ডেভিল বর
পর্ব-৮
শিফা_আফরিন
.
.
?
—- তাই বুঝি বেইবি।
কথাটা শুনতেই আঁচল পেছন ফিরে তাকায়…..
আঁচল – আআআআআ….
রেহান দ্রুত এসে আঁচলের মুখ চেঁপে ধরে।
রেহান – এই মেয়ে এভাবে চেঁচাচ্ছো কেনো?
আঁচল – আপনি কি বলুন তো? আপনি নিশ্চয় কোনো আত্মা। না হলে এভাবে সব সময় আমার কথার মাঝ খানে চলে আসেন কিভাবে?
আঁচলের কথা শুনে রেহান হাসবে না কাঁদবে বুঝে উঠতে পারছে না। এই মেয়ে বলে কি!!
রেহান – আমি তোহ তোমার কিউট বর। (মুচকি হেসে)
আঁচল – আরে রাখেন আপনার বর টর। ঐ রিমি টা কোথায় গেলো। ও তো এখানেই ছিলো আমার সাথে।
রেহান – তুমি এমন ভাবে টেডি দেখায় মন দিয়েছিলা তোমাকে যদি কেউ কিডন্যাপ করে নিয়ে যেতো তাহলেও তুমি টের পেতে না।
অবশ্য আমি থাকতে কেউ তোমাকে নিয়ে যাবে দূরে থাক টাচ ও করতে পারবে না। বুঝলে বেইবি। (মুচকি হেসে)
আঁচল – ওফফ….আপনার এই সব কথা বন্ধ করুন তো। রিমি কোথায় সেটা বলুন। (বিরক্তি নিয়ে)
রেহান – আহারে এই টুকু বুদ্ধি নেই আমার বউ টার। আচ্ছা আমরা রোমান্স করার সময় রিমি এখানে থেকে কি করবে বলো তো?
আমার তো সমস্যা নেই কিন্তু তুমি তো লজ্জা পাবে তাই না। (চোখ মেরে)
রেহানের কথা শুনে আঁচলের চোখ বড় বড় হয়ে যায়। এই পাগল টা বলে কি!!
আঁচল – আপনি সত্যিই একটা ডেভিল। অসভ্যের দুলাভাই। যত্তসব অসহ্য। বলেই রুম থেকে চলে যেতে নেয়।
রেহান আঁচলের হাত ধরে টান মেরে বিছানায় ফেলে দিয়ে নিজে দু’হাতের উপর ভর দিয়ে আঁচলের দিকে ঝুঁকে পরে।
আঁচল ভয়ে কয়েকটা ঢোক গিলে। না জানি এই অসভ্য টা কি করে বসে আল্লাহ মালুম। (মনে মনে)
রেহান – বেইবি অসভ্য বলেছো যখন একটু অসভ্যতামি তো করতেই হই কি বলো! (মুচকি হেসে)
আঁচল – (এই রে সেরেছে! এবার পালাবো কি করে আমি। মনে মনে)
রেহান নেশার দৃষ্টিতে আঁচলের ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আছে।
আঁচল বিষয় টা খেয়াল করতেই বলে উঠে…….
আঁচল – এ মা রিমি….! তুমি কখন এলে?
রেহান আঁচলের কথা শুনে হেসে দেয়। আঁচলের বোকামি দেখে বেচারার হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার অবস্থা।
আঁচল অবাক হয়ে যায় রেহানের এমন কান্ডে।
রেহান – বেইবি তুমিও না!! ভালো করে তাকিয়ে দেখো দরজা টা ভেতর দিয়ে লক করা। তুমি কি ভেবেছো আমি দরজা খুলা রেখেই তোমার সাথে রোমান্স করবো।
আঁচল তাকিয়ে দেখে সত্যিই তো দরজা তো লক করা। কিন্তু আমার কি দোষ! আমি তো এই অসভ্যর কাছ থেকে পালানোর জন্য মিথ্যা বলেছিলাম।
যাই হোক এই সুযোগ এ আমি বরং পালাই। যেই ভাবা সেই কাজ।
রেহান এখনো বিছানায় শুয়ে হেসেই যাচ্ছে। আঁচল এক লাফে শুয়া থেকে উঠে পালাতে নিলেই রেহান আঁচলের শাড়ির আঁচল ধরে ফেলে।
রেহান – পালানোর ধান্দা তাই না। পালানোর জন্যই রিমি এসেছে বলেছিলে? এবার পালাও তো দেখি! (মুচকি হেসে)
আঁচল – ছাড়ুন আমায়।
রেহান কিছু না বলেই শাড়ির আঁচলটা ধরে টান দেয়।
আঁচল ও বাধ্য হয়ে রেহানের কাছে চলে যায়।
রেহান আঁচলকে নিজের উপর নিয়ে আসে আঁচলের কোমড় শক্ত করে ধরে….
রেহান – তোমার এই একটা রোগ জানো আঁচল!!
রোমান্স করার সময় মুড নষ্ট করে দাও।
আঁচল – তো এখন আপনার রোমান্স করার টাইম নাকি আজিব!! (বিরক্ত হয়ে)
রেহান – তাহলে কখন শুনি? রাতে ? (মুচকি হেসে)
আঁচল – আপনার সাথে কথা বললেই আমার মাথা নষ্ট হয়ে যাবে। ছাড়ুন আ…..
রেহান আঁচলকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আঁচলের ঠোঁট আকড়ে ধরে। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ার পরও রেহান আঁচলের ঠোঁট ছাড়ছে না।
এদিকে আঁচল বেচারির যেনো নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা।
আঁচল না পেরে রেহানের হাতে জোরে নখ দিয়ে আঁচড় কাটে। যেহেতু আঁচলের নখ গুলো চাইনিজ কুড়াল কেও হার মানাবে রেহানের অবস্থা কি হয়েছে সেটা রেহানই বুঝতে পারছে।
রেহান – আহহহ আঁচল! তুমি কি পাগল! এভাবে কেউ আঁচড় কাটে? (ধমক দিয়ে)
রেহানের ধমক শুনে আঁচল কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। ভয়ে ভয়ে রেহানের কাছ থেকে চলে আসতে নিলেই রেহান পেছন থেকে আঁচলের কোমড় ধরে টেনে বিছানায় ফেলে দিয়ে নিজে আঁচলের উপর উঠে শরীরের ভার ছেড়ে দেয়।
রেহান – সাহস তো কম না তোমার! আমার হাতের ১২ টা বাজিয়ে দিছো। এর শাস্তি তো পেতেই হবে। (রেগে)
আঁচল – (এ মা…. না জানি আবার কোন শাস্তি দিবে আল্লাহই জানে। মনে মনে।)
আঁচল কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই রেহান আঁচলের গলায় মুখ গুঁজে দেয়।আঁচল ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে।
রেহান আঁচলের গলায় চুমু দিয়ে জোরে কামড় বসিয়ে দেয়।
আঁচল – আউউচচ….. মরে গেলাম গো…. এ তো আস্ত রাক্ষস…. আমাকে খেয়ে ফেলতে চাইতে গো মা….. (ভ্যা ভ্যা করে কান্না করে দিয়ে)
রেহান আঁচলের উপর থেকে উঠে যায়…..
রেহান – এটাই হলো তোমার শাস্তি বুঝছো। স্টুপিড…. বলেই হনহন করে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
আঁচল গলায় কিছুক্ষন হাত বুলিয়ে বিছানা থেকে উঠে আয়নার সামনে গিয়ে দেখতে থাকে।
আঁচল – রাক্ষস কোথাকার! আমার এতো সুন্দর গলায় দাঁত বসিয়ে দিলো। ইচ্ছে করছে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে মারি।
—- কি বলো ভাবি! আমি ভাইয়ে মারার প্লান করছো বুঝি?
আঁচল কারো কন্ঠ শুনে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে রিমি।
আঁচল – এই তুমি কোথায় গিয়েছিলে বলো তো? (কিছুটা রেগে)
রিমি – বারে!! আমি না গেলে রোমান্স করতে কিভাবে শুনি? (আঁচলের গলার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে)
আঁচল তারাতারি করে গলা টা ঢেকে রেগে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
রিমি আঁচলের কান্ড দেখে হাসছে।
আঁচল – ধুর রিমিটার কাছে থাকলেও এখন জ্বালিয়ে মারবে। আর রুমে গেলে তো ঐ ডেভিল টা! ওহহহ আল্লাহ দড়ি ফালাও আমি উপরে চলে যাই!!
আঁচল আর কিছু না ভেবে রুমে চলে যায়। গিয়ে দেখে রেহান বিছানায় আধশোয়া হয়ে শুয়ে বই পড়ছে।
আঁচলকে আসতে দেখে একবার আঁচলের দিকে তাকিয়ে আবার বই পড়ায় মন দেয়।
আঁচল – যাক বাবা ডেভিল টার মাথা থেকে আমাকে জ্বালানোর ভুত দূর হয়েছে।
আঁচল বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ায়।
রেহানের বেলকনি টা সত্যিই অনেক সুন্দর। আর এই সুন্দর্য টাকে বাড়িয়ে দিয়েছে ফুল গাছ গুলো।
বেলকনিতে অনেক গুলো ফুল গাছ। বোধহয় রেহান এই গাছ গুলোর যত্ন করে।
আঁচল ফুল গুলোতে হাত দিয়ে দেখে বেলকনির গ্রীল ধরে দাঁড়িয়ে আছে। হালকা বাতাসে আঁচলের চুল গুলো উড়ছে।
আঁচলের অনেক ভালো লাগছে এই পরিবেশ টা। সে এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
অনেকক্ষণ আঁচলকে রুমে আসতে না দেখে রেহান বই টা রেখে উঠে দাড়ায়।
বেলকনির সামনে আসতেই আঁচলকে দেখে রেহানের চোখ আটকে যায়।
রেহান চুপিচুপি বেলকনিতে গিয়ে দাড়ায়।
আঁচলের চুল গুলো উড়ে রেহানের চোখমুখে পড়ছে।
এতে রেহান মোটেই বিরক্ত হচ্ছে না। বরং অজানা এক ভালোলাগা কাজ করছে রেহানের মনে।
হটাৎ পেটে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে আঁচল চমকে উঠে। পিছন ফিরে বুঝতে পারে রেহান।
রেহান আঁচলের কাছে গিয়ে পেছন থেকে আঁচল কে জড়িয়ে ধরে আঁচলের চুলে মুখ ডুবায়।
আঁচল রেহান কে ছাড়াতে চাইলে রেহান আরও শক্ত করে আঁচলকে জড়িয়ে ধরে।
আঁচল – কি হচ্ছেটা কি! ছাড়ুন আমায়। (বিরক্ত হয়ে)
রেহান আঁচলের কথা শুনে কিছু না বলে আঁচলকে ছেড়ে দেয়। আঁচল সেখান থেকে চলে আসে।
রুমে এসে আঁচল পিছন ফিরে দেখে রেহান দু’হাত পকেটে গুঁজে মুচকি হাসছে।
আঁচল আর কিছু না বলে চলে আসে রুম থেকে।
চলবে….