#তিক্ত_ভালোবাসা
#Tafsia_Meghla
#পার্টঃ১৬
খালি ক্লাসে মেঘলা কান ধরে উঠবস করছে, আর শোভন বসে বসে ভিডিও করছে৷
১০ মিনিট যাবৎ উঠবস করেই যাচ্ছে আর শোভনের গুষ্টি উদ্ধার করছে৷
এতোক্ষনে নাকে চোখে পানিয়ে একাকার করে ফেলেছে শোভন বসে মজা নিচ্ছে৷
মেঘলা এবার রেগে গজগজ করতে করতে বলে,
— “আর পারবো না করতে৷ ”
শোভন এগোতে এগোতে বলে,
— “কেন পারবে না?”
মেঘলা দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
— “তোমাকে ছেড়ে চলে এসেছিলাম এর শাস্তি এভাবে দিচ্ছো?”
এবার শোভনেরো রাগ উঠে যায় রেগে মেঘলাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে বলে,
— “আমাকে ছেড়ে আসার শাস্তি তো অনেক ভয়ানক,
এটা তো ক্লাসে কথা বলার শাস্তি৷
খুব ভুল করেছো কথা টা মনে করিয়ে দিয়ে, কি ভেবেছিলে?
পার পেয়ে যাবে? এতো সহজেই সম্ভব?”
মেঘলা ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে বলে কাপা কাপা গলায় বলে,
— “আ আমি,,,,৷ ”
মেঘলাকে থামিয়ে দিয়ে শোভন বলে,
— “আমি কিছু শুনতে চাই না,
তুমি যা করেছো এর শাস্তি তো তোমায় পেতেই হবে৷ ”
বলেই রাগে গজগজ করতে বেরিয়ে যায়৷
শোভনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মেঘলা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলে,
— “উফফ এই লোকটা কখনই নিজের ছাড়া অন্যেরটা শুনে না৷
আব তেরা কেয়া হোগা কালিয়া থুরি মেঘলা৷ ”
বলে মুখ ফুলিয়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে যায়৷
নিচে এসেই দেখে হায়াত ওর গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷
এর অন্য পাশে শোভন ওর গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে হায়াতের গাড়ির সামনে যেতেই শোভন এসে মেঘলার হাত চেপে ধরে বলে,
— “অনেক থেকেছো বাবার বাড়ি চার মাস কিছু বলিনি আজ আমার সাথে আমার ফ্লাটে যাবে কিছুদিন পর বাংলাদেশ ব্যাক করবো আমরা৷ ”
হায়াত বলে,
— “কোনো প্রয়োজন নেই মেঘলা তোমার কাছে যাবে না, আর বাংলাদেশ? প্রশ্নই উঠে না৷
তোমার,,,,৷ ”
হায়াত কে থামিয়ে শোভন বলে,
— “আমার বউ কোথায় থাকবে না থাকবে এটা নিশ্চয়ই আপনি বলবেন না?
ও আমার সাথেই থাকবে নাহয়৷ ”
— “না হয় কি হুম?
আবার শাস্তি দিবে?
তা আর হওয়ার নয় আমার বোন কে আর তোমার সাথে যেতে দিবো না৷ ”
মেঘলা চেয়েও কিছু বলতে পারছে না৷
কিন্তু কেন?
ও তো চেয়েছিলো শোভন আসুক ওকে ফিরিয়ে নিতে, তবে আজ কিসের জরতা?
শোভন রেগে বলে,
— “ওকে নো প্রব্লেম
আমার বউ কে আমার কাছে নিয়ে যেতেই এখানে এসেছি আর আমি নিয়ে যাবই৷ ”
বলেই শোভন ওর গাড়ির দিকে হাটা দেয়, কিছুটা গিয়ে আবার ফিরে এসে মেঘলার কানে ফিস ফিস করে বলে,
— “শাস্তি পাওনা রয়ে গেলো সেটা নাহয় রাতে,,,৷ ”
বলেই বাকা হেসে সিতি বাজাতে বাজাতে চলে যায়৷
।
।
।
ডিনার করে মাত্রই রুমে এলো মেঘলা,
এসে রুমের লাইট জালাতেই চমকে উঠে৷ ওর বিছানায় শোভন শুয়ে শুয়ে ফোন টিপছে৷
শোভন কে দেখে চেচিয়ে বলে,
— “তুমি এখানে?”
শোভন উঠে মেঘলার মুখ চেপে ধরে বলে,
— “চুপ!!
চেচাবে না৷ ”
বলে মেঘলাকে ছেড়ে দরজাটা লাগিয়ে আসে৷
মেঘলা বলে,
— “এখানে এসেছো কেন?”
শোভন বাকা হেসে বলে,
— “শাস্তি দিতে৷ ”
বলেই মেঘলাকে নিজের কাছে টেনে উষ্ট জোরা দখল করে অনবরত কামড় দিতে থাকে৷
মেঘলা ছোটাছুটি করছে তাই হাত শক্ত ভাবে চেপে ধরে৷
এতো শক্ত ভাবে হাত চেপে ধরায় আর এমন ঠোটে অত্যাচার করায় চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে তাও শোভনের সেই দিকে খেয়াল নেই৷
হঠাৎ মেঘলা ফুপিয়ে কেঁদে উঠে, শোভন শুনে পিছিয়ে আসে ওর চোখ গুলো অসম্ভব লাল হয়ে আছে দেখেই বুঝা যাচ্ছে এতো দিনের রাগ সব মেঘলার উপর ঝারছিলো৷
শোভন রেগে জানালা দিয়ে নিচে নেমে বেরিয়ে যায়৷
মেঘলা সেখানে বসেই ফুপিয়ে কান্না করতে থাকে৷
সকাল সকাল কলেজে আসতেই মেজাজটা গরম হয়ে গেলো মেঘলার৷
কলেজে আসার পরই একগাদা এসাইনমেন্ট করতে দিয়ে বসে আছে শোভন, আর সামনে বসে রাগে ফুসছে আর পেপারটা এদিক ওদিক করছে৷
গত চার মাসে ভালো করে কিছুই করেনি পড়া লেখাটাও না এসাইনমেন্ট করবে কি করে মেঘলা তাও বুঝতে পারছে না৷
এতো গুলো এসাইনমেন্ট এখানে বসেই করতে হবে বাড়িতেও নিয়ে যেতে পারবে না৷
মেঘলা বলে,
— “শোভন আমি তো এগুলো কিছুই পাড়িনা কি করে করবো?
এই প্রথম মেঘলা শোভন কে ভাইয়া না বলে শোভন বললো,
শোভন কিছুক্ষন বাকা হেসে বলে,
— ” বাহ বেশ উন্নতি ‘শোভন’
হুম গুড ভেরি গুড কিন্তু এগুলো যে করতেই হবে কিছু করার নেই কলেজে আমি তোমার টিচার তাই কোনো রকম হেল্প ও করতে পারবো না৷
আর এগুলো না করে তুমি যেতেও পারবে না৷ ”
মেঘলা আর কিছু না বলে রেগে বই বের করে দেখে দেখেই করতে শুরু করে৷
শোভন তার হুর পরিকে এক ধ্যানে দেখছে শোভন কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে,
— “এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?”
— “আমার চোখ আমার যেখানে ইচ্ছা তাকাবো তাতে তোমার কি?”
মেঘলা কিছু না বলে রেগে আবার লিখতে শুরু করে৷
মেঘলা লিখছিলো হঠাৎ বাইরে থেকে একটা মেয়ে এসে শোভন কে জরিয়ে ধরে বলে,
— “ও মাই গড শোভন?
এতোদিন পর UK?”
মেঘলা ব্রু কিঞ্চিত উচু করে মেয়েটার দিকে তাকায়৷
চলবে,