#তুই আমার
#পর্বঃ৭
#Tanisha Sultana
এখনো দাড়িয়ে আছো কেনো যাও চেন্স করে ঘুমিয়ে পড়ো।
আবিরের কথায় রুশা মাথা নাড়িয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।।।।
দেখতে দেখতে আরও চার মাস কেটে যায়৷ এই চার মাসে আবির আর রুশার সম্পর্কটা কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু জয় আর রিয়ার সম্পর্কের কোনো পরিবর্তন হয়নি। রুশা জয়কে অন্য মেয়েদের সাথে টাইমপাস করা ফেরাতে পারলেও রিয়ার সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করাতে পারে নি।
রিয়ার প্রেগন্যান্সির এখন আট মাস। জয় সব সময় ঘর বন্দী হয়ে থাকে কারো সাথে কথা বলে না। ঠিক মতো খায় না। চেহারাটাও পালটে গেছে।
আজ আবির রিয়াকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেছে। আর আবিরের বাবা মা রুশার বাবা মায়ের কাছে বেড়াতে গেছে। পুরো বাড়িতে রুশা একা। রুশা রুম গুছাচ্ছিলো তখন জয় আসে
“রুশা
” কি হয়েছে জয় তুমি এখানে তোমার কি কিছু লাগবে
“না। তোমাকে একবার দেখতে এলাম। যদি কখনো আর দেখতে না পায়
” জয় কি হয়েছে তোমার। এভাবে বলছো কেনো
“শেষ বার আমাকে একটু জড়িয়ে ধরবে রুশা
রুশা বুঝতে পারছে না কি করবে বা বলবে। এর আগে কখনো জয় এমন কথা নলে নি তাহলে আজ কি হলো।
জয় রুশার উওরের অপেক্ষা না করে রুশাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে।
“লাভ ইউ রুশা লাভ ইউ সো much. আমি তোমাকে আবিরের সাথে সয্য করতে পারি না। তুমি শুধু আমার রুশা। জয়ের রুশা।
জয় রুশা কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বেরিয়ে যায়।
জয় চলে যাওয়ার কিছুখন পরে আবির আর রিয়া চলে আসে। আবির রিয়াকে সোফায় বসিয়ে রুশাকে ডাকে
” তোমরা এসে গেছো? ডাক্তার কি বললো বেবি ভালো আছে
আবির বসতে বসতে বলে
“হ্যাঁ বেবি ভালো আছে। তুমি রিয়াকে খাবার দাও
” ভাইয়া আমি পরে খাবো আগে জয়কে দেখে আসি
“তুই একা জেতে পারবি
” হ্যাঁ পারবো।
“আপু আমি যাই তোমার সাথে
” না আমি পারবো। তুই বরং ভাইয়াকে খেতে দে রাস্তায় বলছিলো ওর খুব খিদে পেয়েছে
“ঠিক আছে তুমি হাত মুখ ধুয়ে আসো আমি খাবার বারছি। আপু তুমি জয় ভাইয়াকেও নিয়ে এসো আজ সবাই একসাথে লান্স করবো
” আচ্ছা
রিয়া জয়কে ডাকতে যায়। রুশা কিচেনে চলে যায় আর আবির ওয়াশরুমে
কিছুখন পরে রিয়ার একটা চিৎকার শুনে রুশার বুকের ভেতর মোচর দেয় মনে হয় জয়ের কিছু হয়েছে। রুশা আর আবির তারাতাড়ি করে জয়ের বাসায় যায়।
জয়ের বাসায় গিয়ে দেখে রিয়া ফ্লোরে বসে আছে কোনো কথা বলছে না আর জয় গলায় দরি দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে আসে।
আবির চিৎকার করে আনেক লোকজন জড়ো করে জয়ের বাবা মা তো অঙ্গান হয়ে যায়। রুশার বার বার জয়ের জড়িয়ে ধরতে বলার কথা মনে পড়ছে।
রিয়ার বাবা ম রুশার বাবা মা সবাই চলে এসেছে। জয়কে সাদা চাদরে মুরিয়ে খাটে সুইয়ে রাখা হয়েছে। রিয়া না কোনো কথা বলছে না একটু কাঁদছে। শুধু জয়ের লাশের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
রুশা জয়ের কাছে গিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে বলে
“এই জয় ওঠো না। তোমার রুশা তোমাকে ডাকছে তুমি তোমার রুশার সাথে কথা বলবে না। তুমি তো আবিরের সাথে আমাকে সয্য করতে পারো না তাই না তুমি ওঠো জয় আমি আর আবিরের সাথে থাকবো না।জয় তুমি তোমার সন্তানকে না দেখে আদর না করে কেনো চলে গেলে
আবির রুশাকে জয়ের পাশ থেকে নিয়ে যায়
” আমি যাবো না আবির আমাকে ছেড়ে দাও
রুশার মা রুশাকে ধরে রেখেছে। আর রিয়া পাথরের মতো বসে আছে
“বোন জয়কে নিয়ে যাবো একবার দেখবি না
আবিরের কথায় রিয়া একটু নড়েচড়ে ওঠে আবিরের মা আর রুশার মা রিয়াকে ধরে জয়ের কাছে নিয়ে যায়। রিয়া ধপ করে জয়ের খাটের পাশে বসে পড়ে। জয়ের গালে আলতো করে দুহাত রাখে। তারপর ডুকরে কেঁদে ওঠে। কিন্তু মুখ দিয়ে একটাও কথা বলতে পারে না। অনেক কথা আছে জয়কে বলার কিন্তু জয় শুনবে না। আর রিয়াও বলতে পারছে না। শুধু নিজের পেটের দিকে ইশারা করছে। হযত বলতে চাইছে তোমার সন্তানের কি হবে ও কাকে বাবা বলে ডাকবে। কার কাছে নিজের ছোট্টো ছোট্টো আবদার গুলো করবে?? কার হাত ধরে হাটা শিখবে??
রিয়ার মনের কথাগুলো জয় শুনতে পেলো না। অনেক চাপা কষ্ট নিয়ে পৃথিবীর থেকে বিদায় নিলো জয়। না পাওয়ার কষ্টটা জয়কে বাঁচতে দিলো না।
জয়ের বাবা মাকে শেষ বার জয়কে একটু দেখিয়ে সুন্দর করে কাফনে মুরিয়ে দেওয়া হয় জয় কে। তার পরে চার জনের কাধে চড়ে নিজের আসল ঠিকানায় চলে যায়। যেখানে থেকে আর কখনো ফিরে আসবে না। রুশা রিয়া আবির কাউকে দেখবে না।
জয়কে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রুশাকে আবির রুমে বন্ধ করে রেখেছে। রুশা জানালা দিয়ে জয়ের চলে যাওয়া দেখছে। জয়কে কিছুদূর নিয়ে গেলে রিয়া দৌড়ে জয়ের কাছে চলে কেউ ওকে আটকাতে পারে না। বাবার পায়ের কাছে বসে বলে
” বাবা জয়কে নিয়ে যেশো না। আমি ওকে ছাড়া থাকতে পারবো না। নিয়ে যেও না।
রিয়া আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। পড়ে যায়।
রিয়াকে বাড়িতে নিয়ে আসে। কিন্তু কোনোভাবে সেন্স ফেরে না।
জয়কে কবর দিয়ে রিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়
চলবে