?#তুই_আমার_অন্যরকম_নেশা ?
#পর্ব-৯
#Jannatul_ferdosi_rimi(Writer)
অয়ন ভাইয়া আমাকে কোলে করে আমার ঘরে নিয়ে আসলো আমাকে বেডে বসিয়ে ফাস্টএইড বক্স খুজতে লাগলো
রিমিঃ অয়ন ভাইয়ার অইসব এর দরকার নেই তো আমি ঠিক আছে অয়ন ভাইয়া আমার কথা পাত্তা না দিয়ে বক্সটা খুজতে লাগলো পেয়েও গেলো আমার বুক সেল্ফ এর উপড়ে বক্সটা নিয়ে এসে আমার পায়ের কাছে বসলো(লেখিকা রিমি)
রিমিঃ অয়ন ভাইয়া আমি সত্যিই ঠিক আছি
অয়নঃ হয়েছে বকবক চুপ করবি আমার কাজটা আমাকে করতে দে..(ধমক দিয়ে)
আমি আর কি ধমক খেয়ে চুপচাপ হয়ে পড়লাম এই খাটাশ টার উপরে কথা বলার সাহস নেই অয়ন ভাইয়া আমার পা টা নিজের হাটুতে নিয়ে ওষুধ লাগাতে লাগলো আমি ব্যাথায় আউচ বলে উঠলাম অয়ন ভাইয়া বিচলিত হয়ে বলল.
অয়নঃ কিরে রিমিপরি তুই ঠিক আছিস তো দেখেছিস কতক্ষানি কেঁটে গেছে অয়ন ভাইয়ার চোখ ছলছল হয়ে রয়েছে মনে হচ্ছে আমার ব্যাথা লাগেনি লেগেছে তার এই লোকটা মুখে যাই বলুক আমি তো বুঝি লোকটা আমাকে কত ভালোবাসে আমার যে কত খুশি লাগছে না আমি মাথা নাড়িয়ে না সম্মতি দেই
অয়নঃ একদম মিথ্যে বলবিনা আমি কি বুঝি না? তোর ব্যাথা লাগছে অনেক লাগছে অই পায়েল কে তো মুহুর্তেই অয়ন ভাইয়ার চোখ লালবরন ধারন করে আমি বুঝতে পারছি অনেক রেগে আছে আমি অয়ন ভাইয়াকে শান্ত করার ইনোসেন্ট ফেস করে ঠোট উল্টিয়ে বলি উঠি!
—আর রাগ করে থেকো প্লিয যা হওয়ার হয়েছে প্লিয
অয়ন তার রিমিপরির এই কিউট ফেস দেখে আর রাগ করে থাকতে পারলো না জোড়েই হেঁসে দিলো আমিও হেঁসে দিলাম…
এদিকে…
পায়েল সোজা নিজের ঘরে ঢুকে যা পাচ্ছে তাই ভাংছে মিসেস নিশি(অয়নের মা) এবং মিসেসে লাইবা বেগম( অয়নের দাদি) অনেকবার আটকারনোর চেস্টা করছে কিন্তু পারছে না পায়েল এতো অপমান কখনো হয়নি আর আজ সে রিমির জন্য অপমানিত হলো তাও আবার অয়ন এর থেকে অয়ন পারলো সবার সামনে অপমান করতে এইভাবে পায়েল এইসব ভাবছে আর ঘরের সব কিছু ভাংছে মিসেস নিশি জোড় করে পায়েল কে থামিয়ে কোনোরকম বেডে বসালো পায়েল জোড়ে কেঁদে দিলো আর বলল.
পায়েলঃ আমি এখনি মাম্মি পাপা কে ফোন করবো থাকবো না আমি কালকেই চলে যাবো আর থাকবো না (ন্যাকা কান্না)
মিসেস নিশিঃ মা দেখুন ও কি বলছে এইসব কি বলছিস পায়েল
মা
মিসেয়া লাইবা বেগম এসে পায়েলের মাথা হাঁত বুলিয়ে দিয়ে বলে..
—দিদিভাই দেখ তুই এখানে কেন? এসেছিস??বল? যাতে অই অলুক্ষনে মেয়েটার হাত থেকে আমার দাদুভাইকে বাঁচাতে তাই না?(পায়েল চোখ মুখ মুছে বলে)(লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
—হুহ
মিসেস নিশিঃ তাহলে তুই কেন যাবি? তুই তো জানিস অই রিমিটা একটা মুখপুরি আমার ছেলেকে বশ করেছে তাই আমার ছেলেটা এইরকম করলো এখন তুই যদি চলে যাস তাহলে অই মুখপুরিটা আমার ছেলেকে ফাঁসিয়ে যদি বিয়ে করে নে তাহলে? তাহলে কি করবি তুই সহ্য করতে পারবি?
পায়েল চোখ মুখ মুছে বলে
—আমিও দেখি অই রিমি আমার অয়ন কে কীভাবে আমার থেকে কেড়ে নিতে পারে(বাঁকা হেসে)
মিসেস লাইবা বেগম পায়েলের কপালে চুমু খেয়ে বলে
—এই না হলে আমার দিদিভাই কিন্তু শোন এখন তোকে অয়ন এর চোখে ভালো সাঁজতে হবে বুঝিছিস? কোনোরকম দুর্ব্যবহার করা চলবে না
পায়েলঃ তুমি কোনো চিন্তা করো না দিদুন আমি আছি তো (মুচকি হেঁসে)
এদিকে..
আমি হাঁসি থামিয়ে বলি
—কিন্তু এইভাবে তোমার সবার সামনে কোলে তুলা একদম ঠিক হয়নি সবাই কি ভাব্বে অয়ন ভাইয়া ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলল
–সো আই ডোন্ট কেয়ার তুই এখন রেস্ট নে অনেক রাত হয়ে গেছে এই ভাবে হন্তদন্ত ভাবে চলে গেলো যাহ বাবা এই লোকটা কি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে চলে গেলো মনে হয় আমি ওর বিয়ে করা বউ মানুষ বিয়ে করা বউকেও এইভাবে কোলে নেই না সবার সামনে
অয়ন বাসায় ঢুকেই দেখে পায়েল সোফায় বসে আছে মুহুর্তেই অয়নের মাথায় আগুন ধরে গেলো অয়ন কিছু বলতে যাবে তাই আগেই পায়েল অয়নের কাছে এসে বলল
—-আমি সত্যিই অনেক লজ্জিত অয়ন আমি ভাবতে পারি নি এইসব হবে সো সরি আমি রিমির কাছেও ক্ষমা চেয়ে নিবো প্লিয সরি
অয়ন কিছুটা শান্ত গলায় বলল
–তোমার আগেই বুঝা উচিৎ ছিলো তুমি কার গাঁয়ে হাত দিয়োছো ইডেয়েট এই বলে হনহন করে অয়ন তার ঘরে চলে যায়
পায়েল তার চোখের পানি মুছে বলে
—আজ যত খুশি আমাকে বকে নাও একদিন আমার জন্য তুমি তোমার রিমিপরিকে অপমান করবে সেই দিন আর দূরে নেই ( ডেবিল স্মাইল দিয়ে)(লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
?
?
?
আজ মৌ আপুর হলুদ সন্ধ্যে সবাই খুব খুশি আমিও আজ আমি স্পেশালই অয়ন ভাইয়ার জন্য সাজবো কালকের ঘটনার পরে অয়ন ভাইয়ার প্রতি ভালোবাসা যেন আরো বেড়ে গেলো ইসস??..
মৌ আপু কে স্টেজে বসানো হয়েছে হলুদ লেহেঙ্গা কাঁচা ফুলের গয়না ভারি ম্যাআপ পুরাই কিউটি দেখলাম মৌ আপু তার হাব্বির সাথে লুকিয়ে কথা বলছে হায়রে মনোয়ার ভাইয়ার আর তোর সইছে না যেন
মৌ আপুর শ্বশুর বাড়ি থেকে হলুদ নিয়ে চলে এসেছে আমি সিল্কের হলুদ শাড়ি পড়েছি হাল্কা ম্যাকাপ আর চুলগুলো খোঁপা করে রেখেছি কানে বড় বড় ঝুমকো পড়েছি তখনি রিক এসে বলে
— দি তোকে যা লাগছে না তোর দিক থেকে চোখ সরানো মুসকিল হচ্ছে আমি মুঁচকি হেঁসে দিয়ে বললাম
—তোকেও খুব হ্যান্ডসাম লাগছে তখনি মিনি এসে বলে দেখ দি আমি শাড়ি পড়েছি আমাকে কেমন লাগছে আমি ওর গাল টেনে বললাম
—-তোকে আমার থেকে দ্বীগুন সুন্দর লাগছে রে কিউটি
সবাই ব্যাস্ত নিজের কাজ এ আমি এক কোনায় দাড়িয়ে আছি আমি চোখ জোড়া শুধু একজন কে খুঁজে সে কোথায়? মামি মামা নানু সবাই এসেছে অই শাকচুন্নি টা আসি নাই ওর নাকি শরীর খারাপ আমি বুঝি কি জন্য আসে নাই কিন্তু অয়ন ভাইয়াটা কোথায় অই শাকচুন্নিটার সাথে নাকি উফফ ভাবতে পারছি না এরেই মাঝে অনুভব করলাম কেউ আমার খোঁপায় কিছু পড়িয়ে দিচ্ছি আমি পিছনে ঘুরে দেখি অয়ন ভাইয়া সবসময় এর মতো এইবারেও ক্রাশ খেলাম হলুদ পাঞ্জাবি কালো সাংগ্লাস সিল্ক চুলগুলো সেট করা
অয়নঃ আমাকে দেখা শেষ?
অয়ন ভাইয়ার কথায় লজ্জা পেলাম ইসস ?(লেখিকা রিমি)
রিমিঃ আমি মোটেও তোমাকে দেখছিলাম না (ভাব নিয়ে)
অয়নঃ তাই না?
রিমিঃ হুম তাই আর তুমি পিছনে কি করছিলে
অয়নঃ এই শাড়িতে তোকে যা লাগছিলো না (বাঁকা হেঁসে)
আমি অয়ন ভাইয়ার কথায় অনেক লজ্জা পেলাম
অয়নঃ কিন্তু কিছু এক্টার কমতি ছিলো তাই সেইটা পড়িয়ে দিলাম
আমি অবাক হয়ে খোঁপায়
হাত দিয়ে দেখলাম রজনী গন্ধার মালা
অয়নঃ এইবার তোকে পুরোপুরি মায়াবতী লাগছে
আমি মুঁচকি হাঁসি দিয়ে চলে আসলাম
অয়ন তার হাঁত ভাজ করে বলল..
–হায় লাড়কি হাঁসি আর আমি ফাসি হায়রে আমার মায়াবতী…
হলুদ অনুস্টান শুরু হয়ে গেছে সবাই এক এক করে মৌ আপুকে হলুদ লাগাচ্ছে আমি এইবার হলুদ লাগাতে যাবো আমার সাথে অয়ন ভাইয়াও চলে আসলো লাগাতে অয়ন ভাইয়া আর আমি একসাথে হলুদ লাগালাম মৌ আপুকে। মৌ আপু মুঁচকি হাঁসলো
তখনি একটা ডাক আসলো
–অয়ন দোস্ত
আমিও পিছনে ঘুরে দেখি একটা ছেলে ফরমাল ড্রেসে অয়ন ভাইয়ার বয়সী অয়ন ভাইয়া গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলো
—আদি কেমন আছিস?
—এইতো দোস্ত ভালো
—আসলি তোবে
—তুই ডাকবি আর আমি আসবো আমি যতই হোক উই আর বেস্ট ফ্রেন্ড
তখনি মিঃ আকাশ ( রিমির বাবা) আদির কাছে গেলো
—আরে আদি বাবা কেমন আছো?
—এইতো আংকেল ভালো আপনি?
—এইতো ভালো আসো তোমাকে আমার মেয়েদের সাথে দেখা করাই।
অাদিঃ অবশ্যই
অয়নঃ চল।
আদিঃহুম
বাবাই আর অয়ন ভাইয়া ছেলেটাকে স্টেজে আনলো।
অয়নঃ মিট হার মৌ আপুকে উদ্দ্যেশ্য করে ও আমার মৌ আপু আর ও আমাকে উদ্দ্যশ্য করে বলে এইটা নিশ্চই তোর ছোট বোন? আদি ভাইয়ার এরকম কথায় আমি বিষম খাই মৌ আপু হাঁসতাছে অয়ন ভাইয়া রাগি চোখে আদির দিকে তাঁকিয়ে আছে
অয়নঃ ব্যাটা বজ্জাত জানে রিমি আমার কি তাও ঢং করতাছে
আদিঃ ভাই আমি মজা করতাছি সিরিয়াস হোস নাহ
অয়নঃ আমরা কিন্তু বিসনেজ এর একে অপরের প্রতিযোগি হলেও আমরা বেস্ট ফ্রন্ড
আদিঃ কিন্তু অয়ন আমার থেকে যথেস্ট এগিয়ে
অয়নঃ যাহ তুইও না
আমি এতোক্ষন ওদের ফ্রেন্ডশিপ দেখছিলাম বিসনেজ এ একে অপরের প্রতিপক্ষ কিন্তু কত মধুর সম্পর্ক হঠাৎ আদির ফোন এ একটা কল আসে আদি রিসিভ না করেই বলে
–দোস্ত আমার যেতে হবে
–সেকি যাবে মানে
মৌ আপুঃ হুম ভাইয়া এই মাত্রই তো এলেন
আদিঃ আসলে অনেক আর্জেন্ট কাজ চলে এসেছিলো তাই আর কি আমি আংকেল কে বলে যাচ্ছি
অয়নঃ আচ্ছা সাবধানে যা
আদি ভাইয়া চলে গেলো
সবাই কাপল।ডান্স এ যোগ দিলো
আমি আনমনে হাঁটছি তখনি অয়ন ভাইয়া আমাকে হেঁচকা টান দেয় যার ফলে আমি গিয়ে অয়ন ভাইয়ার বুকে পড়ি
অয়ন ভাইয়া পরম আবেশে আমাকে জড়িয়ে ধরে রিক কে বললো
—মিউজিক স্টার্ট কর
রিক ও করলো
♪agar tul mil jaio jamana chor denge hum♪♪
Huuuu agar tum mil Jaio jamana chor denge hum♪♪♪
অয়ন রিমিকে ঘুরিয়ে ডান্স করছে রিমিতো অবাক অয়ন ডান্স করছে আর কি করার রিমিও তাল মিলিয়ে করছে!!! সবাই মুগ্ধ হয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে রিমি আর অয়ন তখনি পিছন থেকে এক কন্ঠ ভেসে উঠে
—রিমিপাখি আমি এসেছি কন্ঠটা শুনে আমার বুকটা ধুক করে উঠে সবাই কন্ঠটা শুনে পিছনে ঘুরে ফর্সা চেহেরার বেশ লম্বা ফরমাল ড্রেসাপ আমি কাঁপাকঁাপা গলায় বলি উঠি
—আমান তুমি?