে খাবে তাও আবার লবন ছাড়া (মনে মনে)
” কি হলো বলো
“গোলাপ ফুল কি? না মানে দেখতে কেমন? ফুল দিয়ে কি করে? খায় না মাথায় দেয়? আপনার আবার গোলাপ ফুলও আছে??
মিষ্টির এতো গুলো প্রশ্নেঅভি বিরক্তির শেষ পান্তে পৌঁছে যায়। জোরে মিষ্টিকে একটা ধমক দেয়।
” সাট আপ
মিষ্টি ভয় পেয়ে যায়।
“মামনি ঠিকি বলে
” কি বলেছে
“বলেছে ছেলেরা বাবা হওয়ার পরে রাগী হয়ে যায়। খিটখিটে হয়ে যায়। কথায় কথায় ধমক দেয়।
” মিষ্টি এতো কথা তুমি কিভাবে বলো
“কেনো মুখ দিয়ে বলি
” দয়া করে আমার চোখের সামনে থেকে তুমি যাবে।
“যাচ্ছি যাচ্ছি এভাবে বলার কিছু নেই। কাকু হয়েছে কিছু দিন পরে দাদু হয়ে যাবে তবুও তেজ কমলো না।
ভেংচি কেটে মিষ্টি চলে যায়।
” এই মেয়েটা আমাকে পাগল বানিয়ে দেবে।
চলবে