জন্মটা পতিতালয়ে
লেখকঃ Arian Sumon
Part-06
..
আকাশঃ ম্যাম আপনি পাগল হয়ে গেছেন নাকি
সামিয়াঃ হ্যা আমি পাগল হইয়া গেছি তোমার প্রেমে।
আকাশঃ ম্যাম কোথায় আপনি আর কোথায় আমি। কিসব বলছেন এসব।
সামিয়াঃ তুমি একসেপ্ট করবে কিনা বলো
আকাশঃ এটা হয়না।
সামিয়াঃ না বললে আমি সোজা ছাদ থেকে লাফ দিব।
আকাশঃ সরি ম্যাম এটা সম্ভব না।
এটা শুনার সাথে সাথেই সামিয়া দৌড় দিয়ে ছাদের কিনাড়ায় চলে যায়। আকাশ সামিয়ার হাত ধরে ফেলে। হাত ধরে টান দিতেই,,,
=> উফস আকাশ কি করছ
ঠাসসস
সাথে সাথেই আকাশের ঘুম ভেঙে যায়। চোখ খুলে দেখে সামিয়া ওর সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
আকাশ ব্যাপারটা বুঝতে একটুও দেড়ি করল না। ঘুমের মাজেই কিছু করেছে সে।
আকাশঃ সরি সরি সরি ম্যাম।আর হবেনা
সামিয়া বুঝতে পারল যে আকাশ স্বপ্ন দেখতেছিল। তাই হয়ত ভূলে করে ফেলছে।
সামিয়াঃ it’s okay…
আকাশঃ ধন্যবাদ মেডাম।কিন্তু আপনি এখানে??
সামিয়াঃ আমি এসেছিলাম তোমাকে জাগাইতে।
আকাশঃ কেন ম্যাম কোনো কাজ আছে কি?
সামিয়াঃ হুম। আব্বু জগিং করতে যাবে। তুমিও তার সাথে যাও।
আকাশঃ ওহ আচ্ছা ম্যাম। স্যার কই?
সামিয়াঃ রেডি হচ্ছে। তুমিও রেডি হয়ে নাও।
আকাশঃ ঠিক আছে।
সামিয়া চলে গেল।
আকাশ ভাবতে লাগল। কি ভূলটাই না করতে ছিলাম। স্বপ্নে দেখতে দেখতে কখন যে ম্যাম কে ধরে ফেলছি বুঝলাম ও না।
যাহোক আকাশ উঠে গেল। তারপর ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিল।
তারপর আকাশ সামিয়ার আব্বুর সাথে জগিং করতে বেড় হলো।
জগিং করতে একটা পার্কে চলে আসল।
জগিং করতে ক্লান্ত হয়ে সামিয়ার আব্বু একটু বসল।
আকাশঃ আচ্ছা স্যার আপনি কি প্রতিদিনি জগিং করেন নাকি?
সামিয়ার আব্বুঃ কিসব স্যার ট্যার বলো। আমাকে আংকেল বলে ডাকবা বুঝছ।
আকাশঃ না এটা কি করে হয়।
সামিয়ার আব্বুঃ যা বলছি তাই করবা।
আকাশঃ জ্বী স্যার
সামিয়ার আব্বুঃ আবার স্যার বলে।
আকাশঃ না মানে আংকেল।
আংকেলঃ তো কি যেন জিগাসা করলা
আকাশঃ আপনি কি প্রতিদিনি সকালে জগিং করেন?
আংকেলঃ আগে করতাম। অনেকদিন পর আজকে তোমার সাথে বেড় হলাম।
আকাশঃ ওহ। চলেন আরেক রাউন্ড দেই।
আংকেলঃ নাহ আজ আর পারব না। বাসায় চলো।
আকাশঃ ওকে আংকেল। আপনি বসুন আমি রিকশা ডেকে আনছি।
আংকেলঃ ওকে।
আকাশ রিকশা নিয়া আসল। তারপর রিকশায় চড়ে চলে গেল।।
”
”
বিকাল বেলা,,,,
আকাশ গেটের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সামিয়ার গাড়ি আসতেই আকাশ গেইট খুলে দিয়ে সালাম দিল।
সামিয়াঃ বাহ তোমাকে তো হেব্বি লাগছে
আকাশঃ জ্বী ম্যাম ধন্যবাদ।
সামিয়া চলে গেল।
আকাশ নিজের কাজে লেগে গেল।
”
”
পরদিন সকালে,,,,
আকাশ গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। হঠাৎ একটা গাড়ি এসে হর্ণ দিতে লাগল। আকাশ দেখল গাড়িটা এ বাড়ির নয়। তাই গেইট না খুলে এগিয়ে গেল
আকাশঃ হর্ণ দিচ্ছেন কেন?
এমন সময় গাড়ির ভেতর থেকে,,
=> এই দাড়োয়ানের বাচ্চা গেইট খুল।
আকাশঃ কিন্তু আপনারা কারা?
=> আমি এ বাড়ির মালিক।
আকাশঃ এ বাড়ির মালিক তো সামিয়া মেডাম।আর ওনার আব্বু। আপনি কে
=> আমি মিসেস চৌধুরী
এমন সময়েই সামিয়ার আব্বু উপস্থিত।
আংকেলঃ এই আকাশ কি করছ ভিতরে আসতে দাও। এটা আমার স্ত্রী মানে তোমার আন্টি।
আকাশ ভরকে গেল। বলছে কি এসব।
আকাশঃ ওহ সরি সরি সরি আন্টি।ভূল হয়ে গেছে। এবারের মতো মাফ করে দিবেন।
এই বলে আকাশ গেইট খুলে দিল।
ড্রাইভার গাড়ি ভিতরে নিয়া গেল।
তারপর আকাশ ও এগিয়ে গেল। লাগেজ গুলো ভিতরে নিয়া যায় আকাশ।
সামিয়ার আম্মুঃ কে এই অসভ্য টা
সামিয়ার আব্বুঃ তুমি রাগ করো না। ছেলেটা অনেক ভালো।
সামিয়ার আম্মুঃ ভালো না ছাই আমি দেখেছি।এরে চাকরি দিছে কে
সামিয়ার আব্বুঃ তোমাকে বলছিলাম না আকাশ নামের একটা ছেলের কথা। এই সে। সামিয়া নিজে এরে এ কাজে রেখেছে।
সামিয়ার আম্মুঃ ওহ ওই পতিতার বাচ্চা টা।
এমন সময়েই আকাশ ভিতর থেকে বেড় হলো। আকাশের কানে কথা টা কানে গেল। পিন ফুটার মতো শব্দ টা ওর কলিজায় লাগল।
আকাশ কিছু না বলেই সামনে দিয়ে চলে গেল।
সামিয়ার আব্বুঃ তুমি না কোনোদিন ও ভালো হবেনা। চলো এখন ভিতরে চলো।
সামিয়ার আম্মুঃ আমার ভালো হওয়া লাগব না।
অন্যদিকে আকাশের চোখ দিয়ে পানি বেড় হয়ে গেল। এই একটাই শব্দ আকাশ একদম সহ্য করতে পারেনা। আমি কি ইচ্ছে করে হয়েছি নাকি। আমাকে জন্ম দেওয়া হয়েছে। সে যে খারাপ তা আমি কি করে বুঝব। তবুও এই অপবাদ টা আমাকেই কেন দেওয়া হয়।। হে আল্লাহ তুমি জানোই তো এটা আমি সহ্য করতে পারিনা।
”
”
রাতে আকাশ নিজের রুমে শুয়ে আছে। এমন সময়েই সামিয়া ভিতরে আসল। আকাশ উঠে বসল।।
আকাশঃ ম্যাম কিছু বলবেন??
সামিয়াঃ হুম। আমার।মায়ের পক্ষ থেকে সরি
আকাশঃ নাহ আপনি সরি বলছেন কেন। ওসব আমি কিছুই মনে করিনি।।
সামিয়াঃ তবুও সরি। আসলে ওনি এইরকমই। কিছু মনে করোনা
আকাশঃ নাহ ম্যাম ঠিক আছে।
সামিয়াঃ ধন্যবাদ
সামিয়া চলে গেল।
আকাশ ভাবতে লাগল।
মেডাম আপনি এত ভালো কেন? বার বার আপনার প্রতি আমাকে দুর্বল বানিয়ে দিচ্ছেন কেন?
”
”
পরদিন সকালে,,,
জগিং করতে গেল। কিছুক্ষন পরেই,,
সামিয়ার আব্বুঃ আজকে আর নয়। তারাতারি বাড়িতে যেতে হবে
আকাশঃ কেন আংকেল
সামিয়ার আব্বুঃ তুমি জানোনা?
আকাশঃ নাহ তো
সামিয়ার আব্বুঃ আজকে সামিয়াকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে।
আকাশঃ ওহ ম্যাম কে দেখতে আসবে।
সামিয়ার আব্বুঃ হুম।
আকাশঃ তাহলে চলুন। আমি রিকশা নিয়া আসছি।
আকাশ রিকশা নিয়া আসল। তারপর বাসায় চলে আসল।
বাসায় এসে আকাশ রুমে বসে পড়ল।
মনে কষ্ট হলেও কিছুই করার নেই। আমার কোনো ক্ষমতাই নেই সামিয়াকে বিয়ে করার। জানিনা কেন যে আমি ওরে ভালোবেসে ফেলছিলাম।
এমন সময়েই সামিয়ার আম্মু আসল,,
সামিয়ার আম্মুঃ এই যে
আকাশঃ জ্বী আন্টি বলুন
সামিয়ার আম্মুঃ কিসের আন্টি আমি তুর আন্টি নই। মেডাম বলে ডাকবি
আকাশঃ জ্বী মেডাম।
সামিয়ার আম্মুঃ এই নাও বাজার থেকে এই জিনিস গুলো নিয়ে এসো ( একটা কাগজ আর কিছু টাকা এগিয়ে)
আকাশঃ ওকে মেডাম।
আকাশ ওগুলো হাতে নিল। তারপর বেড় হয়ে গেল বাজারের উদ্দেশ্যে।
সারাটা দিন কোনো রকমে পাড় হলো।
সন্ধ্যায় পাত্রপক্ষ আসল। আকাশ সব কিছু তাদের খেদমতে কাজে লেগে গেল।
কিছুক্ষন পর সামিয়া নিচে নামল সেজে গুজে নেমেছে। একটা নীল শাড়ি পড়ে। আকাশ সামিয়াকে দেখে চোখ সড়াতেই পারল না। এক নজরে সামিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
সামিয়া এসে সবার সামনে বসল। সারাক্ষন আকাশ তার দিকে তাকিয়ে থাকল।।
সব শেষে পাত্রপক্ষ সামিয়াকে পছন্দ করল। সামিয়াও পাত্রকে পছন্দ করল।
সবাই অনেক খুশি। সবার খুশির মাজে শুধু আকাশই অখুশি।
রাতে আকাশ রুমে শুয়ে আছে।
সামিয়ার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহুর্ত একের পর এক মনে পড়তে লাগল।
আর চোখ বেয়ে পানি বেড় হতে লাগল।
”
”
”
TO BE CONTINUE