তিক্ত ভালোবাসা পর্ব-০৭

0
1766

#তিক্ত_ভালোবাসা
#Tafsia_Meghla
#পার্টঃ০৭

শোভন ঠিক করে শুয়ে মেঘলার মুখ মুছে কপালে, গালে, ঠোঁটে অজশ্র চুমু খেয়ে বুকে জড়িয়ে শুয়ে পরে৷

রাত ৩টা ছুই ছুই
মেঘলা গভীর ঘুমে মগ্ন, শোভনের বুকে শান্তির ঘুম দিচ্ছে৷
ভুলেই গেছে হয়তো এ মানুষটা কে যে সন্ধ্যা বেলায় ও কত বকা বকি করলো৷
শোভন খুব সাবধানে মেঘলাকে বুক থেকে সরিয়ে ড্রয়ের থেকে ফাস্ট এইড বক্স টা নিয়ে আস্তে আস্তে মেঘলার পেটের রক্ত গুলো মুছে দেয়৷
খামছে ধরায় খুব বাজে ভাবে কেটে গেছে৷ রক্তটা মুছে গভীর ভাবে পেটে ভালোবাসার পরশ এনে দিয়ে ফোন টা নিয়ে বারান্দায় চলে যায়৷

বারান্দায় এসে কাউকে ফোন করে ফোন তুলতেই বলে,
— “কোথায় আছিস? যা বলেছি কাজ হয়েছে?”

— “হ্যাঁ বস আপনি চলে আসুন৷ ”

শোভন ফোন টা রেখে বারান্দা থেকে মেঘলার সামনে এসে ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে বাকা হেসে বলে,
— “ভালোবাসি হুর পরি,,,,,,,,৷ ”

বলে মেঘলার উপর কিছু একটা স্প্রে করে, ঠোঁটে আলতো চুমু দিয়ে দরজাটা লাগিয়ে কোথাও একটা চলে যায়৷

______________________

রকিং চেয়ারে রিভালবার হাতে নিয়ে সামনে থাকা টেবিলে পায়ের উপর পা রেখে বসে রিভালবার টা মাথায় ঘসছে৷
মুখে বাকা হাসির রেখা চোখ গুলো অসম্ভব লাল হয়ে আছে৷
পাশেই দাঁড়িয়ে আছে অহিল ওর মুখেও বাকা হাসি৷
ওহিল শোভনের পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট হলেও ওদের মধ্যে বন্ডিং অনেক ভালো৷
সামনে দুপুরের সেই তিনটে ছেলে বসে আছে হাত পা বাধা৷

শোভন উঠে ছেলেটির মাথায় রিভালবার চেপে ধরে বলে,
— “তুই আমার হুর পরিকে ছুতে গিয়েছিলি তাই না?”

ছেলেটি ভয়ে কাতর হপ্যে বলে,
— “স সরি ব বস আ আমি জ জানতাম না ও আপনার বউ হয়৷ ”

সেই ছেলেটিকে থামিয়ে পাশের অন্য ছেলেটি বলে,
— “আরে থাম তুই,
কি করবে ও? হাতটা খুল দেখ কি করছি৷
আজতো ছেড়ে দিয়েছি আরেকদিন সামনে আসলে ওই মেয়েকে ভোগ করবো৷ ”

ছেলেটি এই কথাটি বলতে দেরি হলেও শোভন মুখের ভিতর রিভালবার টা ঢুকিয়ে শুট করতে দেরি হয়নি৷
মুখের ভিতর কয়েকবার শুট করে পাশের অন্য ছেলেটি চোখে দুইটা গুলি শুট করে৷ দুই জনের এই অবস্থা দেখে সেই ছেলেটি থর থর করে কাপছে৷
শোভন বাকা হেসে সেই ছেলেটিকে বলে,
— “ভয় করছে?”

ছেলেটি মাথা দুলিয়ে “হ্যাঁ ” বোধক উত্তর দেয়৷
শোভন বাকা হেসে অহিলকে কিছু ইশারা, করে অহিল এ এসে ছেলের হাত পায়ের বাধন খুলে দেয়৷
শোভন ছেলেটিকে বলে,
— “ভয় পেয়েছিস, ভেরি গুড
ওকে যা তোকে ছেড়ে দিলাম ১০ সেকেন্ড সময় দিলাম এখান থেকে দরজা অব্দি যেতে পারলে শুট করবো না৷
কাউন্ট ডাউন শুরু৷ ”

বলেই রিভালবার টা নিচে ফেলে উল্টো দিকে ঘুরে গুনতে থাকে৷
— “৯, ৮, ৭, ৬, ৫, ৪, ৩, ২, ১,,,,,,, ”

বলেই ঘুরে নিখুত ভাবে ছেলেটির বুকে শুট করে৷
কারন ছেলেটি যাওয়ার সময় নিচ থেকে রিভালবার টা নিয়ে গিয়েছিলো৷
আর শোভন যানে এটাই করবে৷
কয়েকটা গুলি শুট করার পর ছেলেটার সামনে গিয়ে বাকা হেসে বলে,
— “বাহ তোকে পালাতে দিচ্ছিলাম আর তুই কিনা আমাকেই শুট করতে চেয়েছিলি?”

উঠে অহিলকে ইশারা করতে অহিল কাচের বোতলে কিছু একটা নিয়ে এসে ছেলেটার শরীরে ঢেলে দেয় আর ছেলেটি কাতরাতে থাকে৷
কিছুক্ষন পর দুজনেই এখান থেকে বেরিয়ে চলে যায়৷
বাড়িতে এসেই শার্টটা চেঞ্জ করে খুব সাবধানে ওয়াশরুমে গিয়ে শার্টটা পুরিয়ে দেয়৷
ফ্রেশ হয়ে এসে মেঘলাকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পরে৷

চোখে রোদের আলো পরতেই আড়মোড়া ভেঙ্গে ঘুম থেকে উঠে মেঘলা৷
সামনে তাকিয়ে দেখে শোভন এখনো ঘুমাচ্ছে,
চুল গুলো এলোমেলো হয়ে আছে খোচা খোচা দাড়ি গুলো একটু বড় হয়েছে ঠোঁটটা বরাবরের মতোই গোলাপি হয়ে আছে মেঘলা কিছুক্ষন তাকিয়ে আবার চোখ নামিয়ে উঠে বাইরে চলে যায়৷


বারান্দায় কার্নিশ ঘেষে দাঁড়িয়ে বারান্দার রেলিং থেকে ধোয়া উঠা কফির মগটায় চুমুক দিচ্ছে আর কোলাহল মুক্ত গ্রাম্য পরিবেশটা গেখছে৷
ঢাকার ধুলোবালি আর কোলাহল ছেড়ে গ্রামের ভিতরটায় বাড়িটা৷
বাড়ির পাশেই বড় রকটা পুকুর, পুকুরে অনেকগুলো হাস এদিক থেকে ওদিক যাচ্ছে পাশেই একটা কাঠবেলি গাছ৷ এর পাশেই শিউলি ফুল আর কদম ফুল গাছ কদম গাছটা দু একটা ছোট ছোট কদম মাত্র হয়েছে৷
বারান্দার পাশ ঘেষেই একটা আম গাছ বেশ বড় গাছ টা৷
ঘড়িতে সারে এগারোটা বাজে বাইরে অনেক রোদ এই রোদের মাঝেও গাছ গুলো থেকে ঠান্ডা বাতাস আসছে৷
সব মিলিয়ে মন মেজাজ আজ ফুর ফুরে৷
ওর মুডে এক বালতি ড্রেনের পানি ঢেলে দিয়ে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো শোভন৷
ঠোঁট দিয়ে ঘারে স্লাইড করাতে প্রত্যেক বার কেপে কেপে উঠছে তাও দাতে দাত চেপে আছে কিছু বলছে না মেঘলা৷

আজ নিজ থেকেই ঝগড়া করতে ইচ্ছে করছে না তাও বেশ বিরক্ত নিয়ে বলে উঠে,
— “ছারো শোভন ভাইয়া অসস্থি হচ্ছে৷ ”

মেঘলা কথা যেন শোভনের কান অব্দি পৌছালেও মস্তিষ্ক অব্দি গেলো না আরেক কান দিয়ে বেড়িয়ে গেলো৷
মেঘলা কিছু বললো না চুপ করে আবার বাইরে তাকায়৷
শোভন মেঘলার শাড়িটা কিঞ্চিত উঠিয়ে শাড়ি নিচ দিয়ে মুক্ত পেটে হাত দেয়,
তাতে মেঘলা শিউরে উঠে শোভনের হাত কিছুটা খামছে ধরে বলে,
— “প্লিজ ছারুন ভালো লাগছে না আমার৷ ”

এবারের কথাটা মস্তিষ্ক অব্দি গেলেও শোভন নেশাক্ত কন্ঠে বলে,
— “হুর পরি প্লিজ ডোন্ট ডিস্টার্ব মি!!
আমাকে আমার কাজ করতে দাও৷৷৷ ”

— “ছারুন প্লিজ৷ ”

মেঘলা ছাড়িয়ে চলে যেতে নিলেই হাত দিয়ে আটকিয়ে সোজা পাজ কোলে নিয়ে বিছানায় যেতে যেতে বলে,
— ” বলেছিলাম ডিস্টার্ব করো না,
কিন্তু শুনলে না এবার শাস্তি দিবো৷ ”

মেঘলা কাপা কাপা গলায় বলে,
— “ক কি শ শাস্তি?”

শোভন বাকা হেসে বলে,
— “শাস্তি এই যে আমি যতক্ষন না চাইবো বিছানা থেকে উঠতে পারবে না৷
আমি একটু আদোর করে তোমাকে জড়িয়ে একটু ঘুমাতে চাই৷ ”

মেঘলা কিছু বলবে এর আগেই শোভন বলে,
— “প্লিজ না করো না, আই নিড এ ডিপ স্লিপ৷ ”

মেঘলা আর কিছু বললো না৷
শোভন মেঘলাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে মেঘলার শরিরে আধ ভর দিয়ে মেঘলার গলায় মুখ গুজে এমতাবস্থায় মেঘলার শ্বাস বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম গলায় অনবরত ঠোঁট ছোয়াচ্ছে যার কারনে আরো অসস্তি হচ্ছে৷
কিছুক্ষন পর শোভন শান্ত হয়ে যায় মেঘলা তাকিয়ে দেখে শোভন ঘুমিয়ে পরেছে৷
কিছুক্ষন পর মেঘলার ও চোখ লেগে আসে৷

শোভনের আলতো ডাকে ঘুম ভাঙে মেঘলার,
তাকিয়ে দেখে শোভন মেঘলাকে ডেকে আয়নার সামনে চুল আচরাচ্ছে আর বলছে,
— “হুর পরি!!
রেডি হয়ে নাও দেরি হয়ে যাচ্ছে রাত ৮ টায় ট্রেন আছে৷ ”

— “কোথায় যাচ্ছি আমরা?
আমি তোমার সাথে কোথাও যাবো না৷ ”

শোভন মুচকি হেসে বলে,
— ” রিলেক্স!!
তুমি যাচ্ছো না আমি যাচ্ছি৷ ”

মেঘলার কোনো ইচ্ছা না থাকলেও জিগ্যেস করলো,
— “কোথায়?”

— “পার্টির কাজে চট্টগ্রাম ”

মেঘলা ব্রু কুচকে বলে,
— “কি?
কোথায়?”

— “না মানে অফিসের কাজে৷
রাখো আমার কথা হঠাৎ আমার বউ এর আমাকে নিয়ে জানার ইচ্ছে জাগলো?
প্রেমে ট্রেমে পরলে নাকি?”

বলেই চোখ মারলো৷
মেঘলা বিরক্ত নিয়ে বলে,
— ” যত্তোসব বাজে কথা”

শোভন মেঘলার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলে,
— “খাবারটা খেয়ে রেডি হয়ে নাও তারাতারি৷ ”

চলবে কি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে