#তবু_আছি_কাছাকাছি (Doctors love)?
#writer_Sumaia_Islam_Mim
#part_6
?
.
.
সুমু এখনো এক ধ্যানে সাদির দিকে তাকিয়ে আছে। আসলে ও বুঝতে চেষ্টা করছে যে হঠাৎ সাদি এমন রাগি ফেস কেন বানালো! কারন সাদিকে দেখে সুমুর নিজেরই ভয় লাগছে!
নীলঃ ওই ড্রামাকুইন! কোন ধ্যানে আছিস? ব্যাথা পাস নাই তো?
সুমু নীলের কথা শুনে আড়চোখে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
—যতবকা আমি তোর থেকে খাই! অতো বকা আমার নিজের ভাইও দেয় না!
নীলঃ তুই যে পাজি! তোরে খালি মাইরের উপরে রাখা উচিত। কেন যে রাকিব ভাইয়া তোরে মারে না!
—(রেগে) তার জন্য তোর আফসোস হচ্ছে!
নীলঃ বহুত বইন! দেখিস তোর জামাই উঠতে বইতে পিডাইবো তোরে!
—আমার সামনে তে সর! নাহলে তোর ওই দুইদিনের প্রেমিকারে সব বলে দিব!(শয়তানি হাসি দিয়ে)
সাদি এবার গলা খাঁকারি দিল। কারন সাদি আর এদের কথা নিতে পারছে না। হাসিতে পেট ফেটে যাচ্ছে! সুমু আর নীল ঝগড়া শুরু করলে চারপাশের কিছুই খেয়াল করে না।
.
হঠাৎ দুইজনেরই খেয়াল হলো সাদির কথা!
—সরি ডাক্তারসাহেব!
নীলঃ(অবাক হয়ে) উনি আমাদের স্যার হয় তুই ডাক্তারসাহেব কেন বললি!
সাদিঃ(একটু রেগে) তাতে কি তোমার সমস্যা হচ্ছে?
সাদির কথা শুনে নীল একটু ভড়কে গেল। সে তো স্যারের সম্মানের কথা ভেবেই বলেছে।
—সরি! আবারও সরি! আমি আসলে না দেখেই দোড় দিয়েছি, লেট হয়ে গিয়েছি তাই!
সাদিঃ(শান্ত ভাবে) তাই বলে এভাবে দৌড়ায় কেউ? পড়ে গেলে?
—পড়ে তো গেসিই!(অসহায়ভাবে)
নীলঃ তুই তো পড়বিই! তোর ডিএনএতেই প্রব্লেম! খালি ধুপধাপ কইরা পইড়া যাস!
সুমু রাগী চোখে নীলের দিকে তাকায়! তাতে বেচারার সব সাহস ফুস!
,
,
,
,
,
,
এদিকে রাকিবের সাথে রাগ করে বসে আছে তার বউ!
রাকিবঃ ও বউ! দেখো একটা দিনই তো লেট হইছে! কি করবো ইমার্জেন্সি ছিল!
মাহবুবাঃ দেখো একদম নাটক করবা না! আমি কি এমনি এমনি তোমার সাথে রাগ করছি! একে তো লেট করছো তার উপর আমার ক্লিপ আজকেও ভাঙছেন! কালকে যদি আমি এক বক্স ক্লিপ না পাইছি তো তোমার সবগুলো ট্রাউজার কেটে কুচি কুচি করে ফেলবো। তারপর বাবার লুঙি পড়বা!(রেগে)
রাকিবঃ আচ্ছা! আচ্ছা! কালকেই এক বক্স নিয়ে আসবো।
মাহবুবাঃ এক বক্স না। দুই বক্স! বাবুর ক্লিপও যে ভাঙছ!
রাকিবঃ(মাথা দুলিয়ে) আচ্ছা সুমুর জন্যও আনবো! খুশি?
মাহবুবাঃ হুহ!
এর মধ্যেই সুমুর ফোন আসে মাহবুবার ফোনে!
মাহবুবাঃ হ্যালো! বাবু! কি খবর তোমার?
—(ন্যাকা কান্না করে) ভাবীইই,,,,,,
মাহবুবাঃ কি হইছে বাবু? কেউ বকছে? ভাইয়া কিছু বলছে? শুধু বলো একবার!
রাকিব বোকা হয়ে তার বউয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। সে কখন কিছু বলল?
—(নিজেকে সামলে) কুল ডাউন ভাবী! ভাইয়া কিছু বলে নি। কিন্তু একটা থিউরি আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না।
মাহবুবাঃ কি থিউরি বাবু?
—কয়দিন ধরে আমি যেখানেই ধাক্কা খাই! সামনের মানুষটা ডাক্তারসাহেব হয়!
মাহবুবাঃ এই ডাক্তারসাহেবটা আবার কে?
—ওই যে আম্মুকে ইমার্জেন্সি দেখেছিল!ওইটা!
মাহবুবাঃ কে সাদি?
—আমার ওনার নাম মনে নেই!
মাহবুবা হেসে দিল। এই তার ননদ! বিখ্যাত এক পারসোনালিটি বহন করে। কারো নাম একবার মন দিয়ে না শুনলে তার মনে থাকে না। নিজের মন মতো একটা নিক নেম দিয়ে দেবে।
.
রাকিব তার বউকে হাসতে দেখে একটু স্বস্তি পেল। সে জানে যখনই মাহবুবা সুমুর সাথে কথা বলবে, তখন সে চাইলেও মন খারাপ করে থাকতে পারে না।
রাকিব ইশারায় মাহবুবাকে জিজ্ঞাসা করলো কি বিষয়! কিন্তু মাহবুবা এখনো হেসেই চলেছে!
মাহবুবাঃ(হেসে হেসে) উফ! বাবু! তুই আমাকে মন খারাপ করে থাকতেই দিবি না!
—উহুম! এই সময়ে একদম মন খারাপ করা যাবে না! যতদিন আমার পুচকুটা তোমার পেটে আছে ততদিন মন খারাপ করা যাবে না।
মাহবুবাঃ ওকে মেরি দাদি!
—তোমার দাদা কই গো ভাবী!
মাহবুবাঃ(অবাক হয়ে) কেন?
—ওমা! আমার জামাই! এখন পর্যন্ত আমিই দেখলাম না! তাড়াতাড়ি ছবি পাঠাও আমি দেখি!(হেসে)
মাহবুবাঃ ওরে,,,,দুষ্টু!(হেসে দিয়ে)
.
বেচারা সাদি শেষের টুকু শুনে মুখ ভার করে চলে গেলো। সুমু তো খেয়াল করে নি সাদিকে! এখনো হেসেই যাচ্ছে সে। এরমধ্যেই নীল এসে সুমুর মাথায় গাট্টা মারলো।
—ওই তোর সমস্যা কি? খালি মারস কেন?
নীলঃ তুই ওইটারই যোগ্য! সাদি স্যারের সাথে আবার গেঞ্জাম করছোস?
—(অবাক হয়ে) না! তুই ডাক্তারসাহেবকে কোথায় পেলি?
নীলঃ(মনে মনে) তাহলে স্যার এমন ভাবে মুখ ফুলিয়ে চলে গেলেন কেন? বিষয়টা কি দেখতে হচ্ছে!
—কিরে? কোন ধ্যানে আছিস?
নীলঃ না! কিছু না।
,
,
,
,
সাদি আনমনে গাড়ি চালাচ্ছে। তার মস্তিষ্কে শুধু একটা কথাই বাজছে! সুমু কেন তার জামাই বলল? আবার ছবি পাঠাতেও বলল! তার কি বিয়ে ঠিক হয়ে আছে? এইসব কথাই শুধু শুধু ভাবছে সাদি! দেখা যাক এবার সুমু কি করে!
,,
,,
,,
,,
(চলবে)……..