তিক্ত বুকের বাঁপাশ পর্ব-১৭

0
780

#তিক্ত_বুকের_বাঁপাশ
#ফিজা_সিদ্দিকী
#পর্ব_১৭(অতীত উন্মোচন)

“ভালোবাসো!”
“নাহ বরং অনেক বেশিই ভালোবেসে ফেলেছি।”
” কিভাবে?”
” কিভাবে যেন জড়িয়ে পড়েছি তার মায়ায় নিজের অজান্তেই।”
“কাকে এতোটা বেশি ভালোবেসে ফেলেছে তোহার কিশোরী চঞ্চল মন?”

দীর্ঘশ্বাস ফেলে তোহা। তারপর মুখে ফিকে হাসি বজায় রেখে তাকায় রনকের দিকে। ভারাক্রান্ত কন্ঠে বলে ওঠে,

“থাক না কিছু জিনিস অজানা। সে তো অন্য কারো। আমি চাই সে ভালো থাকুক। ভীষণ ভালোবাসুক তার প্রিয় মানুষটাকে ঘিরে। আমি না হয় দূরের মানুষ দূরেই থাকলাম!”

“বড় বড় কথা শিখে গেছ তো বেশ!”
“শুনেছি, বয়সের চেয়ে জীবনের অভিজ্ঞতা বেশি শিক্ষা দেয়। আর তাছাড়া আমার আঠেরো বছর হয়ে গেছে, আর কত ছোট থাকবো!”

নিস্তব্ধ রাতের শুনশান পরিবেশ। শীতের ফলে একটু বেশিই ছমছমে ভাব চারপাশে। নিজেদের নিঃশ্বাসের শব্দও যেনো কানে এসে বাড়ি দিচ্ছে। বেশ অনেকটা সময় শীতের মাঝে কাটানোর ফলে দার্জিলিংয়ের কনকনে শীতটাও এখন সহনীয় লাগছে। নিশীথের সেই নিস্তব্ধতার মাঝে একটা কাঠের বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে দুই ছন্নছাড়া মানব মানবী। একজনের মনে রয়েছে হাজারো শঙ্কা, না পাওয়ার ব্যথা। আর একজন নিমগ্ন গভীর চিন্তায়। উদগ্রীব আর চিন্তার মাঝে বারে বারে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজাচ্ছে সে। মনের মাঝে জমে থাকা হাজারো প্রশ্নরা আঁকুপাঁকু করছে প্রকাশের জন্য। অবশেষে নিস্তব্ধতাকে নিধন করে হালকা কাশি দিয়ে তোহার দৃষ্টি আকর্ষণ করে রনক।

“কেমন আছো তোহা?”
“ভালো”
“কতোদিন পর দেখা!”
“সাত মাস তেরো দিন চার ঘণ্টা।”

তোহার এহেন নিখুঁদ হিসেব গণনায় বিস্ময় ভাবটা প্রগাঢ় হয় রনকের। তবুও নিশ্চুপে হজম করে নেয় সে। তোহাকে সময় দেয় নিজে থেকে প্রকাশের।

“একা এসেছো?”
“আমাকে এতো বেশি সাহসী মনে হয় আপনার!”
“মনে তো আরও অনেক কিছুই হতো। কিন্তু এখন যে তার ছিটেফোঁটাও নেই। বলা তো যায়না সাহসও সঞ্চয় করে ফেলেছো হয়তো! ভালোবাসলে মানুষ আবার সব পারে। এমনকি গাধা থেকে শেয়াল হতেও।”

রনকের কথা শুনে চোখ ছোটো ছোটো করে তির্যকভাবে তাকায় তোহা। কোনোভাবে রনক কী তাকে গাধা উপাধি দিলো! সে মোটেও গাধা ছিলোনা। শুধু একটু বেশিই লাজুক আর ভীতু ছিলো। মনের কথা মনের মাঝেই চেপে রেখে পাল্টা প্রশ্ন করলো তোহা,

“লাভ ম্যারেজ!”
“বিয়েই তো করলাম না। লাভ নাকি অ্যারেঞ্জ বুঝবো কিভাবে?”
“বিয়ের আগেই!”
“বিয়ের আগে কী?”
“এইযে ঘুরতে চলে এসেছেন দুজনে একা একা।”

তোহার কথা শুনে খুব একটা চমকায় না রনক। কারন কিছুক্ষন আগে সে তোহাকে ঠিক এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছে। তার মানে তোহা ঠিকঠাক বুঝেছে। কথাটা সঠিক জায়গায় লেগেছে ভেবেই হাসে রনক। তোহা বিরতিহীনভাবে তাকিয়ে থাকে রনকের দিকে এক দৃষ্টিতে। আজ কতোগুলো দিন পর সে এতো কাছাকাছি থেকে দেখছে এই মানুষটাকে, দেখছে তার নিস্পাপ হাসি। কখনও দাঁত বের করে হাসেনা রনক। চাপা হাসে। তার সবকিছুতেই কেমন যেনো এক এরোগ্যান্ট ভাব। হাসলে দুই ঠোঁটের মাঝে হালকা ভাঁজ সৃষ্টি হয়। চওড়া হয় ঠোঁটদুটো দুইপাশে।

“রুহেল কোথায়? রুমে নাকি?”

রনকের কথা শোনামাত্র ধ্যান ভঙ্গ হয় তোহার। সাথে বিরক্তও হয় খানিকটা।

“স্যার হয়ে স্টুডেন্টকে বয়ফ্রেন্ডের সাথে একা একা ঘুরতে আসার জন্য উৎসাহিত করছেন! শেম অন ইউ।”

“আজকালকার জেনারেশনের ছেলেমেয়েরা স্যারদের কতো সম্মান করে দেখলামই তো। যেভাবে এসে জড়িয়ে ধরছে আজকাল স্টুডেন্টরা, যেনো স্যার নয় বয়ফ্রেন্ড।”

“যে যেমন কাজ করে তার তো তেমনই মনে হবে। ওইযে কথায় আছে, চোরের মন বোজকার দিকে। নিজে একা একা গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে ঘুরতে এসেছে, আর দোষ দিচ্ছে আমাদের।”

“আরে দোষ কোথায় দিলাম! আর কীসব যা তা বলছো, ওটা তো আমার…..”

থামে রনক। বলতে বলতে সে অনেককিছুই বলে ফেলছিলো আর একটু হলে। ইশ, কি বোকামির কাজটাই না করতে যাচ্ছিলো সে। মেয়েটা যে আর কেউ নয় বরং তার একমাত্র বোন! রনকের মন বলছে তোহা তাকে ভালোবাসে, ঠিক তার মতো করেই। আবার হয়তো তার থেকে একটু বেশিই। যদি তার ধারণা সঠিকও হয়, তাও এতো সহজে তো মাফ করা যাবেনা তোহাকে। একটু কষ্ট নাহয় সেও পাক! যেভাবে দিনের পর দিন অন্য কারোর পাশে নিজের ভালোবাসার মানুষকে দেখে একটু একটু করে পুড়েছে সে, নিঃশব্দে আত্মচিৎকার করে গেছে। তার কানা কড়িও সহ্য করতে দেবেনা সে তোহাকে। তার আগেই ধরা দেবে। তবে খানিকটা কষ্ট তার প্রাপ্য। সেটুকুই নাহয় সহ্য করুক কিছুদিন!

১৯.
দার্জিলিংয়ের আরেকটি অন্যতম আকর্ষণ হলো টাইগার হিল থেকে ভোরের সূর্যোদয়ের দৃশ্য। সেই কারণে টাইগার হিল না গেলে দার্জিলিং যাওয়া অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ভ্রমণের তৃতীয় দিন ভোর চারটের সময় উঠে আগে থেকে ঠিক করে রাখা গাড়ি করে তারা পৌঁছে যায় টাইগার হিল।

আকাশে তখন সবে মৃদু মৃদু আলো ফুটছে। টাইগার হিল পৌঁছে একদিকে যেমন সূর্যোদয়ের সাক্ষী হবার রোমাঞ্চ অনুভব করা যায়, অন্যদিকে প্রচণ্ড ঠান্ডা হাওয়া এসে সর্বাঙ্গ কাঁপিয়ে দেয়। অবশেষে ভোর চারটে বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিটে মেঘের পিছন দিক থেকে প্রভাতের আগন্তুক সূর্যের দেখা মিললো। সে এমন এক অভূতপূর্ব দৃশ্য, যা ভাষায় প্রকাশের চেষ্টা অনর্থক । একদিকে সূর্যের আলো আকাশ জুড়ে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে আর অন্যদিকে পশ্চিমে কাঞ্চনজঙ্ঘার গায়ে সূর্যের সোনালী রং লেগে মনে হচ্ছে গোটা কাঞ্চনজঙ্ঘাকে কেউ যেন সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছে। চমৎকার এক রোমাঞ্চকর দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে।

নম্রমিতা আর তোহা একসাথে এদিক ওদিক চঞ্চল মেঘের মতো দৌড়াদৌড়ি করছে। উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে যেনো তারা পরিণত হয়েছে ষোড়শী কিশোরী নারীতে। দূর থেকেই একজোড়া চোখ ভীষণ তৃপ্তিতে দেখছে তাদের। ক্রমে অন্ধকার ঘনিয়ে লালাভ আলোয় পুলোকিত হয়েছে চারিপাশ। তোহা আর নম্রমিতা একসাথে কিছু পিক তুলে নেয়। এরপর রাফিদকেও ফ্রেমবন্দি করার জন্য ডাক দেয় নম্রমিতা। রাফিদ রাজি না হওয়ায় অগত্যা নম্রমিতা নিজেই এগিয়ে যায় তাকে জোর করে টেনে আনতে।

আনমনা হয়ে সেলফি নিতে নিতে কখন যে একদম কিনারে চলে গেছে, খেয়াল নেই তোহার। হুট করে সামনে রনককে দেখে হাসি চওড়া হয় তার। এদিকে তোহার অবস্থান দেখে গলা শুকিয়ে কাঠ রনকের। আর এক পা এদিক ওদিক হলেই সোজা পাহাড়ের খাদে পড়ে যাবে সে। যেখান থেকে বেঁচে ফিরতে পারেনি আজ পর্যন্ত কেউ। শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আসে রনকের। অথচ তোহা সম্পূর্ন অজানা যে আর একপা এদিক ওদিক হলেই তার জীবন শেষ।

“তোহা, একদম স্ট্যাচু হয়ে দাড়িয়ে থাকবে চোখ বন্ধ করে। এদিক ওদিক তাকালেই কিংবা চোখ খুললেই কিন্তু আমি চলে যাবো।”

“কেনো স্যার?”

“সারপ্রাইজ আছে তোমার জন্য। একদম স্ট্যাচুর মতো দাড়িয়ে থাকলে তবেই পাবে, নয়তো নয়। এদিক ওদিক তাকানোও বারণ।”

মনের মাঝে কোনক্রমে সাহস সঞ্চয় করে কথাগুলো বললেও মনে মনে প্রচুর ভয় পাচ্ছে রনক। ভয় হুচ্ছে তার তোহাকে হারিয়ে ফেলার। একবার হারিয়ে অনেক কষ্ট সামলেছে নিজেকে, কিন্তু আর পারবে না। তোহাবিহীন এক মুহুর্তও থাকা আর সম্ভব নয় তার পক্ষে। চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে থাকতে থাকতে হটাৎ করে তোহা অনুভব করে সে শুন্যে। পড়ে যাচ্ছে বোধহয় কোথাও! ভয়ে ঝট করে চোখ খুলে ফেলে সে। নিজেকে আবিষ্কার করে রনকের বুকে। পাহাড়ের উপর পড়ে আছে রনক আর তার বুকের উপরে তোহার অবস্থান। বিস্ময়ে হতবিহ্বল দৃষ্টিতে তোহা তাকায় রনকের দিকে। রনক ঠোঁট কামড়ে জোরে জোরে শ্বাস টেনে নেয়। আর একটু হলেও বোধহয় তার প্রাণ বেরিয়ে যেতো। বুদ্ধি করে তোহাকে এমনটা না বললে ভয়ে এতক্ষণে সে পড়েই যেত খাদে। একথা ভাবলেই চিনচিন ব্যথা অনুভূত হয় বুকের মাঝে। অসহনীয় ব্যথায় বুঁদ হয়ে ওঠে শরীরের সমস্ত শিরা উপশিরা।

রনক দুই হাতের আজলায় ভরে নেয় তোহার মুখশ্রী। কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে নিঃশব্দে বিসর্জন দেয় কয়েকফোঁটা অশ্রু। সকলের করতালিতে হুঁশ ফেরে রনকের। তোহাকে ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় সে। আশেপাশে তাকিয়ে লজ্জায় মাথানত হয়ে যায় তোহার। আরক্তিম আভা ফুটে ওঠে গালের দুইপাশে। লজ্জা আর আড়ষ্টতা নিয়েই এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে খোঁজে পরিচিত মুখদুটোকে। তৎক্ষণাৎ আতঙ্কিত অবস্থায় দ্রুতপায়ে সেখানে উপস্থিত হয় রাফিদ আর নম্রমিতা। এগিয়ে আসে রনকের পরিবারও।

“তোহা, ঠিক আছো তুমি? কোথাও লাগেনি তো?”

নম্রমিতার বিচলিত কণ্ঠে বলা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগেই একজোড়া স্নেহের হাত তোহার মাথা চেপে ধরে নিজের বুকে। ড্রিম ড্রিম শব্দে উচ্চগতিতে ওঠানামা করছে তার হৃদস্পন্দন। একমাত্র বোন, ভীষণ আদরের তার। তোহাকে এমন অবস্থায় দেখে রাফিদ দৌড়ে আসতে নিলে থামিয়ে দেয় নম্রমিতা। রাফিদ চোখ পাকিয়ে তার দিকে তাকাতেই, ইশারায় রনককে দেখায় সে। রাফিদ ততক্ষনে যা বোঝার বুঝে গেছে। ঠিক সেই মুহূর্তেই রনক তোহার কোমর জড়িয়ে ধরে টান দেয় নিজের দিকে। ফলস্বরূপ দুজনে একসাথে লুটিয়ে পড়ে মাটিতে।

“ভাইয়া তুমি ঠিক আছো তো? এমন পাগলামি করে কেউ? যদি তোমার কিছু হয়ে যেত?”

তারিনের কথা শুনে হাসে রনক। সাথে আশ্বস্ত করে বলে সে ঠিক আছে। অপরদিকে তারিনকে সেখানে দেখে হতবাক তোহা, নম্রমিতা সহ রাফিদও। এক একজনের মনে চলছে একেক রকমের দ্বন্দ্ব।

“এটা তো সেই কালকের মেয়েটা! তুমি কি ওকে চেনো?”

তারিনের কথায় রনক বাঁকা চোখে তাকায় তোহার দিকে। বিস্ময়ে হতবাক তোহা। রনক যে কাল রাতেই তাকে বললো মেয়েটা তার গার্লফ্রেন্ড! তবে, ভাইয়া বলে ডাকছে কেনো? তোহার মনের অবস্থা বুঝতে পারে রনক। তাই আপাতত চেনে বলেই সম্মতি দিলো। বাকি বিশ্লেষণ নাহয় পরে করা যাবে! এদিকে তারিন রফিদকে দেখার আগেই ব্যস্ততা দেখিয়ে দূরে চলে যায় রাফিদ। নম্রমিতার সামনে যেনো কোনোভাবেই তারিনের ব্যাপারটা খোলাসা না হয় তার জন্যই এই প্রয়াস। কিন্তু শেষ রক্ষা কি আদৌ হলো! নম্রমিতা রনককে ধন্যবাদ জানিয়ে এগিয়ে যায় গাড়ির দিকে। মেয়েটাকে তার বড্ডো চেনা চেনা লাগছে। কিন্তু কোথায় দেখেছে ঠিক মনে করতে পারছে না।

টাইগার হিল থেকে ফেরার পথে গাড়ি ঘন্টাখানেকের জন্য বাতাসিয়া লুপে থামে। সেখানে গোল করে পেঁচিয়ে ঘিরে রয়েছে টয় ট্রেনের লাইন। দার্জিলিংয়ের হিমালায়ান রেলওয়ের অন্তর্গত টয়ট্রেন গুলি যাতে পাহাড়ি ঢালু পথে সরাসরি না নেমে কিছুটা ঘুরে সুরক্ষিতভাবে নামতে পারে তার জন্য ইংরেজরা এই বাতাসিয়া লুপ তৈরি করেছিল। ইংরেজিতে ‘লুপ’ মানে বক্রাকার কিংবা বৃত্তাকার কোনো অঞ্চল। পাহাড়ের চড়াই পথে টয় ট্রেনের যাত্রাকে সাবলীল করার জন্য ১৯১৯ সালে বাতাসিয়া লুপ গড়ে তোলা হয়। টয় ট্রেন বাতাসিয়া লুপে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে যায়, ফলে দার্জিলিংয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৃত্তাকার ভিউ পাওয়া যায়। চোখে পড়ে তুষার ধবল হিমালয়। বাতালিয়া লুপ থেকে বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখলে তার স্মৃতি মনের মণিকোঠায় চিরকাল থেকে যাবে। পাহাড়ের রানি দার্জিলিং শহরটিকেও অনবদ্য লাগে। এখানে রয়েছে বিশাল মনোরম বাগান। বহু রকমের গাছে সাজানো। রংবেরঙের ফুল মুগ্ধ করার মতো। বাতাসিয়া লুপের কেন্দ্রে একটি যুদ্ধ স্মৃতিস্মারক আছে। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর বিভিন্ন যুদ্ধে নিহত গোর্খা শহিদ বীর সৈনিকদের শ্রদ্ধা জানাতে ১৯৯৫ সালে এটির উদ্বোধন করা হয়। এক গোর্খা সৈনিকের ব্রোঞ্জ মূর্তি এখানে শোভা পাচ্ছে। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাতাসিয়া লুপ খোলা থাকে পর্যটকদের জন্য। প্রবেশমূল্য মাথাপিছু ২০ টাকা। সামনেই রয়েছে একটি ছোট্ট বাজার। স্থানীয় মানুষদের তৈরি নানান দ্রব্য পাওয়া যায় এই বাজারে। টয় ট্রেন লাইনের চারপাশেই বহু মানুষ বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর জিনিসের পসরা নিয়ে বসেন। নম্রমিতা কয়েকজোড়া শাল নিয়ে নেয় বাড়ির সকলের জন্য। তোহা নিজের পছন্দমতো পাহাড়ি কিছু অর্নামেন্ট পছন্দ করে।

মোটামুটি কেনাকাটা শেষ করে তারা গাড়িতে ওঠে। গন্তব্য সোজা হোটেল। নম্রমিতার মনের মাঝে তখন থেকেই খচখচ করছে মেয়েটার মুখ। কিছু একটা ভেবে ফোনটা বের করে সে। সেদিনের পাঠানো ছবিগুলোতে মেয়েটাকে জুম করে দেখতেই চমকে ওঠে নম্রমিতা। মাথা যেনো ঘুরতে থাকে ভনভন করে। তার সন্দেহই তবে সঠিক হলো অবশেষে! ছবির মেয়েটা আর এই মেয়েটা যে এক, তাতে আর কোনো সন্দেহ নেই নম্রমিতার। আজকে মেয়েটার ডানহাতে একটা বিশেষ আকৃতির ট্যাটু দেখেছে সে। আর ছবির মেয়েটার হাতের সেই একই জায়গায় একই আকৃতির ট্যাটু। তবে কি এজন্যই রাফিদ এসেছে দার্জিলিং!

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে