ঝগড়াটে_ভালোবাসা _পর্ব_২

0
4379

ঝগড়াটে_ভালোবাসা
_পর্ব_২
Written by Avantika Anh
বাড়িতে এলাম….
শুভ- আনহা
আমি- হুম বল
শুভ- কোথাও না বলে যাস না ।
আমি- হিহি কেনো ?
শুভ- বাচ্চামি বিহেভ বন্ধ কর
আমি- তুই আমাকে এভাবে বলতে পারলি
শুভ- হুম পারলাম
আমি- আই হেট ইউ
শুভ- হাহা
.
চলে এলাম…..
বিকেল বেলা ছাদে বসে ছিলাম । কে যেন আইলো তাকায় দেখি শুভ ভাইয়া কিছু বললাম না ।
শুভ- কি রে মোটি ছাদে কি করিস ?
আমি- আমি মোটি কেমনে আমি অনলি ৪৫ কেজি মোটু তো তুই ৬০ কেজির আটার বস্তা ।
শুভ- মার খাবি
আমি- হিহি আমিও মারতে পারি
শুভ- কাতুকুতু দিমু
আমি- খামচায় দিম
.
.
শুভ ভাইয়া যেই কাতুকুতু দিতে আসবে আমি খামচায় দিলাম ।
শুভ- পেত্নিইইইই
.
আমি পালায় আসলাম ।
শুভ ভাইয়া পিছু পিছু আসলো।
শুভ- হারামি
আমি- হিহি
শুভ- তুই বাড়ি গেলেই বাঁড়ি গেলেই বাঁড়ি গেলেই বাঁচি
আমি- খুব জ্বালাই কি তোমাদের ? (কথা টা শুনে মন খারাপ হলো)
শুভ- হায় আল্লাহ এই টা কার পাল্লায় পড়লাম । সরি মাইন্ড করিস কেনো ? আমি ওভাবে বলছি
আমি- হিহি বাদ দে । গফ এর লগে কবে দেখা করাবি ?
শুভ- আমার আর গফ
আমি- মিছাবাদী সেদিন ডায়রি এ মেঘ পরির কথা পড়লাম । কে এইটা রে?
শুভ- হারামি চোর আমার ডায়রি পড়িস
আমি- হিহি
শুভ- তোকে তো আমি খাইছি আজ
আমি- ওই মামনি কে বলে দিবো
শুভ- এই একটা পাইছিস হারামি দেখে নিবো আমিও ।
আমি- হিহি পারবি না
.
শুভ ভাইয়া চলে গেলো ।‌
বিকেলে বোর লাগছিলো তাই ফেসবুকে ঢুকলাম । কমেন্ট চেক করছিলাম । একটা আইডি আজব কমেন্ট করছে ।
(কেমন আছো গো ভুলে গেলা কীভাবে আমাকে ?)আমি রিপ্লাই দিলাম
-“কে আপনি?”
-“চিনলে না”
-“মানে?”
-“ইনবক্সে দেখো বলছি”
-“আমি ইনবক্সে বেশি যাই না”
-“আসো ইম্পরটেন্ট কথা”
.
কি ভেবে ইনবক্সে গেলাম ।
-বলুন কি বলবেন ?(আমি)
-হেহে(মেঘ বালক)
-আজব হাসির কি?(আমি)
-আল্লাহ রে এতো খাটাস কিনু লেখিকা ম্যাম(মেঘ বালক)
-না কি বলবেন বলেন(আমি)
-কিছু না আপনি সেই কিউট(মেঘ বালক)
-কই দেখলেন?(আমি)
-মনের চোখে(মেঘ বালক)
-হাহা ওকে বাই(আমি)
.
অফলাইন চলে আসলাম । রাত হয়েছিলো কিন্তু আমার খেতে ইচ্ছে করছিলো না । তাই যাই নাই ।
কিছু সময় পর শুভ ভাইয়া এলো ।
শুভ- কি রে মটু খাইতে আসলি না যে?
আমি- খেতে ইচ্ছে করছে না
শুভ- হুর খা তো
আমি- না ভাল্লাগছে না
শুভ- তুই খাবি তো ঘাড় খাবে
.
শুভ ভাইয়া আমাকে থুসায় থুসায় খাওয়ায় দিলো ।
শুভ- শুন কাল আমরা ফ্রেন্ডরা পিকনিকে যাবো তুই গেলে যাইস ।
আমি- আচ্ছা
.
.
পরের দিন আমার জ্বর আসলো । জ্বরের কারণে সকাল সকাল উঠতেও পারলাম না ।
.
কিছু সময় পর শুভ ভাইয়া এলো । কয়েকবার ডাক দিলো কিন্তু আমি না উঠায় হাত ধরে টানতে লাগলো । হাত টা গরম লাগলো । চেক করে দেখলো গায়ে জ্বর ।
শুভ- ওই আনহা জ্বর কবে হলো?
আমি- কই জ্বর ?
শুভ- হারামি কই জ্বর দ্বারা আম্মু কে বলি ।
.
সেদিন আর শুভ ভাইয়াও কোথাও গেলো না আমি গেলাম না বলে । ২ দিন পর জ্বর ভালো হলো । এ দু দিন শুভ ভাইয়া আমার খেয়াল রাখলো ভালোই ।
.
.
জ্বর ভালো হওয়ার পর….
শুভ- ওই আমার পা টিপ ।
আমি- কেনো ?
শুভ- তোর এতো সেবা করলাম তাই ।
আমি- আমি বলছিলাম ?
শুভ- যা ভাগ আর কখনো তোর যত্ন নিবো না এই শেষ ।
আমি- হিহি শুন না ভাবির লগে পরিচয় করাবি কবে ?
শুভ- সময় হোক । আমার ফ্রেন্ডের বোনের বিয়ে লাগছে কাল থেকে সব অনুষ্ঠান শুরু তোকেও যাইতে বলছে রেডি থাকবি ।
আমি- আমি গিয়ে কি করবো ?
শুভ- বসে থাকিস তবুও যাবি
আমি- কি পইড়া যামু ?
শুভ- শাড়ি
আমি- কিইইইইইই
শুভ- হ
আমি- আ‌মি শাড়ি পড়ি নাকি?
শুভ- পড়িস না তো কি পড়লে কি হবে?
আমি- না
শুভ- তুই পড়বি প্লিজজজজজজজ রে
আমি- ওকে
.
পরের দিন…..
হলুদের অনুষ্ঠান ছিলো । এক আমি শাড়ি পড়ি নাই বেশি । ২ মাথায় কাগজের ফুলের কি জানি মামনি পড়িয়ে দিছে ওটা পড়ে আমার আজব লাগছিলো ।
.
বের হলাম রেডি হয়ে….
শুভ- আনহু
আমি- কি ?
শুভ- তুই এতো সুন্দর হইলি কবে থেইকা?
আমি- জন্ম থেইকা হিহি
শুভ- আইসে পেত্নি
আমি- আমাকে আজব লাগছে তাই না ?
শুভ- ভালোই লাগছে খালি একটাই সমস্যা
আমি- কি ?
.
.
শুভ ভাইয়া আমার চুল গুলো খুলে দিলো ।
আমি- কি রে চুল খুললি কেন ?
শুভ- এমনে ভালো লাগছে
আমি- হুর চল জ্বলদি তাইলে জ্বলদি ফিরবো
শুভ- যাইতে না যাইতেই ফিরার কথা । হায় আল্লাহ
আমি- শুন যাচ্ছি ঠিক আসার সময় কিটক্যাট দিবি কিন্তু
শুভ- হারামি ব্লাকমেইল
আমি- হ
.
বাইকে করেই যাচ্ছিলাম । অনুষ্ঠানে ঢুকতেই কিছু মানুষ বললো “দেখ কাপল টাকে মানাইছে তাই না”
আমি- ভাইয়া
শুভ- বল
আমি- দেখ আমাদের কাপল ভাবছে
শুভ- হাহা আমরা তো কাপলই
আমি- মজা ছাড়
শুভ- বাদ দে মানুষ কে ভাবতে দে
আমি- আচ্ছা ।
.
.
অনুষ্ঠান শুরু হলো হলুদ মাখামাখি হচ্ছিলো । শুভ ভাইয়া আর তার বন্ধুরা সবাই হলুদ মেখে ভুত হয়ে গেলো । শুভ ভাইয়া আমার কাছে আসতেই…..
আমি- হ শুভ ভাইয়া তুমি তো ভুত হয়ে গেছো । বিয়েটা করে ফেলো তুমিও
শুভ- খুব হাসি পাচ্ছে তাই না দ্বারা রে শয়তান ।
.
.
শুভ ভাইয়া হলুদ হাতে আমার দিকে আগাতে লাগলো ।
আমি- ওই বেশি হবে দিস না এসব
শুভ- আমি তো দিবোই
আমি- ওই না
.
আমি‌ এক পা করে পিছুতে লাগলাম আর শুভ ভাইয়া আমার দিকে এক পা করে এগুতে লাগলো । শেষ পর্যন্ত আমার মুখে হলুদ মাখিয়েই দিলো ।
আমি- কি করলি এইটা ?
শুভ- এখন তুই ও ভুত
আমি- শয়তান
.
বলেই আমি শুভ ভাইয়াকে আরো হলুদ মাখিয়ে দিলাম ।
.
শুভ- তবে রে
.
এভাবে হলুদ অনুষ্ঠান শেষ হলো আর আমরা বাড়ি ফিরলাম ।
.
.
চলবে……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে