তবুও মনে রেখো পর্ব-০৫

0
312

#তবুও_মনে_রেখো। [০৫]

১৩,
ফোর’ডি মডেলের সুপার কম্পিটারের সামনে চোখ বন্ধকরে বসে আছেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ার ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ও গবেষক ডঃ খাইরুল মামুন হক। তার দুপাশে চেয়ারে আয়েসি ভঙ্গিতে বসে আছেন প্রফেসর উইলিয়াম স্টোরাব এবং আর্থ্যার কারশ্যাম। প্রায় দশ মিনিট পর চোখ খুলে দেখতে পেলেন সুপার কম্পিটারের সিস্ক্রোনিজেসন নাইন্টি ফাইভ পার্সেন্ট। এক মিনিটের কাজে দশ মিনিট সময় লাগলে কার না বিরক্তি লাগে। সিস্ক্রোনাস ক্যানসেল করে দিয়ে ল্যাব থেকে চলে গেলেন প্রফেসর খাইরুল মামুন হক। যাওয়ার আগে ল্যাবে থাকা এনএম ট্রির পাতা আলতো করে ছুইয়ে দিলেন। লজ্জাবতী গাছের পাতার মতো বন্ধ হয়ে গেলো গাছটার সব পাতাগুলো আর পাতাগুলোর উপর থেকে যে সহস্র জোনাকির মতো আলোগুলো এতক্ষণ পুরো ল্যাবকে আলোকিত করে রেখেছিলো তা বন্ধ হয়ে গেলো। ল্যাব থেকে বেড়িয়ে রিসার্চ টিমের প্রধান ক্যার্থবাট বার্নাপকে কল করলেন।যাতে কালকের মধ্যে ওই নিউক্লিয়ার ট্রির কৃতিম বীজ তৈরী করার কাজ শুরু করে দেয়। প্রথমে এক হাজার বীজ তৈরী হলেই হবে। আর্টিফিশিয়াল শেড কালচারাল মিডিয়ামে বীজ তৈরী হতে সময় লাগবে বড়জোর দুইদিন।

পরেরদিন সকাল দশটায় ল্যাবে আসেন খাইরুল মামুন। ক্যার্থবাট বার্নাপ তখনো কাজ করছিলেন। খাইরুল মামুন কম্পিটারের সামনে বসে ক্যার্থবাট বার্নাপকে সুধায়,
” হাউ ফেয়ার দ্যা ওয়ার্ক অফ মেইকিং শীডস্ প্রোগ্রেস? ”
ক্যার্থবাট বার্নাপ একটা প্ল্যান্ট নিয়ে কাজ করছিলেন খাইরুল মামুনের কথা শুনে তিনি চমকে উঠেন। একটু ইতস্তত করে বলেন
” ইট উইল বি ডান এট দ্যা রাইট টাইম স্যার।”
“সো দিস মানডে দ্যা শীডস্ ক্যান বি সেন্ট টু নাসা?”
” ইয়েস স্যার।”
খাইরুল মামুন তার এনএম ট্রির সামনে গিয়ে একমনে তাকিয়ে রইলেন গাছটার দিকে। তার স্বপ্ন এতদিনের পরিশ্রম সব এবার সত্যি হতে চলেছে।”

সেদিন সারাদিন ল্যাবে কাটিয়ে দিলেন। নিজের এপার্টমেন্টে ফিরে রুপাকে কল করলেন। পর পর কয়েকবার রিং হওয়ার পরেও কল রিসিভ করলো না রুপা। লাষ্ট কবে রুপার সাথে মন খুলে কথা বলেছে মনে পরে না খাইরুল মামুনের। মাঝে মাঝে নিজের প্রতি রাগ হয় তার। রুপা কোন রকম এক্সপেকটেশন ছাড়াই তাকে ভালোবেসে গেছে বিনিময়ে কি পেয়েছে মেয়েটা। তিনি তো রুপাকে কিছুই দিতে পারেনি। শুধু কয়েকটা মিথ্যে আশ্বাস আর একটা সুখের স্বপ্ন দেখানো ছাড়া। মিথ্যে আশ্বাস? নিজেকেই প্রশ্ন করে খাইরুল মামুন। আসলে কি সে রুপাকে মিথ্যে আশ্বাস দিয়েছে? পরক্ষনেই নিজের মনকে বুঝায় সে মিথ্যে আশ্বাস কেন দিবে? তিনিও তো ভালোবাসেন রুপাকে। তাইতো নিজের জীবনে অন্য কোন নারীকে জড়াননি তিনি।যখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে ইংল্যান্ড আসলো তখন কত মেমসাহেব তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে। কত নারী তাকে একবার কাছে পেতে চেয়েছে তাদের সবার প্রপোজাল তিনি রিজেক্ট করেছেন শুধু মাত্র রুপার জন্যে। রুপার প্রতি অন্যায় করা হবে ভেবে কখনো কোন মেয়ের দিকে গভীর দৃষ্টি দেননি। অথচ রুপার সাথে তার সম্পর্কটাই কেমন নড়বড়ে হয়েগেছে আজকাল। খেলাঘরের মতো। দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবারও কল করলেন রুপার নাম্বারে এবারও রিসিভ হলো না। মনে অনেক প্রশ্ন আর মাথায় চিন্তা রেখে বিছানায় গা এলিয়ে দেন খাইরুল মামুন।

পাঁচদিন পর,
পরিকল্পনা মাফিক নাসার কিছু বিজ্ঞানি মিলে বীজগুলো পৃথীবিতে রোপন করে। এবং সেখান থেকে ছোট ছোট চারা গাছ জন্ম নেয়। খাইরুল মামুনের কোন বিশ্রাম নেই। স্যাটেলাইটের লাইভ ফুটেজে চোখ রেখে সবটা দেখছেন তিনি। তবে কাল থেকে তার মনে কেমন একটা খটকা লাগছে, ফোরডি মডেলের সুপার কম্পিউটারে গাছগুলোর বৃদ্ধি যে রকম দেখেছিলেন স্যাটেলাইটের লাইভ ফুটেজের গাছগুলোর থ্রিউরিক্যাল মডেলের প্রায় দ্বিগুণ। প্রথমে ভাবলেন, হয়তো কম্পিউটার ভুল এসেছিল তাই কোন পাত্তা দিলেন না। কিন্তু তার আশংকা সত্যি হলো তখন যখন নাসা থেকে একটা মেইল আসলো। সেখানে লেখা ছিলো, গাছগুলো বৃদ্ধির হার থ্রিউরিক্যাল মডেলের দ্বিগুন হয়েগেছে যদি এগুলো না থামানো যায় তাহলে এক সময় এই গাছগুলো দিয়ে পুরো বিশ্ব ঢেকে যাবে।” চিন্তায় পরে যান খাইরুল মামুন। কম্পিউটারের নিজের রিসার্চের সমস্ত তথ্য দেখতে থাকেন।এমন সময় অট্ট হাসিতে ফেটে উঠো পুরো ল্যাব। ক্যার্থবাট বার্নাপ বুকে হাত দিয়ে আট্ট হাসিতে মেতে উঠছে। উইলিয়াম স্টোরাব ও আর্থ্যার ক্যারশাম তার দিকে অবাক হয়ে তাকায়। প্রফেসর খাইরুল মামুন একদিকে অস্থির হয়ে উঠছেন আর রিসার্চ টিমের প্রধান এনি হাসছেন! পাগল হলেন নাকি! খাইরুল মামুন বিরক্তি নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললেন,
” হোয়ায় আর ইউ লাবয়িং? কেন্নট সি দ্যা প্রবলেম? ”
ক্যার্থবাট বার্নাপ হাসি থামিয়ে গম্ভীর হয়ে খাইরু মামুনের দিকে তাকালেন। কিছুক্ষণ পর গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলেন,
” হোয়ায় আর ইউ সো রেস্টলেস স্যার? ট্রিস্ গ্রোয়িং টেনফোল্ড!”
ক্যার্থবাট বার্নাপের কথা শুনে শান্ত হয়ে গেলেন খাইরুল মামুন। স্তব্ধ হয়ে বসে শূন্য দৃষ্টিতে ক্যার্থবাটের দিকে তাকিয়ে বললেন,
” হাউ ডিড ইউ নো?!
” আই ইউল নো ইভরিথিং, সাইন্টিস্ট।”
” হাউ?”
ক্যার্থবাট বার্নাপ হাসলেন। খাইরুল মামুনের দিকে শক্ত দৃষ্টি রাখলেন। অতঃপর শান্ত সুরে বললেন,
“দেয়ার অয়াজ নাথিং রোং উইথ ইউর প্রোগ্রাম।”
” হোয়ায় দিস প্রবলেম?”
“আই ডিড।”
” হোয়াট ডিড ইউ ডো?”
” আই এডেড টুয়েলভ মালিছিয়াস ক্রোমোজোম।”
ক্যার্থবাট বার্নাপের কথা শুনে খাইরুল মামুন অবাক হয়ে যান। আর অগোচরে বার্নাপ এতকিছু করে ফেলেছে ভাবতেই পারছেন না তিনি। অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন,
” হাউ? ”
“দ্যা ডে ইউর ওয়ার্ক ইজ ডান।”
” আই উইল নট লিভ ইউ।” খাইরুল মামুন তেড়ে আসেন ক্যার্থবাট বার্নাপের দিকে তখন উইলিয়াম স্টোরাব এবং আর্থ্যার কারশ্যাম তার দুই হাত ধরে তাকে আটকিয়ে দেন। ক্যার্থবাট বার্নাপ তার ঢিলেঢালা প্যান্টের পকেট করে একটা বন্দুক বের করে সেটা খাইরুল মামুনের কপাল বরাবর তাক করে বলে,
” ডন্ট গেট এক্সসাইটেড, সাইন্টিস্ট।ইউ উইল ডাই, নট মি। দেন আই উইল বি দ্যা গ্রেটেস্ট সাইন্টিস্ট ইন দ্যা ওয়ার্ড।”
” ইউ ক্যান্নট ডো’ইট।”
” আই ক্যান ডো ইভরিথিং, ইউ উইল’সি।”
ক্যার্থবাট বার্নাপ ট্রিগার চাপবে এমন সময় খাইরুল মামুনের কম্পিটারে মেইল টোন বেজে উঠে। সবাই কম্পিটারের দিকে তাকায়। খাইরুল মামুন মেইল দেখেন। নাসা থেকে মেইল এসেছে সেখানে স্পষ্ট লেখা আছে,

” প্রফেসর খাইরুল মামুন হক, প্লিজ টেক এ্যনি এমিডিয়েট স্টেপ। দ্যা হাইড এন্ড গ্রোথ্ রেয়্ট অফ ইউর নিউক্লিয়াস মডিফাইয়ার ট্রি ইজ ভেরী মাচ বিয়ন্ড। ইউর এন্টিসিপেশন ইন ভেরী হাউআ্যার দেয়ার ফোরেস্ট্ আর বিকামিং টুইস ইন সাইজ। দেস্ ট্রিজ আর অলসো প্রোডিউসিং টক্সইক রেডিওকটিভ আইসোটোপ অফ ভ্যারিয়াস গ্যাস্ ইন্সটেন্স অফ অক্সিজেন।”

সকলের দৃষ্টি তখন কম্পিউটারের দিকে। ক্যার্থবাট বার্নাপের হাতের বন্দুক তখনো খাইরুল মামুনের কপাল বরাবর তাক করা তবে তার সম্পূর্ণ মনোযোগ কম্পিউটারের স্কিনে। খাইরুল মামুন তার এই অন্যমনস্কতার সুযোগ নিলেন। ল্যাব থেকে বের হওয়ার জন্যে কয়েক পা এগিয়ে যেতেই ক্যার্থবাট বার্নাপের দৃষ্টি পরে তার সাথে সাথে তার হাতের বন্দুক গর্জে উঠে। গুলিটা খাইরুল মামুনকে ভেদ করে গিয়ে লাগলো সুপার কম্পিউটারের কলিং ইউনিট এর একটা লিকুইড নাইট্রোজেন এর সিলিন্ডারে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ঘরটা অক্সিজেন শূন্য হয়ে পুরো নাইট্রোজেনে ভরে গেলো আর সিলিন্ডার বিস্ফোরণের সময় নাইট্রোজেন ও অক্সিজেনের বিক্রিয়ায় তৈরী হলো এক শ্বাসরোধকারী নাইট্রাস অক্সাইড। নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাসের কারনে অজ্ঞান হয়ে গেলো ল্যাবে থাকা চারজন সাইন্টিস্ট। বেজে উঠলো সাইরেন। অন্যান্য ল্যাব থেকে গবেষকরা ছুটে এলেন।

১৪,
অনেকদিন পর ছাদে আসে মেহের। রুপা মেহেরের আগেই ছাদে এসেছে। পরন্তু বিকালের কোমল রোদের তাপে দাঁড়িয়ে থাকতে বেশ লাগছে রুপার। অস্তগামী সূর্যটা লাল আভা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিচ্ছে ধূসর রঙের আকাশে। অন্নের সন্ধানের বেড়িয়ে পরা পাখিগুলো কুলায় ফিরে যাচ্ছে। ব্যাস্ত শহরের ব্যাস্ত মানুষ তাদের ব্যাস্ততা কাটিয়ে ফিরে যাচ্ছে নীরে। আকাশের দিকে একমনে তাকিয়ে রুপা ভাবছে তার খাইরুল ভাইয়ের কথা। কতদিন হলো রুপাকে কল করেনা তার খাইরুল ভাই। এদিকে রুপার মনে অভীমানের মেঘ জমে সেটা বৃষ্টির ধারার মতো বয়তে শুরু করছে। ধূসর রঙের আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল,
“তুমি কি আমাকে ভুলে গেছো খাইরুল ভাই।”
রুপার মন কাঁদে খাইরুল ভাইয়ের জন্যে। যে মানুষটার অপেক্ষায় নিজের কৈশোর যৌবন সব কাটিয়ে দিলো সেই মানুষটাকে সেদিন কত কথা শুনিয়ে দিলো। রাগে নাকি অভিমানে বলেছিলো জানেনা রুপা। তবে আজকাল মানুষটাকে বড্ড কাছে পেতে মন চায়। মনে হয় সে থাকুক না আমার পাশে আমার ছায়া হয়ে। অপেক্ষায় তো সারাটা জিবন কাটিয়ে দিলাম এবার না হয় সে কাছে আসুক পাশে থাকুক। কোন এক শ্রাবনের ধারায় দু কাপ চায়ে আমাদের আলাপ হোক। চাঁদনী রাতে জোস্ন্যার আলোয় গায়ে মেখে দুজন দুজনকে ভালোবাসুক, রাতে তার বুকের বা পাশটা আমার ঘুমানোর বালিশ হোক। ঘুম থেকে উঠে তার ঘুমন্ত মুখটা দেখে সকাল শুরু হোক। দিন শেষে তার হাসি মুখটা দেখে সারাদিনের ক্লান্তি দূর হোক। খুব করে মন তাকে কাছে পেতে চায়। রেলিং দু হাতে চেপে ধরে দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুপা। মেহের ছাদে এসে রুপাকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার কাছে আসে। রুপার কাঁধে হাত রাখতেই চমকে উঠে রুপা। পানিতে টলমল করা চোখদুটো বন্ধকরে বড় করে শ্বাস নেয়। সরাসরি মেহেরের দিকে তাকিয়ে বলে,
” কখন আসলি?”
” মাত্র আসলাম। তুমি এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন? মন খারাপ নাকি তোমার?”
” মন খারাপ কেন হবে? তুই হঠাৎ ছাদে আসলি যে?”
” তোমাকেই খুজছিলাম।”
” কেন কি হয়েছে?”
“মা গ্রামে একটা এনজিও খুলার কথা বলছিলো সেটা নিয়েই কথা বলতে এলাম।”
“এনজিও! কিসের এনজিও। আপা তো আমাকে কিছু বলেনাই।”
” কখন বলবে তোমাকে। সারাদিন স্কুলে কাটিয়ে যতক্ষণ বাড়িতে থাকো ততক্ষণ তোমার বিরহ পালন করতেই যায়।”
“দিন দিন ফাজিল হয়ে যাচ্ছিস।”
“আচ্ছা শুননা, বলছি বাংলাদেশ ন্যাশনাল পোর্টাল এর নাম নিশ্চয় শুনেছো। মা চাইছে এর একটা শাখা আমাদের গ্রামে তৈরী করতে।”
” বাংলাদেশ ন্যাশনাল পোর্টাল মানে ওই মহিলাদের,,,
“হ্যাঁ, অনগ্রসর, অবহেলিত, বেকার মহিলাদের আত্ম-কর্মসংস্থান ও আয়বর্ধক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয় মহিলা সংস্থা দর্জ্জিবিজ্ঞান, এমব্রয়ডারী, ব্লক-বাটিক, চামড়াজাত শিল্প এবং খাদ্য প্রস্ত্তত ও প্রক্রিয়াজাতকরণ ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। মানব সম্পদ উন্নয়ন, আত্ম-কর্মসংস্থান, দারিদ্র বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আর্থ- সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সংস্থার ৬৪টি জেলা ও ৫০টি উপজেলা শাখার মাধ্যমে ০৪টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। এগুলো হলো: নগর ভিত্তিক প্রান্তিক মহিলা উন্নয়ন প্রকল্প, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্প, জেলা ভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রকল্প, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্প। এ সকল প্রকল্পের মাধ্যমে শহর অঞ্চলের দরিদ্র, বেকার, অসহায়, বিত্তহীন মহিলাদের সেলাই ও এমব্রয়ডারী, ব্লক-বাটিক এন্ড স্ক্রীন প্রিন্ট, নকশী কাঁথা ও কাটিং, পোল্ট্রি উন্নয়ন, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরন ও সংরক্ষণ, চামড়াজাত দ্রব্য তৈরী, সাবান ও মোমবাতি তৈরী, বাইন্ডিং ও প্যাকেজিং, মোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, হাউস কিপিং কম্পিউটার, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন, বিউটিফিকেশন, ক্যাটারিং ট্রেডে কারিগরী ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা এবং আত্ম-কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বর্ণিত প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন ট্রেডে ১৬১৫০০ মহিলাকে কম্পিউটারসহ বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
” এমনটা হলে তো ভালোই হয়।”
“হ্যাঁ, এবার নিচে চলো।”
মেহের আর রুপা দুজনেই ছাদ থেকে নেমে যায়। ড্রায়িংরুমে আসতেই সৈয়দা মাহবুবার থমথমে মুখটা দেখে মেহেরের পা থেমে যায়। রুপা কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে ঠোঁটে নকল হাসে ফুটিয়ে বলে,
“কিগো আপা শরীর খারাপ লাগছে তোমার। মুখটা এত থমথমে হয়ে আছে কেন?”
সৈয়দা মাহবুবা কিছু বলেন না। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন টিভির স্ক্রিনের দিকে। চোখ দুটো পানিতে টলমল করছে তার। ক্ষনিকের মধ্যে হাতের রিমোটটা নিচে পড়ে সেটা ভেঙে গেল। চোখ থেকে দু ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল তার। মায়ের এমন অবস্থা দেখে মেহের দৌড়ে তার কাছে এলো। রুপা আরো কিছু বলবে তখনই তার চোখ যায় টিভির স্কিনে। সময় সংবাদ নিউজ চ্যানেলের লাইভ রিপোর্টিং চলছে। স্কিনে ভেসে উঠছে কিছু আহত মানুষের দেহ তাদের কারোর যে জ্ঞান নাই এটাই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। নিচে ভেসে উঠেছে শিরোনাম।টিভির স্কিনের ছবি আর শিরোনাম দেখে রুপা কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে। ধপ করে বসে পড়ে সে সুফায়। বিড়বিড়য়ে বলে, খাইরুল ভাই খাইরুল ভাই। ” রুপার কথা শুনে মেহের টিভির স্কিনে ভেসে উঠা শিরোনাম টুকু পড়তে থাকে,

“অক্সফোর্ডশায়ারের বায়োটেকনোলজি ল্যাবে বিস্ফোরণ। আহত অবস্থায় সকলকে উদ্ধার করা হয়েছে তার মধ্যে একজন বাঙালি একজন আফ্রিকান ও দুইজন ইংল্যান্ডের অধিবাসী।”

মেহের নিচ থেকে রিমোট তুলে সেটা ঠিক করে ব্যাটারি লাগিয়ে নিল তারপর চ্যানেল ঘুরিয়ে দিল অন্য একটা নিউজ চ্যানেলে সেখানেও একই রিপোর্টিং চলছে “আন্তর্জাতিক সংবাদ।”তারপর আরো একটা চ্যানেলে ঘুরিয়ে দিল সেখানে নিচে শিরোনামে দেখতে পেলো, “প্রফেসর খায়রুল মামুন হক ও তার সহকারীরা নাসায় নিউক্লিয়ার মডিফায়ার ট্রির গ্রোথের যে ইনফরমেশন দিয়ে ছিলো প্রাকৃতিক বায়ুমণ্ডলে সেগুলো প্রপারলি কাজ করছেনা। পৃথীবি এক বিরাট ধ্বংসের মুখে পরতে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় এই কঠিন বিপদ থেকে পৃথীবিকে বাঁচাতে প্রফেসর খাইরুল মামুন হক ও তার সহকারীদের প্রয়োজন যারা এখন আহত অবস্থায় পরে আছেন ইংল্যান্ডের হসপিটালে। ”

কম্পিউটার কিংবা অন্য কোন যন্ত্রের মাধ্যমে ডেটাকে একস্থান হতে অন্য স্থানে কিংবা এক ডিভাইস হতে অন্য ডিভাইসে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া হচ্ছে ডেটা কমিউনিকেশন। কাজেই কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে এক স্থান হতে অন্যস্থানে নির্ভরযোগ্যভাবে ডেটা বা উপাত্ত আদানপ্রদান সম্ভব। ডেটা কমিউনিকেশন ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে যোগাযোগ প্রযুক্তি বা কমিউনিকেশন টেকনোলজি বলা হয়। বর্তমানে এমন কোন ক্ষেত্র পাওয়া যাবে না যেখানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নেই। মানুষের জীবনে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রাপ্তি সহজতর করার লক্ষ্যে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তথ্য প্রযুক্তির বিবর্তনের পাশাপাশি যোগাযোগ প্রযুক্তিরও ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এক সময় রেডিও ব্যবহার করে মানুষ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করত, পরবর্তীতে টেলিভিশন, টেলিগ্রাফ, টেলিপ্রিন্টার, ফ্যাক্স, টেলিটেক্সট, টেলিফোন, মোবাইল ইত্যাদি চালু হয়েছে। মানুষের তথ্যের চাহিদা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। মানুষ এখন যখন যেখানে প্রয়োজন তখন সেখানে সঠিক তথ্য পেতে চায়। যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া শুধুমাত্র তথ্য প্রযুক্তি মানুষের এই চাহিদার যোগান দিতে পারবে না। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি উভয়ের উন্নয়নের ফলে মানুষের এই চাহিদা পূরণ হচ্ছে।এক কথায় বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের খবরা খবর মুহূর্তের মধ্যে আমাদের হাতে পৌঁছে যায়। ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশায়ার শহরের বায়োটেকনোলজি ল্যাবে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা বিশ্বকে এক আতঙ্কের মুখে ফেলে দিয়েছে।

ঘটনাটা জানার পর মৌ ছুটে আসে সৈয়দা মাহবুবার বাড়ি। সৈয়দা মাহবুবা অবস্থা শোচনীয় ভাইয়ের কথার চিন্তা করে শরীর অসুস্থ হয়ে গেছে তার। রুপার শরীরটাও ভালো লাগছেনা। সবাই মিলে সৈয়দা মাহবুবাকে নিয়ে হসপিটালে যায়। সৈয়দা মাহবুবা কে ইমারজেন্সিকে নিয়ে যাওয়া হলে ডক্টররা জানায় তিনি হার্ট অ্যাটাক করেছেন। হসপিটালে ভর্তি করা হয় তাকে। রুপা নিজেকে সামলে বোনের পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়ায়। তার মনের ভিতরে যে ঝড় উঠেছে বাহির থেকে দেখে সেটা বুঝার উপায় নেই।

সন্ধ্যা নাগাত আলিহান ও তার পরিবার আসে হসপিটালে। রাহনাফ হসপিটালে আসে সন্ধ্যার পরে। ডক্টরের থেকে সৈয়দা মাহবুবার অবস্থা জেনে নিয়ে করিডোরে বসে। আলিহান রাহনাফকে বলে,
” তোর বন্ধুর সাথে কথা হয়েছে? মামার অবস্থা এখন কেমন?”

সবাই রাহনাফের দিকে তাকায়। রাহনাফ একনজর মেহেরের শুকিয়ে যাওয়া মুখটার দিকে তাকিয়ে বলল,
” হ্যারি এখন হসপিটালেই আছে। স্যারের অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি এখনো পর্যন্ত। ল্যাবে যারা ছিলো তাদের কারো ঞ্জান ফিরেনি।”
খাইরুল মামুনের পাশে এখন পরিবারের কউকে দরকার। জ্ঞান ফিরার পর তাকে সামলানোর জন্যে তার পাশে আপন কাউকে দরকার। কিন্তু কে যাবে এই মুহূর্তে সুদূর যুক্তরাজ্যে। সৈয়দা মাহবুবা অসুস্থ। সৈয়দা মাহবুবা আর রুপা ছাড়া ওদের পরিবারের কারো পাসপোর্ট নেই। তাই ঠিক করা হলো রাহনাফ আর রুপা দুজনেই যাবে খাইরুল মামুনের কাছে।

রুপার শরীর খারাপ থাকার কারনে মৌ রুপাকে নিয়ে বাড়ি চলে যায়। হসপিটালে থাকে শুধু মেহের। সৈয়দা মাহবুবাকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখা হয়েছে। মেহের মায়ের শিয়রের পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। দুচোখ দিয়ে অনর্গল অশ্রু ঝড়ছে তার। এই মানুষটাকে শত কঠিন বিপদে নিজের মনকে শক্তকরে বিপদের মোকাবেলা করতে দেখেছে কখনো ভেঙে পরেনি। একা হাতে ঘরে বাইরে সবটা সামলেছে। আর আজ সে হসপিটালের বেডে এমন নিথর হয়ে পরে আছে। সৈয়দা মাহবুবার এমন অবস্থা দেখে কষ্ট হচ্ছে মেহেরের। চোখের জল মুছে সৈয়দা মাহবুবার কপালে অধোর ছুঁইয়ে দেয়। বলে,
” তোমাকে এমন নিথর হয়ে শুয়ে থাকা মানায় না মা, তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠো। এখনো তোমার অনেক কিছু করার বাকি আছে মা।”
কেবিন থেকে বেরিয়ে মৌকে কল করে রুপার কথা জেনে নেয়। তখনি দেখতে পায় রাহনাফ দুকাপ চা নিয়ে তার দিকে এগিয়ে আসছে। মেহের ভ্রু কিঞ্চিৎ ভাজ করে বলে,
” আপনি এখানে? বাড়ি যাননি?”
রাহনাফ মেহেরের সামনে দাঁড়িয়ে মৃদু হাসে। ডানহাতটা মেহেরের দিকে বাড়িয়ে দিলে মেহের চায়ের কাপটা হাতে নেয়। রাহনাফ বলে,
” গিয়েছিলাম তো। কিছু দরকারি জিনিসপাতি নিয়ে আবার চলে আসলাম।”
রাহনাফ তার কাধে থাকা ব্যাগটা চেয়ারের উপর রেখে আবার বলে,
” আন্টির কি অবস্থা এখন?”
মেহের চায়ের চুমুক দিয়ে বলে,
“ঘুমাচ্ছে এখন।”
” আচ্ছা।
কিছুক্ষণ পর রাহনাফের সেলফোনটা বেজে উঠে। রাহনাফ প্যান্টের পকেট থেকে মোবাইল বের করে নাম্বার দেখে নেয়। তারপর মেহেরের হাতে চায়ের কাপ দিয়ে একটু দূরে একাকি জায়গায় চলে যায় কথা বলার জন্যে। কল রিসিভ করে রাহনাফ প্রশ্ন করে,
” হোয়াট ইজ দ্যা সিচুয়েশন নাও হ্যারি?”
” নো ওয়ান রেগিয়েন্ড কনসেসনেস। সেইম সিচুয়েশন।”
” ওকে। ইউ কিপ গিভিন আপডেট ফ্রম দ্যা হসপিটাল।আই উইল কাম ভেরি সুন।”
“ইয়াহ।”
কল কেটে মেহেরের সামনে এসে দাড়ায় রাহনাফ। মেহের প্রশ্ন করে,
” কে ছিলো?”
” হ্যারি, হ্যারি হওয়েল আমার ফ্রেন্ড। মামাকে যে হসপিটালে নেওয়া হয়েছে ও সেখানে আছে ওর থেকেই মামার খবর নিচ্ছি।”
” ওহ্। মামা কেমন আছে এখন।”
” আগের মতোই জ্ঞানহীন। আচ্ছা শুনো কাল সকালের ফ্লাইটে আমরা ইংল্যান্ড যাচ্ছি। টিকেট কাটা হয়েগেছে। ভোরে রওনা দিবো।
রাহনাফের কথা শুনে মেহের অবাক হয়। বলে,
” কখন করলে এতকিছু?”
” হসপিটাল থেকে যাওয়ার পর। ইমার্জেন্সি টিকেট বুক করেছি। রুপা আন্টিকে নিয়ে ভোরে রওনা দিবো।”
মেহের কিছু বলতে যাচ্ছিলো রাহনাফ মেহেরের অধোরে আঙ্গুল ঠেকিয়ে থামিয়ে দেয়। দুপা এগিয়ে আর কাছে এসে দাঁড়ায় রাহনাফ। বলে,
” নো মোর ওয়ার্ড্স। এবার একটু শান্ত হয়ে বসতো।”
মেহের মুখরা ঘুরিয়ে নেয়। বলে,
” আমি শান্তই আছি। অফিস থেকে ছুটি নিয়েছো? ”
” মেইল করেছি।”
“আচ্ছা।”
“মেহের,,
” হু
রাহনাফ মেহেরের শুকনো মুখটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলল বলল,
” সাবধানে থেকো এবার আমি আসছি গুছগাছ করতে হবে।”

১৫,
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে নাসার প্রধান সেনাপতি স্টিভ জুর্কজিক জরুরী মিটিং ডাকলো। এনএম ট্রির ঘন জঙ্গল থেকে কি করে পৃথিবীকে রক্ষা করা যায় এই নিয়ে বিজ্ঞানীরা একের পর এক মতামত ব্যক্ত করতে শুরু করল। মিটিং শেষ হলো সিদ্ধান্ত নেওয়া হল অটোমিক মিসাইল এর সাহায্যে কয়েক কিমি পর্যন্ত লম্বা ঘন জঙ্গলকে ছাইয়ে পরিনিত করা হবে। তিন ঘন্টা পর শুরু হল অটোমিক মিসাইল। যার ফলে ফল হল আরও খারাপ। পরিস্থিতি এখন আরো বেগতিক। এনএম ট্রি তার ক্ষমতাবলে আটোমিক মিসাইল এর রেডিও একটিভ এলিমেন্ট এর শক্তি শোষন করে হয়ে উঠলো আরো ভয়ংকর। এমএম ট্রি বৃদ্ধি পেতে লাগলো আর পৃথিবীর বায়ুমন্ডল ভরে উঠতে লাগলো বিভিন্ন গ্যাসের আইসোটোপ এ। তবে এখন উপায়? নাসার প্রধান সেনাপতি স্টিভ জুর্কজিক আবার জরুরী মিটিং ডাকলো। নাসাতে আবার জরুরী মিটিং বসলো। না না এই ভয়ংকর বিপদ থেকে মুক্তি পেতে প্রফেসর খাইরুল মামুন হক তার সহকারীদেরই দরকার। তবে তারা যে এখনো হসপিটালে জ্ঞানহীন অবস্থায় আছেন তাহলে এখন উপায় কি? সিদ্ধান্ত নেওয়া হল যতক্ষণ না পর্যন্ত প্রফেসর খাইরুল মামুন হক ও তার সহকারি কারোর জ্ঞান না ফিরছে ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

প্রফেসর খাইরুল মামুনের জ্ঞান ফিরে আরো চারদিন পর ততক্ষণে রাহনাফ ও রুপা দুজনেই পৌঁছে গেছে ইংল্যান্ডে। উইলিয়াম স্টেরাব আর্থার ক্যারশাম ও ক্যার্থবার্ট বার্নাপের জ্ঞান ফিরেছে অনেক আগে। উইলিয়াম স্টোরাবের বয়ান অনুসারে ক্যার্থবার্ট বার্নাপকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ও তাদের দুজনকে লন্ডনের হসপিটালে শিফট করা হয়েছে। প্রফেসর খাইরুল মামুন হকের অবস্থা খুব বেশি ভালো না হওয়ায় তাকে অক্সফোর্ডশায়ারে রাখা হয়েছে। তার জ্ঞান ফিরেছে ঠিক তবে তিনি কথা বলতে পারছেন না। ডক্টর বলেছে তার পুরোপুরি সুস্থ হতে মাস খানেক লাগবে। এক মাস অনেক সময় এতদিন নাসার বিজ্ঞানীরা তার জন্যে অপেক্ষা করতে পারবেনা। না হলে পুরো পৃথীবি নিউক্লিয়ার মডিফায়ার ট্রির নিচে চাপা পরে যাবো। ঠিক করা হলো প্রফেসরকে এভাবেই কাজ করতে হবে। কিন্তু কিন্তু কি করে? অনেক ভেবে শেষে একটা উপায় বের করা হলো। নরম্যান ভিনসেন্ট পিলের কথাটাই সমাধান বের করে দিলো তিনি বলেছেন ” মানুষের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ব্যাপার হলো -যখন শারীরিক ও মানসিক প্রতিটি সম্পদকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়, তখন সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বিস্ময়করভাবে বেড়ে যায়।

প্রফেসর খাইরুল মামুন হক রাহনাফকে বলে দিলেন তার রিসার্চের সব ডকুমেন্ট কোথায় আছে। রাহনাফ সেগুলো নিয়ে মেইল করে দিলো নাসায়। আর নাসার বিজ্ঞানীরা এই সব কাজ করার জন্যে একটা রোবট নিয়ে নেন। রোবটকে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হলো। রোবট তার ম্যকানিক্যাল গতির জোরে তিন মাসের কাজ করে ফেললেন মাত্র তিন ঘন্টায়। বানানো হলো একটা ভাইরাস। যাকে মডিফায়ার করা ওই নিউক্লিয়ার ট্রির নেই। এই ভাইরাস গাছগুলোকে তো মেরে ফেলবে তার সাথে তাদের দেহ পচিয়ে পরিনিত করবে মাটিতে। ভাইরাসের ক্রোমোজোমের ডিএনএর কেমিক্যাল ফর্মুলা আর স্ট্রাকচার নাসার বিজ্ঞানীদের দেখানো হলে তারা ভাইরাসটা তৈরি করে ছড়িয়ে দিতে লাগলো। পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে এখন গাছগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাওয়া শুধু মাত্র সময়ের অপেক্ষা।

চলবে,,,,,,
#মাহফুজা আফরিন শিখা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে