জোরপূর্বক ভালোবাসা পর্বঃ ১২

0
2510

জোরপূর্বক ভালোবাসা পর্বঃ ১২
– আবির খান

সকালে…
তমা ঘুম থেকে উঠেই দেখে আবির ওর দিকে তাকিয়ে আছে… তবে তাকানোর ভাবটা কিন্তু নরমাল না…তাকানোর ভাবটা হলো..
“তুমি এখানে কি করো?”….
তমা দেখে সে আবিরের ফরসা জামাহীন বুকের উপর শুয়ে আছে…তমার প্রচুর লজ্জা লাগছে…তার চেয়েও বেশি লজ্জা লাগছে কাল রাতের কথা মনে করে…ইসস লজ্জায় শেষ হয়ে যাচ্ছে তমা…আসলে কালরাতে তমা অনেক বেশি আবেগি হয়ে পরেছিলো…তাই আবেগের বসে ওসব করেছে…তমা ভাবছে আল্লাহ এখন কি করবো..রাতে তো সোফায় ছিলাম…এখন ওনার এই নেশা ধরানো খালি ফরসা বুকের উপর…না জানি উনি কি ভাবছে…
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


আবির ভাবছে,
হাহা দুষ্ট রানী…এবার ধরা খেয়েছো..এখন কি বলবা??রাতে যা করছো…আল্লাহ জানে কিভাবে নিজেকে আটকে রাখছি…পুরাটা রাত ঘুমাইতে পারি নাই…তোমার ওই পরীর মতো মায়াবী মুখখানা দেখেছি…কবিদের কল্পনার নারীই মনে হয় তুমি…সত্যিই এতো সুন্দরী অপরূপাকে পেয়ে আমি আর আমার ঠোঁটদ্বয় ধন্য..কাল রাতেতো মনে হয়েছে আমার ঠোঁটটা খেয়েই ফেলবে…ভাইরে ভাই আমি যদি ওকে সারা দিতাম তাহলে যে কাল কি হতো..স্বামীকে পাওয়ার জন্য একদম উঠে পরে লাগছে..নাহ দেখেন আপনারা কিভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে… এভাবে তাকালে কি কন্ট্রোল করা যায় ভাই…এইরকম পরী যদি আপনার বউ হয় আর আপনার বুকে শুয়ে থাকে…ভাই আপনি কি পারতেন তাকে আদর না করে…আমি পারছি…নিজেকে আজ মহাপুরুষ মনে হচ্ছে…হাহা..

তমা ভাবছে,
ইসস কিভাবে তাকিয়ে আছে…আচ্ছা উনি এতো সুন্দর কেন??চোখগুলো কি সুন্দর..গোচা গোচা দাড়ি..চুলগুলো কি সিল্কি..আমার চেয়েও উনি কত সুন্দর…সবচেয়ে সুন্দর উনার ঠোঁটটা..কি মিষ্টি… ধুহ কি বলছি…লজ্জা লাগছে নিজেরই..আচ্ছা উনিতো অনেক সুন্দর হান্ডস্যাম..যদি আমার চেয়ে সুন্দরী কেউ এসে উনাকে নিয়ে যায়??না না এ আমি হতে দিবো না…যে নিতে আসবে তাকে আমি নিজ হাতে শেষ করে দিবো…সে আমার স্বামী শুধু আমার…তার উপর শুধু আমার অধিকার আর কারো নাহ..তমা আবার অনেক আবেগি হয়ে পরলো..

আবির-
একিরে ও আমার দিকে এরকম ছলছল চোখে উপরে আসছে কেন..আর কেমন জানি লাগ…বাকিটুকু চিন্তা করার আগেই তমা যা করলো তা আপনারাও চিন্তা করতে পারবেন নাহ…

তমা উপরে উঠে তার স্বামীর কাছ থেকে জোরপূর্বক আদর নিচ্ছে…মানে তমা আবার আবেগের বসে এসে তার মিষ্টি ঠোঁটদ্বয় আবিরের ঠোঁটে ডুবিয়ে দেয়…আবির পাগলের মতো ছাড়ানোর চেষ্টা করছে.. আর তমা আবিরকে আরো শক্ত করে ধরে পরম সুখে আদর নিচ্ছে..আবির হাপিয়ে গেছে তমাকে সরানোর চেষ্টা করতে করতে…কি করবে শেষ মেষ আবিরও মনের অজান্তেই সারা দিয়ে যাচ্ছে…কতক্ষণ তাদের জোরপূর্বক আদর দেওয়া নেওয়া চলল তা তারাও জানা না…তাদের সময়টাকে যেনো থামকে গিয়েছে…শেষই হচ্ছেনা…হঠাৎই বেডরুমের দরজায় করা পরলো…তমা আবিরকে আচমকা ছেড়ে দিলো..

রহিম চাচাঃ বাবা নাস্তা রেডি…নিচে আসেন…
আবিরঃ জ্বি আসছি যান…

তমা দেখে আবিরের ঠোঁট লাল হয়ে আছে..ইসস এটা ও কি করলো.. লজ্জায় তমা শেষ হয়ে যাচ্ছে.. মন চাচ্ছে মাটি ফাকা হয়ে যাক আর ও ভিতরে ঢুকে যাক..

আবিরেরও সেই লজ্জা লাগছে…জীবনের প্রথম এই সুখ পাচ্ছে…শুধুমাত্র তার নিজের ভালোবাসার মানুষটার কাছ থেকে শুধু একান্ত নিজের পরীর মতো বউএর কাছ থেকে…আবির আস্তে তমাকে পাশে শুয়ে দিয়ে উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়..

আবির টয়লেটে ঢুকে যেইনা আয়নায় নিজেকে দেখে…
আবিরঃ হায় আল্লাহ.. আমার ঠোঁটের একি অবস্থা… পুরা ফুলে লাল হয়ে আছে…লাল হবেই বা না কেন..যেভাবে পাগলিটা কামড়েছে..ভাগ্যে ভালো ছিরে যায়নি…হাহা…আবির হাসছে…
আবিরঃ দাড়াও আমাকে কামড় দেও না…এখন তোমাকে যে কি লজ্জা দিবো খালি দেখো…
আবির ফ্রেশ বাইরে আসে…

আবিরঃ এটা কি করেছো??ঠোঁট দেখিয়ে…
তমাঃ…. ইসস এটার ভয়ই এতোক্ষন পাচ্ছিলাম… মনে মনে…
আবিরঃ কি হলো বলো..এভাবে কেউ কামড়াতে পারে…
তমা আবিরের এরকম কথা শুনে লজ্জায় শেষ হয়ে যাচ্ছে…তাই মাথা নিচু করে রেখেছে…

আবিরঃ আমার ঠোঁটটাইতো ছিরে যেতো… বলেই আবির মিটি হাসছে…
তমা উঠে আবিরের কাছে গিয়ে ওর মুখ চেপে ধরে..
তমাঃ প্লিজ আমাকে আর লজ্জা দিবেন না…ভুলে এসব করে ফেলেছি…বলেই আবিরকে সরিয়ে দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়…
আবিরঃ ভুল না সব ইচ্ছা কইরা করো….বুঝিনা না..হাহা..

এরপর তমাও আবিরের সাথে মিশা কমিয়ে দেয় লজ্জায়…রাতে একসাথেই ঘুমাতো কিন্তু মাঝে একটা কোল বালিশ থাকতো… তবে সকালে যে সেই কোলবালিশ কোথায় হারিয়ে যেতো তা আর বলা যেতো না..দেখা যেতো তারা একে অপরের সাথে মিশে ঘুমিয়ে আছে…আস্তে আস্তে আবিরও আবার তমাকে কাছে টাননে শুরু করল… এখন আর তুই বলেনা…এখন তমাকে তুমিই বলে আবির…এখন আবির শুধু অপেক্ষায় আছে তার বাবা মা আসার তাহলেই আবার তারা বিয়ে করবে এবং আবিরও তমাকে আপন করে নিতে পারবে..কিন্তু তমা আগের চেয়ে অনেক শান্ত হয়ে গিয়েছে.. হয়তো বুকের চাপা কষ্টে…

কিছুদিন পর…
এক সকালে…
আবিরঃ তমা….
তমা দৌড়ে এসে হাজির..
তমাঃ জ্বি..
আবিরঃ রহিম চাচাকে বলো বিকেলে দুজন আসবে..ভালো কিছু খাবার রান্না করতে…
তমাঃ আচ্ছা..কিন্তু কে আসবে??
আবিরঃ আসলেই দেখবে নে…
তমা মন খারাপ করে চলে গেলো… আর আবির মিটিমিটি হাসছে…

তমাঃ কে আসবে বললে কি এমন হতো…লোকটা এমন কেন..ধুহ..

বিকেলে…
আবির আর তমা বসে আছে…আসলে তমা বসে আছে বললে ভুল হবে…সে একটু পর পর দরজার কাছে যাচ্ছে আবার ফিরে আসছে..অধির আগ্রহ নিয়ে পায়চারী করছে..আর ভাবছে কে আসতে পারে…

আবিরঃ এখানে চুপচাপ বসো…
তমাঃ বলেন না কে আসবে…
আবিরঃ একটু পরেই দেখবে..

বলতেই কলিংবেল বেজে উঠলো… তমা আবিরের আগে গিয়ে দৌড়ে দরজা খুলে দিলো…তমা যাকে দেখলো তাকে সে কল্পনাও করেনি…সে আর কেউ নয় তার প্রান প্রিয় ছোটকাল থেকে সবচেয়ে কাছের বান্ধবী তিশা…তমা তিশাকে দেখে জরিয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পরে… কারণ তিশা তমার সাথে রাগ করেছিলো.. তমা তিশা কথা বিশ্বাস করেনি বলে…

শুভঃ আরে ভাবি বাইরে বসেই কাদবেন নাকি চলেন ভিতরে বসে সবাই মিলে একসাথে কাদি…হাহা..
তমা তিশা আর শুভ ভিতরে এসে বসলো..

আবিরঃ শুভ বাইরে চল..ঘুরে আসি..
শুভঃ কি বলিস মাত্রই তো আসলাম..
আবিরঃ শুভ…আমি বলছিনা চলতে..তমা আর তিশাকে দেখিয়ে…
শুভঃ ওহ…আচ্ছা আচ্ছা…চল..
তমাঃ তারাতারি এসে পরবেন…

আবির আর শুভ বাইরে এসে পরলো…
শুভঃ বাবাহ ভাবি দেখি তোর ভালোই কেয়ার করে..
আবিরঃ হুম সত্যি বলছিস…ওয় মতো জীবন সঙ্গি পাওয়া ভাগ্যের ব্যপার…
শুভঃ হুম আসলেই….

এদিকে…
তমাঃ কেমন আছিস রে??কান্না জড়িত কণ্ঠে..
তিশাঃ ভালোই আছি..তুই??কান্না জড়িত কণ্ঠে..
তমাঃ দেখছিস না তোর আবির ভাইয়া কিভাবে আমার খেয়াল রাখে…ভালো না থেকে আর থাকা যায়… মনের কথা না বলেই সব বুঝে যায়…এই যে দেখ কয়দিন যাবত তোকে খুব মিস করছিলাম..উনি তোকে এনে দিলেন…
তিশাঃ হুম তা ঠিক… গতকালকে ফোন দিয়ে আমাকে আজ আসতে বলেছে..
তমাঃ ওহ..দোস্ত আমাকে মাফ করে দে…আমি বুঝতে পারিনাই যে তখন তুই ঠিক ছিলি..কাদতে কাদতে..
তিশাঃ আরে বোকা কাদিস নাহ.. তোর উপর আমি রাগ করে থাকতে পারি নাকি…তুই হইলি আমার আপন বোনের মতো..
তমাঃ সত্যি দোস্ত আমি যে কি ভুল করতে নিছিলাম..
তিশাঃ হুম কিন্তু আবির ভাইয়া সেই ভুল তোকে করতে দেয়নি…
তমাঃ জানিস উনি অনেক ভালো… ওনার মতো হাজবেন্ড পাওয়া ভাগ্যের ব্যপার…
তিশাঃ হুম তাতো দেখলামই…

এরপর তমা আর তিশা অনেক সুখ দুঃখের গল্প করলো.. আবির আর শুভ বাইরে থেকে ফিরে এসে কিছু খাবার খেয়ে সবাই ড্রয়িং রুমে বসে আছে..

শুভঃ দোস্ত আবির চল গার্ডেনে যে বসার জায়গাটা আছে ওখানে যাই..সেখানে বসে আড্ডা দিবো..
আবিরঃ আচ্ছা চল..
শুভঃ তোরা যা আমি একটু আসছি..
আবিরঃ আচ্ছা…চলো তিশা.. তুমিও আসো…
ওরা গিয়ে বসলো..

একটু পরের শুভ একটা গিটার নিয়ে আসলো…

শুভঃ নে ধর…কোন কথা বলবি না…চুপচাপ একটা গান শুনা..অনেক দিন তোর গলায় গান শুনি না…
আবিরঃ আরে না না এখন আর গান টাই গাইতে ভালো লাগেনা..
শুভঃ প্লিজ দোস্ত গা না একটা…
তিশাঃ হ্যা ভাইয়া গান না একটা.. শুভ আমাকে বলেছে আপনি নাকি ভালো গান করেন…
আবিরঃ আরে না না..ও একটু বেশি বলে সবসময়…
শুভঃ বুঝছি…ভাবি আপনি বলেনতো নাহলে ও গাবে না…
তমাঃ সবাই যখন বলছে একটা গান শুনান নাহ…আস্তে বলল..অনুনয়ের স্বরে..
আবিরঃ আচ্ছা…
শুভঃ দেখছেন ভাবি বলছি না…হাহা..

আবির গিটার হাতে নিয়ে তমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে গান শুরু করলো…

Tum mere ho iss pal mere ho
Kal shayad yeh aalam na rahe
Kuch aisa ho tum tum na raho
Kuch aisa ho hum, hum na rahein…

Yeh raaste alag ho jaaye
Chalte chalte hum kho jaayein…

Main phir bhi tumko chahunga
Main phir bhi tumko chahunga
Iss chahat mein marr jaaunga
Main phir bhi tumko chahunga

Iss chahat mein marr jaaunga
Main phir bhi tumko chahunga
Meri jaan mein har khamoshi le
Tere pyaar ke naghme gaaunga
Mmm…

Main phir bhi tumko chahunga
Main phir bhi tumko chahunga
Iss chahat mein marr jaaunga
Main phir bhi tumko chahunga

Aise zaroori ho mujhko tum
Jaise hawayein saanson ko
Aise talashun main tumko
Jaise ki per zameeno ko

Hansna ya rona ho mujhe
Paagal sa dhoondu main tumhe
Kal mujhse mohabbat ho na ho
Kal mujhko ijazat ho na ho
Toote dil ke tukde lekar
Tere darr pe hi reh jaaunga
Mmm…

Main phir bhi tumko chahunga
Main phir bhi tumko chahunga
Iss chahat mein marr jaaunga
Main phir bhi tumko chahunga

তমা আবিরের গান শুনে কাদতে কাদতে দৌড়ে চলে গেলো ভিতরে…

শুভঃ দোস্ত যা…অনেক হইছে আর না…এবার ভাবিকে কাছে টেনে নে….

আবির গিটার রেখে দৌড়ে তমার পিছে চলে যায়..বাসার ভিতরে গিয়ে কোথাও না পেয়ে আবির ছাদে চলে যায়…গিয়ে দেখে এক কোনায় দাড়িয়ে তমা অঝোরে কাদছে…

আবির দৌড়ে গিয়ে পিছ থেকে তমাকে জরিয়ে ধরে… তমাও সামনে ঘুরে আবিরকে জরিয়ে ধরে কাদতে থাকে…আর বলে…

তমাঃ আমাকে মাফ করে দিন… আমি আপনাকে সত্যিই অনেক অনেক ভালোবাসি..কাদতে কাদতে..
আবিরঃ বোকা মেয়ে এভাবে কাদে…আমিও যে আমার পরীটাকে অনেক অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি..কাদতে কাদতে…
তমাঃ আপনি কাদছেন কেন??
আবিরঃ তুমি কাদছো যে তাই..
তমাঃ তাহলে আসেন দুজনে একসাথে কাদি…
আবিরঃ দুষ্ট মায়াবী পরী আমার…

তমা আবিরকে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরে… সাথে আবিরও…আজ প্রথম তারা কোন রাগ, অভিমান, কষ্ঠ সব ফেলে একে অপরের এতো কাছে..মুহূর্তটা বরং তাদের ফিল করতে দি কি বলেন…আমরা আর ডিস্টার্ব না করি…কাল আবার লেখা হবে…?
চলবে… ?
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে