তবু আছি কাছাকাছি (Doctors love) part-extra

0
3190

#তবু_আছি_কাছাকাছি(Doctors love)?
#writer_Sumaia_Islam_Mim
#part_extra
?
.
.
সুমু কলেজে পৌছাতেই পিছন থেকে নীল মাথায় গাট্টা মারে। সুমু বিরক্তি নিয়ে নীলের দিকে তাকায়। কারন সে খুব ভালো করে জানে এই আকাম নীল ছাড়া আর কেউ করবে না।

—দিলি তো মন খারাপ করে! বান্দর!

নীলঃ তোর মনের আবার কি হইলো?

—কিছুই হয়নি! আজকে মুডটা ফ্রেশ আছে।(মিষ্টি হেসে)

নীলঃ যাক! তা কি জন্য আজকে তোর মতো শাঁকচুন্নির মন ভালো জানতে পারি?

—না পারিস না! বদের হাড্ডি! আমি শাঁকচুন্নি??

নীলঃ আরে না! তুই ক্যান শাঁকচুন্নি হবি? তুই তো শেওড়া গাছের পেত্নী!

—(রেগে) তবে রে!!! মেছো ভুত! আজকে তোর ঘাড়টা মটকেই ছাড়বো!

সুমু বলেই নীলকে তাড়া করা শুরু করলো। সুমু তো আশেপাশে না দেখেই দৌড়াচ্ছে! আর নীল অনেকটা এগিয়ে গেছে দৌড়ে। সুমু বেখেয়ালিতে দৌড়াতে দৌড়াতে সাদির বুকের সাথে ধাক্কা খেল। ঠিক টাইমে সাদি ধরে ফেলে সুমুকে নয়তো ছিটকে পড়ে যেত সুমু। নীল পিছন ফিরে এই ঘটনা দেখে দৌড়ে আসে।

সাদিঃ এভাবে দৌড়াচ্ছো কেন? পরে গেলে? এখনি তো ছিটকে পড়তে!

—(হাঁপিয়ে বলতে লাগলো) আসলে ওই মামদো ভুতটাকে তাড়া করছিলাম তো তাই খেয়াল করি নি!

সাদিঃ মামদো ভুত?!!

নীল সুমুর কথা শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।

নীলঃ তুই কি? পিশাচিনী!!!! রাক্ষসী!!

—কেন রে আমি তোরে কামড় দিয়েছি যে তুই আমায় রাক্ষসী বললি!! হুতুম পেঁচা! বোবা ভুত!

নীলঃ তুই তো নিশী!!! রাতে মানুষকে ডেকে নিয়ে মেরে ফেলিস!!

—আর তুই কি? তুই…তুই…

বিরক্ত হয়ে সাদিকে জিজ্ঞাসা করলো,

—আরে ডাক্তারসাহেব! আপনি একটা ভুতের নাম বলুন না! মনে পড়ছে না তো!

নীল সুমুর কথা শুনে হো হো হেসে দিল।

নীলঃ মনে কিভাবে পড়বে? আর স্যারই বা কোত্থেকে জানবে? তুই শাঁকচুন্নি হলে স্যার হবে অতৃপ্ত আত্মা! স্যারকে অতৃপ্ত রেখেছিস!

—কিহ! আমি ডাক্তারসাহেবকে অতৃপ্ত রেখেছি? তুই তো একটা কল্লাকাটা ভুত!

সাদি এদের কথা শুনে বেহুশ হবার উপক্রম! আর সহ্য করতে না পেরে দিল এক ধমক! এক ধমকে পুরো ক্যাম্পাস চুপ! নীলও চুপ করে গেছে কিন্তু আমাদের সুমুর চুপ হওয়ার নাম নেই। সে এক হাত কোমরে রেখে আঙুল উঠিয়ে ঝগড়া করেই যাচ্ছে। নীল ইশারায় চুপ করতে বলেছে কিন্তু নাহ! সে চুপ করার নামও নিচ্ছে না। সাদি সুমুর পিছনে গিয়ে দুই হাত বুকে বাঁধলো। একটু মুচকি হেসে সুমুর কাঁধে খোঁচা মারলো!

—আরে ধুর ভাই! একটু ঝগড়া করতে দে! হ্যাঁ! এখন বল! চুপ হয়ে গেলি ক্যান?

সাদিঃ আমি বলি?

—আরে ভাই কে,,,,,,,,???

বলেই পিছনে ঘুরে সাদিকে দেখে ঠায় দাঁড়িয়ে গেল। এখন সুমুকে দেখে কেউ বলবেই না যে এই মেয়ে একটু আগে কোমর বেঁধে ঝগড়া করেছে। একদম শান্তশিষ্ট একটা মেয়ে। সাদির প্রচন্ড হাসি পাচ্ছে। তাও নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,

সাদিঃ এতো ভুত কইত্তে উৎপত্তি করলা?

—(বেখেয়ালিতে) হাহ???

সাদিঃ বললাম এতো ভুতের সাথে কি তোমার সাক্ষাৎ হইছিল? মামদো, কল্লাকাটা, মেছোভুত!!!! আরো কি কি যেন?(চিন্তা করার অভিনয় করে)

সুমু চুপ করে নিচু হয়ে আছে। একদম মনে হচ্ছে বিড়ালছানাকে বকা দেওয়ার পর যেমন কিউট ফেস বানায় তেমন! সাদি আর নিজেকে আটকাতে পারলো না। হেসে দিল সবার সামনে! সুমু হাসির শব্দে সাদির দিকে তাকাতে দেখে সাদি হাসছে। কি সুন্দর হাসি! অসভ্য লোক! এতো সুন্দর করে কেন হাসতে হবে?

সুমু মনে মনেই শত শত ভাবনা আওড়াচ্ছিল, কখন যে তার ঠোঁটে ও মিষ্টি হাসি ফুটে উঠেছে সে বুঝতেই পারলো না। কিন্তু নিঃসন্দেহে সুমু সাদির এই হাসির উপর মারাত্মক ক্রাশ খেয়ে বসে আছে। সুমু সাদিকে জিজ্ঞাসা করে বসলো,

—আপনি এতো সুন্দর করে হাসেন কেন?

সাদি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। সাথে সাথেই তার হাসিটা গায়েব হয়ে গেলো। সুমুকে একটু ফিসফিস করে বলল,

সাদিঃ বিকেলে বলবো!

সাদি পাশ কাটিয়ে চলে গেলো আর সুমু কিছুই না বুঝে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। বিকেলে বুঝাবে মানে?

.
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্লাস করে সুমু হোস্টেলে ফিরলো। হালকা খেয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়। আজকে সকালে তাড়াতাড়ি উঠার জন্য এখন বেশ ঘুম পাচ্ছে তার। ঘুমিয়ে প্রায় ৪ঃ৩০ এর দিকে উঠলো। উঠেই শুরু হলো বায়না। ইকরাকে পাগল করে নিচ্ছে বাইরে যাওয়ার জন্য কিন্তু বেচারি আইটেম বাকি থাকায় বের হতে পারবে না৷ আর নাদিয়াও চলে গেছে নিজের বয়ফ্রেন্ডের সাথে মিট করতে। হঠাৎ সুমুর ফোনে ফোন আসে, লেখা “ডাক্তারসাহেব”!

সুমু ভুলেই গেছিল সাদির কথা! ফোন কানে তুলতেই সাদি বলল রেডি হয়ে নিচে নামতে। সুমু একটু ভাবনা চিন্তা করে রেডি হয়ে নিচে গেলো। সাদি হোস্টেলের গেট থেকে কিছুটা দূরে কানে ফোন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সুমুকে আসতে দেখে ফোনটা পকেটে রেখে এগিয়ে এলো।

—আপনি এখানে কি করছেন ডাক্তারসাহেব?

সাদিঃ তোমাকে নিতে এসেছি!

—আমাকে নিতে এসেছেন মানে?

সাদিঃ আজকে তোমাকে নিয়ে ঘুরবো!

—কেন?(ভ্রু কুঁচকে)

সাদিঃ(ভাবলেশহীন ভাবে) কেন মানে? একা একা ঘুরতে ভালো লাগে না তাই!

সুমু কিছু বলতে চেয়েছিল তার আগেই সাদি বলল,

সাদিঃ ফুচকা খেতে যাব!

সুমু খুশিতে লাফিয়ে উঠে বলল,

—আগে বলবেন না! আমি তো এক কথায় রাজি! চলুন! চলুন!

সাদির হাত ধরে টেনে হাঁটতে লাগলো সুমু! আর সাদি ভাবছে ” কি পাগল মেয়ের প্রেমে পড়লাম রে বাবা!” একে তো ফুচকার লোভ দেখিয়ে কিডন্যাপ করতে আসলে হাসতে হাসতে তার সাথে চলে যাবে। মনে মনেই হাসলো সাদি।

,,
,,
,,
,,
(চলবে)……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে