তবু ভালো আছি পর্ব-০৫

0
430

#তবু_ভালো_আছি
#রাজেশ্বরী_দাস_রাজী
#পর্ব_৫

সন্ধ্যে নেমেছে বেশ কিছুক্ষণ আগেই, আকাশে-চন্দ্র মেঘের খেলা চলছে। ড্রয়িংরুমের ফ্যানটা বনবন করে ঘুরছে, তারই নীচে সোফায় বসে আছে শ্রুতি, রুশা আর মৃন্ময়। হঠাৎ মৃদু শব্দে বেজে উঠলো মৃন্ময়ের ফোন, অফিস থেকে ফোন আসায় সে উঠে গেল পাশে রান্নাঘরের দিকে। রুশা শ্রুতিকে উদ্দেশ্য করে বলল,

“আচ্ছা শ্রুতি রণজয় যে তোমার সাথে এমন করলো! তুমি তার পরিবর্তে কী করবে? আই মিন রিভেঞ্জ নিতে ইচ্ছে করে না তোমার? তোমার জায়গায় আমি থাকলে হয়তো আমার খুব ইচ্ছে করতো রিভেঞ্জ নিতে। তুমি চাইলে কিন্তু লিগাল স্টেপও নিতে পারো! ডিভোর্সের সময় নিজের জন্য কিছু দাবীও করতে পারো। তার তো একটা শাস্তি প্রাপ্য!”

শ্রুতি সোফায় হেলান দিয়ে ফ্যানের দিকে চেয়ে বসেছিল, সে সেভাবে থেকেই বেশ স্বাভাবিক স্বরে উত্তর দিলো,

“আমি তেমন কিছুই করবো না।”

রুশা বিস্মিত স্বরে বলল,

“কিছু করবে না! এমনি এমনি ছেড়ে দেবে ওকে?”

শ্রুতি রুশার প্রশ্নের ধরন শুনে মৃদু হেসে নড়ে-চড়ে সোজা হয়ে বসে বলল,

“হ্যাঁ, কিছু করবো না। দেখো এটা তো আর সিনেমা সিরিয়াল নয় যে আমি গিয়ে এখন প্রতিশোধ নেবো, বাস্তবে কি তেমন কিছু করা আমার পক্ষে সম্ভব! আর যদি কিছু দাবীর কথা বলো তবে তার থেকে কিছু নিতে আমার ঘেন্না করবে, সেটা তাই আমি করবো না। আর এইসব নিয়ে আমি বেশি ঝেমেলা বাড়াতে আমি চাইও না। তাছাড়া সবার কাছে তো আর প্রতিশোধের মানে এক নয়। আমার মনে হয় পৃথিবীর সবথেকে ভালো প্রতিশোধ হলো কিছু না করা। রণজয় যা করেছে সেটার জন্য ওকে ক্ষমা কখনোই করতে পারবো না তবে ভুলে যাবো। আমি ঠিক করেছি অতীতে আমার সাথে যা যা কিছু হয়েছে আমি সব ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করবো, সব ভুলে নতুন করে নিজেকে গড়ে তুলবো, নিজের মতোভাবে আমার আর আমার সন্তানের জীবনটাকে সাজিয়ে তুলে ভালো থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাবো। যে মানুষটা আমার সাথে এমন খারাপ কিছু করেছে তাকে জীবনের কোন অংশেই আর ভুলেও জায়গা তো দেবোই না আমি। আর এটাই হলো আমার রিভেঞ্জ। বাকি আমার মনে হয় তার যদি সত্যিই কোনো শাস্তি প্রাপ্য হয়ে থাকে তবে সে সেটা ঠিকই পাবে, সেটা যেভাবেই হোক। তবে আমি কিছু করবো না, কারণ আমি চাইনা এইসবের মাঝে নিজেকে আর জড়াতে। নাহলে যেটার জন্য এতকিছু, এত লড়াই! আমার আর আমার সন্তানের ভালো থাকাটা! সেটাই আর হয়ে উঠবে না এইসবের মাঝে পড়ে। তবে অবশ্যই ভবিষ্যতে আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করলে আমি ওদের ছেড়ে কথা বলবো না, সেক্ষেত্রে যথার্থ ব্যবস্থা আমি ঠিকই নেবো।”

রুশা শ্রুতির কথাগুলোর অর্থ বুঝে মৃদু মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো। কথা বলার সময় শ্রুতির মধ্যে তীব্র একটা জেদ যেন লক্ষ্য করতে পারলো রুশা। ভালো থাকার জেদ। কিছু মানুষ বলে থাকে মেয়ে মানুষদের নাকি জেদ থাকা ভালো না। কিন্তু তার মনে হয় কথাটা পুরোপুরি সত্য না। মেয়ে মানুষদের নিজের আত্মসম্মান নিয়ে এমন জেদ থাকাও হয়তো ভালো, আসলে প্রয়োজন। নিজের আত্মসম্মান বিকিয়ে বেঁচে থাকাটা কি আদৌ বেঁচে থাকা! রুশা কিছুটা সময় চুপ থেকে পুনরায় বলল,

“আচ্ছা শ্রুতি রণজয় প্রথম থেকেই এমন ছিল? মানে তোমার বিয়ের পরের কিছুই তো তেমন জানতাম না।”

শ্রুতি রুশার দিকে নিজের পূর্ণ দৃষ্টি স্থির করলো, রুশা নিজেই বলল,

“আই অ্যাম সরি যদি তোমার খারাপ লেগে থাকে তো। আমি তোমাকে পুরনো কথা মনে করাতে চাইনি, শুধু কৌতূহলবশত প্রশ্ন করে ফেলেছি।”

“কোনো উপায় না পেয়ে নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়েটা আমাকে করতে হয়েছিল তোমরা সেটা জানো। ঠিক করেছিলাম অতীতকে ভুলে যাবো, এছাড়া আমার কাছে আর পথও ছিল না। তবে বিয়ের পর সবটা ভুলতেও তো কিছুটা সময় দরকার তাইনা! আমি বিয়ের প্রথম রাতেই রণজয়ের থেকে সেই সময়টা চেয়েছিলাম, তবে পাইনি। সে নিজের দিকটা ঠিকই বুঝে নিয়েছিল।”

রান্নাঘর এবং ড্রয়িংরুম একদম পাশাপাশি, দুটোর মাঝে শুধু একটা দেওয়াল মাত্রই রয়েছে। রান্নাঘর থেকে ড্রয়িংরুমের প্রায় সকল কথাই শোনা যায়, তাই কথাগুলো কিছুটা কানে এলো মৃন্ময়ের। ফোনে কথা বলা শেষ করে ড্রয়িংরুমে তাদের কাছেই আসছিল সে কিন্তু এই কথাগুলো কানে আসতে যেন সেখানে পা দুটো থমকে গেলো তার। মৃন্ময় দাঁড়িয়ে রইলো দরজার সামনেই। শ্রুতি মৃদু শ্বাস টেনে আবারো বলল,

“তবুও সব আমার ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছিলাম। এভাবেই মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। এইসবের মাঝে পড়াশোনাটা যে একপ্রকার যুদ্ধ করে হলেও চালিয়ে যেতে পেরেছিলাম এই অনেক। সবকিছু তো চলছিল বেশ, সবকিছু মেনে নিয়েছিলাম আমি, কিন্তু তারপর আবারো সেই ধা*ক্কা খেলাম দেখো। কিন্তু কেন বলো তো? আমার সাথেই কেন এইসব হতে হলো? আমি তো এইসব কিছুই চাইনি। আমি তো শুধু চেয়েছিলাম যাকে নিজের সবটা দিয়ে ভালোবেসেছিলাম তার সাথে নিজের জীবনটা কাটাতে।”

শ্রুতির মুখটা বড্ড মলিন দেখালো, বিগত বছরে সবকিছুর মাঝে চাপা পড়ে যাওয়া হৃদয়ের ক্ষতগুলো যেন জলজ্যান্ত হয়ে ধরা দিল তার কাছে। রুশা করুণ চোখে চেয়েছিল শ্রুতির মুখপানে, সে মৃদু কন্ঠে একবার ডাক দিলো,

“শ্রুতি!”

শ্রুতি তার দিকে চেয়ে আবারো বলল,

“তখন আমার কাছে তিনটে অপশন ছিল জানো রুশা দি। এক, ম*রে গিয়ে জীবনটাকে সেখানেই শেষ করে ফেলা; দুই, যাকে ভালোবেসেছিলাম তার হাত ধরে একসাথে জীবনের পথ চলার জন্য কঠিন লড়াই করা আর তিন, বাবা মায়ের কথামতো বিয়ে করে প্রতিটা দিন বেচেঁ থেকে একটু একটু করে ম*রে যাওয়া। আমি দ্বিতীয় অপশনটা বেছে নিতে চেয়েছিলাম। তার জন্য শুধু মৃন্ময়কে পাশে চেয়েছিলাম আমি রুশা দি, কিন্তু মৃন্ময় সেটা হতে দেয়নি। লড়াই শুরুর আগেই আমাকে হারিয়ে দিয়েছিল ও। আমি তো হাত ধরতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ও চাইনি, কখনোই চাইনি তাইতো মাঝপথেই আমার হাত ছেড়ে চলে গিয়েছিল সে।”

মাথা নত করে দরজার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল মৃন্ময়, কথাটুকু শুনে আপনমনে মৃদু কাঁপা স্বরে বলে ফেলল সে,

“আমি চেয়েছিলাম, আমিও তোমার হাত ধরে লড়াই করতে চেয়েছিলাম।”

শ্রুতি মৃন্ময়ের দিকে তাকালো। চোখের কোণে এতক্ষণে জল জমে এসেছে শ্রুতির। সে উঠে দাঁড়িয়ে মৃন্ময়ের দিকে এগিয়ে গিয়ে তার মুখোমুখি দাঁড়ালো, বলল,

“মিথ্যে, মিথ্যে বলছো তুমি মৃন্ময়। যদি হাত ধরতেই চেয়েছিলে তবে কেন একলা ফেলে মুখ ফিরিয়ে চলে গিয়েছিলে সেইদিন? কেন এমন করেছিলে আমার সাথে? উত্তর দাও।”

মৃন্ময় আহত চোখে চাইলো, শ্রুতির দুই চোখের মাঝে দেখতে পেলো সে তীব্র অভিমান এবং সেই কিশোরী মেয়েটির হৃদয় ভাঙার তীব্র যন্ত্রণা, যা এতগুলো বছর ধরে মৃন্ময়ের হৃদয়ে জমে থাকা তীব্র অনুশোচনায় আ*ঘা*ত হা*নলো আবারো প্রবলভাবে। তার মনের তীব্র অনুতাপের আ*গুন বেড়ে উঠলো হুহু করে। মৃন্ময় সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নিলো, আগের ন্যায়ই বলল,

“আমি চাইনি তোমায় একলা ফেলে পালাতে, আমি সত্যিই চাইনি। আমিও তো তোমার সাথেই নিজের জীবন কাটাতে চেয়েছিলাম।”

শ্রুতি চেঁচিয়ে উঠে বলল,

“মিথ্যে, আবারো মিথ্যে বলছো তুমি।”

রুশা উঠে শ্রুতির পাশে এসে দাঁড়ালো। তাদের দুজনের মাঝে এখনই কথা বলা ঠিক হবেনা ভেবেই সে তাদের কথা বলতে দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো। মৃন্ময় বলল,

“আমি মিথ্যে বলছি না শ্রুতি। আমার কাছে যে আর উপায় ছিল না। আমার তখনো পড়াশোনা পুরোপুরি শেষ হয়নি, আমার তেমন কোনো চাকরি ছিল না, আমি কী করবো না করবো ভেবে ভয়ে ছিলাম ঠিকই তবুও ঠিক করেছিলাম তোমাকে নিয়ে পালিয়ে যাবো তারপর যা হবার হবে। আমি যে তোমাকে বিয়ে করছি সেটা মাকেও জানিয়েছিলাম আমি। কিন্তু…”

মৃন্ময় থামলো, পরের কথাটুকু বলতে হয়তো তার কিছুটা সংকোচ বোধ হলো। রুশা উপায়ন্তর না পেয়ে নিজেই বলল,

“কিন্তু তোমার বাবা কোনোভাবে তোমরা যে পালিয়ে বিয়ে করতে যাচ্ছো সেটা বুঝে গিয়েছিলেন, খুব সম্ভবত তোমাকে মৃন্ময়ের সাথে ফোনে কথা বলতে শুনে ফেলেছিলেন তিনি। আর তোমাদের যেদিন পালানোর কথা ছিলো সেদিন সকালে তিনি মৃন্ময়ের সাথে দেখা করে তাকে বুঝিয়েছিলেন যাতে মৃন্ময় এমনটা না করে।”

“বাবা!”

শ্রুতি অস্ফুট স্বরে বলল। তার বাবার সাথে যে মৃন্ময়ের কোনো কথা হয়েছিল সেদিন সেটা শ্রুতি জানতো না, তবে তার বেশ মনে আছে শ্রুতির বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর তার বাবা তাকে মৃন্ময়ের সম্পর্কে একটাও অকথা কুকথা বলতে ছাড়েনি। নানারকম কথা বলেছিলেন তিনি। মৃন্ময় বলে,

“সেদিন তোমার বাবা আমার সাথে দেখা করতে আসে, আর আমাকে বলে যে আমি যেন তোমাকে নিয়ে না পালায়। তোমার বিয়ের পাঁকা কথা হয়ে গিয়েছিল, দুইদিন পেরোলেই বিয়ে ছিল তোমার, এই মুহুর্তে তুমি একটা ছেলের সাথে এভাবে পালিয়ে গেলে তারা নাকি সমাজে মুখ দেখাতে পারবে না। চারিদিকে একটা বদনাম রটিয়ে যাবে। তাই তোমাকে নিয়ে আমি পালিয়ে গেলে তাদের নাকি ম*রে যাওয়া ছাড়া আর উপায় থাকবে না। তিনি আরো বলেছিলেন আমাকে ভাবতে যে আমার কোনো চাকরি ছিল না, কোনো নিশ্চয়তা ছিল না, তোমাকে বিয়ে করার পর আমি তোমাকে কীভাবে খুশি রাখতাম! তুমি কখনোই আমার সাথে সুখী হতে না। বরঙ তাদের দেখা পাত্র যোগ্য একজন পাত্র, তার সাথে বিয়ে হলে তুমি সবসময় সুখে থাকবে, ভালো থাকবে। তিনি আমাকে হাত জোড় করে অনুরোধ করেছিলেন যে আমি যেন তোমার ভালোর জন্য হলেও, বা অন্তত তাদের সম্মানের কথা ভেবে হলেও তোমাকে ভুলে যায়। তিনি নিজেদের বাড়ির সম্মান ভিক্ষা চেয়েছিলেন আমার কাছে। আমি তার কথা ফেলতে পারিনি শ্রুতি! আমি ভেবেছিলাম সত্যিই বুঝি তুমি সুখী হবে। সেই জন্যই আমি সেদিন তোমার হাত ছেড়ে ওভাবে মুখ ফিরে চলে আসতে বাধ্য হয়েছিলাম। তোমার হাতটা শক্ত করে ধরে রাখতে পারিনি আমি। আমাকে ক্ষমা করে দাও শ্রুতি। তারপরেও আমি ভেবে এসেছিলাম যে তুমি খুব ভালো আছো, সুখে আছো, সেই জন্যই কখনোই তোমার নতুন জীবনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করিনি আমি।”

“আর আমার বাবার কথা রাখতে গিয়ে তুমি আমার কথাটা একবারো ভাবলে না মৃন্ময়? আমার ভালো থাকাটাও তোমরাই নির্ণয় করে ফেললে?”

মৃন্ময়ের চোখ ছলছল করে উঠলো। শ্রুতি নিজের চোখের জল মুছে অন্যদিকে মুখ ফিরে পুনরায় বলল,

“তখন তো আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে তবে কেন আবার ফিরে এলে আমার জীবনে তুমি? আর কেন এভাবে পাশে থাকতে চাইছো তুমি আমার? কেন বলো? এখনো কেন একা ফেলে দিচ্ছো না আমাকে তুমি? দয়া দেখাতে চাইছো তুমি আমার ওপর? আমি কারোর দয়ার পাত্রী হয়ে থাকতে পারবো না।”

শ্রুতি কথাটুকু বলেই দৌড়ে গেলো ঘরের দিকে। পরিস্থিতি এমন বেগতিক দেখে রুশা ঘাবড়ে উঠলো। তাদের দুজনের মধ্যে কাকে কী বলবে, কীভাবে বোঝাবে, কীকরে এই পরিস্থিতির সামাল দেবে সেটা ভাবতেই হিমশিম খেলো সে। রুশা দ্রুত ঘরে গেলো শ্রুতির পিছু পিছু। মৃন্ময়ও এলো ঘরে। শ্রুতি নিজের স্যুটকেশটা বের করে এনে আলমারি থেকে নিজের কয়েকটা শাড়ি বের করতেই রুশা এসে তাকে আটকালো, বলল,

“এইসব কী করছো তুমি? রাখো এইসব।”

শ্রুতি যেন কর্নপাতই করলো না। মৃন্ময় শ্রুতির সামনে এসে হাত জোড় করে বলল,

“তুমি চাইলে আমাকে যা ইচ্ছে শাস্তি দাও বাট আই বেগ ইউ শ্রুতি প্লীজ এমন কোরো না। প্লীজ কথাটা শোনো।”

শ্রুতি পাগলের ন্যায় চিৎকার করে বলল,

“আমার কারোর দয়া চাই না, কারোর না। চলে যাও আমার থেকে দূরে তুমি, কাউকে চাইনা আমার, কাউকে না, কাউকে না, কাউকে না।”

রুশা শ্রুতির দুইবাহু ধরে সামান্য ঝাঁকিয়ে বেশ জোড়ালো কণ্ঠেই বলল,

“শ্রুতি! কী করছো কী তুমি? এমন বাচ্চামো কেন কোরছো? পাগল হয়ে গেছো তুমি? প্লীজ একটু শান্ত হও। আর কারোর না হলেও নিজের বাচ্চার কথাটা তো একবার অন্তত ভাবো। তুমি এমন করলে এই অবস্থায় তারো তো কোনো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।”

রুশার কথা শুনে শ্রুতি হুট করেই শান্ত হয়ে পড়লো, হাতে থাকা নিজের শাড়িগুলো মেঝেতে লুটিয়ে পড়লো তার। তারপর হুট করেই রুশাকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠলো সে। রুশা একজন বড় দিদির ন্যায়ই তাকে দুই হাত দিয়ে আগলে নিলো। শ্রুতির অবস্থা রুশা, মৃন্ময় উভয়কেই ব্যথিত করছে যেন। রুশা মৃন্ময়কে বলল,

“মৃন্ময়, তুই একটু বাইরে যা ভাই প্লীজ। আমি ওকে সামলাচ্ছি, বোঝানোর চেষ্টা করছি।”

মৃন্ময় কোনো কথা বলল না, মাথা নেড়ে বিনাবাক্যে ঘর থেকে বেরিয়ে এলো সে। বাইরে এসে সোফায় বসে পড়লো সে। যা যা কিছু হচ্ছে তার জন্য নিজেকে বড্ড দোষী মনে হচ্ছে তার।

কিছু সময় পর রুশা বাইরে মৃন্ময়ের কাছে এলো।

চলবে,….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে