তবু আছি কাছাকাছি (Doctors love) Part-33

0
3030

#তবু_আছি_কাছাকাছি(Doctors love)?
#writer_Sumaia_Islam_Mim
#part_33
?
.
.
সাদি আর মামুনিকে খাবার দিয়ে সুমু নিজেও খেতে বসলো। সুমু ইজিভাবেই খাবার খাচ্ছে! মামুনি সুমুর পাতে তরকারি দিতেই সুমু নাকমুখ কুঁচকে ফেলল।

—মামুনি! এগুলা কেন দাও! এগুলা দেখলেই আমার বমি আসে! ছিঃ!

মামুনিঃ যেভাবে ছিঃ বলছিস যেন এগুলা মানুষ খায় না?

—মানুষ খায় আমি খাই না! আমি ফেলে দিলাম!

সাদি অবাক হয়ে সুমুর কান্ড দেখছে। তার মনে একটাই প্রশ্ন সুমু কি প্রেগন্যান্ট?

খাওয়া দাওয়া শেষ করে সুমু টেবিল গোছগাছ করে রুমে প্রবেশ করে দেখে সাদি সারারুমময় পায়চারি করছে! তা দেখে সুমু একটু ভ্রু কুঁচকালো।

—কি হয়েছে ডাক্তারসাহেব? এভাবে সারারুম পায়চারি করছো কেন?

সাদি সুমুর দিকে এগিয়ে গিয়ে সুমুর বাহু ধরে বলল,

সাদিঃ সাবধানে এদিকে এসে বসো তো!

—কেন? কি হয়েছে? আরে….

সাদি সুমুকে নিয়ে বিছানায় বসে সুমুর চোখে চোখ রেখে বলল,

সাদিঃ সত্যি করে বলোতো তুমি কি প্রেগন্যান্ট?

—ওয়াট?

সাদিঃ হ্যাঁ! নাহলে তুমি এতো আচার খাও আবার খাবার খাইতে পারো না?

সুমু চোখ ছোট ছোট করে ফেলল।

—আচ্ছা তুমি কি ডাক্তার না ওঝা?

সাদিঃ মানে?

সুমু এবার হো হো করে হেসে দিলো।

—তুমি কি এটা নাটক পাইছো?

সাদিঃ বনিতা না করে সরাসরি বলো।

—(হাসতে হাসতে) ওয়েট।

সুমু ফোন লাগালো তার মাকে। সুমুর মা ফোন ধরতেই সুমু বলল,

—হ্যাঁ আম্মু! ভালো আছো?

মাঃ হ্যাঁ আলহামদুলিল্লাহ! তুই আর সাদি কেমন আছিস!

—খুব ভালো। আচ্ছা আম্মু বলোতো আমি সবচেয়ে কি খেতে বেশি পছন্দ করি?

মাঃ কি আবার আচার! সামনে পাইলে তো হামলে পড়িস!

—তোমার মনে আছে আমি কি পরিমান আচার খাই?

মাঃ কি হইছে বলতো?

—আরে বলো না আগে!

মাঃ তুই তো একবেলায় এক বয়াম খাইতে পারোস! কি হইছে ছোট্ট পাখি বলতো!

সুমু এবার জোরে হেসে দিয়ে বলল,

—তোমাদের জামাই মনে করছে আমি প্রেগন্যান্ট! আচার খাইছি দেইখা!

সুমুর মাও হেসে দিলো।

মাঃ শয়তান মেয়ে একটা! এর জন্য এভাবে লজ্জা দিবি বেচারাকে!

—আচ্ছা মা এবার বলো আমি সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করি কোন তরকারি?

মাঃ কেন?

—আরে বলো না!

মাঃ পটলের তরকারি! তুই তো নাম শুনলেই বমি করোস!

—হাহাহা! আচ্ছা রাখছি পরে কথা বলবো!

সুমু ফোন রাখতেই সাদির দিকে তাকিয়ে দেখে সাদি হা করে আছে! সুমু এগিয়ে গিয়ে সাদির গালে একটা চুমু দিলো।

—ওলে আমার কিউট জামাইটা! হাহাহা!!

সাদি পুরো দমে বোকা বনে গেছে।

সাদিঃ তুমি যখন পটলের তরকারি পছন্দ করো না তো রান্না করো কেন?

—তোমাদের জন্য! আমি খাইনা দেখে কি তোমরাও খাবা না? রান্না করতে পারি খেতে পারি না!

সাদিঃ ওহ!

সাদি এবার নিজেও চোখ বন্ধ করে শরীর ঝাঁকিয়ে হাসছে! সে ডাক্তার হয়েও কিভাবে উল্টাপাল্টা ভাবলো! হয়তো বিষয়টা প্রিয় মানুষকে ঘিরে তাই!

—তবে কথাটা মন্দ বলো নি! তোমার এই কান্ডে ভাবছি! আসলেই একটা বেবি নেওয়া উচিত! আমার পড়াশোনাও শেষ। এখন তো ট্রেনিং এ আছি! বলতে গেলে এখানেই ডাক্তারি করতে পারবো! তাই ভাবছি আমিও একটা বেবি নিয়েই নেবো, কি বলো?

সাদিঃ আর ইউ সিরিয়াস?

—ইয়াহ! আই এম সিরিয়াস! এমনেতেও কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগে!

সাদিঃ আচ্ছা নেবো কিন্তু কিছুদিন পর! আরেকটু ফ্রি হয়ে নিই।

—আচ্ছা! তার আগে আমাকে নিয়ে সাজেক ঘুরতে যাবা, ওকে?

সাদিঃ আচ্ছা! আম্মু কই?

—মামুনি ঘুমায়! জার্নি করে আসছে,টায়ার্ড!

সাদিঃ ঘুমাক!

—আমিও এখন ঘুমাবো! টাটা!

সাদিঃ মানে কি এখন ঘুমাবা? আমি ভাবলাম কোথায় আরো ঘুরতে যাবো একসাথে!

—প্লিজ ডাক্তার সাহেব! কাল যাই। আজ অনেক ক্লান্ত লাগছে আমার!

সাদির হালকা হেসে সুমুর কপালে চুমু দিয়ে বলল,

সাদিঃ আচ্ছা ঘুমাও!

.
সন্ধ্যার দিকে সুমু উঠলো। উঠে নামাজ পড়ে নিলো। সাদি এখনো ঘুমায়!

—ডাক্তারসাহেব! উঠো! নামাজ পড়বা না?

সাদিঃ(ঘুমঘুম কন্ঠে) আমি নামাজ পড়েই ঘুমাইছি! ডাইকো না!

—হায় রে! আমার ঘুম পাগল!

সুমু রান্নাঘরে চলে গেলো সন্ধ্যার নাস্তা বানাতে! মামুনি ঘরে বসে পায়চারি করছে আর দোয়াদরুদ পড়ছে! এতে করে ঘরে রহমত বর্ষিত হয়! আর সাদি আবার কাথামুড়ি দিয়ে ঘুমুচ্ছে।

,,
,,
,,
,,
(চলবে)……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে