তুই আমারই থাকবি part-18

0
2316

#তুই_আমারই_থাকবি?
#Esrat_Jahan?
#Part_18
!
‘-তারপর আমি রেগে দিলাম এক চিৎকার। আর সেই চিৎকারে উনার ঘুম গেলো ভেঙ্গে।উনি লাফ দিয়ে উঠে বসলেন।বেড-সাইট ল্যাম্পের আলোতে দেখলাম,উনি সেই স্যুট-প্যান্ট পরেই আছেন।যেগুলো পরিধান করে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে গিয়েছিলেন।
!
-আর আমিতো রেগে বোম হয়ে আছি।এসব কোনো কাজ?আমার ঘুমিয়ে থাকার সুযোগ নিয়ে ব্যাটা এমন একটা কান্ড করলো,ভাবা যায়?যে কিনা দুদিন আগেও ভার্জিনিটি নিয়ে একটা কান্ড করলো।এখন কোথায় গেলো, সেই ভার্জিনিটি?
!
-আর অসময়ে ঘুম ভাঙ্গলে সবারই মেজাজ খারাপ হয়,তার উপর আবার যদি ঘুম থেকে উঠে এসব অসভ্যতামি দেখতে হয়, তাহলে মনটার কী অবস্থা হওয়া উচিৎ সেটা যার সাথে এরকম হয়েছে সেই বুঝবে!তাই আমিও গেলাম রেগে।আর উনি?উনি চোখ কচলাতে কচলাতে জিজ্ঞেস করছেন,হোয়াট?কী হয়েছে?এত জোরে চিৎকার করলে কেন?
!
-বুঝো কান্ড!আমাকেই জিজ্ঞেস করছে,কী হয়েছে!প্রচণ্ড বিরক্ত হয়ে বললাম,আপনার সমস্যাটা কী?
!
-মানে?আমার আবার কি সমস্যা থাকবে?
!
-ওহহ…আপনি বলতে চাইছেন,আপনার কোনো সমস্যাই নেই!
!
-উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,নো।আই এম অলওয়েজ অলরাইট!আমার কোনো প্রবলেমই নেই।
!
-তাহলে জেনে রাখুন, আপনি তাহলে লুচুগিরি সমস্যায় আক্রান্ত!
!
-উনি চোখ বড় বড় করে বললেন,কিহ?লুচুগিরি সমস্যা?
!
-জ্বি।আপনি যে আস্ত একটা লুচু,আজ সেটা ভালোভাবে বুঝতে পারলাম।রেগে
!
-হোয়াট দ্যা হেল আর ইউ টকিং? অলওয়েজ তোমার এসব পকপকানি আমার অসহ্য লাগে।আজাইরা ফাউল কথা তুমি এসব কোথা থেকে শিখে আসো?রেগে
!
-ওহহ….আমি বাজে কথা শিখে আসি?তাহলে আপনি এসব লুচুগিরি কোথা থেকে শিখে আসেন?নিশ্চয়ই ওই গুণ্ডাপাণ্ডার সাথে থেকে এগুলোও রপ্ত করে এসেছেন।
!
-তুমি কিন্ত বেশী কথা বলছ!আমি মোটেই লুচু না!
আর আমার ফ্রেন্ড’রা এমন না, বুঝলে!আমার ফ্রেন্ড সার্কেল এমন খারাপ না।সো তুমি কারো সম্বন্ধে না জেনে উল্টাপাল্টা কমেন্ট করতে পারো না।সেগুলো আমি মোটেই মেনে নিবো না।গট ইট!রেগেমেগে
!
-তাহলে আপনি আমার সাথে এমন করলেন কেন?আমার ঘুমিয়ে থাকার সুযোগ নিয়েছেন আপনি!আপনার মন মানসিকতা এতই ছোট…..
!
-শাট আপ!ননসেন্স, আমি কোনো সুযোগ নেইনি।ভাব নিয়ে
!
-ওহ..তাহলে আমার পেটের মধ্যে কে ঘুমিয়ে ছিলো?রেগে
!
-উনি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললেন, আমি, আমি ঘুমিয়েছি।
!
-সেইতো,,,,,এখন তো প্রুফ হলো।স্বীকার করলেন অবশেষে চাপে পড়ে!
!
-এখানে স্বীকার করার কিছুই নেই।আমি আমার বউয়ের সাথে যা ইচ্ছা তাই করবো।একলিস্ট,,আমি কারো অনুমতির ধার ধারি না।ভাব দেখিয়ে
!
-এদিকে প্রচণ্ড ঘুমে আমার চোখ বুজে আসছে।আর উনার ফাউল ডায়লগ শুনে মেজাজ চরম আকার ধারণ করলো।আমি নিজেকে শান্ত রাখার জন্য চুপ রইলাম।
!
-চলো,শুয়ে পড়ো।আর তোমার পেটটা না সফট বালিশের মতো। সো এখানেই ঘুমুবো আমি।হাই তুলতে তুলতে
!
-কখখনোই না……..রেগে
!
-অভিয়াসলি হ্যাঁ!
!
-আপনি আমার উপর জোর করতে পারেন না।আর আপনার চিন্তাভাবনা এত চিপ কেন?
!
-এই তুমি কী সারাদিন বাংলা সিনেমা দেখ?
!
-কেন?সন্দেহ নিয়ে
!
-ডেফিনেটলি তুমি বাংলা সিনেমা দেখো, নাহলে এই মাঝরাতে বাংলা সিনেমার কাহিনী করছো কেন?
!
-আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,আমার প্রচুর ঘুম পাচ্ছে।আপনি আপনার ডলটাকে নিয়ে ঘুমান প্লিজ।আমার সাথে এমন করবেন না।
!
-তোমার কথামতোই সব হবে নাকি?
!
-প্লিজ,এসব বন্ধ করেন।আমার মাথাব্যথা করছে,আমি ঘুমুতে চাই!
!
-উনি কিছুক্ষণ কী যেন ভাবলেন।তারপর আমার দিকে তাকিয়ে জড়ানো গলায় বললেন,তোমার কাছে দুটো অপশন আছে!এ দুটোর যেকোনো একটা তুমি চয়েজ করতে পারো।আমার এতে আপত্তি নেই,বাট মেনে না নিলে আর কোনো অপশন নেই।আমি যা বলবো তাই হবে!
!
-জীবনেও না!
!
-তাহলে অপশন নিতে রাজি?
!
-হুম,বলেন।
!
-এইতো, গুড গার্ল!তবে বলি এবার!
!
-আমিও ওনার অপশন শুনার জন্য রেডি হলাম।খোদা জানে,কি শয়তানী চলছে,এর মনে!শান্তিতে আর বেশিদিন বাঁচবো বলে মনে হয় না।বিয়ে করলে যেএতো কাহিনী হয়,সেটা যদি আগে জানতাম তাহলে সারাজীবন কুমারী হয়েই কাটাতাম।বিয়েই করতে চাইতাম না।কিন্ত যাকে বলে ভাগ্য……..
!
!
!
!
!
-সো অপশন নাম্বার ওয়ান:আমি তোমার পেটে মাথা রেখে ঘুমুবো,তুমি কোনো বাংলা সিনেমার কাহিনী করতে পারবেনা।এর ফলে যা হবে তা হলো,তুমি বেডে ঘুমাতে পারো নিশ্চিন্তে।
আর অপশন নাম্বার টু:ফার্স্ট অপশনে যদি রাজি না থাকো তাহলে বালিশ নিয়ে সোজা ফ্লোরে।বেডে কোনো জায়গা নেই!ঠান্ডা গলায় বললেন উনি!
!
-আমি ক্লান্ত হয়ে বললাম,সেকেন্ড অপশন! আমি সেকেন্ড অপশন নিলাম।বুঝলাম উনার সাথে অযথা তর্ক করে লাভ নেই।কথায় কথা বাড়ে।আর এদিকে মাথা ফেটে যাচ্ছে যন্ত্রণায়।কাউকে কিছু বলতেও পারছিনা।তাই এটাই বেটার।লুচুর সাথে থাকার চেয়ে ফ্লোরে নির্ঘুম রাত কাটিয়ে দেওয়া অনেক বেশী ইজি!
!
-তুমি নিজেকে চালাক ভাবো, তাই না?রেগে
!
-চালাক ভাবার কিছু নেই।আপনার থেকে দূরত্ব মেইনটেইন করা দরকার। এমন মানুষ আমার পছন্দ না।
!
-ওকে,গুড লাক।ফ্লোরে গিয়ে ঘুমাও।যাকে যেখানে মানায় সেখানেই থাকো।বাঁকা হেসে!
!
-আমি আর কথা না বাড়িয়ে কাঁথা,বালিশ নিয়ে ফ্লোরে বিছানা করলাম।মাইগ্রেনের ব্যাথা আমায় জ্বালিয়ে খেলো।
!
!
!
-উনার বোধহয় আমার শান্তি সহ্য হয় না।তাই ফ্যান অফ করে এসি অন করলেন।গুন্ডার শরীরে এতই গরম যে,এসির টেম্পারেচার একেবারে কমিয়ে দিলেন।আমার তো ঠান্ডায় জমে যাওয়ার অবস্থা।মনে হচ্ছে,রুমে বরফ পড়ছে,এক্ষুণি তুষারঝড় শুরু হবে।
!
!
আমি কাঁথা গায়ে দিয়ে সিঁটিয়ে রইলাম।মাথার যন্ত্রণা ক্রমেই বাড়ছে,তার উপর এই অত্যাচার।এমন সিচুয়েশনে আমার ভীষণ কান্না পেলো। আর আমি কেঁদেই দিলাম।প্রথমে আস্তে আস্তে কাঁদতে থাকলাম,গলায় কান্না আটকে যাচ্ছে।
!
কিছুক্ষণ যাবার পর মাথাব্যথা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেলো।মনে হচ্ছে জ্বর এসেছে।আমি কান্না থামাতে না পেরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছি।
!
আমার ফুঁপানোর আওয়াজ শুনে উনি লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে রুমের আলো জ্বালালেন।আমার কাছে এসে দেখেন আমি ঠান্ডায় কাঁপছি।উনি সাথে সাথে এসি অফ করে দিলেন।আর আমাকে জিজ্ঞেস করলেন,খুশবু!কী হয়েছে তোমার?এরকম করছো কেন?
!
আমি চোখ খুলতে পারছিলাম না।উনার কণ্ঠ শুনে বুঝলাম,বেচারার কণ্ঠে ভয়!উনি কপালে হাত দিয়ে দেখেন,জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে!আর এদিকে আমার গলা দিয়ে সাউন্ড বেরুচ্ছে না।
!
আবরার গুন্ডা বললো,ওহহ….নো।শীট…. এখন কী করবো??ওতো,অসুস্থ হয়ে পড়েছে।কন্ঠে ভয়…..
!
আমি আস্তে বললাম…….’
!

চলবে……
হ্যাপি রিডিং ??

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে