#তুই আমার
#পর্বঃ২
#Tanisha Sultana
রুশা দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে বাবা মা আর ভাই দাঁড়িয়ে আছে। ওরা দৌড়ে রুশার কাছে এসে রুশার হাত ধরে কেঁদে ফেলে।
রুশা বাবা রুশাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বলে
“মামনি তুমি এটা কী করেছো??
” বোন কী হয়েছে তোর? হাতের এই অবস্থা কেনো করছিস??
রুশার মা ওড়না দিয়ে হাত বাঁধতে বাঁধতে বলে শান্ত গলায় বলে
“কী হয়েছে সোনা তোর মাকে বল
রুশা ওর মাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদে।
রুশার এমন কান্না দেখে সবাই অবাক হয়ে যায়। যে মেয়েটা সব সময় হাসিখুশি থাকে আজ তার কী হয়েছে যে এইভাবে কাঁদছে।
” বোন কী হয়েছে তোর বল না। এভাবে কান্না করলে আমরা বুঝবো কী করে
“মামনি আমাদের বলো আমি তোমার ভাইয়া আর মা সব ঠিক করে দেবো প্রমিজ। বলো আমায়
বাবার কথায় রুশা বাবার দিকে তাকায় তারপর বাবাকে জড়িয়ে ধরে হেঁচকি তুলতে তুলতে বলে
” বাবা আমি খারাপ না। আমি কারো খারাপ চাই না। আমাকে তোমরা কখনো ভুল বুঝো না। তোমরা ছাড়া আমার কেউ নেই
রুশার বাবা রুশার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে
“আমাদেরও তুমি ছাড়া কেউ নেই। তুমি এভাবে কান্না করলে আমাদের কতটা কষ্ট হয় তুমি বুঝবে নাা
রুশা আবার শব্দ করে কান্না করে
” বাবা আমি এখানে থাকবো না। প্লিজ আমাকে অন্য কোথাও দিয়ে আসো। আমি এখানে থাকলে মরে যাবো প্লিজ বাবা
“ঠিক আছে তোমাকে এখানে থাকতে হবে না
আরও কিছুখন রুশাকে বুঝিয়ে ওনারা চলে যায়। রুশা আরও কিছুখন কান্না করে জামাকাপড় গুছায়। কাল সকালেই এই স্বার্থপর শহর ছেড়ে রুশা অনেক দুরে চলে যাবে। যেখানে জয় নামক বেইমানটা রুশার নাগাল পাবে না।
কাচের চুরির টুকরো গুলো আর ভাাঙা ফোনের টুকরো গুলো কুড়িয়ে জানালা দিয়ে ফেলে দিয়ে সুয়ে পড়ে রুশা। কান্না করার ফলে খুব তারাতারি ঘুম চলে আসে।
” এই বোন ওঠ। কিছুখন পরেই বাস ছেড়ে দেবে
ভাইয়ের ডাকে ঘুম ভাঙে রুশার।
“তুমি যাও আমি পাঁচ মিনিটে আাছি
রেহান চলে যায়। প্রতিদিন সকালে জয়ের ফোনে ঘুম ভাঙে রুশার। কিন্তু আজ থেকে আর কোনো কল আসবে না। কেউ কল দিয়ে ঘুম ভাঙাবে না। ভুল করলে কেউ বকবে না। কেউ আর ভালোবাসি বলবে না। এসব ভেবে রুশার চোখে পানি গড়িয়ে পড়ে। রুশা তারাতারি পানিটুকু মুছে ফ্রেশ হতে যায়।
রুশার বাবা আর ভাই রুশাকে বাসে তুলে দিয়ে চলে গেছে। বাস চলছে আপন গতিতে। আর রুশা জানালা দিয়ে বাইরে প্রকৃতি অনুভব করছে। রুশা বাসের একদম পিছনের ছিটে বসেছে।
কিছুদূর যাওয়ার পরে যাাএি ওঠানোর জন্য বাসটা থামে। এতোখন বাসটা খালি ছিলো কিন্তু এখন লোকজনে ভরে গেছে।
রুশা কিছুখন লোকজনদের দিকে তাকিয়ে আবার বাইরের দিকে তাকায়
” রুশা রুশা করে আমার মাথাটা পুরো খারাপ করে দেবে
হঠাৎ কথাটা রুশার কানে আসতেই রুশা সামনের দিকে তাকায়। সামনের সিটে জয় বসে আছে। আর তার পাশে একটা মেয়ে আছে। রুশা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না।!যদি জয় ওকে দেখে ফেলে। রুশা তো জয়ের সামনে যেতে চায় না।
রুশা ওড়না দিয়ে যতটুকু সম্ভব মুখটাকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করে। যাতে জয় ওকে দেখতে না পায়। জয় আর ওই মেয়েটার কিছু কিছু কথা রুশা শুনতে পাচ্ছে। রুশাকে নিয়েই ওদের মদ্ধে ঝগড়া হচ্ছে। রুশার নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে। ওর জন্য ওর ভালোবাসার মানুষটার সংসারে অশান্তি হচ্ছে। এসব ভেবে রুশার কান্না পায়। খুব কষ্টে কান্না চেপে রাখে।
কিছুখন পরে দেখে ওই মেয়েটা জয়কে ঔষুধ খাইয়ে দেয়। কীসের ঔষুধ খাওয়ালো জয়কে। ওর কি কিছু হয়েছে।
ধুর আমি এসব ভাববো না। যাক না জাহান্নামে তাতে আমার কি।
বাস ঢাকার এসে থামে। সবাই বাস থেকে নেমে যাচ্ছে কিন্তু রুশা বসে আছে। ওই মেয়েটা জয়ের হাত ধরে বাস থেকে নামছে। এসব দেখে রুশার খুব কষ্ট হচ্ছে।
সবাই নেমে যাওয়া পরে রুশা নামে। রাস্তার একপাশে দাড়িয়ে আছে। রুশার চাচাতো ভাই আবিরের রুশাকে নিতে আসার কথা কিন্তু এখনো আসচ্ছে না। রুশা রাস্তার পাশে দাড়িয়ে দেখছে জয় আর ওই মেয়েটা খুব হাসাহাসি করে হাত ধরে যাচ্ছে। রুশা মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
কিছুখন পরে রুশার সামনে একটা বড় গাড়ি থামে। গাড়ির ভেতর থেকে বলে
“এই রুশা গাড়িতে ওঠো
লোকটা একটু জোরেই বলে ফলে জয়ের কান ওবদি কথাটা পৌছে যায়। জয় পেছন ঘুরে দেখে রুশা গাড়িতে উঠছে। জয় কয়েকবার রুশাকে ডাকে কিন্তু তা রুশার কান পযর্ন্ত পৌছায় না। জয় দৌড়েও গাড়ি ধরতে পারে না
” তো রুশা তুমি দেখছি বড় হয়ে গেছো
“তাহলে কী সারাজীবন ছোট থাকবো না কি
” তা বলি নি,, যাই হোক কোন ক্লাসে পড়ো
“ইন্টার 2nd ইয়ার
” ওহহহ গুড
আর কাউ কোনো কথা বলছে না। রুশা জানালা দিয়ে বাইরে দিকে তাকিয়ে আছে। আবির ডাইভ করছে আর একটু পর পর রুশাকে দেখছে। আবিরের অনেক কথা বলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু রুশা বিরক্ত হবে বলে বলছে না
“আবির ভাইয়া
” কিছু বলবে
“আমি একটা ফোন কিনবো
” ওহহ সামনে ভালো একটা শোরুম আছে ওখান থেকে কিনো
“আচ্ছা
আবার দজনই চুপ
আবির গাড়ি থামায়
” কি হলো
“তুমি না ফোন কিনবা
” হুম
রুশা আর আবির দুজনই নেমে যায়। রুশা গাড়ি থেকে নেমে কিছু একটা দেখে দৌড়ে চলে যায়
“রুশা কোথায় যাচ্ছ
রুশা আবিরের কথার উওর না দিয়ে আগের মতো দৌড়াতে থাকে
চলবে