#তুই_আমারই_থাকবি?
#Esrat_Jahan?
#Part_17
!
‘তারপর উনি যা করলেন তা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি।উনি রেগেমেগে আমাকে বিছানার সাথে চেপে ধরে কিস করা শুরু করলেন।আর আমি ১০০০ ভোল্টের শক খেয়ে শকড হয়ে আছি।হঠাৎ করে আমি বাস্তবে ফিরে আসলাম।সাথে সাথে দিলাম উনাকে এক ধাক্কা।আর গুন্ডা আবরার ধাক্কা খেয়ে পড়লো বেডের অন্যপাশে,ব্যাটা নিজেকে সামলে নেওয়ার আগেই আমি বেড থেকে উঠে পড়লাম,মতলব ছিলো,এক দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যাবো।
!
কিন্তু পুড়া কপাল!ঐ যে একটা কথা আছেনা,ধুর……. মনেই পড়ছেনা।ব্যাটা আমার ওড়নাতে টান দিয়ে ধরলো।এমনভাবে ধরে আছে,আমার ওড়নাটা ছেঁড়ার পর্যায়ে!আমিতো এখন ওড়না ছাড়া বেরও হতে পারিনা।তাই দাঁড়িয়ে পড়লাম।ছিঃ ছিঃ লজ্জায় আমার নাক কাটা যাচ্ছে,মনে হচ্ছে উষ্ঠা মেরে বুষ্ঠা বানিয়ে দেই।মমি বানিয়ে শোকেসে সাজিয়ে রাখি!
!
আর উনি?উনার লজ্জাশরম হঠাৎ করে কোথায় পালালো সেটা সৃষ্টিকর্তা জানেন।
!
-আমায় ধাক্কা দিলে? ড্যাম ইট!এতবড় সাহস?
রেগে বলল,
!
আমিও একথা শুনে রেগে গেলাম,বললাম,আর আপনি?আপনি এতবড় লুচু ছেলে যে,আমাকে…কি….কি….স….বলেই জিহ্বায় কামড় দিলাম।ছিহ!নিজের উপরই রাগ হচ্ছে!
!
-সোজাসুজিভাবে বলতে কী লজ্জা হচ্ছে?ডাফার মেয়ে!রেগেই
!
-জ্বি আমার লজ্জা হচ্ছে!সবারই লজ্জা হবার কথা!আপনি এমন একটা কাজ করেছেন যে,লজ্জা পাওয়া স্বাভাবিক!আমিও এর ঊর্ধ্ব এ নই!গট ইট!
!
আমি কাকে কী বলছি!ব্যাটা আমার কথার পাত্তা না দিয়ে তাকিয়ে আছে।আর আমি ওনার দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকিয়ে দেখি,মিয়া আমার পেটের দিকে তাকিয়ে আছে!আর আমার জামাটা পেট থেকে কিছুটা সরে গেছে।এই দৃশ্য দেখে আমি বাক্যহারা হয়ে গেলাম।
তাড়াতাড়ি জামাটা ঠিক করে নিলাম।ব্যাটা তখনো তাকিয়েই আছে!
!
-আমি থতমত খেয়ে উনাকে জিজ্ঞেস করলাম,কী…..কী…. এ..ভাবে কোথা…য় তাকিয়ে.. আছেন?হ্যাঁ?
!
-উনি বাঁকা চোখে তাকিয়ে বললেন,সেটা কী তোমায় বলতে হবে?
!
-হ্যা বলতে হবে!রেগে
!
-উনি বেড থেকে উঠে এসে আমার দিকে এগুতে এগুতে বললেন,কেন বলবো তোমায়?
!
-দে….খুন…এগোবেন না!
!
-ভয় পাচ্ছ নাকি?অবশ্য তুমি খুব সাহসী নারী!তাই না?
!
-হ্যাঁ….হ্যাঁ…আমি অবশ্যই সাহসী মেয়ে,কিন্ত নারী নই!ভয়ে পিছুতে পিছুতে!
!
-হুম,তুমি তো কচি মেয়ে!শয়তানি হাসি হেসে
!
-কীহ….?
!
-জানো তোমায় যা হট লাগছে না?নেশাভরা চোখে…..
!
আমি তব্দা হয়ে পিছুতে গিয়ে বারি খেলাম পুরো দেওয়াল জুড়ে টাঙানো উনার বিশাল বড় ছবিটায়!পিছানোর আর জায়গা নেই।আবরার মিয়া গিরগিটির মতো আবারো মত পাল্টিয়েছে! বেশ বুঝলাম।
!
-কিন্তু আমি?আমি এখন কী করবো?
!
-তোমার পেটটা না খুব সুন্দর! জাস্ট ওয়াও!
!
-চোখ গোল গোল হয়ে গেল আমার।গুন্ডা বলছে কী এসব?
!
-কি সুন্দর তিল আছে ,আর কি ফর্সা পেট! আসলেই তুমি অনেক হট!
!
-উনার হট কথাটা শুনে এমন রাগ হলো যে,আমার প্রেসার হাই হয়ে গেলো!!
!
-ওফফফ….তোমায় যা লাগছে না!আমার হাত চেপে ধরে!
!
-রাগের চোটে আমার চোখে পানি এসে গেলো। আমি কান্নাভরা কণ্ঠে বললাম,মা…নে?
!
-মানে আমি এখন থেকে রাতে তোমার পেটের উপর ঘুমুবো!ভাব নিয়ে
!
-কীহ???অবাক হয়ে
!
-হুম।
!
-বললেই হলো?আপনার যা ইচ্ছে তাই হবে নাকি?আজব!রেগে
!
-পটরপটর কম করো!নইলে কানের উপর, নিচ দু’ঘা লাগিয়ে দেবো! রেগে
!
-আমি কিছু বলতে যাওয়ার আগেই ব্যাটা আমার গালে ফুঁ দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। যাক বাবা বাঁচলাম।আর কিছুক্ষণ হলে আমি ইন্তেকালের দেশ পৌঁছে যেতাম।
!
!
!
!
!
বাকিটা দিন,মামানি আর সানার সাথে কাজ করে কাটালাম।অনেক গল্প করলাম।গুন্ডা আবরার সুন্দর করে সেজেগুজে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে গিয়েছে,এখনো ফিরেনি!সন্ধ্যার দিকে মামু আর আরহাম ভাইয়া অফিস থেকে ফিরলো।আমি ওদের সাথে প্রচুর আড্ডা দিলাম।হাসাহাসি শেষ করে আরহাম ভাইয়ার সাথে বাইরে বেরুলাম।তখন রাত নয়টা বাজে!উদ্দেশ্য ওদের বাসার সামনের রাস্তাটায় কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করা।সাথে সানাচাচীও আছে,বেচারি ওদের বাসায় কাজ করে।
!
-খুশবু দেখ,আরহাম ভাইয়া বলল,
!
-কী দেখবো?
!
-আরে, ওই! চল আইসক্রিম খেয়ে আসি!
!
-সানাচাচীও বলল,হ বউ। চলো!রাইতের বেলা আইসক্রিম মজা লাগে!
!
-আমি হেসে বললাম,চলো।
!
-তারপর সবাই মিলে আইসক্রিম পার্লারে গেলাম,গিয়ে দেখি দোকান খালি,কেউ নেই।আমরা তিনজন আরাম করে বসলাম।ওয়েটার এসে জিজ্ঞেস করলো,কী আইসক্রিম খাবো!
!
-আমি আরহাম ভাইয়ার দিকে আর ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বলল,কোনটা খাবি?
!
-তুমি বলো!
!
-আমি না,তুই বল!
!
-তুমি বল!
!
-বলছিনা তুই বল!
!
-আচ্ছা,সানাচাচী তুমি বলো!
!
-আরহাম ভাইয়াও তাতে রাজি।সানাচাচী ভ্যানিলা আইসক্রিম অর্ডার করলো।তাতে বেচারি লজ্জায় মরে যাচ্ছে।জীবনের প্রথম অর্ডার বলে কথা।যাইহোক, আইসক্রিম খেয়ে, আরো আইসক্রিম সবার জন্য নিয়ে ঘুরাঘুরি আর নাইট ওয়াক করে সাড়ে দশটায় বাসায় ফিরলাম।প্রচুর মজা হয়েছে।আরহাম ভাইয়া আমাদের হাসাতে হাসাতে অবস্থা খারাপ করে ফেলেছে।আল্লাহ!
!
বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে সবার সাথে মাংস-পোলাও দিয়ে ডিনার সারলাম।মামানির হাতের রান্না,রেস্তোরাঁর থেকেও বেশী টেস্টি!সেই মজা পেয়ে আমিও পুরো একপ্লেট দুইচামচ ভাত সাবাড় করলাম।ঘুরাঘুরি করে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি,তাই সবাইকে গুড নাইট জানিয়ে উপরে শোবারঘরে চলে এলাম।
!
আবরার আগুন চৌধুরী! মিয়া তো এখনো আসেনি।বারোটা বাজতে চললো।ধুর…আসলে আসুক না আসলে নাই।আমি গিয়ে ঘুমাই!বলেই বেডে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
!
কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমের দেশে ভেসে গেলাম।কিন্তু হঠাৎ করে মনে হলো, কে যেন!ভাবতেই চোখ খুলে তাকালাম।আর তাকিয়ে দেখি,আবরার আগুন মিয়া আমার জামাটা পেটের উপর থেকে সরিয়ে পেটের মাঝে মুখ গুঁজে ঘুমিয়ে আছেন।আমি পুরাই শকড….ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি,রাত তিনটে বেজে দশ।মানে এতক্ষণ যাবৎ ব্যাটা ঘুমুচ্ছে আর আমি জানিই না?মড়ার মতো ঘুমাচ্ছি আর সুযোগ বুঝে উনি আমার পেটটাকে বালিশ বানিয়ে ফেলেছেন?
!
-কী পেয়েছেন টা কী উনি?যা ইচ্ছা তাই করবেন?প্রচুর রেগে গেলাম আমি।দিলাম এক চিৎকার!!………….’
!
চলবে…..
হ্যাপি রিডিং ???