জলছবি পর্ব-২৯

0
995

#জলছবি
#পার্ট_২৯
#কাজী_সানজিদা_আফরিন_মারজিয়া
.
ফয়সালের জ্ঞান ফিরলো সন্ধ্যার পরপর। সকলেই তখন হসপিটালে। মাঝখানে সবাই একবার ঘুরে আবার সন্ধ্যের আগে আগে হসপিটাল চলে আসে।
খানিক বাদেই ডাক্তার এসে বলল, “রোগীর জ্ঞান ফিরেছে। ধীরে সুস্থে সকলে দেখা করতে পারেন এখন। তবে হট্টগোল করা চলবে না।”

কুহিনূর বেগম, যে কিনা ছেলে অমন মুমূর্ষু অবস্থায় কাঁদলেন না, সে ছেলের জ্ঞান ফিরেছে শুনে হু হু করে কেঁদে ফেললেন। হাতের স্যালাইন সহ-ই তাকে ফয়সালের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো প্রথমে।
মায়ের আগমনে, মায়ের শরীরের গন্ধে ফয়সাল ক্লান্ত চোখ পিটপিট করে তাকালো। অসম্ভব সতেজ ও সুন্দর হাসলো। কোহিনূর বেগম মুখে কিচ্ছুটি বলল না। ফয়সালের গালে, চোখে মুখে পরম আদরে আত বুলাতে লাগল। তার চোখ আর গাল বেয়ে ঝুপঝুপ করে অশ্রুধারা বয়। এই অশ্রুতে দুঃখ শেষে নির্মল সুখ। দুঃখের পরের সুখগুলো এমনই হয়, সুন্দর ও কোমল!
দুর্বল ফয়সালের সকল দূর্বলতাই উবে গেল এক নিমিষে। মায়ের হাতের উপর নিজের ক্যানোলা লাগানো হাত রেখে আবেশে চোখ বন্ধ করে। অল্পকিছুক্ষন পর চোখ মেলে। মোলায়েম হাসি মুখে ডাকে, “আম্মা? কেমন আছো আম্মা?”
কোহিনূর বেগম তখনও কেঁদেই যাচ্ছিলেন। বরং তার কান্নার বেগ বেড়েছে বৈ কমেনি।
ফয়সাল বুঝতে পারলো মায়ের মন। স্বাভাবিক করতেই হেয়ালি করে, খুব ধীরেসুস্থে বলল,
“আল্লাহ্‌! আম্মা? তুমি এমন কাঁনতে পারো, জানতাম না তো! যাক এই উছিলায় দেখতে পারলাম।”
কোহিনূর বেগম কপট রাগ দেখিয়ে বলে,
“তুই আমার লগে কথা কইবি না, বেদ্দপ! জীবনে কোনোদিন তোরা বাপ-পুতে আমার কথা শোনোস নাই।”
ফয়সাল বলে,
“এই আম্মা? দেখি দেখি? দেখি তো তোমার মুখখানা! দেখ, তোমার নাক কেমন লাল হয়ে গেছে! ইশশ! একদম বাচ্চা পুতুল লাগতেছে! আহারে আব্বায় যদি দেখতো এখন! নিশ্চিত আবার প্রেমে পইরা যাইতো! হা হা হা!”
মা ছেলের খুনশুটিগুলো বন্ধুরা সব দারুন উপভোগ করে। দূরে দাঁড়িয়েই মিটিমিটি হাসে তারা।
কোহিনূর বেগম অভিমানী মুখ করে বলে,
“ফাইজলামি করস? কর! যা মন চায় কর! আমারে নিয়া ভাব্বি ক্যা? তোর বাপেও ভাবে নাই, তুইও ভাবস না।”
ফয়সাল খুব দরদ নিয়ে বলে,
“ভাবি তো আম্মা। কে কইছে, ভাবি না?”
“একটুও ভাবস না। ভাবলে আমার কথা শুনতি। শুনস আমার কথা? তোর যদি কিছু হইয়া যাইতো, আমি কী নিয়া বাঁচতাম ক? ভাবছস একবারও সেই কথা? আমার কথা একবারও মনে আসে নাই তোর?”
ফয়সাল মায়ের হাতে চুমু দেয়। আঘাতের স্থানে অন্য হাত রেখে বলে,
“আসছে তো আম্মা। ওরা যখন এইখানটায় আঘাত করলো, দুনিয়াডা আন্ধার হইয়া গেল, তহন আমার চোখে কেবল তোমার মুখটাই ভাসছে আম্মা। কাইন্দো না আম্মা। তোমার কান্নামাখা মুখ, ছুরির আঘাতের চাইতেও বেশি জঘম করে আমারে। তুমি তো সাহসি আম্মাজান! এইটুকুতে এত ভেঙে পড়লা? কি অবস্থা করছো নিজের দেহো তো?”
কোহিনূর বেগম তখনও ফ্যাঁচফ্যাঁচ করে ঠিক বাচ্চা মেয়েটির মতো কাঁদে। তার খুব সুখ সুখ লাগে!

কোহিনূর বেগমের শরীরও দূর্বল থাকায় তাকে তার কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর এক এক করে সবাই আসে। বিষাদে তলিয়ে থাকা মন নিয়েই নোলকও আসে। লেক থেকেই সে হসপিটালে আসে। ফয়সালের জন্যেও মন কেমন করছিল। ওর সাথে কথা না বলেও বাসায় যেতে পারছিলো না। নবনীকে আরমানের সাথে পাঠিয়ে দিয়েছে অবশ্য! নোলক ফয়সালের কাছে গিয়ে কিছুটা হুংকার দেয়ার মতো করে বলে,
“জাস্ট পুরোপুরি সুস্থ হয়ে নে, তারপর তোকে আবার মেরে হসপিটালে ভর্তি করাবো, অসভ্য! খুব জ্বালাস তুই!”
ফয়সাল হেসে ফেলে। হাসে সকলেই।
উপরে স্বাভাবিক দেখালেও নোলকের মনে শান্তি লাগেনা কিছুই। মেকি হেসে ফয়সালের কপালে হাত রেখে বলে,
“তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠ তো দোস্ত। তুই ছাড়া সব কেমন ফিকে লাগে। হাদারামগুলা মন ভালো করে দিতে জানে না। তুই ছাড়া চলবে না।”
বলেই আনমনা হয়ে যায়। ফয়সাল বলে,
“হুম, সুস্থ হয়ে আগে চিরুনি তল্লাশি চালাবো। তারপর দেখবো কোন বেটায় তোরে এমন ছ্যাঁকা খাইয়ে, নোলকরানী থেকে ছ্যাঁকারানী বানিয়ে দিয়েছে!”
নোলক ফয়সালের গালে আলতো থাপ্পড় মেরে বলে,”চুপ, ফাজিল।”
ফয়সাল হাসে।
সৃজন বলে,
“শালা তুই নোলকের আগে আমার হাতে মাইর খাবি। তোর লাইগা দুইটা সুন্দরী মাইয়া রাগ কইরা ব্লক মারছে, রিপ্লাই দিতে পারি নাই দেইখা। কেমনডা লাগে ক?”
ফয়সাল বলে,
“তাইলে তো সোয়াবের কাম করছি মনেহয়! মাইয়া দুইটারে তোর মতো দুই নাম্বারের হাত থেইকা বাঁচায়ে দিছি। বহত আচ্ছা কাম কার’দিয়া!”
সকলে হেসে উঠে।
নিষাদ বলে, “সব বাদ! নিশির সাথে যে আমার দুই দিনের প্রেম গায়েব হয়ে গেল, তার জন্য তুই কী শাস্তি ডিজার্ভ করিস তা বল?”
ফয়সাল বলে,
“বেশি কিছু না। জাস্ট দুইটা ট্রিট দিলেই হইবো।”
শ্রেয়া বলে,”তোর ট্রিট থেকে আমারেও একটু ভাগ দিস দোস্ত।”
সৃজন পিঞ্চ মেরে বলে,
“আইছে আরেক নাদানি। ‘খালি খাই খাই, সুযোগ পেলেই ভাগ চাই'”
শ্রেয়া নিচু স্বরে বলে,
“খুব পঁচা হয়েছে তোর শেষের ছন্দটা। তুই একটা ফেলটু কবি হবি, অভিশাপ দিলাম।”
সৃজন মুখ বাঁকিয়ে বলে,
“তোর মতো বলদনী আমার ছন্দের মর্ম বুঝবো না এইটাই স্বাভাবিক। আই ডোন্ট মাইন্ড। তার চাইতে বড় কথা বলদনীগো অভিশাপে ক্রিয়েটিভ মানুষেদের কিছু হয় নট। জনগণ’স? চিল্লায়ে বল, ঠিক কি-না?”
নিষাদ আর ফয়সাল বলে,”ঠিক, ঠিক।”
শ্রেয়া মুখ ফুলায়। নোলক বলে,”ফাজিল গুলা!”

দুই দিনকে সকলের কাছে দুই যুগ মনে হচ্ছিলো। সবশেষে সবার মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটে ওঠে। এ যে কি শান্তির, প্রকাশ করা দায়!
হঠাঠ-ই ফয়সাল জিজ্ঞেস করে,
“আমাদের পাপা’স প্রিন্সেস কই? তারে দেখি না ক্যান? সে কি সুযোগ পেয়ে আমারে ভুলেটুলে গেল নাকি?”
নিষাদ বলে,
“আরে না। ওর প্রিন্স ব্রো এসে নিয়ে গেছে। ফোন অফ মাইয়ার। উধাও হয়ে গেল ক্যান, বুঝলাম না!”
ফয়সাল আনমনা হয়ে কি যেন ভাবে।
সবার মাঝেও একজনের অনুপস্থিতিতে অস্থির লাগে। মনে হয় কতদিন দেখে না!
মনে মনে ক্ষিপ্ত হয়ে ভাবে, আলালের দুলালি! মরার পিরিত! আল্লাহ্‌ রক্ষা করো এই মরন থেকে! কেন এলি না, লুবু? আ’ম মিসিং ইউ!
.

ইশান আদ্রকে ধরে হসপিটাল থেকে বাহিরে আনে। আদ্র ইশানের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলে,
“ধরে রেখেছিস কেন? আমি একা হাঁটতে পারি না বলেছি? দেখি ছাড়!” বলে ইশানের হাত ছাড়িয়ে নেয়। ত্যাক্ত হয়ে বলে,
“এত বেশি আলো কেন চারদিকে? চোখে বিঁধছে খুব!”
অথচ বাহিরে কৃত্রিম আলো। রাতের এটুকু আলো সইতে পারছে না, এটাই ওর কথার প্রমাণ।
ইশান আবার এসে ধরে। আদ্র রেগে গিয়ে বলে,
“আমি একাই চলতে জানি ইশু। বারবার ধরছিস কেন? ছাড়।”
ইশান উল্টো রাগ দেখিয়ে বলে,
“বাচ্চাদের মতো অযথা জেদ দেখাবি না আদ্র। সব সময় তোর কথা শুনতে বাধ্য নই আমি। জাস্ট তোর অকারন খামখেয়ালির কারণে এই এত বড় ক্ষতিটা হয়েছে। এমন কেন করছিস তুই? বাচ্চা হয়ে গেছিস আদ্র।”
“যা হয়েছে ভালো হয়েছে। যা করছি বেশ করছি। তুই আমায় নিয়ে ভাবা বন্ধ কর, প্লিজ! আমাকে আমার মতো একা ছেড়ে দে।”

কথার জবাব দেয়ার সুযোগ পায়না ইশান।
বেখেয়ালে আদ্রর কাছ ছুঁয়ে একটা বাস যেতে লাগলে ইশান টেনে ছড়িয়ে ফেলে। বাহু ধরে চেঁচিয়ে বলে,
“কী হয়েছে কী আদ্র? মরতে চাস? এমন কেন করছিস?”
আদ্র চোখের চশমাটা খুলে ছুড়ে মারে রাস্তায়। গাড়ির নিচে পড়ে চশমাটা গুড়াগুড়া হয়ে যায়।
নিজের চুল টেনে ধরে অসহায়ের মতো চেঁচিয়ে বলে,
“উফফ! কিচ্ছু দেখতে পাচ্ছি না ইশু, কিচ্ছু না। অসহ্য লাগছে দোস্ত, অসহ্য লাগছে। মারা যাচ্ছি আমি।”
ইশান হাতের ইশারায় গাড়ি থামায়। আদ্রকে ধরে গাড়িতে উঠায়। চোখের সামনে আদ্রর এই আর্তনাদ দেখেও কিছুই করতে পারছে না সে। কি যে অসহায় লাগে। এই মূহুর্তে নিজের চোখ দুটো গেলে দিতে ইচ্ছে করছে তার।
আদ্রর দু’হাত ধরে বলে, “কিচ্ছু হবে না দোস্ত, কিচ্ছু না। আমি আছি তো, আছি না? বেশি খারাপ লাগছে আদ্র?”
আদ্র মাথা আর চোখের দু’পাশ দু’হাতে চেপে রেখে চুপ করে থাকে। ইশান খুব করুন করে বলে,
“আই এম স্যরি দোস্ত! আই এম স্যরি। কিচ্ছু করতে পারছি না আমি, কিচ্ছু না!”
.
লুবনা রাত থেকে কিছু খায়নি। ফ্লোরেই হাঁটু মুড়ে বইসে রইলো দীর্ঘ সময়।
লুবনার মা সাহানারা একজন নিরীহ টাইপ মানুষ। স্বামী, ছেলে, মেয়ে সকলের রাগ সামলাতে সামলাতে জীবনের এতোটা সময় পার করে এসেছেন তিনি। সে মেয়েকে অনবরত ডাকছে, কিন্তু লুবনা তার ডাক শুনতে পেলে চূড়মূড় করে কিছু ভেঙে জেদ মেটাচ্ছে। ভাঙার মতো তেমন কিছু অবশিষ্টও নেই এখন আর।

এ খবর পেয়ে আমিনুল হক ছুটে আসেন। ছেলের হাতের প্রজেক্টর দায়ভার রেখে হন্তদন্ত হয়ে আসেন। এসেই প্রথমে সাহানারাকে ধমক দিয়ে বলেন,
“আমার মেয়েটা এতটা সময় না খেয়ে আছে, আর তুমি মা হয়ে মেয়েকে খাওয়াতে পারছো না? ইডিয়েট! আর আমাকেই বা এত দেরী করে জানিয়েছ কেন? যদি আমার মেয়েটা অসুস্থ হয়ে যায় না, সাহানা…!”

সাহানারা স্বামীর এহেন ব্যবহারের শেষে মিন মিন করে বলে,
“ফোন করেছিলাম আপনাকে। দেখননি হয়তো।”
আমিনুল হক কপট রাগ দেখি বললেন,
“এই দেখি সরো, সামনে থেকে সরো, আশ্চর্য!”

সাহানারা বেগম সরে দাঁড়ালেন। আমিনুল হক আদর দিয়ে ডাকলেন,
“মা? দরজা খোলো।”
ভেতর থেকে কোনো আওয়াজ এলো না। তিনি আরো কয়েকবার ডেকেও যখন সারা পেলো না তখন রাগ আর আতংক নিয়ে সাহানারার দিকে তাকালো। তিনি কাঁদো কাঁদো হয়ে বললেন,
“দরজা ভেঙে ফেলুন না! একটু আগেও তো ভাংচুর করছিল!”
“তুমি চুপ থাকো, দায়িত্বজ্ঞানহীন মহিলা! একটা কথাও বলবে না এখন আর!”
সাহানারার চোখ বেয়ে অশ্রু গড়ায়।
দশ মিনিটের মাথায় দরজা ভেঙে ফেলা হয়।
আমিনুল হক, সাহানারা এক ছুটে ভেতরে গিয়ে আঁৎকে উঠে।
পুরো রুম জুড়ে সব কিছু ভাঙাচূড়া, এলোমেলো। বিছানা চাদর, বালিশ সব নিচে পড়া। খাটের সাথে লাগোয়া হয়ে ফ্লোরে পড়ে আছে নিস্তেজ লুবনা।
.
মাঝরাতে অদ্ভুত আওয়াজে ঘুম ভাঙে নবনীর। চোখ না মেলেই হাত হাতরে নোলককে খোঁজে। না পেয়ে চোখ মেলে চায়। ড্রিম লাইটে স্পষ্ট দেখতে পায় নোলক নেই পাশে। বিছানা থেকে নেমে ওয়াশরুম চেইক করে, সেখানেও নেই।
গুনগুন আওয়াজটা তখনও স্পষ্ট। পাশের রুম থেকে আসছে। নবনী সংশয় নিয়ে সেদিকে যায়।
নোলকে দেখতে পায়। হাঁটুতে মুখ গুঁজে কাঁদে। নিশ্চুপ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে সেখানেই।

সন্ধ্যায় দেখা আদ্রর সেই অসহায়ত্ব বারবার চোখে ভাসে নোলকের। এই মানুষটাকে এভাবে সে কোনদিন কল্পনাও করেনি! ভীষণ কষ্ট লাগে নোলকের, ভীষণ।

নবনী নোলককে ছুঁতেই কেঁপে উঠে। তড়িঘড়ি করে চোখ মুছে ফেলে। নবনীর কপালে ভাঁজ। খুব আদরের সহিত জিজ্ঞেস করে,
“কী হয়েছে বোন? ফয়সাল তো সুস্থ হয়ে যাচ্ছে, কাঁদছিস কেন? কেউ কি কিছু বলেছে?”
নোলক বোনকে জড়িয়ে ধরে বলে,
“কিছু হয়নি আপু। এমনি কাঁদিছি। খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে, তাই।”

নবনী সবই জানে, ইশান তাকে সব বলেছে। আদ্র’র অসুস্থতাও শুনেছে আরমানের কাছে। বুঝতে পারে, নোলক জানতে পেরেই কষ্ট পাচ্ছে। নোলককে কাছে টেনে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
“আয় চল ঘুমাবি। সকালে আদ্রর কাছে যাব।”
নোলক বলে,
“চোখে দেখতে না পাওয়া খুব অসহায়ত্বের, নারে আপু? আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। তাকেই কেন এত অসহায় করে দিচ্ছেন আল্লাহ্‌!”
নবনী কিছুই বলতে পারে না। কী বলবে সে? এর উত্তর যে তারও জানা নাই!…….(চলবে)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে