#তন্ময়ের_তনু
#পর্ব_১৮
#Jechi_Jahan
তন্ময় আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।এই তাকিয়ে থাকায় না আছে কোনো রাগ আর না আছে কোনো কষ্ট শুধু আছে অবাক হওয়া😜😜
আমি-শুনতে পাননি আমি কি ইংলিস এ বলেছি?
তন্ময়-আমি বারান্দায় কেনো শুবো?
আমি-যেমন আমি শুতাম তেমন আপনিও….
তন্ময়-ওই তুমি কয়দিনই বা বারান্দায় শুয়েছো?
আমি-যতদিনই শুয়েছি আমার কষ্ট হয়েছিল?
তন্ময়-তনু আমার ঠান্ডা লেগে যাবে।
আমি-I don’t care.(বলে শুয়ে গেলাম)
তন্ময়-আমাকে নকল করছো তাইনা?
আমি-যা আপনি ভাবেন।এখন যান”””
তন্ময়-এসব বুদ্ধি তোমার মাথায় কে ডুকিয়েছে আমি খুব ভালো করে জানি।জেনির সাথে বুদ্ধি করে আমাকে হেনস্তা করছো তাইনা দেখবে আমি কি করি।(খাট থেকে উঠে বারান্দায় যেতে যেতে)
আমি-(এই রে ধরা খেয়ে গেলাম)আচ্ছা তন্ময় আপনি রাগ করছেন না কেনো?মানে আপনি বারান্দায় শুবেন না বলে আমার সাথে ঝগড়া করলেও তো পারতেন।
তন্ময়-তুমি জানো যে আমি এখন কিছুই বলবোনা তোমাকে।তাইতো এতো কনফিডেন্স নিয়ে আমায় বারান্দায় শুতে বলেছো।(বারান্দা থেকে)
আমি-ওকে গুড নাইট।(উনার জন্য কষ্ট হচ্ছে)
তন্ময়-হুম গুড নাইট।(বাহ বাহ কি ঠান্ডা এখানে কম্বল নিলাম তাও এতো ঠান্ডা লাগছে।আচ্ছা তনু তো কম্বল,চাদর কিছুই আনতো না এখানে ঘুমা নোর সময় ওর ও নিশ্চয়ই এমন ঠান্ডা লাগতো)
আমি রাতে একটুও ঘুমাতে পারিনি উনার চিন্তায়।শাস্তি দিচ্ছি ঠিকই কিন্তু মনে একটুও শান্তি নেই।আমি রাতে না ঘুমানোর কারণে মধ্যেরাতে একটু ঘুম আসে তাই ঘুমিয়ে পরি।ভোরে এলার্মের শব্দে আমার ঘুমটা ভেঙে যায় আর আমি উঠে যাই।
আমি-আজকে সকালেই তো বাসে উঠতে হবে মনে হয়।ওনাকেও তো জাগাতে হবে তাড়াতাড়ি। আচ্ছা আমি আগে নামাজ টা পরে নিই তারপর ওনাকে জাগাবো।(বলে ওয়াশরুমে গিয়ে ওযু করে নামাজটা পরে নিলাম আর ওনার কাছে গিয়ে ওনাকে জাগাতে লাগলাম)
আমি-তন্ময় উঠুন সকাল হয়ে গেছে।
তন্ময়-নিশ্চুপ।
আমি-কি হলো তন্ময় উঠুন না।
তন্ময়-নিশ্চুপ।
আমি-তন্ময় দেরি হয়ে যাবে তো।
তন্ময়-নিশ্চুপ।
আমি এবার আর না পেরে ওনার হাত ধরে টেনে তুলতে লাগলেই খেয়াল করে দেখি ওনার হাত গরম হয়ে আছে।আমি এবার কিছু একটা চিন্তা করে ওনাকে ধরে রুমে এনে বিছানায় শুইয়ে দিলাম।ওনার গা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে।আমি ওনার গায়ে মোটা দুইটা কম্বল জরিয়ে দিলাম।তাড়াতাড়ি একটা বাটিতে পানি আর একটা রুমাল এনে ওনার মাথায় অনবরত জলপট্টি দিতে লাগলাম।
সকালে—–
বাড়ীর সবাই তন্ময়ের জন্য চিন্তা করছে হঠাৎ এভাবে জ্বর বাঁধানো টা কেও মোটেও স্বাভাবিক ভাবে নিচ্ছে না।তন্ময়ের জ্বরের কারণে আমি বাবা কে বলেছি হানিমুনে যাওয়ার সব ব্যবস্থা যেনো এখন বন্ধ করে দেয়।কারণ তন্ময় এর এমন অবস্থায় আমি ওনাকে নিয়ে হানিমুনে যাবোনা।
রহমান-ওই গাধা!!!জ্বর বাঁধালি কিভাবে?
তন্ময়-জানিনা.(একটু স্বাভাবিক হয়েছে)
সাবিয়া-ঠান্ডা লাগিয়েছিস কিভাবে?
তন্ময়-রাতে শাওয়ার নিয়েছিলাম তাই হয়তো….
রহমান-কালকে রাতে শাওয়ার নিতে কে বলেছে তোকে গাধা তাও আবার শীত কালে?
তন্ময়-ভালো লাগছেনা যাও তো।
সাবিয়া-আচ্ছা এসব কথা পরে বলো এখন চলো।(বলে রহমানকে নিয়ে চলে গেলো)
আমি-সরি।(মাথা নিচু করে)
তন্ময়- It’s ok(তনুর দিকে না তাকিয়ে)
আমি-সরি বললাম তো।(মাথা নিচু করে)
তন্ময়-আমিও তো বলেছি ঠিক আছে।(রেগে)
আমি ওনার কথা শুনে পুরো বুঝতে পেরেছি যে উনি আমার উপর খুব রেগে আছে।এবার আমার ভয় হতে লাগলো যে উনি যদি আমার সাথে আর কথা না বলে।কারণ আর যাই হোক আমি ওনার রাগ টা চিনি।আমি এবার আর কিছু না ভেবে হুট করে ওনাকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিই।
তন্ময়-কি হয়েছে তনু???(অবাক হয়ে)
আমি-আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন প্লিজ।আমি বুঝতে পারিনি যে বারান্দায় শোয়ার কারণে আপনার জ্বর উঠে যাবে।(কান্না করে)
তন্ময়-হুম এখন ছাড়ো।
আমি-আমি জানি আপনি আমার উপর রেগে আছেন প্লিজ ক্ষমা করে দিন না।(কান্না করে)
তন্ময়-তনু তুমি এটা বুঝতে পেরেছো যে আমি রাগ করে আছি কিন্তু কেনো রাগ করে আছি সেটা জিজ্ঞেস করবেনা?(তনুকে জরিয়ে ধরে)
আমি-আমি বারান্দায় শুতে বলেছি তাই।
তন্ময়-না!!!!
আমি-তাহলে???(ওনাকে ছেড়ে)
তন্ময়-বাবাকে হানিমুনে যাওয়ার সব ব্যবস্থা বন্ধ করতে বলেছো তাই আমি তোমার উপর রেগে আছি।(তনুর খোপা করা চুলটা খুলে দিয়ে)
আমি-আপনার এই অবস্থায় কিভাবে যেতাম?
তন্ময়-আমার শরীল আমি বুঝতাম তুমি কেনো বারণ করেছো???(রেগে)
আমি-…………………(নিশ্চুপ)
তন্ময়-চ্যালেন্জ এ জেতার জন্য করেছো তাইনা।
আমি-তন্ময়””””(অবাক হয়ে)
তন্ময়-তনু তুমি আজ আমাকে অনেক বড় কষ্ট দিয়ে দিলে আর এর শাস্তি তুমি পাবে।(বলে উনি আস্তে আস্তে ওয়াশরুমে চলে গেলো)
(((নাস্তার টেবিলে)))
রহমান-তন্ময় তুমি দিন দিন জেদি হচ্ছো।
তন্ময়-যেমন?(ফোন টিপতে টিপতে)
রহমান-এই যে তনু তোমার জন্য উপরে নাস্তা নিয়ে গেলো কিন্তু তুমি উপরে না নাস্তা খেয়ে নিচে চলে এলে তাও এই শরীলে।
তন্ময়-এখন তো আমি অফিসেও যাবো দেখি কে কি করতে পারে।(খেতে খেতে)
সাবিয়া-কি তুই এই শরীলে অফিসে যাবি।
তন্ময়-ভাইয়া আর আমি একসাথেই বের হবো।
অভি-কিন্তু বাবা তো তোর অফিসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলো বিয়ের পর থেকে।
তন্ময়-আজ থেকে খোলা।
রহমান-আমি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেটাই যেনো পালন হয় তন্ময়।
তন্ময়-ওকে তাহলে আজ আমি অফিসে যাবোনা।
অভি-হুম!!!
তন্ময়-এমনে বাইরে যাবো।(বলে বাইকের চাবি নিয়ে চলে গেলো)
সাবিয়া-তন্ময় এই শরীলে যাস না।
রহমান-বাদ দাও খেতে বসো।
একে একে সবাই খেয়ে উঠে গেলে আমি আর নিসা ভাবী একসাথে খেতে বসি।
নিসা-তনু!!!
আমি-হুম ভাবি।
নিসা-তোমার সাথে কি তন্ময়ের ঝগড়া হয়েছে?
আমি-না তো ভাবী।
নিসা-তনু তুমি আমার সাথে সেয়ার করতে পারো।
আমি-একটু হয়েছে।
নিসা-কি নিয়ে???
আমি-(ভাবীকে কালকে রাতের ঘটনাটা বললাম)
নিসা-এই বাজে বুদ্ধি তোমায় কে দিলো তনু???
আমি-জেনি!!!
নিসা-জেনি আধা পাগল তুমি তো পুরো পাগল।
আমি-কেনো???
নিসা-ও বললো আর তুমিও করে নিলে।
আমি-(মাথা নিচু করে রইলাম)
নিসা-আচ্ছা আগে খেয়ে নাও পরে এই বিষয়ে কথা বলবো।ওদিকে দুপুরের রান্নার ও ব্যবস্থা করতে হবে।
আমি-হুম।
আমি আর ভাবী নাস্তা করে দুপুরের রান্নার জন্য
সবকিছু ঠিক করে একটু রেস্ট নিতে চলে যাই।
একটু বিশ্রাম নিয়ে আমরা দুজনেই দুপুরের রান্না টা সেরে গোসল করতে চলে যাই।দুপুরের খাবার এর সময় তন্ময় ছাড়া সবাই ছিলো।আমি একটা বাহানা দিয়ে খাবোনা বলে ওনার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম কিন্তু উনি আসেন না।
***সন্ধ্যায়***
তন্ময়-তুমি ওর রুমটা ঘোছাও নি কেনো???
আমি-জেনি তো গুছিয়েছে।
তন্ময়-জেনি কেনো গোছাবে আমি তো তোমাকে গোছাতে বলেছি নাকি?
আমি-আমার শরীল টা খারাপ তাই জেনি আমায় রুমটা গোছাতে দেয়নি।
তন্ময়-জ্বর আমার শরীল খারাপ তোমার???
আমি-আপনি এমন করছেন কেনো?
তন্ময়-কেমন করছি???(আমার কাছে এসে)
আমি চোখে পানি জমে আসছিলো আর একটু হলে হয়তো চোখ থেকে পানিটা পরেও যাবে।আমি তাড়াতাড়ি ওনার সামনে থেকে ফিরে গেলাম।আমার পিঠটা ওনার দিকে ফেরানো।
তন্ময়-পিঠ দেখাচ্ছো আমাকে?
আমি-না।(বলে খোপাটা খুলে দিলাম)
তন্ময়-সকালে বলেছি না শাস্তি পাবে।
আমি-এটা কোনো শাস্তি নাকি।
তন্ময়-সিরিয়াসলি???
আমি-তন্ময় আমার শরীল টা খুব খারাপ।সো প্লিজ আমাকে বিরক্ত করবেন না।
তন্ময়-হুম।(বলে চলে গেলো)
জেনি-ভাইয়া!!!(তন্ময়কে নিচে নামতে দেখে)
তন্ময়-হুম!!!
জেনি-তুই এটা কোনো কাজ করলি?
তন্ময়-কি করলাম???
জেনি-জানিস ভাবী তোর জন্য দুপুর থেকে না খেয়ে আছে।খালি পেটে থাকার কারণে আর চিন্তার কারণে বিকালে অঙ্গানও হয়ে গেছিলো। আর তুই সন্ধ্যায় কিনা এমন একটা কাজ করলি।
তন্ময়-আমি বলিনি ওকে খালি পেটে থাকতে।
জেনি-এমন কেনো তুই?
তন্ময়-ও আমার কথার কোনো গুরুত্বই দেয়না।
জেনি-মানে???
তন্ময়-কিছুনা।
জেনি এবার আর দেরি না করে তনুর কাছে গেল।
জেনি-ভাবী!!!
আমি-হুম জেনি।
জেনি-তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো।
আমি-হুম বলোনা।
জেনি-ভাইয়া তোমার উপর কেনো রেগে আছে?
আমি-“””””””
জেনি-কি হলো ভাবী বলো।
আমি-বাবাকে হানিমুনে যাবোনা বলেছি তাই।
জেনি-ওহ।
আমি-আচ্ছা এতে রাগ করার কি আছে?
জেনি-ভাইয়া অনেক আশা নিয়ে হানিমুনে যাওয়ার প্ল্যান করেছিলো।আর এখন না যাওয়াতে নিশ্চয়ই কষ্ট পেয়েছে তাই তোমার সাথে এমন করছে কারণ তুমিই বারণ করেছো।
আমি-কিছুক্ষণ আগে এটা কাকে আনলো।
জেনি-তোমার সতীন।
(((ফ্ল্যাসব্যাক)))
বিকালে আমি আর ভাবী সবার জন্য চা আর নাস্তা বানাতে লাগলাম।চা-নাস্তা বানানোর সময় হঠাৎ আমার মাথাটা ঘুরে উঠে আর আমি পরে যেতে নিই কিন্তু ভাবী ধরে ফেলে।ভাবী ধরতে
ধরতে আমি অঙ্গানই হয়ে যাই।যখন চোখ খুলি তখন সন্ধ্যা হয়ে যায়।আমি চোখ খুলে মাকে আমার পাশে দেখতে পাই।
আমি-মা!!!
সাবিয়া-হুম হুম?(তাড়াহুড়ো করে)
আমি-উনি এসেছেন???
সাবিয়া-না এখনো আসেনি কিন্তু কিছুক্ষণ পর ঠিক চলে আসবে।
আমি-মা আমি নিচে যাবো।
সাবিয়া-তোর না শরীল খারাপ।
আমি-কিছু হবেনা চলো না প্লিজ।
তন্ময়-ওকে চলো।
আমি আর মা একসাথে নিচে নামতে নামতে গল্প করছি।অবশেষে নিচে নেমে দরজার পাশে থাকা তন্মশকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।তার চেয়ে বেশি অবাক হই তন্ময় পাশে তন্ময়ের হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটার দিকে।
-চলবে
#তন্ময়ের_তনু
#পর্ব_১৯
#Jechi_Jahan
আমি তন্ময়ের হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকা নিহার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।আর নিহা আমার দিকে তাকিয়ে একটা বিশ্ব জয়ের হাসি দিলো।আমি তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে আছি।
নিসা-নিহা???
তন্ময়-হ্যাঁ ভাবি নিহা।সকালে যখন বের হয়েছি তখনই ওকে দেখেছি।দেখা হওয়ার পর দুজনে অনেক ঘুরাফেরা করে লাঞ্চও করেছি।
নিসা-ওহ।(আমার দিকে তাকিয়ে, কারণ আমি তো ওনার জন্য অপেক্ষা করে করে আর খাইনি)
জেনি-সেসব ঠিক আছে কিন্তু নিহা এখানে।
নিহা-কেনো আমি কি এখানে আসতে পারিনা।
আমি-জেনি তেমন কিছু বলতে চায়নি।
নিহা-আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি।
জেনি-নিহা তুমি ভাইয়ার হাত কেনো ধরেছো?
নিহা-কেনো কি হয়েছে?
জেনি-কেনো কি হয়েছে মানে?তুমি যে ভাবীর সামনে ভাইয়ার হাত ধরে আছো ভাবী মাইন্ড করছে না।কেনো ধরেছো তুমি ভাইয়ার হাত?
তন্ময়-এদিক দিয়ে আসার সময় একটু অন্ধকার ছিলো আর নিহা সেই অন্ধকারে ভয়ের চোটে আমার হাতটা যে সেই ধরে আর ছাড়েনি।
জেনি-তাহলে এখন হাতটা ছাড়তে বলো।
তন্ময়- নিহা হাতটা ছাড়ো।
নিহা-হুম!!!(বলে তন্ময়ের হাত ছেড়ে দেয়)
নিসা-আচ্ছা তন্ময় তুমি নিহাকে হঠাৎ এখানে নিয়ে এলে???
তন্ময়-ও কিছু দিন এখানে থাকবে।
জেনি-এখানে থাকবে এটা নিহা বলেছে??
তন্ময়-না আমি বলেছি।
জেনি-কেনো???
তন্ময়-সামনে একটা সারপ্রাইজ আছে তাই।
নিসা-কি সারপ্রাইজ???
তন্ময়-বললে সারপ্রাইজ থাকবে না।
জেনি-তুমি কি এমন বললে নিহাকে যে ও এখানে আসতে রাজি হয়ে গেলো।ও তো বলেছিলো ও এখানে আর আসবেনা।
তন্ময়-আমি বলেছি তোমার সাথে যখন দেখা হয়ে গেছে তো আমার সাথে বাড়িতে চলো।
নিহা-তন্ময় বলাতে আমি রাজি হয়েছি।
জেনি-তন্ময় কি??? ভাইয়া বলো।
সাবিয়া-থামবি তোরা?(রেগে)
আমি-মা!!!(মায়ের এমন হঠাৎ করে ধমক দেওয়া তে আমি ভয় মায়ের হাত চেপে ধরি)
সাবিয়া-কিছু হয়নি তনু?(আমাকে শান্তনা দিয়ে) এই কি শুরু করেছিস তোরা নিহা মাত্র এলো কোথায় ওকে একটু ঘরে ডুকতে দিবি তা না উল্টো প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করছিস।
তন্ময়-এটা একটু জেনিকে বুঝাও।
সাবিয়া-নিসা নিহার জন্য নাস্তা নিয়ে আসো।
নিসা-হুম মা।(বলে চলে গেলো)
সাবিয়া-আর কেও নিহার থাকার জন্য একটা রুম ঠিক করে দাও।
তন্ময়-নিহার রুম তনু গোছাবে।
আমি-আমিই কেনো???
তন্ময়-কারণ তুমি রুম ভালো গোছাও।(বলে চলে গেলো)
জেনি-ভাবী আমি গুছিয়ে নিবো তুমি রুমে যাও।
আমি-কিন্তু তোমার ভাইয়া তো আমাকে গোছাতে বলেছে।
জেনি-তোমার শরীল খারাপ তুমি গিয়ে রেস্ট নাও।ভাইয়াকে বুঝানোর দায়িত্ব আমার।
আমি-হুম!!!
তনু চলে যাওয়ার পর জেনি গিয়ে নিহার রুমটা গোছাতে লাগল।নিহার রুম গোছানোর সময় তন্ময় ওখানে আসে আর জেনিকে রুম গোছাতে দেখে একটু স্বাভাবিক ভাবেই জিজ্ঞেস করে।
তন্ময়-নিহার রুম তুই কেনো গোছাচ্ছিস???
জেনি-না গুছিয়ে কি করবো?
তন্ময়-আমি তো তনুকে গোছাতে বলেছি।
জেনি-আমিই ভাবীকে গোছাতে বারণ করেছি।
তন্ময় এবার কিছু না বলে তনুর কাছে চলে যায়।
(বাকিটা সবার জানা)
(((প্রেজেন্ট)))
সবাই এখন একসাথে বসে ডিনার করছে।আজ আমিও সবার সাথে বসেছি।আসলে মা জোর করে সবার সাথে বসিয়েছে যেহেতু দুপুরে খাইনি।
নিহা-আন্টি খাবারটা কে রান্না করেছে???
সাবিয়া-কেনো ভালো হয়নি???
নিহা-না খুব ভালো হয়েছে আসলে তোমাদের কারোর হাতের রান্না তো এমন না তাই।
তন্ময়-তনুর রান্না এমনি খুব ভালো।(খেতে খেতে)
নিহা-এটা তনু রান্না করেছে??(অবাক হয়ে)
জেনি-হুম তনু ভাবীই রান্না করেছে।(বাঁকা হেসে)
তন্ময়-তনুর রান্না বেস্ট।(মুচকি হেসে)
আমি শুধু এদের দুজনের কথা শুনছি।কেমন বাঁকা হেসে কথা গুলো বলছে।আমার এসব ভাবনার মধ্যে হঠাৎ নিহা টেবিল ছেড়ে উঠে চলে যায়।অথচ কেও কোনো রিয়েক্টই করলো না।
রহমান-তন্ময়!!!
তন্ময়-হুম বাবা???
রহমান-তোর তো সকালে জ্বর ছিলো এখন কেমন আছিস??
তন্ময়-আগে থেকে ঠিক আছি।
রহমান-হ্যাঁ রে তনু তোর শরীল কেমন এখন???
আমি-বাবা আমার আবার কি হলো??
রহমান-তোর না বিকালে শরীল খারাপ হয়েছিল।
আমি-ওহ আমিও ঠিক আছি।
জেনি-দুজন একসাথেই অসুস্থ হলে বাহ বাহ।
আমরা জেনির কথায় পাত্তা না দিয়ে খাওয়ার শেষ করে রুমে চলে এলাম।আমি রুমে এসে শাড়িটা খুলে একটা গোলাপি রংয়ের কামিজ পরেছি।আমি খাটে শুয়ে আছি আর তন্ময় ফোনে কি একটা খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছে।এবার তন্ময় উঠে বারান্দায় যেতে লাগলে আমি বলি।
আমি-কোথায় যাচ্ছেন?
তন্ময়-দেখতে পারছোনা।
আমি-যাবেন না প্লিজ।
তন্ময়-তোমার তো শখ ছিলো।
আমি-কালকের জন্য আমি সরি আর আজকের জন্যও আমি সরি।প্লিজ বারান্দায় যাবেন না।
তন্ময়-তুমি এমন কেনো???(খাটে বসে)
আমি-কেমন???
তন্ময়-এখানে কি তোমার কোনো দোষ আছে যে তুমি সরি বলছো?
আমি-আমার জন্যই তো।
তন্ময়-তুমি আমার চিন্তা করেই হানিমুনে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে বারণ করেছো এটা আমি জানি।আমি জাস্ট তোমাকে টেস্ট করছিলাম।
আমি-কি টেস্ট???
তন্ময়-এই যে তোমার মাঝে কোনো জেলাসি নেই কোনো চেষ্টা নেই।
আমি-এটা কেনো মনে হয়েছে আপনার??
তন্ময়-এই যে সকালে তোমায় বকার পর তুমি একটু চেষ্টাও করলেনা আমার সাথে কথা বলার।
আমি-সেই সুযোগ তো আপনি দেননি।
তন্ময়-সুযোগ করে নিতে হয় যেমন আমি এখন করবো।(তনুর কোমড় ধরে কাছে টেনে)
আমি-ম মানে??
তন্ময়-তোতলাচ্ছো???
আমি-ক কই নাতো?
তন্ময়-আচ্ছা নিহা যখন আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে ছিলো তখন তোমার কি কিছু ফিল হয়েছিলো?
আমি-কি ফিল হবে???
তন্ময়-কোনো ফিলিংস আসেনি?
আমি-না।
তন্ময়-(আমি অবাক হয়ে তনুর দিকে তাকিয়ে আছি।ওর জায়গায় অন্য কোনো মেয়ে হলে হয়ত হিংসে থাকতে পারতোনা।আমি তো ইচ্ছে করেই নিহার হাতটা ছাড়াইনি যাতে তনু একটু জেলাস ফিল করে কিন্তু তনু তো….)শাস্তির জন্য প্রস্তুত?
আমি-কিসের শাস্তি???
তন্ময়-সকালে বলেছি না।(বলে আমার আরো কাছে এসে ঘাড়ে একটা কিস করে দিলো।ওনার এমন করাতে আমি একটু কেঁপে উঠি।এমন তো না যে উনি আমায় প্রথম বার ছুয়েছে।উনি এবার আস্তে আস্তে আমার ঠোঁটের কাছে এসে আমার ঠোঁট জোড়া ওনার আয়ত্তে করে নেয়।আমি বাধা দেওয়ার জন্য হাতটা বাড়ালে উনি সাথে সাথে আমার হাতটা বিছানার সাথে চেপে ধরে)
(((সকালে)))
আমি মনমরা হয়ে সকালের নাস্তা বানাচ্ছি তন্ময় এখনো ঘুমাচ্ছে।আমি মনমরা হয়ে নাস্তা বানাচ্ছি কারণ আমি আজ দেরি করে ঘুম থেকে উঠায় নাস্তা বানাতে দেরি হচ্ছে।সব হচ্ছে তন্ময়ের জন্য।
—তনয়া।(দরজার সামনে দাঁড়িয়ে)
আমি-কে?(দরজার সামনে এসে)
—কে লাইক সিরিয়াসলি???
আমি-আবিদ???
আবিদ-হুম।(তনুর ব্রেস্ট ফ্রেন্ড আবিদ রহমান।স্কুল লাইফ থেকেই তনুর সাথে বেশ ভালো বন্ধুত্ব)
আমি-তুই এখানে কিভাবে আসলি??
জেনি-আমি এনেছি।(তনুকে পেছনে থেকে ধরে)
আমি-তুমি কিভাবে আনলে???
জেনি-সেসব পরে বলবো আগে ওনাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দাও।
আমি আবিদকে তন্ময় বাদে একে একে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিই।আবিদ ও সবার সাথে ভালোভাবে কথা বলে নিজের পরিচয় দেয়।আমি আবিদকে রেখে তন্ময়কে জাগাতে আসি।
আমি-তন্ময় উঠুন।
তন্ময়-উুহু।
আমি-কেনো?
তন্ময়-রাতে ঘুমাতে পারিনি।
আমি-আপনি ঘুমাতে পারেননি নাকি আমাকে ঘুমাতে দেননি।
তন্ময়-উঠছি।
আমি-আপনাকে এখনই উঠতে হবে।(বলে টেনে তুলে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে দিই আর অপেক্ষা করতে থাকি।কিছুক্ষণ পর তন্ময় ফ্রেশ হয়ে আমার সামনে এসে আমাকে জরিয়ে ধরে)
তন্ময়-গুড মরনিং।
আমি-গুড মরনিং না ছাই।(ওনাকে সরিয়ে)
তন্ময়-কেনো কি হয়েছে???
আমি-এতো লেট করে কেও উঠে?
তন্ময়-আমি তো লেট করে উঠিনা কালকের…..
আমি-চুপ!!!চলুন।
তন্ময়-কোথায়??
আমি-নিচে।
তন্ময়-কেনো???
আমি-একজনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো।
তন্ময়-কার সাথে???
আমি-আমার বন্ধ……..
আবিদ-তনু!!!
আমি-(পেছনে ফিরে দেখি আবিদ)এসেছিস….
আবিদ-তুমি একবারও আমার কথা ভাবলে না।আমার ছেড়ে তন্ময়কে বিয়ে করে নিলে।আমি না হয় চলে গেছিলাম কিন্তু তুমি কি আমার জন্য অপেক্ষা করতে পারলে না।
আমি-কি???(অবাক হয়ে)
তন্ময়-কে ও।(রেগে আমার হাত শক্ত করে ধরে ওনার দিকে ফিরিয়ে)
-চলবে