জন্মটা পতিতালয়ে Part 01

0
3263

জন্মটা পতিতালয়ে

লেখকঃ Arian Sumon..
Part 01
.
আকাশঃ চাচা দেখো তো মাল টা কেমন??
রহমান চাচাঃ জব্বর তো। কোথাই পাইলি??
আকাশঃ আর বইল না একটু আগে যেই খদ্দের টা নিয়া আসলাম। তাকে সেট করতে গিয়ে এরে একটা দোকানে দেখেছি। তাই ছবি তুলে নিয়া আসলাম।
রহমান চাচাঃ তো শুধু ছবি তুললেই হবে নাকি? কাজ কে করবে?
আকাশঃ সে করব এখন আমার পাওনা দাও
রহমান চাচাঃ এই নে ৫০০০ টাকা।
আকাশঃ এটা ঠিক না চাচা বাকি ১০ হাজার কবে দিবা।
রহমান চাচাঃ দিব তো। চিন্তা করিস না। আমি তো আর পালিয়ে যাচ্ছিনা।
আকাশঃ প্রতিদিন তো ভালোই মালপানি কামাও আর আমার টাকা দেওয়ার বেলাই যত কথা।
রহমান চাচাঃ আরে বাবা এই নে আরো ৫০০০ টাকা। হইছে এখন? বাকিটা আরেকদিন দিন দিব
আকাশঃ বাকি টাকা টাও দাও আজকেই। আমার লাগবে
রহমান চাচাঃ কিসে লাগবে তুর টাকা।
আকাশঃআমার লাগবে বলছি লাগবে তুমি টাকা দিবা কিনা বলো
রহমান চাচাঃ কি তুই আমাকে শাসাচ্ছিস। শালা মাগির বাচ্চা। ভূলে যাছ তুর জন্ম পরিচয়? পতিতার বাচ্চা। আমি না থাকলে তুই বাচতি কি করে
আকাশঃ বেশি করতেছ কইলাম। আমার টাকা আমাকে দাও।
রহমান চাচাঃ দিব না টাকা তুকে। কি করবি পতিতার বাচ্চা।

আকাশের রাগ মাথায় চড়ে বসল।আকাশ সোজা রহমান চাচার কলার ধরে বসল।
আকাশঃ চুপ মাগির পোলা। আমি না থাকলে তুর এই ব্যবসা চলত নাকি?

এমন সময়েই আরো কয়েকজন এসে আকাশকে কে ছাড়িয়ে নেয়।
একজনঃ কি করছিস আকাশ
আকাশঃ আজকের মতো তুকে ছেড়ে দিলাম। আর কোনোদিন যদি আমাকে পতিতার বাচ্চা বলিস তুকে সহ তুর এই দান্দার বারোটা বাজিয়ে দিব মনে রাখিস।
তারপর আকাশ চলে আসল। এতক্ষন কি হলো হয়ত আপনারা কেউ বুঝছেন আবার বুঝেন নি। আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি।
আকাশ একজন দালাল। বলতে মেয়েদের দালাল। আর রহমান চাচা হলো দেহ ব্যবসায়ীর দালাল। আকাশ খদ্দের নিয়ে আসে ওদের পতিতালয়ে।বিনিময়ে কিছু টাকা পায়। সুমন জানেনা ওর বাবা মা কে?? ও যখন বুঝতে শিখেছে তখন থেকেই ও এই রহমান চাচার কাছে।। অবশ্য আকাশ রহমান চাচাকে কয়কবার জিজ্ঞেস করেছিল ওর বাবা মায়ের কথা। রহমান চাচা বলেছিল তুর জন্ম এখানেই হয়েছে। তুর মা ছিল মা******

তারপর থেকে আকাশ আর নিজের জন্ম পরিচয় জানার চেষ্টাও করেনি।।

যাহোক গল্পে ফিরি।

আকাশ রহমান চাচার সাথে কথা বলা শেষে সোজা বস্তিতে চলে আসে।।

আসার সময় মদ নিয়া আসে।

তারপর মদ খেয়ে মাতলামি করতে করতে ঘুমিয়ে যায়। আসলে আকাশ জীবনের সব কষ্ট ভুলার জন্য মদ খায় বেশি বেশি।

যাহোক পরদিন,,,

রহমান চাচাঃ আকাশ কই তুই?
আকাশঃ কি দরকার??
রহমান চাচাঃ যলদি আমার এখানে আয়। মাল সাপ্লাই করতে হবে।
আকাশঃ পারব না আমি
রহমান চাচাঃ আচ্ছা কাল রাতের আমি ক্ষমা চাচ্ছি। আর রেগে থাকিস না। চলে আয়। তুর টাকা আজকেই দিয়ে দিব।
আকাশঃ তাইলে আমি আসতেছি টাকা রেডি রাখো।
রহমান চাচাঃ আয় বাবা যলদি।

আকাশ সব ভূলে ফ্রেশ হয়ে রহমান চাচার বাসায় দিকে রওনা দেয়।

কিছুক্ষন পর পৌছে যায়।

রহমান চাচাঃ এই নে টাকা।
আমিঃ ধন্যবাদ। এখন থেকে বাকি রাখবা না।প্রতিদিনের টা প্রতিদিন দিয়ে দিবা।
রহমান চাচাঃ ওকে। এখন এই চম্পাকে নিয়ে এই ঠিকানায় চলে যা। ( একটা ঠিকানা দিয়ে)
আকাশঃ চল মাগী চল। তুর বাতারের কাছে দিয়া আসি।
রহমান চাচাঃ সাবধানে যাইছ পুলিশের পাল্লায় আবার পড়িস না।
আকাশঃ এই আকাশ কে আটকানোর মতো পুলিশ এখনও এই পৃথিবীতে জন্ম নেয় নি।
রহমান চাচাঃ হইছে এখন যা

আকাশ চম্পাকে নিয়ে ঠিকানামতো জায়গায় রওনা দেয়। আধাঘন্টার মধ্যে পৌছেও যায়।

আকাশঃ স্যার এই নিন ডেলিভারি
স্যারঃ বাহ মাল টা বেশ খাসা কি বলিস তুরা।
আরো কয়েকজন ঃ হ্যা রে আজকে মজা হবে
আকাশঃ স্যার আমাদের পাওনা টা দিন এখন।
স্যারঃ ওহ হ্যা wait a minuite

কিছুক্ষন পর এসে একটা বান্ডেল আকাশের হাতে ধরিয়ে দেয়। আকাশ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসে।।

বাড়ি থেকে বেড় হতেই দেখে কিছু ছোট ছোট ছেলেমেয়ে স্কুলে যাচ্ছে। তার বাবা মায়ের সাথে।

আকাশ বসে পড়ল। যদি আমারও বাবা মা থাকত। তাহলে হয়তো আমার আজ এই অবস্থা থাকত না। বাবা মায়ের সাথেই অনেক আনন্দে থাকতে পারতাম। জানিনা কোন পাপের জন্য আল্লাহ আমাকে এভাবে পাঠিয়েছে।
আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা বড় নিঃশাষ নিয়ে উঠে দাঁড়ায়।

তারপর হাটা ধরে।


সন্ধ্যা বেলায় আকাশ খদ্দের মানে পতিতালয়ের কাষ্টমার এর জন্য বাস ষ্টেশনে বসে আছে। বসে বসে লোক দেখতেছে।
হঠাৎ চোখ পড়ে একটা মেয়ের উপর। মেয়েটির টানা টানা চোখ। খোলা চুল। দেখতেও মাশাল্লাহ। হয়ত পরীও এর রুপের কাছে ফেইল মারবে। দেখে বুঝাই যাচ্ছে গ্রাম থেকে এসেছে।

আকাশ ভাবতে লাগল। এই মেয়েটিকেই কিডনাপ করতে হবে। একে বিক্রি করতে পারলে অনেক টাকা পাব নিশ্চিত।

আকাশ ভালোভাবে মেয়েটিকে দেখে। কিছুক্ষন দেখার পর। বুঝতে পারল মেয়েটি একা।

আকাশ আস্তে আস্তে মেয়েটির দিকে যায়। গিয়ে মেয়েটির পাশে বসে পড়ে।

আকাশ বসতেই মেয়েটি তার পাশে রাখা ব্যাগটি হাতে নিয়ে নিল।

আকাশ মনে মনে হেসে ফেলল। যাহোক সে,,,

আকাশঃ এই যে ঢাকায় নতুন নাকি?
মেয়েটি কথা বলছেনা।
আকাশঃ কি হলো কথা বলছেন না কেন
তারপরেও কোনো শব্দ নাই।
আকাশঃ ভয় পাচ্ছেন নাকি? আমাকে ভয় পাওয়ার কিছু নাই বলুন। আপনাকে দেখে তো নতুন মনে হচ্ছে। কোথায় যাবেন?
এবার মেয়েটিঃ জানিনা কোথায় যাব
আকাশঃ জানেন না মানে তাহলে ঢাকায় আসছেন কেন?
মেয়েটিঃ আসছি একটা চাকরির জন্য।
আকাশঃ ওহ আচ্ছা। আপনার বাবা মা?
মেয়েটিঃ নেই অনেক আগেই মারা গেছে। চাচা চাচির কাছে ছিলাম তারা আমাকে তারিয়ে দিয়েছে।
আকাশঃ ওহ।

আকাশ মেয়েটির সরল কথা বার্তা শুনে গলে যায়। মেয়েটিকে বিক্রি করার চিন্তা বাদ দিয়ে দেয়।

আকাশঃ তো এখন কোথায় যাবেন??
মেয়েটিঃ জানিনা।

এমন সময়েই রহমান চাচা কল দেয়। আকাশ মেয়েটির থেকে দূরে গিয়ে কল ধরল,,,

আকাশঃ হ্যা চাচা বলো
রহমান চাচাঃ কোথায় তুই?? সন্ধ্যা থেকে কাউকেই তো নিয়া আসলি না
আকাশঃ আজকে একজনও পাইনি চাচা। পাইলে নিয়া আসব।

এমন সময়েই একজন আকাশের কাধে হাত রাখল।আকাশ পিছে ঘুরে দেখে দুজন। তাদের দিকে তাকাতেই আকাশ বুঝে যায় এরা কি রকম।

আকাশঃ চাচা দুজন পাইছি আমি আসছি মাল রেডি রাখো

এই বলে ফোন কেটে দেয়।

তারপর ঐ দুজনের সাথে ডিল করে তাদেরকে নিয়ে রহমান চাচার কাছে চলে যায়।

রাত বারোটা,,,

আকাশ মদ নিয়ে বস্তিতে ফিরতেছিল। হঠাৎ দেখে একটা মেয়ে ফুটপাতে বসে আছে।
আকাশ এগিয়ে যায় মেয়েটির দিকে।
কাছে গিয়ে দেখে ষ্টেশনের সেই মেয়েটা। ভূলেই গিয়েছিলাম মেয়েটির কথা।।

আকাশ মেয়েটির কাছে গিয়ে,,,

আকাশঃ আপনি এখানে?? এত রাতে
মেয়েটি চুপ করে আছে।
আকাশঃ ওহ বুঝছি আশ্রয় পাননি। কি করবেন বলেন তাই তো এটা ঢাকা শহর। এখানে কেউ কাউকে জিগায় না। কিছু মনে না করলে আমি একটা কথা বলব??
মেয়েটিঃ জী
আকাশঃ আমার সাথে আমার বাসায় চলুন। আজকে রাত টা আমার বাসায় কাটিয়ে দিন। কালকে কিছু একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিব নে।
মেয়েটিঃ না না। সম্ভব না। আপনাকে চিনিনা জানিনা আপনার সাথে যাব কেন? তার উপর আপনাকে আমার ভালো লাগছেনা। আপনার হাতে মদ। ছিহ
আকাশঃ আমি আপনাকে সাহাজ্য করতে চাইছি। এর বেশি কিছুইনা। আসলে আসেন না আসলে নাই। good bye..

আকাশ হাটা ধরল। পিছনে তাকাল না। কিছুক্ষন পর দেখে কিছু একটা ছায়া তাকে ফলো করতেছে।
পিছনে ঘুরতেই আকাশ…?????????

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে