তিক্ত ভালোবাসা পর্ব-১৭

0
1764

#তিক্ত_ভালোবাসা
#Tafsia_Meghla
#পার্টঃ১৭

মেঘলা লিখছিলো হঠাৎ বাইরে থেকে একটা মেয়ে এসে শোভন কে জরিয়ে ধরে বলে,
— “ও মাই গড শোভন?
এতোদিন পর UK?”

মেঘলা ব্রু কিঞ্চিত উচু করে মেয়েটার দিকে তাকায়৷
শোভন মেয়েটাকে উঠিয়ে একবার মেঘলার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে,
— “ইরিনা তুই?
কেমন আছিস৷ ”

— “ভালো ছিলাম না তোকে দেখে ভালো হয়ে গেছি৷
উপস কি হ্যান্ডসাম হয়ে গেছিস আগের থেকে৷ ”

মেঘলা শোভনের দিকে তাকিয়ে রাগে ফুসছে আর বিরবির করে বলে,
— “ইসস এতোদিন নাকি ভালো ছিলো না এখন ভালো হয়ে গেছে৷
আমার হাসবেন্ড হ্যান্ডসাম হয়েছে তাতে তোর কিরে সাক চুন্নি?
দাড়া তোর ব্যাবস্থা করছি পরে আগে আমারটাকে দেখে নিচ্ছি৷ ”

বলেই রাগে এটা ওটা জোর করে ফেলতে থাকে৷
মেয়েটা মেঘলাকে দেখে অবাক হয়ে শোভনকে বলে,
— ” কে ওই মেয়ে?”

— “স্টুডেন্ট৷ ”

শোভনের মুখে স্টুডেন্ট কথা শুনে আবার রাগে চরে যায় মাথায়৷
উঠে রেগে কিছু বলবে এর আগেই ইরিনার ফোন এসে পরায় রিসিভ করে বাইরে চলে যায়৷

ইরিনা চলে যাওয়ার পর শোভন আবার ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বসে থাকে৷
মেঘলা রেগে সব রেখে উঠে শোভনের সামনে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ায়৷ সেই দিকে শোভনের খেয়ালই নেই ফোনে কি যেনো করছে৷
মেঘলা এবার চেয়ার নিজের দিকে ঘুড়িয়ে আবার কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ায়৷
শোভন ব্রু কুটি করে তাকিয়ে বলে,
— “হোয়াট?”

মেঘলা রাগে ফুসছে কিছু বলছে না শোভন আবার বলে,
— “কি হয়েছেটা কি?
এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন?”

মেঘলা এবার সামনে থেকে সরে এসে নিজের ব্যাগ থেকে স্টিলের একটা স্কেল বের করে অনবরত শোভনের বাহুতে মারতে থাকে৷
মেঘলার এহেম কান্ডে শোভন তো পুরাই হতবম্ব রাগে ফুসছে আর মারছে৷
শোভন যেই না থামাতে যাবে হাতেও কয়েকটা দিতে থাকে স্টিলের স্কেল হওয়ায় অনেক জায়গা কেটেও গছে৷

মেঘলা মারতে মারতে বলে,
— “আমার আশে পাশে কেউ ঘেসলে তো তুই শাস্তি দিস এখন তোকে তো আমি মেরেই ফেলবো৷
ওই মেয়ে তোকে জড়িয়ে ধরেছে কেন?
আমাকে কেউ জড়িয়ে ধরলে তো আমায় মারিস তো এখন তোকে কি করবো?”

শোভন শুকনো ঢোক গিলে বিরবির করে বলে,
— “এই রে এবার আমার বাচ্চা বউ রনচন্ডি রুপ নিয়েছে৷
একে না থামালে তো আমায় মেরেই ফেলবে৷ ”

বলেই স্কেল সহ মেঘলাকে ধরে ফেলে৷
মেঘলা কঠিন ভাবে রেগে গেছে ফুসতে ফুসতে বলে,
— “হাত ধরলি কেন?
ছার বলছি৷ ”

শোভন বলে,
— “কি তুমি থেকে ডিরেক্ট ‘তুই’?
সাহস অনেক বেরেছে তাই না?”

শোভনকে ছিটকে ফেলে বলে,
— “সাহসের কি দেখলি তুই?
আর ওই সাকচুন্নিকে কি বললি তুই?
আমি তোর স্টুডেন্ট? তোকেতো সত্যি আজ মেরেই ফেলবো৷ ”

এবারো স্কেলটা বাড়ায় মারার জন্য শোভন হ্যাচকা টান দিয়ে ফিছনে ঘুরিয়ে নিজের কাছে এনে বসায়৷
মুচকি হেসে বলে,
— “কোথায় যেন পোড়া পোড়া গন্ধ পাচ্ছি,
আমার বউ কি জ্বলছে?”

— “আমি কারো বউ না ছার বউ বলবি না আমায় তুই৷ ”

শোভন মেঘলার কোমর চেপে ধরে বলে,
— “হুর পরি কতবার আর তোমার রুপে ঘায়েল করাবে আমায়?
তোমার এই রুপেও আজ আমি ধায়েল হয়ে গেছি৷
কিন্তু দেখ কত জায়গা কেটে রক্ত পরছে৷ ”

— “পরুক বেশি করে পরুক তুই খারাপ,
ওই মেয়ে তোকে জড়িয়ে ধরবে কেন?”

শোভন কিছু বললো না মুচকি হেসে চুল থেকে ক্লিপটা খুলে মেঘলার চুলে মুখ ডুবায়৷
কতদিন পর আবার ভালোবাসার মানুষ টা কে কাছে পেল৷
শোভনের এমন করায় বেশ অবাক হলেও চোখ বন্ধ করে স্পর্শ অনুভব করছে৷
হঠাৎই আবার কেউ এখানে প্রবেশ করতে মেঘলা ছিটকে সরে আসে৷
আবার ও ইরিনা এসেছে৷
এইবার শোভনও বেশ বিরক্ত হয়৷
মেঘলা এসে নিজের জায়গায় বসে রাগি লুক নিয়ে শোভনের দিকে তাকায়৷

শোভন মেঘলার দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে ইরিনা কে বলে,
— “ইরিনা তুই এখন যা পরে দেখা হবে এখন আমার কাজ আছে৷ ”

ইরিনা আবার শোভন কে জড়িয়ে ধরে চলে যায়৷



রাত ১২টা,
শোভন মেঘলার রুমে অনেক্ষন ধরে শুয়ে আছে কিন্তু মেঘলা নেই৷
নিচে গিয়ে দেখতেও পারছে না কেউ দেখতে প্রব্লেম হবে, বেশ অনেক্ষন পর টি-শার্ট এর হাতা ফোল্ড করতে করতে বারান্দা থেকে আসছে৷
পরনে ব্লেক টি-শার্ট ব্লেক জিন্স আর কোমরে জ্যাকেট বাধা মুখে মাস্ক৷
অবাক দৃষ্টিতে মেঘলার দিকে তাকায়, কারন শোভন বারান্দা দিয়েই এসেছে তখন বারান্দায় কেউ ছিলো না৷ শোভন কে দেখেই মেঘলা হকচকিয়ে যায়৷

শোভন ব্রু কুচকে বলে,
— “তুমি কোথায় গিয়েছিলে?
আর বারান্দা দিয়েই কেন এলে?”

মেঘলা হকভকিয়ে বলে,
— “প পার্টি হ্যা পার্টিতে গিয়েছিলাম৷ ”

শোভন ব্রু কুচকে বলে,
— “পার্টিতে আর তুমি?
স্ট্রেঞ্জ আর এসব কি পরেছো?
মিথ্যা বলবে না সত্যি বলো৷ ”

— “সময় আসুক জানতে পারবে
বলেই বাকা হাসে, আর এই বাকা হাসির কারন শোভনের অজানা কিন্তু শোভন এটা ঠিক বুঝতে পেরেছে এই মেয়ের মাথায় কিছু চলছে৷
তাও সাংঘাতিক কিছু৷

চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে