জীবনেরডায়েরী২
পার্ট: ৩
খুব শান্ত ভাবে ও আমার চোখের দিকে থাকিয়ে আছে হয়তো আমার চোখে ওর জন্য ভালোবাসা আছে কিনা তাই খুঁজছে, আমি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছি কি বলবো ওকে এখনো ভালোবাসি কিন্তু আমি তো এখন ডিভোর্সি কিভাবে বলি ওর আম্মু যদি আমাকে মেনে না নেন, কিছুক্ষণ আমার দিকে থাকিয়ে রইলো তারপর আমাকে ঘুরিয়ে দিয়ে পিছন দিক থেকে জরিয়ে ধরলো, চুলের খোপা খুলে দিয়ে চুলে নাক ডুবিয়ে দিয়ে শান্ত ভাবে বলতে শুরু করলো
–তমা আমি জানি তুমি এখন কি ভাবছ আমাকে এখনো ভালোবাস এই কথাটা বলবা কিনা তাই তো
–হুম
–ভয় পাইতেছ কেন আমি তোমাকে আগের মতই ভালোবাসি তুমি বিবাহিতা এইটা আমার কোনো সমস্যা না তোমার যদি বাচ্চা থাকতো তাও আমার সমস্যা ছিল না কারন আমি তোমাকে ভালবেসেছি তোমার শরীর কে না
–কিন্তু
–আম্মুর কথা ভাবছ ভয় নেই আম্মুও চায় তুমি উনার বৌমা হও
–তাহলে সেদিন দুজনেই আমাদের অপমান করেছিলে কেন
–আম্মু আমি দুজনেই পরিস্থিতির স্বীকার ছিলাম তোমাকে বাঁচানোর জন্য আমাদের এমন করতে হয়েছে
–মানে
–এসব অনেক কথা পরে বলব তোমার শরীরে তো জ্বর রেস্ট নাও এখন
–না আমি ঠিক আছি
–কেমন ঠিক আছ তো দেখছিই
–আচ্ছা মা এখন কোথায়
–কক্সবাজার, আমরা এখন ওখানেই থাকি ভাবছি এখানে চলে আসবো
–একটা প্রশ্ন করি
–হুম কর
–দুবছ আগে আমি তোমাকে কক্সবাজার দেখেছিলাম পরে আর খুঁজে পাইনি সবাই বলেছে ভুল দেখেছি কিন্তু আমি তোমাকে চিনতে ভুল করতেই পারি না
–হ্যা তুমি আমাকেই দেখেছিলে আমি জানতাম না তুমি ওখানে ছিলে, তুমি আমাকে দেখে যখন দৌড়ে আসছিলে তখন খুব দ্রুত ওখান থেকে আমি সরে যাই
–কেন
–আমি জানতাম তোমার বিয়ে হয়ে গেছে আমার জন্য তোমার সংসারে কোনো জামেলা হউক তা আমি চাইনি তাই
–হুম
–তোমার আম্মু কেমন আছে
–জানিনা
–কেন
–আমি তো সবাইকে হারিয়ে ফেলছিলাম আব্বুকে এখনো খুঁজে পাইনি
–মন খারাপ করো না আমি তো এখন পুলিশ তোমার আব্বুকে খুঁজে বের করতে বেশি সময় লাগবে না
–হুম
হঠাৎ কাশির শব্দে শ্রাবন আমাকে ছেড়ে দূরে গিয়ে দাঁড়াল, রিয়া এসেই হাসতে শুরু করলো
–হাসছিস কেন
–আমিই সবসময় তোদের রোমান্সে বাধা দেই হিহিহি
–হিহিহি বন্ধ কর নাহলে মাইর খাবি
–আচ্ছা বন্ধ করলাম তা শ্রাবন সাহেব আপনার কি খাবার খাওয়া লাগবে নাকি বউ এর পাশে থাকলেই চলবে
–খিদে আছে খাওয়া লাগবে আর খেয়েই চলে যাবো
শ্রাবন চলে যাবে শুনেই কেমন যেন খারাপ লাগতে শুরু করলো ভয় হচ্ছে খুব আবার যদি ওকে হারিয়ে ফেলি, এখন হারালে হয়তো আমি মরেই যাবো
দুপুরে সবাই একসাথে খেতে বসলাম কিন্তু আমি খেতে পারছি না শ্রাবন চলে যাবে ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে
রিয়া: কিরে খাচ্ছিস না কেন
আমি: খাচ্ছি তো
শ্রাবন: টেনশন করতে হবে না দুদিনের ভিতরেই এখানে চলে আসবো আর প্রথমে তোমার বাসাতেই উঠবো (কথাটা শুনে ওর দিকে থাকালাম পাগলটা কিভাবে যেন আমার মনের সব কথা বুঝে যায়)
আকাশ: তমা আমরা বাসা পেয়ে গেছি বিকেলে চলে যাবো
আমি: কিছুদিন পর গেলে হয়না
মেঘা আপু: পাগলী ভয় নাই এমন জায়গায় বাসা নিয়েছি যেখানে চাইলেই এক মিনিটে তুমি যেতে পারবা
আমি: মানে
আকাশ: তোমার বাসার পাশে যে বাসা খালি আছে ওইটাই ভাড়া নিয়েছি
আমি: আমি তো ভেবেছিলাম দূরে কোথাও চলে যাবা
আকাশ: ওই বাসার উপরের ফ্ল্যাট খালি আছে শ্রাবন তুমি চাইলে খালি ফ্ল্যাটটা ভাড়া নিতে পারো
শ্রাবন: তাহলে তো ভালই হবে সবাই কাছাকাছি থাকতে পারবো
রিয়া: হ্যা তোমাদের রোমান্স করতে সুবিধা হবে বলেই হাসতে শুরু করলো (এইটা যে কি সবসময় ফাজলামো করে)
পিয়াস: একটু কম হাস আমি আগামীকাল চলে যাবো
রিয়া: কেন
পিয়াস: কাজ পরে গেছে আব্বু ফোন দিছিলেন
রিয়া: তমার বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত আমি এখান থেকে যাচ্ছি না
পিয়াস: পাগল হইছি তো তোমাকে এখন নিয়ে যাবো আর তমার বিয়ে ঠিক হলেই বাংলাদেশে যাবো বাংলাদেশে যাবো বলে আমাকে পাগল করে দিবা (পিয়াসের কথায় সবাই একসাথে হেসে উঠলো)
বিকেলে শ্রাবন চলে গেলো, মেঘা আপুরা নতুন বাসায় চলে গেছে যদিও আমার বাসার পাশেই তবুও বাসাটা কেমন যেন খালি খালি লাগছে, পুরু বাসায় রিয়া পিয়াস আর আমি
রাতে আমার জ্বর অনেক বেড়ে গেলো তাই রিয়া আমার পাশেই ঘুমাল……
চলবে?