#তুই আমার
#পর্বঃ৩
#Tanisha Sultana
“এই রুশা দাড়াও
আবিরও রুশার পেছন দৌড় দেয়। রুশা দৌড়াতে দৌড়াতে একটা দোকানের পেছনে যায়।
আরির হাঁপাতে হাঁপাতে বলে
” এই তুমি পাগল না কী?? এভাবে দৌড়ালে কেনো??
রুশা হাঁপাতে হাঁপাতে বলে
“পানি
আবির কোমরে হাত দিয়ে বলে
” কী
“পানি খাবো পানি শুনতে পান না
চিল্লিয়ে বলে রুশা
আবির কানে হাত দিয়ে বলে
” শুনেছি এতো চিল্লানোর কী আছে
“শুনেছেন যখন তখন যাচ্ছেন না কেনো?? তারাতারি যান
আবির বিরক্ত হয়ে পানি আনতে যায়।
আবির চলে যাওয়ার পরে রুশা রাস্তার দিকে উঁকি দেয়
যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই শুধু জয়কে দেখতে পাচ্ছি। কী হচ্ছে এসব আমার সাথে। এরকম চলতে থাকলে আমি জয়কে ভুলবো কি করে?? আমি না মরা পযর্ন্ত আমার শান্তি নেই।।
” এই যে পানি
রুশা চমকে পেছনে তাকিয়ে বলে
“পানি কেনো
” তুমিই তো আনতে বললে
“ওহহ হ্যাঁ দিন
রুশা আবিরের কাছ থেকে পানির বোতল নিয়ে পানি খায়। তারপর একটা ফোন কিনে বাড়ি চলে আসে
বাড়িতে ঢুকে আরেক দরফা অবাক হয় রুশা। কারন বাসায় ঢুকে দেখে জয় আর ওই মেয়েটাকে সোফায় বসে হাসাহাসি করছে।
” আরে রুশা বোন কেমন আসিস
ওই মেয়েটার কথায় রুশার হুশ ফেরে
“তুমি হয়ত আমাকে চিনতে পারো নি। আমি রিয়া তোর রিয়া আপু। কত বড় হয়ে গেছিস তুই
রুশা একটু হাসার চেষ্টা করে বললো
” এইতো ভালোই। আর তুমিও অনেক চেন্জ হয়ে গেছো। চিনতেই পারি নি
“হুম বুঝতে পারছি। আয় তোর জিজুর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
” তুমি বিয়ে করেছো??
“আরে না। বিয়ে ঠিক হয়েছে। (জয়কে দেখিয়ে) তোর হবু জিজু জয়
রুশা জয়ের দিকে তাকায়। জয়ও এতোখন রুশার দিকে তাকিয়ে ছিলো
” হাই জিজু
জয় জোর পূর্বক হাসার চেষ্টা করে বলে
“হেলো
আবির চলে আসে
” কিরে রিয়া তুই এখনো রুশাকে দাড় করিয়ে রেখেছিস। ওকে বসতে দে
“ওহহ সরি রুশা আমি এতো এক্সাইটেড!যে তোকে বসতে বলতে ভুলে গেছি। বস না
রুশা আবিরের পাশে বসে আর আপর পাশে রিয়া আর জয় বসেছে
” রিয়া মা দাদিমা কোথায়?
“মা আর দাদিমা তো সকাল থেকে রুশার ফেবারিট খাবার গুলো রান্না করছে
” জয় রিয়া আপুর হবু বর তাহলে সেদিন যে মেয়েটা আমাকে বকা দিলো সে কে?? না কি রিয়া আপুই সেইদিন আমাকে ওইসব কথা বলেছে। আমি আর এসব ভাববো না। যা খুশি করুক। আমার কী?? আমি এখানে থাকবো না চলে যাবো। আমার জন্য রিয়া আপু বা জয় কেউ কষ্ট পাক এটা আমি চাই না। কালই আমি চলে যাবো। (মনে মনে)
“রুশা এখানে কেনো? আর আমাকে দেখলো আমি বিয়ে করছি সেটা জেনেও কোনো রিয়েক্ট করলো না। এমন ভাব করছে জেনো আমাকে চেনেই না। রুশা এতো বদলে গেলো। যাক গে ভালোই হয়েছে এখন শান্তিতে রিয়াকে বিয়ে করতে পারবো। (মনে মনে)
” কী রে রুশা কথা বল
কাকিমার ডাকে ভাবনার জগত থেকে বের হয় রুশা
“কাকিমনি কেমন আছো??
” ভালো সোনা। তোর কি অবস্থা??
“এইতো ভালো। দাদিমা কাকাই ওরা কোথায়??
” তোর দাদিমা গোছল করছে আর কাকাই অফিসে
সবার সাথে কিছুখন গল্প করে রুশা রুমে চলে যায়।
“জয় তো দিব্যি আছে তাহলে আমার এতো কষ্ট হচ্ছে কেনো?? কেনো করলো এমন। আমি যে আর সয্য করতে পারছি না। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। কোথাও একটু শান্তি পাচ্ছি না। ভালোবাসা কি এমনই কাউকে হাসায় আবার কাউকে কাদায়। জয় আব কখনো আমার হবে না। আমি হারিয়ে ফেলেছি ওকে।
রুশা খুব কান্না করছে আর একা একাই এসব বলছে।
তারপর চোখের পানি মুছে ফেলে
” আমাকে শক্ত হতে হবে। আমিকে ভেঙে পড়লে চলবে না। আমি আমার কষ্টটা কাউকে বুঝতে দেবো না।
আবির রুশার রুমে এসে দেখে রুশা কান্না করছে
“রুশা কী হয়েছে? কাঁদছো কেনো??
রুশা চোখের পানি মুছে বলে
” সুখে কাঁদছি
আবির হালকা হেসে বলে
“সুখে আবার কেউ কাঁদে না কী??
” আমি কাঁদি
আবির রুশার পাশে বসে শান্ত গলায় বলে
“জানো রুশা চোখের পানিটা না খুব মূল্যবান এটা যারতার জন্য কখনো ফেলতে নেয়। আমি জানি না তোমার কি হয়েছে?? কিন্তু এটা বুঝতে পারছি কিছু হয়েছে। কাকাই বলছিলো তুমি না কী কয়েকদিন যাবত সব সময় কান্না করছো। কান্না করার কারণটা কাউকে বলছো না। আমি জানতে চাইবো না তোমার কী হয়েছে। আমি শুধু বলবো যা তোমার না তার জন্য নিজেকে কষ্ট দিও না।
আবির থামে
” ভালোবাসা কি পাপ
“না ভালোবাসা কোনো পাপ না। ভালোবাসা পবিত্র। তবে ভালোবাসা নিয়ে পাগলামি করাটা পাপ। তুমি যেটা করছো আমি সেটাকে পাপই বলবো। হাতটার কি অবস্হা করছো। তোমার জন্য তোমার বাবা মা ভাই কেউ ভালো নেই তাহলে এটাকে পাপ বলবো না বলো
” হাত কেটে রক্ত ঝরিয়ে যদি আমার কষ্টটা একটু কমে তাতে খতি কী
“রুশা সব কিছু নিজের মতো করে ভাবো কেনো
” আমি এরকমই
“থেকো না এরকম নিজেকে বদলে ফেলো যাতে তোমাকে আঘাত দেওয়া মানুষটা বুঝতে পারে তুমি হিরে ছিলে কাঁচ না
” আমি চেষ্টা করবো
“চেষ্টা না রুশা তোমাকে পারতে হবে। ওদের বুঝিয়ে দিতে হবে রুশা হজ দ্যা বেষ্ট। পারবে না তুমি
” হুম পারবো
” গুড গার্ল। এবার তারাতারি ফ্রেশ হয়ে নাও শপিং এ যাবো
“আমি যাবো না। আপনারা যান
” তোমাকে যেতে হবে৷ দশ মিনিট সময় দিলাম কুইক
আবির চলে!যায়। রুশা বাদ্ধ হয়ে রেডি হয়ে শপিংয়ের জন্য যায়।
গাড়িতে আবির ডাইভ করছে আর রুশা পাশে বসে ফোন দেখছে। পেছনের ছিটে জয় আর রিয়া গল্প করছে।
“রুশা তুমি কোথায় থাকো??
জয়ের প্রশ্ন শুনে রুশা একবার জয়ের দিকে তাকায় তারপর সামনে তাকিয়ে বলে
” সেটা আপনার জানতে হবে কেনো??
রুশার উওরে জয় একটু অপমানিত হয়
“না তুমি আমার সালিকা হও তো তাই জানতে চাইলাম
” সালিকা হই বলেই সব কিছু জানতে হবে এটা তো কোথাও লেখা নেই।
“রুশা তুই এমন কেনো?? সোজা প্রশ্নের কখো সোজা উত্তর দিতে পারিস না।
” আমি এমনই আপু ভাইয়া বলে দিও।
“জয় ছাড়ো তো ওর কথায় কিছু মনে করো না।
” আমি কিছু মনে করিনি। তবে তোমার বোন কে দেখে বেশ বুঝতে পারছি ছ্যাকা খাইছে
জয়ের কথা শুনে রুশা মনে মনে বলে
“বাহ জয় কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিতে বেশ ভালোই পারো। তোমার মতো একটা বাজে ছেলেকে আমি এতো ভালোবাসি ছি
” দুলাভাই আপনি মেবি কখনো ছ্যাকা খাইছিলে তাই না
রুশার কথা শুনে সবাই রুশার দিকে তাকায়।
জয় আমতা আমতা করে বলে
“না আমি ছ্যাকা খাবো কেনো?? একজনকেই ভালোবেসেছিলাম আর তাকেই বিয়ে করতে যাচ্ছি
” ওহহহ গুড। শুনে ভালো লাগলো৷ আমি ছ্যাকা খাইনি মিথ্যা ভালোবাসার কাছে হেরে গেছি। একটা বাজে ছোটলোক নোংরা ছেলে কে ভালোবেসে ছিলাম যার ফলে আমার এই অবস্হা। এটা ছ্যাকা বলে আমার ভালোবাসাকে প্লিজ অপমান করবে না।
রুশার কথা শুনে জয়ের মুখটা কালো হয়ে যায়। আবিরের চোখ দিয়ে একফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে যা কেউ দেখার আগেই মুছে নেয়। আর রিয়া কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলে
চলবে