#জলছবি
#সূচনা_পর্ব
#কাজী_সানজিদা_আফরিন_মারজিয়া
“এই যে, শুনছেন? আমি আসলে জানালার পাশের সিট ছাড়া বসতে পারি না। আমরা কি সিট এক্সচেঞ্জ করতে পারি?”
কথাটা বলে উত্তরের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রইলো নোলক। বইয়ের মাঝে মুখ গুঁজে থাকা ছেলেটার কোনোরূপ প্রতিক্রিয়া না পেয়ে পুনরায় দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করলো,
“এই যে? হ্যালো?”
“নিজের জিনিস অন্যের সাথে শেয়ার কিংবা এক্সচেঞ্জ করে অভ্যস্ত নই আমি। দুঃখিত, আপনার অনুরোধটি রাখতে পারলাম না।” কাটখোট্টা ভাবেই ছেলেটি জবাব দিলো আগের ন্যায় বইয়ের মাঝেই মুখ গুঁজে থেকে।
সঙ্গে সঙ্গে সারা অঙ্গ জ্বলেপুরে যেন অঙ্গার হয়ে গেলো নোলকের। ব্যাগটা রেখে কটমট করতে করতে বসলো নিজের সিটে। বিরক্তির রেখা কপালে স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠলো। জীবনে বোধহয় প্রথম কারো কাছে অনুরোধ করে এভাবে প্রত্যাখ্যাত হলো মেয়েটা! ঘনঘন নিশ্বাস নিতে নিতে এক হাত দিয়ে নিজের হিজাব ঠিক করলো। ব্যাগ থেকে বোতল বের করে পানি পান করলো। এই এতটা সময়ে একবারের জন্যেও নোলকের দিকে দৃষ্টিপাত করলো না গুরুগম্ভীর ছেলেটা।
নোলক আড়চোখে লক্ষ্য করলো ছেলেটাকে। হাতে সম্ভবত কোনো উপন্যাসের বই। খুব মনযোগ সহকারে পড়ছে। চোখে কালো মোটা ফ্রেমের একটা চশমা। পরনে হালকা আকাশি রঙের শার্ট। কিছু মানুষ আছে না? দেখলেই মনে হয় ‘ভাজা মাছ উল্টে খেতে জানে না!’ ঠিক ঐ টাইপ দেখতে। অতিভদ্র দেখতে টাইপ মানুষ-জন নোলকের কোনো কালেই পছন্দ না। এখন তো সেই অপছন্দের মাত্রা বহুগুণ বেড়ে গেলো। বেশিরভাগ সময়-ই এই অতিভদ্র দেখতে টাইপ মানুষ গুলো ভেতরে ভেতরে মারাক্তক রকমের অভদ্র হয়। এতদিন এ ব্যাপারে অল্পবিস্তর সন্দেহ থাকলে আজ পুরোপুরি সেই সন্দেহ দূর হয়ে গিয়েছে মেয়েটার। ভারী মোটা ফ্রেমের চশমাটা আরো একবার দেখে নিয়ে, নোলক গজগজ করে অস্ফুট স্বরে বলে,”কানা কোথাকার জানি। বেটা এক নাম্বারের বদ। অতিভদ্র=অভদ্র+বেয়াদপ! উঁহু, শুধু বেয়াদপ না মাত্রাতিরিক্ত বেয়াদপ, চরম বেয়াদপ!”
অভ্যাসবশতই জানালার পাশের সিট ছাড়া একদমই বসতে পারে না মেয়েটা। কখনো বসেও নি সে। কিছুক্ষণ উশখুশ করে বসে থেকে ট্রেন থেকে নামলো সে।
নোলক চলে যেতেই বিপরীত পাশের সিট থেকে ইশান বলল,
“এই আদ্র? মেয়েটাকে জানালার পাশের সিটটা দিলে কী এমন হতো?”
আদ্র আর নোলকের কর্মকান্ডগুলো এতক্ষণ সে খুব মনযোগ দিয়ে উপভোগ করছিলো। নোলকে বিরক্তিমাখা মুখও দৃষ্টি এড়ায়নি তার। তবে বন্ধুর কাজে খুবই অসন্তুষ্ট সে। ভারী মিষ্টি একটা মেয়ে, বেশি কিছু তো চায় নি। শুধু জানালার পাশের সিট-টাই তো চেয়েছে সে! কী হতো দিয়ে দিলে?
আদ্র মৃদু হাসে। রহস্যের হাসি। হাসলে ছেলেটার ডান গালে হালকা একটা গর্তের সৃষ্টি হয়। এটাকে ঠিক টোল বলা যায় কি-না কে জানে! তবে খুব চমৎকার দেখায় যখন সে হাসে। আদ্র ছোট্ট একটা নিশ্বাস ত্যাগ করে বলে,
“কিছুই হতো না, আবার অনেক কিছুই হয়তো হয়ে যেতো। ‘কী হতো, কী হতো না’ সেসব ভেবে যে আমি কিছু করি না, তা তো তুই খুব ভালো মতোই জানিস ইশান।”
ইশান আর কথা বাড়ায় না। কারন সে জানে তার বন্ধুটা ঠিক কেমন। মাঝে-মধ্যে মনেহয়, বেস্টফ্রেন্ড হওয়া স্বত্বেও অনেক কিছু ও নিজেও জানে না! একটু ব্যাতিক্রম সে। ছেলেটাকে দেখলে কেউ বুঝতেই পারবে না সে আসলে কেমন। দুনিয়ার সবার কাছে সে শান্ত-ভদ্র, ব্রিলিয়েন্ট। কিন্তু সবার অজানা তার একরোখা আর জেদী স্বভাব।
নোলক ট্রেন থেকে নেমে মনেমনে কিছুক্ষণ নিজের বন্ধুদের বকাঝকা করলো। যদিও দোষটা তার নিজের। ফোন বের করে কাউকে কল করলো। ভিডিও কল। ওপাশ থেকে কল উঠাতেই ভেসে উঠলো এক দল চঞ্চল প্রাণের মুখশ্রী। শ্রীতমা, ফয়সাল, সৃজন, লুবনা, শ্রেয়া, নিষাদ। নোলক কল করেছে শ্রীতমার ফোনে। তাই ফোনটা ওর হাতেই। আর ওকে ঘিরে বাকিরা। মাইক্রোর সামনে পিছনে মিলিয়ে বসার ফলে একটু কষ্টই করতে হচ্ছে সবার একসাথে কথা বলতে। তবুও সবার মুখ হাসিহাসি কেবল শ্রীতমা ব্যাতিত। শ্রীতমার মুখে খানিক অনুশোচনার ছাঁপ। প্রিয় বান্ধবীকে ফেলে আসার অনুশোচনা।
নোলক খ্যাঁচ করে বলে উঠলো,
“এই বেয়াদপ পোলাপান? তোরা আর দশটা মিনিট ওয়েট করতে পারিস নি? সেলফিশ একেকটা। আর শ্রী? খুব তো বলেছিস আমি না গেলে তুই বিয়েই করবি না! এখন তো আমায় ফেলেই চলে গেলি! এই তোর ভালোবাসার নমুনা? ছিঃ ছিঃ!”
শ্রীতমার মুখটা চুপসে যায়। সহজ-সরল সুন্দর মুখটায় দুঃখের ছাপ স্পষ্ট ফুটিয়ে তুলে মিহি স্বরে বলে,
“আমার কি দোষ? পাক্কা দুই ঘন্টা বসেছিলাম। ঐদিক দিয়ে বাবু আর মা ফোন করে যাচ্ছে, বেরিয়েছি কি-না জানতে। সন্ধ্যের ভেতর পৌঁছাতে হবে। তোকে ফোন করছি অনবরত কিন্তু ফোন বন্ধ। ভাবলাম, আসবি না। এখন কি আমাদের দোষ?”
বাকিরাও শ্রীতমার সাথে তাল মিলিয়ে বলল,
“ঠিকই তো। আমাদের দোষ?”
ফয়সাল বলল,
“তুমি মিসেস লেইট লতিফ। সব জায়গায় লেইট করে শেষে এসে আমাদের দোষ দিবা, তা তো হবে না বালিকা! নিজের দোষ নিজের ঘারে নিতে শিখ, ওকে?”
নোলক ধমক দিয়ে বলল,
“চুপ থাক ফাজিল। ঠাস করে দিবো এক চড়।”
সৃজন ফোড়ন কেটে বলল,
“এই? তুই ফোনের মধ্যে চড় দিবি কেমনে? তোর হয়ে আমি দিয়ে দেই? হাত চুলকাচ্ছে।”
ওদের কথার মাঝেই লুবনা চেঁচিয়ে বলল,
“ওই শোন নোলক? আমরা কিন্তু আরেকটুখানি অপেক্ষা করতাম। কিন্তু নিষাদ হাই তুলতে তুলতে বলল, তুই নাকি ওকে স্বপ্নে এসে বলেছিস, তুই আসবি না।”
নোলক দাত কিড়মিড় করে বলল,
“নিষাদের বাচ্চাকে জাস্ট হাতের কাছে পেয়ে নেই।”
নিষাদ লুবনার মাথায় আলতো করে থাপ্পড় মেরে বলল,
“এই ফাজিল মাইয়া? সব খানে প্যাঁচ লাগাস ক্যান? ঘুষি মেরে বোচা নাক আরো বোচা বানিয়ে দিমু।”
লুবনা কাঁদো কাঁদো মুখ কুরে বলল,
“দেখ নিষাদ? আমার নাক নিয়ে কিছু বলবি না বলে দিচ্ছি।”
নোলক আর ওদের ফাইজলামিতে মননিবেশ করলো না। নিজের দুুঃখ আর বিরক্তি নিয়ে বলল,
“আমি জানালার পাশে সিট পাই নি জানিস? তার উপর আবার পাশে বসেছে একটা, বেয়াদপ, অভদ্র ‘বই-মানব’। বেটা নাম্বার ওয়ান বজ্জাত। কোনো ম্যানার জানে না।”
শ্রেয়া ‘কিছু বুঝেনি’ এমন মুখ করে জিজ্ঞেস করলো,
“দোস্ত? ‘বন-মানুষ’ শুনেছি, কিন্তু ‘বই-মানব’ তো শুনিনি! এইটা আবার কি জিনিস রে?”
নিষাদ হালকা ঘ্রান শুকার ভান করে বলল,
“ঐটা কি জিনিস তুমি তাহা বুঝবে না বালিকা। সুতরাং চুপ থাকো। কিন্তু…আমি কেমন যেন প্রেম প্রেম ঘ্রান পাচ্ছি! কবি বলেছে, ভ্রমনকালে পাশাপাশি দুজন অচেনা অজানা যুবক-যুবতি বসিলে তাহাদিগকের ভেতর চুম্বকের ন্যায় প্রেম ঘটিয়া যায়। যদি প্রথমেই ঝগড়া বিবাধ বাঁধে তবে তাহার সম্ভাবনা আরো শত গুন বাড়িয়া যায়।”
সবাই খিটখিট করে হেসে উঠে। ভারি মজা পাওয়ার হাসি। মাইক্রোর ভেতর হওয়ার ফলে হাসির আওয়াজ আরো প্রকট আকার ধারন করেছে।
নোলক রেগেমেগে কিছু একটা বলতে যাবে ঠিক তখনই লক্ষ্য করলো তার ট্রেন চলতে আরম্ভ করেছে।
নোলক ফোন কেটে গগনবিদারী চিৎকার করে বুলি আওড়ালো,”এই ট্রেন, এই? আমি যাবো তো!”
এক হাতে নিজের লং ড্রেস সামলে নিয়ে বহু তোরজোড় করে ট্রেনে উঠতে পারলো। ট্রেনে উঠতে পেরে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল সে। নিজের আসনে এসে বসে চোখ বুজে খানিক্ষন জোরে জোরে শ্বাস নিলো। কিছুক্ষণ চুপে করে থেকে চোখ মেলতেই পাশের গুরুগম্ভীর ছেলেটার দিকে নজর গেলো। এখন সে বই পড়ছে না। বইয়ের উপর ছোট্ট একটা কাগজে কিছু লিখছে। নোলক ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে ভাবে, “লোকটাকে অল্প খারাপ ভেবেছিলাম, এখন দেখি ভয়াবহ খারাপ। কী হতো ট্রেন ছেড়ে দেয়ার আগে একটা ডাক দিলে? খারাপ লোক!”
নোলকের ভাবনার মাঝেই আদ্র জানালাটা আটকে দিতে লাগলে, নোলক কিছু বলে বাঁধা দিতে লাগলো। নোলক কিছু বলার আগে আদ্র আভাস পেয়ে নোলকের দিকে ফিরলো। নিজের ঠোঁটে শাহাদাত আঙুল চেপে ইশারায় চুপ থাকতে বলল। নোলক চুপ রইলা না। তবে চেঁচামেচি না করে দম খিঁচে বলল,
“আপনার সমস্যাটা কী? আপনি কি প্রাইম মিনিস্টার? আপনার ইচ্ছে মতো সবাই চলবে? সেই শুরু থেকে দেখছি একটা দখলদারিত্ব দেখাচ্ছেন! সামান্য জানালার পাশে সিট পেয়ে নিজেকে কি-না-কি ভাবছে! যত্তসব।”
“এতো ছটফটে স্বভাবের কেন আপনি? একটু স্থির থেকে সবটা দেখা যায় না?” আদ্র বললো কথাটি, তবে যথেষ্ট শান্ত স্বরে। হুট-হাট চেঁচামেচি তার ধাতে নেই। প্রচন্ড রেগে গেলেও অত্যান্ত শান্ত স্বরে কথা বলার প্রবল ক্ষমতা নিয়েই যেন জন্মেছে সে।
নোলক রেগেমেগে কিছু বলতে যাচ্ছিলো। কিন্তু হুট করে দৃষ্টি চলে গেলো সামনে। আশ্চর্য! এতক্ষণ সে সামনে লক্ষ্য করে নি! ও দেখলো, ওদের সামনের সিটে দুজন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। বৃদ্ধা মানুষটা বৃদ্ধ লোকটার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে। কি যে স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে দৃশ্যটা! জানালা আটকে দেয়ায় রোদের রেশ গায়ে লাগছে না বৃদ্ধার এখন।
বৃদ্ধ লোকটার দৃষ্টি এড়ায়নি কিছুই। সে ইতস্তত করে বলল,
“আমার বিবির শরীলডা একটু খারাপ করছে। সে জার্নি-টার্নি করতে পারে না।”
নোলক মুগ্ধ হয়ে গেলো। সুন্দর হাসলো কেবল। অনুতপ্ত হলো নিজের অযথা উত্তেজনার জন্য। পাশে তাকাতেই দেখলো আদ্রও তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। ডান’হাত দিয়ে নিজের চশমা ঠিক করছে। এখন ছেলেটাকে মোটেও খারাপ, অসহ্য, বেয়াদপ মনে হচ্ছে না। শুধুই বইয়ের মাঝে মুখ গুঁজে থাকা ‘বই-মানব’ও মনে হচ্ছে না। একটু একটু ভালো-মানুষ মনে হচ্ছে। খুব বেশি না আবার!
নোলক ব্যাগ থেকে চটপট কাগজ আর পেন্সিল বের করলো। বৃদ্ধ লোকটার থেকে অনুমতি নেয়ার মতো করে বলল,
“আমি আপনাদের একটা স্কেচ করি?”
তিনি জিজ্ঞেস করলেন,
“স্কেচ কী?”
নোলক মিষ্টি হেসে বলে,
“আপনাদের একটা ছবি আঁকি?”
বৃদ্ধ লোকটা হাসে। দু-পাশে দুটো দাঁত পরে যাওয়ার পরও কি দারুন সেই হাসি! নোলক মুগ্ধ হয়ে দেখে তাদের। আর অপর পাশ থেকে কৌতূহল নিয়ে নোলককে দেখে ইশান। মেয়েটা চঞ্চল স্বভাবটা ভালো লেগেছে তার। কেমন যেন হুট করেই রেগে যায় আবার সেকেন্ডের মাঝে শিতল হয়ে যায়! ভারী অদ্ভুত!
ট্রেন চলছে ঝকঝক আওয়াজ করে। তার সাথে চলছে নানান ধরনের মানুষ।
নোলক আশেপাশে তাকায়। কেউ হাসছে, কেউ খাচ্ছে, কেউ ভাবছে কেউ ঘুমাচ্ছে, কেউ-বা আবার উদাস-উদাসীন। নোলক ফোন করে নিষাদ কে। ওপাশ থেকে ফোন তুলতেই জিজ্ঞেস করে,
“দোস্ত? ‘ঝক-ঝকা-ঝক ট্রেন চলেছে, রাত দুপুরে ঐ’ কবিতাটা কার লেখা যেন?”
নোলকের এই বাচ্চাদের মতো প্রশ্নটাই প্রথমবারের মতো আকর্ষন করে আদ্রকে। সিটের সাথে হেলান দিয়ে বুজে থাকা চোখ মেলে সে। তার ‘সুন্দর আর্ট করা ভ্রু’র’ ন্যায় ভ্রু যুগল কুঁচকে তাকায় নোলকের দিকে। হিজাব বাধা বাচ্চা বাচ্চা একটা মুখ। আদ্র বিড়বিড় করে বলে, “আসলেই বাচ্চা! ইম-ম্যাচিউর মেয়ে একটা!”
নেহাৎ নোলক শুনতে পায় না কথাগুলো। নয়তোবা আরেক দফা কুরুক্ষেত্র বেঁধে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো।
আদ্র একটা হতাশ নিশ্বাস ফেলে আগের ন্যায় হেলান দিয়ে বসে। ঘন চুলে এক হাত ডুবিয়ে দিয়ে চুলগুলো আঁকড়ে ধরে। ক্লান্ত শরীর, ক্লান্ত সময় আর ভাবুক মন।
আদ্র চোখ বুজতে না বুজতেই নোলক চেঁচিয়ে বলে উঠে,
“অদ্ভুত তো! কানা নাকি? চোখে দেখেন না? কী করলেন এটা? ধ্যাত! ভাল্লাগেনা।”
চোখ বুজে থাকার ফলে কী হয়েছে তা অনুমান করতে পারলো না আদ্র। কী হয়েছে দেখতে চোখ মেললো সে।…..(চলবে)