#তুই_আমার_অন্যরকম_নেশা
#পর্ব-৩
#Jannatul_ferdosi_রিমি
হতদন্ত হয়ে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি উদ্দেশ্য চৌধুরি বাড়ি… সচারাচর মামা বাড়ি আমি যায় না কিন্তু আজ যেতেই হবে
অয়ন ভাইয়ার এই বাড়াবাড়ি আর সহ্য করা যায় না…
সকালে.. আস্তে আস্তে চোখ খুলে যা দেখি তাতে অবাক হয়ে যাই
মৌ আপু মুখ ঘুমড়া করে আমার পড়ার টেবিলে৷ বসে আছে।আমার জানা মতে৷ মৌ৷ আপুর অনেক খুশি থাকার কথা কেননা৷ ওর মনের মানুষ৷ মনোয়ার ভাইয়ার সাথে ওর বিয়েটা হচ্ছে তাহলে?
আমার ভাবনায় ছেদ ঘটে৷ মৌ আপুর কথায়
মৌ আপুঃ কিরে উঠে গেছিস?
রিমিঃহু কিন্তু তোমাকে এত আপসেট৷ লাগছে কেন??
মৌ আপু মলিন৷ মুখে উত্তর দিলো
— আরে জানিস অজয় কে কারা জানো কালকে সেই পিটিয়েছে ছেলেটা হসপিটালে ভর্তি হয়েছে?
রিমিঃ কি? বলছিস তুই?
মৌ আপু ঃ হ্যা রে আমরা সবাই যাচ্ছি ছেলেটা কে।দেখতে তুই যাবি তো?
এইবার বুঝতে পারছি এইটা কার কাজ এই।লোকটাকি৷ সাইকো নাকি বুঝি না নাহ আমার এইবার এর একটা বিহিদ করতে হবে (মনে মনে)
মৌ আপুঃ কিরে কি ভাবছিস?
রিমিঃ হ্যা বল
মৌ আপু ঃ আমি বলছি তুই,যাবি তো?
রিমিঃ নাহ রে আপু আসলে আমার ভার্সিটিতে ইম্পোর্টেন্ট ক্লাস আছে তো তাই( আসলে আমার চৌধুরি বাড়িতে অনেক হিসেব বাকি আছে)(মনে মনে)
মৌ আপু ঃওহ আচ্ছা তুই তাহলে যা আমরা সবাই হসপিটালে যাচ্ছি।
রিমিঃ আচ্ছা।
রিমি একটা ব্লাক কুর্তি ব্লাক লেডিস জেন্স আর গলায় একটা স্কাপ পেচিয়ে নেয় আর হাল্কা লিপ্সটিক মুখে কোনো মেকাপ নেই
বেশ এইটুকে তেই রিমি কে সাধারণ এর মধ্যে অসাধারণ লাগছে
রেডি হয়ে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি
অয়ন আজকে ব্লাক শার্ট এন্ড ব্লাক সুট পড়েছে সিল্ক চুল গুলো সেট করে নিয়েছে
বেশ অয়ন রেডি উদ্দেশ্য অফিস অয়ন নিজের ঘর থেকে যেই না বের হলো অমনি কেউ অয়ন৷ কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে
অচেনাঃ বলো তো আমি কে?
অয়নের মধ্যে একটা বিরক্তি ভাব চলে আসে কেননা সে জানে ব্যাক্তিটি কে?
অয়ন পিছনে না ঘুরেই বলে
—-পায়েল তুমি?
আমার গাড়িটা চৌধুরি প্যারস এর সামনে নামে
আমার মামার বাড়িটা আমাদের বাড়ির থেকেও বড় বা সমান চারদিকে সুন্দর ফুলের বড় বাগান পাশেই আম ও কাঠালেরও বাগান মোট কথা একদম রাজপ্রাসাদ তো কি হয়েছে আমাদের খান বাড়িও কম না
সদর দরজা প্রবেশ করার সাথে সাথেই চোখে পড়লো আমার হিটলার নানু,আর মামী কি নিয়ে যেন গল্প করছে আর হাঁসছে
আমাকে দেখার সাথে সাথেই ভুত দেখার মত চমকে উঠলো আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ঢুকলাম(জানি এখন এরা হিটলার গিরি শুরু করবো
নানুঃ অই মাইয়্যা তুই এখানে কেল্লাগা?
মামিঃ হ্যা তুই এখানে কেন?
রিমিঃ কেন আমার কি এখানে আসা বারণ?আমার মামার বাড়ি আমি আসতে পারি
?
নানুঃ বারণ করার ক্ষেমতা থাকলে কি আর করতাম নাহ
মামিঃ তা যা বলেছেন সকাল সকাল অলুক্ষুনির মুখদর্শন হলো আল্লাহ যানে সারাটাদিন কেমন যায়৷ দূর আমাদের ভালো। মুড টাই নস্ট হয়ে গেলো
ওদের কথা শুনে অনেক খারাপ লাগেলেও তা মুখে প্রকাশ করলাম নাহ কেননা রিমি তার দুর্বলতা দেখাতে চায়না তাই শক্তমুখে জবাব দিলাম
—-হয়েছে তোমাদের বকবকানি এইবার আমি যাই
এই বলে সিরির দিকে হাঁটা ধরলাম
নানুঃ আরে অই ম্যাইয়া কই যাস
রিমিঃ তোমার মতো হিটলার বুড়িকে বলার প্রয়োজন করি না এই বলে উপরে চলে আসলাম
নানু রিমি কে কিছু বলতে যাবে তার আগেই মামিমা ইশারায় মানা করলো
নানু; তুমি দেখছোনি কি শয়তান মাইয়্যা
মামিঃ আরে মা যাক অইখানেই তো আসল মজা
নানুমা মামি আর সংকেত বুঝতে পেরে একটা শয়তানি হাঁসি দিলেন
আমি উপরে উঠে গেলাম উদ্দেশ্য খাটাশ টার ঘর এখনো মেইবি অফিসে যায়নাই
খাটাশ টার ঘরের সামনে গেলাম আর যা দেখলাম তাতে মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না
পায়েল আপু(অয়ন ভাইয়ার খালাতো বোন চট্টগ্রামে থাকে নিজ ফ্যামিলির সাথে একজন সফটয়ার ইঞ্জিনিয়ার )
অয়ন ভাইয়াকে জড়িয়ে গালে কিস করলো
আর দাঁড়াতে পারলাম না চলে এলাম অয়ন ভাইয়া যে এইরকম জানা ছিলো না আমার প্রতি তার কন্সান্ট শুধুমাত্র কাজিন হিসেবেই
অয়ন ভাইয়া নিজের বাসায় এইসব করে
আমি দৌড়াতে দৌড়াতে নিচে চলে আসলাম আমাকে এইভাবে আসতে দেখে আমার হিটলার মামি আর নানু মিটমিট করে হাঁসতাছে মনে হয় তারা আগে থেকেই জানতো
আমি দরজার কাছেই যেতেই নানু মা প্রশ্ন ছুরে মারে।।
নানুঃ কি গো মাইয়্যা আরেক্কন থাইক্যা যা এই আইলি আর এই যাইবিগা?
আমি মুচকি হেঁসে জবাব দিলাম
–তোমাদের মতো হিটলার দের বাসায় থাকার কোনো ইচ্ছা নাই
বুঝতে পারছি উত্তর তাদের মন মতো হয়নি
গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম উদ্দেশ্য পুলিশ স্টেশন
আমার গাড়ি পুলিশ স্টেশন এর সামনে নামলো
আমি যেতেই কন্সটেবল চাঁচার সাথে দেখা তিনি আমাকে খুব ভালোবাসেন।।
কন্সটেবল চাঁচাঃআরে রিমি মামুনি তুমি কেমন আছো?
রিমিঃ এইতো চাঁচা ভালো তা আমাকে দেখি ভালোই মনে রেখেছো?
কন্সটেবলঃতোমাকে মনে রাখবো নাহ তো কাকে রাখবো তুমিই বলো তুমি যা সাহসের কাজ করেছিলে
রিমিঃ আচ্ছা চাঁচা তোমার একটা হেল্প লাগবে?
—-কি হেল্প?
—আমানের রেকর্ডস আমাকে একটু দেখাতে পারবা?।
–বড় সাহেব এর কাছে আছে দাঁড়াও আমি নিয়া আসতাছি
কিচ্ছুক্ষন এর মধ্যে কন্সটেবল চাঁচা আসলো হাতে একটা ফাইল
—এইযে মা লও
—-ধন্যবাদ চাঁচা অনেক ধন্যবাদ
ফাইলটা চেক করলাম আমানকে মিরপুর থানায় ট্রান্সপার করার পর ১ দিন পরেই ওর জামিন হয়ে যায় আমি হতবাক
রিমিঃ চাঁচা ওর জামিনটা হলো কীভাবে এতগুলো খুন করার পরেও?
কন্সটেবল চাঁচাঃ মারে সবই টাকার খেলা
আমি ধপ করে বেঞ্চিতে বসে পড়লাম তার মানে সত্তিই আমান আসছে আর আমান আসছে মানে অনেক বড় ঝড় আসছে
কন্সটেবল চাঁচাঃ কি হয়েছে মা তুমি ঠিক আছো তো
আমি অসহায়ের দৃসটিতে তাকিয়ে বললাম
—এতো প্ররিশ্রম সব বিফলে গেলো চাঁচা
—কি আর করার মা তুমি সাবধানে থেকো মা ও কিন্তু তোমারই সর্বপ্রথম ক্ষতি করার চেস্টা করবো
রিমিঃ সেইটা তো আমি জানি আমান নিজেই বলল কিন্তু আমার একটাই ভয় ও যদি অয়ন ভাইয়ার সাথে কিছু করে তখন?(মনে মনে)
….
আমান রকিং চেয়ারে বসে আছে হাতে ড্রিংক
—বেইবি তুমি আমাকে খুজতে পুলিশ স্টেশনেও চলে গেলে ঠিক আচ্ছা তোমার যখন এতোই তাড়া তা হলে আমি খুব তাড়াতাড়ি আসছি(ডেবিল স্মাইল দিয়ে)
চৌধুরি বাড়িতে..
অয়নঃ এইটা কি করলে তুমি?
যপায়েলঃকেন একটা কিস ই তো করলাম ?
অয়নঃতাও করবা না গট ইট ( বিরক্তি ভাব নিয়ে)
পায়েলঃ অয়ন এইভাবে তুমি বলতে পারলা (ন্যাকা কান্না করে) আমি আজকেই আসলাম আর তুমি
অয়নঃ সো কি হয়েছে এইভাবে কিস করতে হবে? ?
পায়েলঃ একটা কিস ই তো করলাম তার জন্য এইভাবে বললা
অয়নঃ আমাকে কিস করার অধিকার শুধুমাত্র আমার রিমি পরির(মনে মনে)
—আমাকে এখন অফিসে যেতে হবে সো বাই
পায়েলঃ আমি এতদিন পর আসলাম আর তুমি চলে যাবে
অয়নঃ তুমি এসেছে তো কি হয়েছে? আমি আমার কাজের দিকে কোনো গাফলতি করতে পছন্দ করিনা
এই বলে অয়ন চলে যায়
এদিকে পায়েল রাগে ফুঁসছে
পায়েলঃ আমাকে এতবড় অপমান একবার যখন চলেই এসেছি তখন এমন ব্যবস্থা করবো যাতে আমার জন্যই তুমি সব কিছু বাদ দিতে পারো তোমার জীবনে শুধুমাত্র আমিই থাকবো(শয়তানি হাসি দিয়ে)।
হতাশ হয়ে পুলিশ স্টেশন আনমনে দাড়িয়ে আছি অনেক বড় বিপদ আসতে চলেছে এইটা বুঝতে পারছি হঠাৎ কারো ডাকার অাওয়াজ এ ভাবনায় ছেদ পড়ে
—কিরে কি করছিস তুই? এখানে
পিছনে ঘুরে দেখি….
চলবে কি?