তন্ময়ের তনু পর্ব-১০+১১

0
3100

#তন্ময়ের_তনু
#পর্ব_১০
#Jechi_Jahan

আমি তন্ময়ের সামনে ভয়ে দাঁড়িয়ে আছি।আসল এ কালকে উনি থাপ্পড় দেওয়ার পর থেকে আমি ওনাকে কেমন ভয় পেতে শুরু করেছি।এদিকে তন্ময় আমার দিকে ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।

আমি-আপনার কিছু লাগবে?(ভয়ে)

তন্ময়-লাগলেও তোমাকে বলবোনা।(চলে গেলো)

আমি-(কেও তো আমার কথাই শুনতে চাইছেনা আর সবাই শুনবেও কি করে।ওই সিয়াম খেচ্চর টা আমার নামে যে অপবাদটা দিয়েছে সেটাতো তন্ময় নিজের চোখে দেখেছে।)আল্লাহ!!!!

রাকিব-সিয়াম আমি জানি তুমি একটু ঘায়ে পরা ছেলে তনু কি সত্যি তোমাকে?

সিয়াম-ভাই তুমি আমাকে বিশ্বাস করছোনা?

রাকিব-হ্যাঁ বিশ্বাস করছি কিন্তু তনু এমন করবে?

সিয়াম-ভাই আমি জানিনা কিছু।

রাকিব-সিয়াম তুমি যদি কিছু মিথ্যা বলে থাকো তাহলে আমাকে বলতে পারো।

সিয়াম-ভাই আমি মিথ্যা বলছিনা।

রাকিব-সিয়াম আরেকবার ভেকে দেখো।তোমার এই সত্য-মিথ্যার কথায় কিন্তু একটা মেয়ের সংসার বাঁচতেও পারে আবার ভাঙতেও পারে।

সিয়াম-যা সত্যি ছিলো আমি সব বলে দিয়েছি।

রাকিব-ঠিক আছে তবু আরেকবার ভেবে দেখো।

সিয়াম-আচ্ছা!!!

রাকিব-আমি যাই তুমি আসো।(বলে চলে গেলো)

***খাবার টেবিলে***

রহমান-তনু কোথায়?(চেয়ারে বসতে বসতে)

সাবিয়া-ও আসবে তুমি খেয়ে নাও।

রহমান-ডেকে আনলে হতোনা।

সাবিয়া-তন্ময় যা তনুকে ডেকে আন।

তন্ময়-আমি পারবোনা।(খেতে খেতে)

সাবিয়া-ডেকে আনতে বলেছিনা।(জোরে)

তন্ময়-বলেছি তো পারবোনা।(জোরে)

রহমান-তন্ময়!!!(রেগে)

আমি-বাবা আমি এসে গেছি।(আমি নিচে আসার সময় ওদের সব কথা শুনেছিলাম)

রহমান-এতো দেরি করলি যে।

আমি-কই?(আমি খেয়াল করলাম আমি আসার সাথে সাথে সবাই মুখ কেমন করে রেখেছে)

রহমান-যাই হোক বস।

তন্ময়-মা রাকিব আর সিয়ামকে ডেকে আনো।কালকে যা হয়েছে ওরা হয়তো আসবেও না।
(আমার দিকে তাকিয়ে)

আমি-বাবা আমি একটু আসি।

রহমান-কোথায় যাবি?

আমি-একটু বাইরে।

সাবিয়া-খাবার টেবিল থেকে উঠতে নেই।(তনুর দিকে না তাকিয়েই বললো)

আমি-আমি এখনে বসিই নি।(বলে চলে এলাম)

আমি বাগানের সামনে মনমরা হয়ে বসে আছি।আসলে আমার ভালো লাগছে না বাড়ীর ভেতরে। আগে যেমন সবাই একসাথে থেকে অনেক মজা করতাম এখন থেকে তা আর হবেনা তার কারণ আমি।সবাই আমাকে দেখলেই মুখ ফিরিয়ে নিবে।

তিন দিন পরঃ-

আজকে সিয়াম আর রাকিব ভাইয়া তাদের বাড়ি তে চলে যাচ্ছে ওথচ আমি মন খারাপ করে ছাদে দাঁড়িয়ে আছি।এই তিন দিন যে আমার কিভাবে কাটলো এটা শুধু আমি জানি।বাবা ছাড়া কেও আমার সাথে কথা বলতোনা শুধু এড়িয়ে চলতো।মা মাঝে মাঝে বলতো আমাকে নাকি এ বাড়ীতে ভুল করেছে,আমার জন্য নাকি ওদের সম্মান চলে যাচ্ছি আরো কত কি।আমি এসব সহ্য করতে পারিনা বিশেষ করে অপমান সহ্য করতে পারিনা।

তন্ময়-ভালো থাকিস বন্ধু(রাকিবকে জরিয়ে ধরে)

রাকিব-তুই ও ভালো থাকিস।

তন্ময়-বাই সিয়াম এন্ড সরি ওই ঘটনার জন্য।

সিয়াম-সমস্যা নেই।

রাকিব-তন্ময় আমি সবার সাথে দেখা করে গেট এর বাইরে চলে এলাম তবুও তনু এলোনা কেন?

তন্ময়-ওকে তো আমিও দেখিনি।

রাকিব-আচ্ছা সিয়াম বাইকটা নিয়ে এসো।

সিয়াম-আচ্ছা।

রাকিব-তন্ময়!!!

তন্ময়-বল।

রাকিব-তন্ময় সিয়াম একটু ঘায়ে পরা ছেলে।ও হয়তো নিজেই তনুর সাথে এমন করে তনুর উপর এই দোষ চাপিয়েছে।তুই একবার তনুর সাথে কথা বলে দেখিস হয়তো আসল সত্যি জানতে পারবি।

তন্ময়-(মাথা নিচু করে আছে)

রাকিব-কিরে কি হয়েছে?

তন্ময়-জানিস সিয়াম আর তনুকে ওভাবে দেখে আমার খুব রাগ হয়।আর সিয়ামের কথা শুনে আমি রাগের মাথায় তনুকে থাপ্পড়ও মারি।কিন্তু পরে যখন ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখি তখন মনে হয় তনু এমন কেনো করবে ও এমন মেয়ে না।

রাকিব-তাহলে এখন কি হয়েছে?

তন্ময়-চোখের দেখা(বলে থেমে যায়)

রাকিব-চোখের দেখা সবসময় সত্যি হয়না।(বলে বাইকে উঠে চলে গেলো)

আমি প্রায় অনেকক্ষণ ছাদে দাঁড়িয়ে ছিলাম।কিন্তু হঠাৎ আমার কি হলো আমি জানিনা আমি ছাদ এর সাইডে গিয়ে দেওয়াল এর উপর দাঁড়িয়ে গেলাম।হঠাৎ কেও জোরে আমাকে ডেকে উঠে।

জেনি-ভাবী তুমি কি করছো?(আমার কাছে এসে)

আমি-কি করছি?

জেনি-ছাদের সাইডে কেনো এসেছো পরে যাবে?

আমি-না আমি পরবোনা।

জেনি-দেখি তুমি নামো।(আমাকে নামিয়ে)

আমি-কিছু বলবে?

জেনি-নিচে যাও তুমি।

আমি-আর কিছুক্ষণ থাকিনা প্লিজ।

জেনি-না নিচে যাও।

আমি-নিচে গেলে একা একা লাগে।

জেনি-এখন লাগবেনা যাও।

আমি জেনির কথায় নিচে যাওয়ার জন্য সিড়ি দিয়ে নামছিলাম।নিচে নামার সময় দেখলাম তন্ময় তাড়াহুড়ো করে ছাদে চলে যাচ্ছে।

তন্ময়-কিরে এতো তাড়াতাড়ি আসতে বললি?

জেনি-ভাইয়া আমরা ভাবিকে ভুল বুঝেছি।

তন্ময়-সেটাতো আমার আগেই মনে হয়ছিলো।

জেনি-জানো ভাবি এখন কি করছিলো?

তন্ময়-কি করছিলো?

জেনি-তন্ময়কে এখন ঘটে যাওয়া ঘটনাটা বলে।

তন্ময়-আমি তনুর সাথে কথা বলছি।

জেনি-ঠিক আছে।

রাতেঃ-

তন্ময়-তনু!!!

আমি-হুম।

তন্ময়-সরি!!

আমি-কেনো?

তন্ময়-আমার ওইদিন তোমার কথা শোনা উচিত ছিলো কিন্তু আমি শুনিনি।তাই এখন জিজ্ঞেস করছি সেদিন আসলে কি হয়ছিলো?

আমি-(ওনার কথা শুনে আমার চোখে পানি জমে গেলো।আমি এবার হুট করে ওনাকে জরিয়ে ধরে কান্না করে দিই।)

তন্ময়-কি হয়েছে তনু কাঁদছো কেনো?

আমি-(কান্না করতেই আছি)

তন্ময়-তনু কিছু তো বলো।

আমি-কিছু না।(বলে ওনাকে ছেড়ে ওয়াশরুমে চলে এলাম।ওয়াশরুমে এসেই নিজের মুখটা বেসিনে ভালোভাবে ধুয়ে নিলাম।কিন্তু যত ধুচ্ছি চোখের পানি যেতো তত বাড়ছে)

তন্ময়-তনু কি হয়েছে তোমার।

আমি-কিছু না।(ওয়াশরুম থেকে)

তন্ময়-তুমি এক্ষুনি বের হও।

আমি-আসছি।(বলে চোখমুখ আরো ভালোভাবে ধুয়ে মুছে তারপরে ওয়াশরুম থেকে বের হই)

তন্ময়-কিছু কি বলবে?(রেগে)

আমি-আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।(বলে খাটে শুয়ে গেলাম কিন্তু আবার উঠে বেলকনিতে চলে গেলাম)

তন্ময়-কি হলো এখানে আসলে কেনো?

আমি-এখানে ঘুমাবো তাই।

তন্ময় কিছুনা বলে কিছুক্ষণ তনুর দিকে ব্রুকুঁচকে তাকিয়ে ছিলো।হঠাৎ তন্ময় তনুকে কোলে নিয়ে রুমে এসে খাটে শুয়িয়ে দেয়।

আমি-এটা কি করেছেন?

তন্ময়-চুপচাপ এখানেই ঘুমাও।

আমি-তন্ময়!!!

তন্ময়-ঘুমায়(জোরে চিৎকার করে)

চিৎকারে আমি সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেলি।

# রাত ০৩ঃ১৭ মিনিট #

আমি আস্তে আস্তে চোখ খুলে তন্ময়ের দিকে ফিরে দেখি উনি ঘুমাচ্ছে।ওনাকে ঘুমাতে দেখে আমি বিছানা থেকে উঠে যাই।আর পাশে থাকা ড্রয়ার থেকে আমার লেখা চিঠিটা বালিশের উপর রেখে ফোন নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যাই।আমি রাতে না ঘুমিয়ে এই তিন টা বাজার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।এবার আস্তে আস্তে নীচে এসে সদর দরজা খুলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাই।

-চলবে

#তন্ময়ের_তনু
#পর্ব_১১
#Jechi_Jahan

আমি বাড়ী থেকে বেরিয়ে আসার পর সারা রাস্তা একা একা হাঁটছি।আমি এখন কোথায় যাবো সেটা আমি নিজেও জানিনা কিন্তু বাড়ী থেকে বের হয়ে গেলাম।প্রায় অনেকক্ষণ হয়ে যায় আমি হাঁটতে হাঁটতে।এবার আমার পায়ে ব্যাথা শরু হয়।

***ওদিকে***

তন্ময় ঘুমাচ্ছিলো হঠাৎ ওর ফোনে এলার্ম ভাজে।আর এলার্মের শব্দে তন্ময়ের ঘুমটা ভেঙ্গে যায়।

তন্ময়-এলার্ম আবার কে দিলো?(ফোনটা নিয়ে)
আরে এটাতো আমার ফোন না তনুর ফোন।তনু এখনের জন্য এলার্ম কেনো দিল?তনু!!!(পাশে তাকিয়ে দেখে তনু নেই শুধু একটা চিঠি পরে আছে।তন্ময় চিঠিটা নিয়ে লাইট ওন করে।চিঠিটা খুলে পড়ে তন্ময় অবাক হয়ে যায়।তন্ময় চিঠিটা নিয়ে দৌড়ে নিচে চলে যায় আর সবাইকে ডাকতে থাকে।তন্ময়ের চিৎকারে সবাই চলে আসে)

অভি-কি হয়ে তন্ময়?(ঘুম ঘুম চোখে)

তন্ময়-ভাইয়া তনু তো ঘরে নেই?(ভয়ে)

নিসা-নেই মানে?দেখো হয়তো ওয়াশরুমে হবে।

তন্ময়-না ভাবী ও এখন এবাড়ির কোথাও নেই?

রহমান-মাথা কি গেছে তোমার?কি আবোল তাবোল বকছো?(রেগে)

তন্ময়-বাবা তনু সত্যি বাড়িতে নেই।ও এই চিঠিটা রেখে গেছে।(চিঠিটা দেখিয়ে)

জেনি-ভাইয়া চিঠিতে কি লেখা আছে?

তন্ময়-চিঠিতে…

সাবিয়া-দেখি আমি পড়ি(চিঠিটা নিয়ে)

প্রিয় তন্ময়,

আমি জানি আপনি যখন এই চিঠি পাবেন তখন আমি আপনার থেকে অনেক দূরে চলে গেছি।তন্ময় ওইদিন যা কিছু হয়েছে এবং আজ যা কিছু হচ্ছে তাতে আমার কোনো দোষ নেই।ওইদিন সিয়াম নিজে এসে জোর করে আমার সাথে এমন করতে চেয়েছিল।কিন্তু আপনি চলে আসায় ও সব দোষ আমার গাড়ে চাপিয়ে দেয়।আর এই কারণে আপনি সহ সবাই আমাকে ভুল বুঝছেন।আমি অনেক চেষ্টা করেছি আপনাদের সত্যিটা বুঝাতে।কিন্তু আপনারা আমার একটু বুঝতেও চাননি।এখন যখন আপনাদের আমাকে নিয়ে এতোই সমস্যা তো আমি এখানে থেকে কি করবো তাই আমি বাড়ী থেকে চলে যাচ্ছি ভালো থাকবে।

ইতি তনয়া

মিসেস সাবিয়া চিঠিটা পরে কান্না শুরু করে দেয়।

অভি-মা কাঁদছো কেনো?

সাবিয়া-তোরা তনুকে খুঁজে নিয়ে আন এক্ষুনি।
(কাঁদতে কাঁদতে)

তন্ময়-ভাইয়া প্লিজ চল ও কোনো বিপদ হয়ে যাবে আমি ওকে ছাড়া থাকতে পারবোনা প্লিজ চল।

অভি-চল!!!(বলে দরজার সামনে যেতেই)

রহমান-দাঁড়াও”””””

অভি-বাবা তুমিও যাবে?(পেছনে ফিরে)

রহমান-তোমাদের কোথাও যেতে হবেনা।

তন্ময়-বাবা কি বলছো এসব?

রহমান-ওহহ এখন ওর জন্য খুব মায়া হচ্ছে তাই না?তা এই মায়টা চারদিন আগে কোথায় ছিলো?

অভি-মানে?

রহমান-ও চলে গেছে এটা নিয়ে তোদের চিন্তা কিন্তু কেনো চলে গেছে এটা নিয়ে চিন্তা নেই?

নিসা-বাবা এখন এসব….

রহমান-দাড়াও!!!আজ জানতে হবে তোমাদের।

সাবিয়া-তুমি এখন এসব কি বলছো?ওদের দিয়ে মেয়েটাকে খুজতে পাঠাও মেয়েটার যদি কোনো বিপদ আপদ হয়?(কান্না করে)

রহমান-যদি এমন হয় তাহলে এর জন্য দায়ী হবে শুধুমাত্র তোমরা।আর সবচেয়ে বেশি দায়ী হবে তন্ময়।কারণ আমরা যা তা কিন্তু তন্ময়ের তো বিশ্বাস রাখা উচিত ছিলো তনুর প্রতি।কিন্তু না প্রথমে ও নিজেই তনুকে ভুল বুঝেছে।

জেনি-বাবা থামোনা দেরি হয়ে যাচ্ছে।ভাবীকে খুজতে হবে তো।(কান্না করে)

রহমান-এই তিন ওকে এতো মানসিক যন্ত্রণা দিয়ে ছিস তোরা যে ও শেষ পর্যন্ত চলেই গেলো।

নিসা-বাবা এখন ওকে খুঁজে আনতে হবে।

রহমান-জেনি তনুকে ফোন দে ও নিশ্চয়ই ফোন সাথে করেই নিয়ে গেছে।

তন্ময়-ও ফোন নেয়নি ওর ফোন আমার কাছে।

অভি-ঠিক আছে তাহলে এখন চল তাড়াতাড়ি।
(বলে তন্ময় আর অভি বের হয়ে গেলো)

***সকালে***

আমি একটা স্বর্ণের দোকানের ভেতরে দাঁড়িয়ে আছি আংটি বিক্রি করতে।তখন ভোররাতে পায়ে ব্যাথা করার কারণে আমি রাস্তার পাশে বসে পরি।
ফোনের ফ্লাস লাইট ওন করার সময় খেয়াল করি যে এটা আমার ফোন না তন্ময় ফোন।তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে একটা ভুল করে ফেলেছি।এখন টাকা পাবো কোথায় এটা ভেবে ভয় হচ্ছে কারণ আমার ফোনের বিকাশে টাকা ছিলো কিন্তু এখন।এবার আর না হেঁটে ওখানেই বসে ছিলাম আর যখন ৬ টা বাজলো তখন উঠে আবার হাঁটা ধরি।

দোকানদার-কি চাই আপনার???

আমি-(দোকানদারের কথায় আমার ধ্যান ভাঙ্গে)
আমি একটা অাংটি বিক্রি করতে চাই।

দোকানদার-আচ্ছা আংটি টা দেখান।

আমি-জ্বি (বলে হাতের আংটি টা খুলে দোকান দারকে দিলাম)

দোকানদার-আপনি একটু অপেক্ষা করুন।(বলে আংটি টা নিয়ে ভেতরে চলে গেলো)

আংটি টা দিতে গিয়ে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল।কারণ আংটি আমার তিন বছর আগে ভালো-বাসার মানুষটা দিয়েছিলো।অনেক যত্ন করে রেখেছিলাম এই আংটি টা।কখনো ভাবিইনি যে এই আংটি টা বিক্রি করে দিবো।

দোকানদার-শুনুন।

আমি-হুম??

দোকানদার-আপনার আংটি টা পুরোনো আমি আপনাকে আংটিটার জন্য শুধু ১৩০০০ হাজার টাকা দিতে পারবো।(গাইস আমার আম্মু আমাকে ১৩০০০ টাকা দিয়ে অনেক আগে একটা আংটি কিনে দিয়েছিলো তাই ১৩০০০ হাজারই দিলাম)

আমি-হবে।

দোকানদার-এই নিন।(টাকাটা দিয়ে)

আমি টাকা গুলো নিয়ে আবার হাঁটতে লাগলাম। হাঁটতে হাঁটতে বেশ কিছুটা দূরে চলে এলাম।আমি রাস্তার পাশ দিয়েই হাঁটছিলাম হাঁটার সময় একটা গাড়ি আমাকে পাশ কাটিয়ে চলল যায়।কিন্তু গাড়িটা আবার আমার সামনে এসে থামায়।গাড়ী এর সামনের গ্লাসটা নামালে আমি গাড়ির ভেতরে থাকা মানুষটাকে দেখে অবাক হয়ে যাই।

***সকালে***

তন্ময় সোফায় বসে দু হাত দিয়ে মুখটা চেপে বসে আছে।এখন ওর বাড়ীতে সবাই চিন্তিত তনুকে নিয়ে।সবাই এক নাগারে কান্না করছে।

সাবিয়া-তোরা সব জায়গায় খুঁজেছিস তো?

অভি-মা আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি।

রহমান-তন্ময় তুই যেখান থেকে পারিস তনুকে খুঁজে নিয়ে আসবি নাহলে আমাকে বাবা ডাকিস না। (রেগে)

জেনি-বাবা তুমি কি পাগল হয়ে গেছো দেখছো এমন একটা অবস্থা তার উপর তুমি।(কান্না করে)

রহমান-সব তো সত্যিই বলছি।

তন্ময় এবার কিছু না বলে সোজা উপরে চলে যায়

১৫ দিন পরঃ-

এই ১৫ দিনেও তন্ময়রা তনুকে খুঁজে পায়না।তন্ময় এখন তনুর জন্য পাগল প্রায়।তন্ময় বার বার চেয়ছিলো পুলিশের কাছে খবর করতে কিন্তু তন্ময়ের বাবা তা করতে দেয়নি।তন্ময় এই কয় দিনে কেমন যেনো হয়ে গেছে।আগে যেমন থাকত এখন তেমন মোটেই থাকেনা।এখন তন্ময় তনুর লেখা চিঠিটা নিয়ে বসে আছে।হঠাৎ কি মনে করে দৌড়ে নিচে গিয়ে দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলো।

অভি-বাবা ও এমন করল কেনো?

রহমান-চলোতো ওর পিছু নিই।(বলে ওনারাও তন্ময়ের পিছু পিছু গাড়ী নিয়ে গেলো)

তন্ময় জোরে গাড়ী চালিয়ে রাকিবের বাড়ীর সামনে গেলো।আর দারোয়ানকেও কিছু না বলে বাড়ির ভেতরে চলে গেলো।ভেতরে গিয়ে দেখলো রাকিব রান্নাঘরে আর সিয়াম সোফায় বসে আছে।তন্ময় সিয়ামের কাছে গিয়ে ওকে কিছু না বলে এলোপাতাড়ি মারতে লাগলো।রাকিব রান্নাঘর থেকে এসে তন্ময়কে থামানোর চেষ্টা করল কিন্তু তন্ময় তো তন্ময় ও সিয়ামকে মারতেই আছে।
পেছন থেকে তন্ময়ের বাবা আর ভাই ও এসে তন্ময়কে আটকানোর চেষ্টা করে।

তন্ময়-এর জন্য আজকে আমার তনু আমার থেকে এতো দূরে শুধু মাত্র এর জন্য।(সিয়ামকে মারতে মারতে)

অভি-তন্ময় থাম ওকে এতো মারিস না।

তন্ময়-আজ একে আমি মেরেই ফেলবো।(সিয়ামকে মারতে মারতে)

রহমান-তন্ময় ওকে আর মেরোনা তন্ময়।(তন্ময়কে আটকাতে আটকাতে)

তন্ময়-একে আজকে আমি শেষ করে ফেলব।

রহমান-তনুর কসম থামো।(জোরে)

তনুর কসমের কথা শুনে তন্ময় থেমে যায়।আর ওখানেই বসে পরে জোরে কান্না করতে থাকে।

-চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে