?#তুই_আমার_অন্যরকম_নেশা ?
#পর্ব-১৬
#Jannatul_ferdosi_rimi(Writer)
রিমির ভালোবাসি কথাটা বলেছে ব্যাস এইটুকুই যথেস্ট আর কি লাগে অয়ন চোখ খুলে ফেলল
অয়নঃ চোখগুলো ঝাপসা হয়ে আসছিলো হয়তো নিজের শক্তি হারিয়ে ফেলছিলাম কিন্তু না এখন আমাকে উঠতেই আমার রিমিপরীটার জন্য হলেও উঠতে হবে
অয়ন অনেক চেস্টা করে উঠে দাঁড়ালো মাথা থেকে অনবরত রক্ত পড়ছে সেদিকে অয়নের কোনো হুশ নেই তার যেকরেই হোক তার রিমিপরীকে ফিরিয়ে আনতে হবে তার চোখ থেকে আগুন বের হচ্ছে যেন সব কিছু ধংশ করে দিবে অয়ন খেয়াল করলো দরজার কোনায় রিমির শাড়ির আঁচলের কিছুটা অংশ পরে আছে আমান যখন রিমিকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছিলো তখন রিমির শাড়ির আচঁল দরজার সাথে লেগে কিছুটা ছিড়ে যায় অয়ন পরম যত্নে সেই অংশটুকু তুলে নেয় এবং মাথায় বেঁধে নেয় যাতে একটুও হলেও রক্ত পড়া কমে আর এতে তার রিমিপরীর ছোঁয়াও আছে অয়ন ফোন খুঁজতে থাকে এবং পেয়েও যায় সে তার স্পেশাল গার্ড (রুপকে) কল করে
।
রুপ একটা মেয়ের সাথে ফ্লার্ট করছিলো
রুপঃ জানো তুমি পৃথীবির সবথেকে কিউটি তুমি এতো কিউট কেন মুন?
মুনঃওমা সত্যিই? হাও সুইট
মেয়েটা লজ্জা পেলো
রুপঃ হ্যা তোমাকে দেখলেই আমার দাদি থুরি নায়িকা শাবানার কথা মনে পড়ে?
মুনঃ?কি বললে?
রুপঃ না সরি তোমাকে দেখলে আমার দিপিকার কথা মনে পড়ে ?
মুনঃ তাই?(লজ্জা পেয়ে)
রুপঃ ইসশ চাপা মাড়ছি?তোমারে দেখলে শাওড়া গাছের পেত্নির কথা মনে পড়ে (মনে মনে)
রুপ মেয়েটার সাথে কথা বলছিলো তখনি তার ফোনটা বেঁজে উঠে
রুপ ফোনের স্কিনে তাঁকিয়ে হতাশ হয় কেননা এটা তার বসের নাম্বার অয়নের বেঁচারাকে খালি কাজ করায় একটু ফালর্ট করার টাইমও পায়না অয়ন বেশ বুঝতে পেরেছে
রুপঃ এক্সকিউজ মি
মুনঃ সিউর
রুপ একটু সাইডে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করে
সাথে সাথে অয়ন রাগী গলায় বলে
—এতোক্ষন লাগে? ফোন ধরতে?
–সরি বস একটু বিজি ছিলাম
—এতো কি কাজ করিস হ্যা জানিস কি হয়েছে
—আসলে স্যার আপনিই তো আমাকে যেতে বলছিলেন..
—জাস্ট শ্যাট অ্যাপ তোকে যেটা বলছি সেটা কর এখানে অনেক ঝামালা হয়েছে
রুপ খানিক্টা বিচলিত হয়ে বলে
—বস আপনার কন্ঠ এমন লাগছে কেন এমন নয়তো আপনি যেইটা আন্দাজ করেছিলেন সেইটা হয়েছে?
অয়ন বাঁকা হেঁসে বলে
—হুম কিন্তু সোজাসোজা যে আমাকে মেরেই দিবে সেইটা ধারনার বাইরে ছিলো
—বস আপনার বেশি লাগেনি? তো
—নাহ এখন আমি ঠিক আছি তুই গুপ্ত গার্ড এর থেকে খবর নে যে ও কাজ টা করতে পেরেছে নাকি
—কোনো চিন্তা করবেননা আপনি তো এইসব আগের থেকে আন্দাজ করতে পেরেছিলেন তাই আমরা ফার্ম হাউজ এর বাইরে৷ গুপ্ত গার্ড নিয়োজিত করেছিলাম ওরা এতোক্ষনে মেইবি আমানকে ফলো করে ফেলেছে
—কিন্তু ও যদি রিমির কোনো ক্ষতি করে সেইটা চিন্তার
—স্যার কোনো চিন্তা করবেননা
আমাদের গার্ডরা আছে তো আর এখন আমরা সহজেই আমানের আস্তানা পেয়ে যাবো
—গুড তাড়াতাড়ি আয় আমাদের এখনি বের হতে হবে আমান নিজেকে একটু বেশিই চালাক মনে করে কিন্তু এই অয়নের বুদ্ধির সাথে আমান পেরে উঠবে না (বাঁকা হেঁসে)
কিন্তু অয়নের মাথায় একটা চিন্তা আমান কিসের বোনের কথা বলল তার তো কোনো মেয়ের সাথে রিলেশন ছিলোনা সে জীবনে একজনকেই ভালোবেসেছিলো সে একমাত্র তার রিমিপরী নাহ অয়ন এর মাথার উপর দিয়ে সব যাচ্ছে অয়ন তাড়াতাড়ি করে বেড়িয়ে পড়ে সে সবাইকেই অজ্ঞান অবস্হায় পায় কিন্তু সে অবাক হয়না কেননা এইটা তার ধারনায় ছিলো দরজার কাছে এসে অবাক অয়ন অফুস্টুস্বরে বলে উঠে
–পায়েল তুমি৷ আর তোমার সাথে উনিই বা কে(মেঘলা কে উদ্দেশ্য করে) আর তোমরা এই ঠিকিনা পেলেই বা কোথায়
পায়েলঃ অয়ন আমার কথাটা একটু শুনো অনেক জরুরি কথা আছে যেইটা শুনা তোমার জন্য অনেক জরুরি
অয়নঃমানে?
মেঘলাঃ তাহলে আমিই প্রথমে বলি
?
আস্তে আস্তে চোখ খুলে নিজেকে একটা চেয়ারে বাঁধা অবস্হায় পাই বোঝার চেস্টা করছি আসলে আমি কোথায়?তখনি মনে পড়ে গেলো অয়ন ভাইয়ার কথা হ্যা কোথায় আমার অয়ন ভাইয়া আমান ওর সাথে আর কী কী করেছে?আমি জোড়ে চিৎকার করে উঠি
—অয়ন কোথায় তুমি? অয়ন অয়ন অয়ন
চিৎকার করে কাঁদতে লাগলাম তখনি কারো হাঁসের আওয়াজ এ পিছনে ঘুরে দেখি আমান আমার দিকে বাঁকা হেঁসে বলে
—বেইবি তুমি এতো অয়ন অয়ন করো কেন একটু আমান আমানও করতে পারো যতই হোক আমিও তোমাকে ভালোবাসতাম হয়তো অয়নের থেকেও বেশি কিন্তু তুমি সেইটা বুঝলে না শেষের কথাটা আমান অনেকটায় রেগে বলল
আমি আমানের দিকে ঘৃনার দৃস্টি নিক্ষেপ করে বললাম
—ভালোবাসা? লাইক সিরিয়াসলি?(তাচ্ছিল্যের সুরে) তুমি বুঝো ভালোবাসা মানে কি? বুঝো?
আমান বাঁকা হেঁসে বললো
—তুমি মনে হয় অনেক বুঝো?
আমান আমার দিকে এসে হাটু গেড়ে বসে আমার গালে হাঁত দিয়ে বলল
—তুমি তো কোনোদিনও ভালোবাসা বুঝলে না আমাকে ভুল বুঝে গেলে এই রিমিপাখি তাঁকাও না আমার দিকে
আমি আমান এর থেকে অন্যদিকে ঘুরে তাঁকিয়ে আছি প্রচুর ঘৃনা লাগছে ওর উপর
আমান হতাশ হয়ে
বলল
–জানো অনেক ভালোবাসতাম তোমাকে হয়তো এখনো শেষের কথাটা আস্তে বললো তুমি কী কোনোদিন আমাকে বুঝবে না?সেইদিন আমার কথাটা শুনার একটুও প্রয়োজন মনে করলে না?
আমি আমানের দিকে তাঁকিয়ে বলি(লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
—তোমার কথা শুনবো একজন খুনীর কথা? তুমি আজকেও আমার অয়নকে আঘাত করেছো আমারি চোখের সামনে বলেই কাঁদতে লাগলাম আমানের চোখ মুহুর্তেই লালা বর্ন আকার ধারণ করলো আমান ঠাসসস করে আমার গালে চর বসিয়ে দিলো তারপর আমার গাল চুলের মুঠি ধরে বলে
—কি বললে আমি খুনী?আর তোর অয়ন সাধু
আমার খুব কস্ট হচ্ছে তাও বললাম
–হ্যা তাই আমার অয়ন সাধুই তোমার মতো খুনীনা
আমান আমার কথা শুনে জোড়ে জোড়ে হাঁসতে লাগলো এই হাঁসির মানে আমি বুঝলাম না
আমান গাল চেপে ধরে বলে
—আজ যদি অয়ন মরে আমি প্রাউড ফিল করবো নিজেকে খুনী বলতে কেননা আমি নিজের বোনের মৃত্যর প্রতিশোধ নিয়েছি তাই আমার কোনো অনুশোচনা নেই
আমান এর কথার কোনো মানেই আমি বুঝলাম না কি বলতে চাইছে কি ও?
আমান আমাকে ছেড়ে দিয়ে পাশের টেবিল থেকে একটা ছবির ফ্রেম বের করলো আমার দিকে এগিয়ে আনলো দেখলান খুবই মিস্টি একটা মেয়ের ছবি পায়েল আপুর বয়সের হবে
আমান মেয়েটার ছবি দেখিয়ে আমাকে বলল
।
—জানো ও আমার বোন ছোয়ামনি আমার আদরের ছোট্ট বোন এই পৃথিবীতে
আমার বাবা আর আমার ছোট্ট বোনটাই ছিলো খুব আদরের ছিলো ১বছর আগে আমি আর বাবা বাংলাদেশে ছিলাম তখন ও আমেরিকায় থাকতো অইখানে থেকে পড়াশোনা করছিলো সেখানে ওর একটা ছেলের সাথে রিলিশন হয় কিন্তু ছেলেটা আমার ছোট্ট বোনটাকে ধোঁকা দেয় আমাএ বোন খুব নরম স্বভাবের ছিলো আঘাত সহ্য করতে পারিনি তাই সুইসাইড করেছিলো এই বলে আমান হাটু গেড়ে বসে কেঁদে দেয় আমি শকড এই প্রথম আমানকে কাঁদতে লাগলাম হয়তো কলিজার টুকরো ছিলো সে আমানের (লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
রিমিঃ আমান ?
আমান চোখমুখ শক্ত করে আমার দিকে তাঁকিয়ে বলে
—জানো ছেলেটা কে ছিলো??অয়ন চৌধুরি।
আমার পা থেকে যেন মাটিটাই সরে গেলো আমান এইসব কি বলছে অয়ন না না আমার অয়ন এমন না এইটা হতেই পারেনা
রিমিঃ তুমি মিথ্যে বলছো আমার অয়ন এমন না তোমার ভুল হচ্ছে
আমান তাচ্ছিল্যের হাঁসি দিয়ে বলে
–আমার ভুল হচ্ছে ওকে ওয়েট এই বলে আমান আমার দিকে একটা চিঠি এগিয়ে দেয় আমি চিঠি খুলে দেখলাম
প্রিয় দাভাই,,
তুই যখন এই চিঠিটা পড়বি তখন হয়তো আমি এই পৃথিবীতে থাকবো না চলেযাবো না ফেরার দেশে কি করবো বল আমাকে যে যেতেই হবে না হলে সমাজে তুই বাবা মুখ দেখাতে পারবিনা কেননা আমি অয়নের এর সন্তানের মা হতে যাচ্ছি কিন্তু সে নাকি আমাকে ভালোইবাসে না তোকে আমার একটা ফ্রেন্ড এর ছবি দেখিয়েছিলাম না সেই হলো অয়ন আমি তাকে অনেক ভালোবাসি কিন্তু সে আমার ভালোবাসার মর্যাদা দিলোনা আমি এখন সমাজে মুখও দেখাতে পারবোনা তাই আমার চলে যাওয়ায় শ্রেয় এই তুই কিন্তু একদম মন খারাপ করবিনা বাবার খেয়াল রাখবি নিজে শক্ত থাকবি সর্বশেষে বলতে চাই তোদের অনেক মিস করবোরে ভালো থাকিস!!!। (লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
ইতি।
তোর আদরের বোন
ছোয়ামনি
চিঠিটা পড়ে যেন আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম মুখ থেকে কথায় বের হচ্ছেনা কী করবো আমি?কি বা বলার আছে।।
আমান পরমযত্নে চিঠিটা নিজের হাতে নিয়ে বললো
জানো এটাই আমার প্রিয় বোনটার শেষ চিঠি তাই পরমযত্নে আঘলে রাখি
আমান চোখমুখ শক্ত করে বলে
—অই অয়ন চৌধুরি আমার বোনের খুনী।।
নাহ আমি ছোয়ার মৃত্যর জন্য দায়ী নাহ আওয়াজটা শুনে পিছনে ঘুরে আমান আমিও ছলছল চোখে তাঁকায় আমান অবাক হয়ে যায়
রিমিঃঅয়ন….
অয়ন এর সাথে পায়েল আপু এসেছে এমা আমি কাকে দেখছি এতো মেঘলা আপু (আমানের বেস্ট ফ্রেন্ড) আমানকে যখন এরেস্ট করেছিলো তখন মেঘলা আপুও আমার কাছে এসেছিলো আমার সিকারিত্ত ফেরত নিতে কিন্তু আমি শুনিনি
আমান অবাক হয়ে বলে
—অয়ন তুমি এখানে কীভাবে আর মেঘ তুই এখানে?
অয়নঃ কেন আশা করোনি বুঝি?তুমি একটা ভুল ধারনা পুষে রেখেছো ছোয়া শুধুই আমার ভালো ফ্রেন্ড ছিলো আর কিচ্ছুনা এর পিছনে অন্যকেউ আছে।।
মেঘলাঃ শুধু তাই নয় রিমিকেও তোমার মতো ভুল বুঝানো হয়েছে
আমার সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছি অয়ন ভাইয়া আর মেঘলা আপু কি বলতে চাচ্ছে।।
।
আমানঃ মানে?
পায়েলঃ আমি জানি এইসব পিছনে কে আছে
।
এইসব এর পিছনে আমি আছি আওয়াজটা শুনে সবাই দরজার দিকে তাঁকায় আমি অবাক দৃস্টিতে তাঁকিয়ে আছি কেননা
চলবে??