জন্মটা পতিতালয়ে
লেখকঃ Arian Sumon..
Part -02
..
কাজের ব্যবস্থা করে দিব নে।
মেয়েটিঃ না না। সম্ভব না। আপনাকে চিনিনা জানিনা আপনার সাথে যাব কেন? তার উপর আপনাকে আমার ভালো লাগছেনা। আপনার হাতে মদ। ছিহ
আকাশঃ আমি আপনাকে সাহাজ্য করতে চাইছি। এর বেশি কিছুইনা। আসলে আসেন না আসলে নাই। good bye..
আকাশ হাটা ধরল। পিছনে তাকাল না। কিছুক্ষন পর দেখে কিছু একটা ছায়া তাকে ফলো করতেছে।
পিছনে ঘুরতেই আকাশ মেয়েটি তাকে ফলো করতেছে।
আকাশ থামল।
আকাশঃ কি ব্যাপার পিছু নিচ্ছেন কেন?
আকাশ আরো দেখল যে বেশকিছু লোক মেয়েটিকে ফলো করতেছে। আকাশ বুঝতে পারল অবস্থা খারাপ। মেয়েটির খারাপ কিছু হয়েও যেতে পারে।
মেয়েটিঃ দেখুন আমি এই শহরে নতুন। কাউকে চিনিনা জানিওনা। শুনেছি এই শহরে অনেক আজে বাজে লোক ঘুরাঘুরি করে। ( অসহায় ভাবে)
আকাশঃ হুম বুঝতে পারছি। আর কিছু বলতে হবেনা। চলুন আমার সাথে।
আকাশ হাটা ধরল। মেয়েটিও তাকে ফলো করতে লাগল।
আকাশের মনে মেয়েটির জনহ মায়া জন্ম নিয়েছে। কেন জানিনা মেয়েটাকে ভালোও লাগে। ইচ্ছে করে মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে। কিন্তু আপসোস আমার জগৎ আর ওর জগৎ এক নয়।
এসব ভাবতে ভাবতে হাসতে লাগল। রাস্তা পেড়িয়ে বস্তিতে ডুকে গেল।
এমন সময়েই
মেয়েটিঃ কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে
আকাশঃ আমার বাসায় কেন?
মেয়েটিঃ না মানে এটা তো বস্তি
আকাশঃ হুম আমি ওতটা বড়লোক নই যে বড় বড় বাড়িতে থাকব। আমি সামান্য একজন মানুষ।
মেয়েটি আর কিছু বলল না।
আকাশ বাসার সামনে গিয়ে দরজা খুলল,,
আকাশঃ আসুন ভিতরে আসুন
মেয়েটি ভিতরে ডুকল।
আকাশঃ এটাই আমার একমাত্র সম্বল। গরীবের রাজপ্রাসাদ আপনি এখানে শুয়ে পড়ুন।
মেয়েটিঃ আর আপনি??
আকাশঃ আমি বাহিরে চলে যাচ্ছি।
মেয়েটিঃ কোথায় যাবেন?
আকাশঃ আমাদের মতো দু টাকার ছেলেদের জন্য কোনো কিছুই স্থায়ি না। যেখানে জায়গা হয় সেখানেই শুইতে হয়। আমাদের রুটিন টাই অন্যরকম।
মেয়েটিঃ আপনি এখানেই থাকুন।
আকাশঃ কিন্তু আপনি?
মেয়েটিঃ আজকে রাত টা নাহয় গল্প করেই কাটিয়ে দেই।
আকাশ একটা হাসি দিল।
আকাশঃ আমাদের জীবন টাই একটা গল্প। এই জীবনে গল্প করার মতো কিছুই নাই। আচ্ছা আপনি খেয়েছেন??
মেয়েটিঃ হুম। ষ্টেশনে খেয়েছিলাম।
আকাশঃ তাহলে শুয়ে পড়ুন
মেয়েটিঃ আচ্ছা আপনার বাবা মা কোথায়?? আপনি যে এসব খান কিছু বলে না আপনাকে??
আকাশ কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা। কে না চায় তার বাবা মা তার সাথে থাকুক। কে না চায় বাবাকে বাবা মাকে মা বলে ডাকতে। কিন্তু আমার কপালে যে বাবা মা নামের কেউ ছিলই না। কি করে আপনাকে বলব আমার জন্ম টাই পতিতালয়ে।
মেয়েটিঃ কি হলো??
আকাশের ভাবনার দেয়াল ছেদ হলো।
আকাশঃ নাহ কিছুনা। আচ্ছা আপনার নাম টাই তো জানা হলো না
মেয়েটিঃ আমি সামিয়া। আপনার নাম কি?
আকাশঃ আমি আকাশ। আচ্ছা এখন ঘুমিয়ে পড়ুন।
সামিয়াঃ আপনি কিন্তু আমার কথা এড়িয়ে গেলেন। আপনার বাবা মার সমন্ধে কিছুই বললেন না।
আকাশঃ তারা নেই। মারা গেছে।
সামিয়াঃ ওহ সরি সরি আমি দুঃখিত।
আকাশঃ না ঠিক আছে। আপনি এখন শুয়ে পড়ুন। দেখি কালকে আপনার জন্য কোনো কাজ যোগাড় করে দিতে পারি কিনা।
সামিয়াঃ আমি আপনার জন্য অনেক সমস্যা করে ফেললাম। সরি।
আকাশঃ নাহ কোনো সমস্যা নেই।
”
”
”
পরদিন সকালে,,,,
আকাশ সারারাত একটুও ঘুমাতে পারেনি। সারারাত মেয়েটির তাকিয়ে ছিল। এই প্রথম কোনো মেয়ে কে তার আপন করে পেতে মন চাচ্ছে। যদিও সে দেহ ব্যবসার সাথে জড়িত। কিন্তু তবুও আজ অবদি কোনো মেয়ের সাথে ওসবে জড়ায় নি। নিজেকে যথেষ্ট আটকে রেখেছে।
সামিয়া এখনও ঘুমিয়ে আছে। আকাশ তার দিকে তাকিয়ে আছে। কি বলে ডাক দিবে ভেবেই পাচ্ছেনা।
ভাবতে ভাবতেই সামিয়ার ঘুম ভেঙে যায়।
আকাশঃ অবশেষে ঘুম ভাঙল। এবার ফ্রেশ হয়ে আমার সাথে চলুন। দেখি আপনার জন্য কি করতে পারি।
সামিয়াঃ আচ্ছা। বাথরুম কোথায়?
আকাশ দেখিয়ে দিল।
”
”
”
ফ্রেশ হয়ে সামিয়াকে নিয়ে রহমান চাচার ওখানে চলে যায়।
রহমান চাচা তো মেয়েটিকে দেখেই খুশি হয়ে গেল। খুশিতে আকাশ কে দুটো চুম্মাও খেল।
রহমান চাচাঃ বাহ বাহ আকাশ এইবার কামের মতো কাম করছিস। এবার আমাকে আর পায় কে
আকাশঃ চাচা চুপ করো।
বলেই হাত রহমান চাচার মুখ বন্ধ করল।
তারপর,,,
আকাশঃ আপনি একটু বসুন আমরা একটু আসতেছি।
সামিয়াঃ হুম।
আকাশ রহমান চাচাকে নিয়ে একটা রুমে ডুকে গেল। দরজা আটকে দিল,,,,
রহমান চাচাঃ কি হলো এভাবে এখানে এনেছিস কেন?? যাইহোক মালটা কিন্তু খাসা। এরে দিয়ে যদি কাজ করাই তাহলে আমরা ডবল টাকা কামাইতে পারব।
আকাশঃ তোমার বুদ্ধিশুদ্ধি কি লোপ পেয়েছে নাকি?
রহমান চাচাঃ কেন কি করলাম?
আকাশঃ আমি ঐ মেয়েটিকে এ কাজের জন্য এখানে আনিনি
রহমান চাচাঃ মানে কি বলতে চাচ্ছিস
আকাশঃ মেয়েটি গ্রাম থেকে শহরে এসেছে একেবারে সাধারন। আমি চাই না মেয়েটি এ কাজ করুক। এর জন্য অন্য কোনো কাজ ঠিক করে দাও।
রহমান চাচাঃ আরে বেটা তুই তো দেখছি আমার ব্যবসার লাল বাতি জ্বালিয়ে দিবি। এই মাল টাকে দিয়ে আমরা কত টাকা কামাইতে পারব ভেবে দেখেছিস?
আকাশঃ ভাবা ভাবির কাম আমি করিনা। আমি যা বলছি তাই করি।( একটু রেগে)
রহমান চাচাঃ আরে রাগ করছিস কেন তুই যা চাচ্ছিস তাই হবে
আকাশঃ হলেই ভালো। ওর জন্য একটু ভালো কাজ যোগাড় করে দাও।
রহমান চাচাঃ হুম দিব। আচ্ছা ব্যাপার টা কি? মেয়েটাকে পছন্দ নাকি?
আমিঃ আরে তুমিও না চাচা
এই বলে আকাশ রুম থেকে বেড়িয়ে আসল।
আকাশ এসে সামিয়ার পাশে বসল
আকাশঃ আপনার কাজের ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
এর মধ্যেই রহমান চাচা আসল।
রহমান চাচাঃ মা তুমি চিন্তা করোনা। আজকে সন্ধ্যার মধ্যেই তোমার জন্য একটা চাকড়ি যোগাড় করে দিব।
সামিয়াঃ ধন্যবাদ আংকেল।
আকাশঃ দেখছেন আমি বলছিলাম না কিছু একটা ব্যবস্থা করে দিব করেই দিলাম।
রহমান চাচাঃ আচ্ছা আমার কাজ আছে তুরা সন্ধ্যায় আসিস। দেখি কি ব্যবস্থা করা যায়।
আকাশঃ ওকে চাচা
ওনি চলে গেলেন,,,
আকাশঃ তো এখন কোথায় যাবেন?
সামিয়াঃ আমার তো যাওয়ার মতো জায়গা নেই। এখানেই বসে থাকি সন্ধ্যা পর্যন্ত। আপনি চলে যান
আকাশঃ তা কি করে হয়। আচ্ছা চলুন আজকে না হয় আপনাকে পুরো শহর ঘুড়িয়ে দেখাই।
সামিয়াঃ আপনার কাজ নাই?
আকাশঃ আমার কাজ সন্ধ্যার পরে।
সামিয়াঃ তাইলে চলুন।
তারপর আকাশ সামিয়া কে নিয়ে সারাদিন ঘুরে বেড়াল।
কত ভালো লাগছে বলে বুঝাতে পারব না। এত দিন এত মেয়ের সাথে ঘুরাফেরা করেছি কাউকে ভালো লাগেনি। কিন্তু সামিয়ার সাথে হাটতে এত ভালো লাগছে। ওর প্রতিটা কাজ আমাকে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করছে।
”
”
”
সারাদিন ঘুরাফেরা করে সন্ধ্যায় রহমান চাচার ওখানে যায়। গিয়ে তো আকাশ পুরো অভাক হয়ে যায়। এটা কি করে হলো ভাবতেও পারছেনা,,,,
TO BE CONTINUE