#চোখের আড়ালে
#Maishara_jahan
Part………12
চিঠিটা পড়ে আরাব বিছানায় বসে পড়ে। তার চোখ দিয়ে অজান্তেই পানি পড়ছে। কোথায় গিয়েছে কি করছে মাথায় এসবি ঘুরছে। তখনি ফারহান আর রিমান আসে। ওরা আসতেই আরাবকে পাথরের মতো বসে থাকতে দেখে। ফারহান আরাবের হাত থেকে চিঠিটা নিয়ে পড়তে থাকে৷
আরাব হঠাৎ করে উঠে ফারহানের হাত থেকে চিঠিটা নিয়ে বেড়িয়ে যেতে থাকে। রিমান আর ফারহান ও তার পিছনে পিছনে যেতে থাকে। আরাআ তাড়াতাড়ি গাড়িতে বসে, রিমান আর ফারহান ও গিয়ে বসে। আরাব জোরে গাড়ি চালাতে থাকে। তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।
ফারহান আরাবের দিকে তাকিয়ে বলে_ এতোই যখন তৃষাকে ভালোবাসিস তাহলে কষ্ট কেনো দিয়েছিস?
আরাব কষ্টে রাগে চিৎকার করে বলে_ভালোবাসি না আমি।
রিমান_তাহলে খুঁজছিস কেনো?
আরাব_ আমার কারাগার থেকে মুক্তি হতো দিবো না। এতো সহজে মুক্তি হতে দিবো না আমি।
ফারহান _যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে তোর চোখে রাগের জায়গায় পানি আর ভয় কেনো? কিছু হারানোর ভয়।
আরাব_ সেট আপ ফারহান, তৃষা কোথায় গেছে কি করছে কে জানে তার উপর তুই এসব কথা বলছিস।
রিমান _তুই কোথায় যাচ্ছিস? সেটা তো বল।
আরাব_ এয়ারপোর্টে, চেক করবো তৃষা বাংলাদেশ থেকে বাহিরে গিয়েছে কি-না।
রিমান ভয়ে বাহিরে তাকিয়ে আস্তে করে বলে_ যে স্প্রিটে গাড়ি চালাচ্ছে হসপিটাল পৌঁছে যায় কি-না সন্দেহ।
এয়ারপোর্টে এসে আরাব জোরে গাড়ি ব্রেক করে, গাড়ি থেকে বের হয়ে দৌড়ে ভিতরে যায়। গিয়ে টিকেট কাউন্টারে তৃষার ডিটেলস্ দিয়ে জিজ্ঞেস করে, তৃষা অন্য কোনো দেশে গিয়েছে কি-না চেক করতে।
ফারহান _ অন্য কোনো দেশের কথা কেনো জিজ্ঞেস করছিস। তৃষা যেখানে থাকতো সেখানেই যাবে বাবা মার কাছে তাই না।
আরাব_ তৃষা সেখানে জীবনেও যাবে না। ওর বাবার সম্পর্কে সত্যিটা যেনে জীবনেও সেখানে যাবে না।
রিমান _বাবার সম্পর্কে মানে। ওর বাবা কি করেছে।
আরাব _কিছু না, বাদ দে। এখন তৃষা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
একটু পর কাউন্টার থেকে জানতে পারে তৃষা ইন্ডিয়া চলে গেছে। আরাব অভাক হয়ে বলে_তৃষা ইন্ডিয়া কেনো যাবে? কে আছে ওর ঐখানে?
ফারহান _ওর মা বাবাকে কল করে জিজ্ঞেস কর।
আরাব তৃষার বাবাকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করে ইন্ডিয়ার ব্যাপারে। আরাব তখন যানতে পারে সেখানে তৃষার আসল বাবার বাড়ি। মানে দাদু বাড়ি। আরাব বাড়ির ঠিকানা নিয়ে ফোন কেটে দেয়।
রিমান_ এখন মুম্বাইয়ের টিকেট কাটতে হবে। রাতের মধ্যেই পৌঁছে যাবো মাত্র ২ টা বাঝে।
আরাব_অনেক আগেই কেটে ফেলছি। ভাগ্য বশত কিছু ক্ষন পরেই ফাইটের টিকেট পেয়ে গেছি। তিনটে টিকেট সহজেই পেয়ে গেছি।
ফারহান _আমাদের পাসপোর্ট আনি নি।
আরাব _আমি জানতাম এমন কিছু হবে তাই গাড়িতে উঠেই মেনেজারকে কল করে পাসপোর্ট নিয়ে আসতে বলেছি তিনজনের। কিছু মিনিটের মধ্যে এসে যাবে।
রিমান _সবাইকে কল করছিস শুধু তৃষাকে ছাড়া। ওকে কল কর,দেখ কিছু জানতে পারিস কি-না?
_অনেক বার করেছি কিন্তু বন্ধ আসছে। এখন ও কিছুতেই কল ধরবে না ভালো করে জানি।
একটু পর পাসপোর্ট আর সব কাগজ পত্র নিয়ে আসে। ওরা সব ফর্মালিটি শেষ করে ইন্ডিয়া চলে যায়। সেখানে পৌঁছে টেক্সি নিয়ে সেই ঠিকানায় চলছে তারা।
রিমান _এখানে তো এখনো এতো গাড়ি আর মানুষ মনে হচ্ছে একটু পর সকাল না রাত হবে।
টেক্সি ড্রাইভার হিন্দিতে বলে_ আরে সাহেব এটা মুম্বাই, এখানে বড় মানুষদের দিন শুরু হয় রাতে। এখানে বেশির ভাগ কাজ রাতেই হয়।
রিমান আস্তে করে ফারহানের কানে বলে_ ঘুমে মনে হয় এই ড্রাইভার পাগল হয়ে গেছে, কি বলছে না বলছে কে জানি। কিসের দিন শুরু হয় রাতে।
ড্রাইভার আবারো হিন্দিতে বলে_ স্যার আমি শুনতে পারছি। আমি তো আপনাকে বুঝানোর জন্য বলছিলাম। আমি বাংলা একটু একটু বুঝতে পারি কলিকাতা থেকে তোহ তাই।
আরাব_মুখ না চালিয়ে হাত চালাও।
রিমান _ কিহহ তুই ওকে আমাদের মারার কথা বলছিস?
আরাব_সেট আপ ইয়ার। আমি জোরে গাড়ি চালানোর কথা বলছিলাম।
কিছু ক্ষন পর একটা গলির সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে বলে_ সাহেব এদিক দিয়ে আপনাদের হেঁটে যেতে হবে। এদিক দিয়ে গাড়ি ঢুকালে ঘুরিয়ে বের করা যাবে না। আর অন্য দিক দিয়ে যাওয়া যাবে না কারন ঐদিকে রাস্তার কাজ চলছে।
তিনজনে নেমে গলি দিয়ে যেতে থাকে। রিমান অর্ধেক ঘুমে যেতে যেতে বলে _ ভাই বাড়িটা খুঁজবি কি করে? মাত্র সূর্য উঠলো। সবি দেখা যাচ্ছে কিন্তু একটু ভয়ানক ভাবে। আর কতো ক্ষন হাটবো?
আরাব _ তৃষা বাবা বলেছিলো হাউজ নং 66। আর আশেপাশে তাকিয়ে দেখ হাউজ নং 96 তার মানে পাশের গলি দিয়ে গেলে পেয়ে যাবো। তাড়াতাড়ি হাঁট।
বলে আরাব দৌড়াতে থাকে। সাথে সাথে দুইজন ও। রিমান দৌড়াতে দৌড়াতে বলে_হাঁটতে বলে দৌড় শুরু করে দিয়েছে বেঈমান। এতো সকাল সকাল তো মোড়ক ও উঠেনি আর ও আমাকে মনিং ওয়াক করাচ্ছে।
ফারহান_ মুখ বন্ধ করে পা চালালে ভালো হবে।
একটু পর একটা পুরোনো বাড়িতে এসে আরাব দাঁড়িয়ে বলে এই তো হাউস নং 66। পেয়ে গেছি তৃষাকে।
রিমান একটু ভয়ে বলে _ভাই এখানে তৃষা না ভুত পেতে পারিস৷ ভালো করে দেখ এই বাড়িতে কেও থাকে বলে মনে হয়? মনে হয় কতো বছর ধরে কেও থাকে না।
ফারহান _ আমাদের ভিতরে গিয়ে দেখা উচিত।
রিমান _ কি দেখা উচিত? কয়টা ভুত বেঁচে আছে কয়টা ভুত মারা গেছে এটা?
আরাব সোজা ভিতরে যেতে থাকে। ফারহান ও আরাবের পিছনে যেতে থাকে। রিমান দাঁড়িয়ে আশেপাশে দেখে বলে _ এখানে একা দাঁড়িয়ে থাকাও সেভ মনে হচ্ছে না। একা মরার থেকে সবাই এক সাথে মরা বেশি ভালো।
বলে রিমান দৌড়ে তাদের সাথে সাথে যেতে থাকে। দরজার পাশে গিয়ে আরাব বলে_ দরজা তো বন্ধ।
রিমান একটু ভয়ে বলে _ এক কাজ কর ভু ভু ভুতকে ডেকে বল দরজা খুলতে, এসে খু খু খুলে দিবে।
আরাব হঠাৎ দরজায় লাথি মারায় জোরে শব্দ হয়ে আর রিমান ভয়ে ফারহানে উপরে উঠে যায়। ফারহান রিমানের দিকে ছোট ছোট চোখে তাকিয়ে বলে _ আরাবের লাথিতে শব্দ হয়েছে, এখন আপনি কি দয়া করে আমার কোল থেকে নামবেন?
রিমান তাড়াতাড়ি নেমে বলে_ তুই ও তো মেহেবুবার মতো আমাকে কোলে নিয়ে নিলি। আরাব আবারো লাথি মারে। এবার রিমান চমকে উঠে বলে _ ও এসিপি দয়া, এখানে আমি নিজেকে মারতে আসিনি। একটু বলে তোহ লাথি দেওয়া যায়।
আরাব_ বেশি কথা বললে এবারেরটা তোর পিছনে পড়বে। ফারহান তুই ও আমার সাথে লাথি দে। তাহলে তাড়াতাড়ি খুলবে।
রিমান _ আমাকেও বল। তিনজন দিলে তাড়াতাড়ি খুলবে।
ফারহান আর আরাব লাথি দিয়ে দরজা খুলে ফেলে, রিমান একটু পরে লাথি দেওয়ায় সোজা ভিরতে পড়ে যায়।
রিমান উঠে ব্যথায় বলে_ আম্মুওও,,, তোরা ইচ্ছে করে আমার সাথে এমন করছিস।
রিমানের কথায় কেও পাত্তা না দিয়ে চারপাশে খুঁজতে থাকে কিছু আছে কি না। বা তারা বাড়ি ছেড়ে কোথায় গিয়েছে তার কোনো প্রমান আছে কি-না।
রিমান ফারহানের কাছে গিয়ে বলে _ ভাই আমি সেউর এখানে কোনো গন্ডগোল অবশ্যই আছে। পুরো বাড়ি ফাঁকা। কয়েকটা ভাঙা ফার্নিচার ছাড়া কিছু নেয়। আরাব কি খুঁজছে এগুলোর মধ্যে।
ফারহান আরাবকে ডাক দিয়ে বলে _ আরাব এখানে মনে হয় না কিছু পাবি। একটু পর সবাই উঠে যাবে। আশেপাশে জিজ্ঞেস করে দেখি কিছু জানা যায় কি-না।
আরাব ও হতাশ হয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। রিমাম গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে আরাবকে ডাক দিয়ে বলে _ আরাব এটা হাউস নং 66 না।
আরাব আর ফারহান এসে বলে মানে। রিমান নেমপ্লেট থেকে ভাঙা ছিক্সটাকে উল্টিয়ে বলে এটা হাউস নং 69। নাইন এর উপরের তারটা খুলে যাওয়ায় এটা 66 এর মতো দেখা যাচ্ছিলো। তাই তো বলি একটা সংখ্যা উপরে আরেকটা নিচে কেনো। চল সামনে তৃষার দাদুর বাড়ি পেয়ে যাবো।
ওরা সবাই আবার খুঁজতে থাকে। রিমান ফারহানকে বলে _ শুন কেমন যানি ‘হাউস নং 69’ বলতেই ভুতের বাড়ির কথা মনে পড়ে যায়। নামটাই কেমন ভুত ভুত তাই না।
ফারহান _ এখানে দোষটা তোর না, দোষটা হলো ঐ সব মুভি ডেরক্টরের যারা ভুতের মুভির এমন নাম রাখে। চুপচাপ হাটঁ আমাকে ঝালাবি না।
একটু পর ওরা সঠিক বাড়িটি পেয়ে যায়। রিমান নেমপ্লেটটা টেনে চেক করতে গিয়ে ভেঙেই ফেলে। ছিক্সটা হাতে নিয়ে রিমান অসহায় এর মতো ফারহান আর আরাবের দিকে তাকিয়ে থাকে।
ফারহান _ পাগল হয়ে গেছিস নাকি?
রিমান_ আমি তো চেক করতে নিয়েছিলাম।
আরাব_ ভেঙে? কিছু বলছিনা এখন। তাড়াতাড়ি এটা নিচে ফেলে দে আমি কলিং বেল বাজাচ্ছি।
রিমান এটা নিচে না ফেলে দূরে ঢিল মারে। আরাব তার রাগটাকে কন্ট্রোল করে কলিং বেল বাজাচ্ছে। বেশ অনেক বার বাজানোর পর একটা মেয়ে দরজা খুলে হিন্দিতে বলে _ ইয়েস কাকে চাই?
আরাবও হিন্দিতে বলে_ তৃষা আছে?
_আপনারা কে?
আরাব_ আমি তৃষার হাসবেন্ড আরাব খান।
মেয়েটা একটু অভাক হয়ে বলে _হোয়াট।
আরাব_ আপনি তৃষাকে ঢেকে দিন পিল্জ।
_ আপনারা ভিতরে আসুন।
আরাব, রিমান, ফারহান ভিতরে ডুকে সোফায় বসে আছে। মেয়েটি একটা বুড়ো লোককে ডাক দিয়ে আনে। লোকটি এসে তাদের সামনে বসে বলে _ কারা তোমরা? কাকে খুঁজতে এসেছো?
আরাব_ আমি আরাব, তৃষাকে খুঁজতে এসেছি। আমি তৃষার হাসবেন্ড।
_ কিহহহ, তাহলে বাবা তুমি ভুল জায়গায় এসেছো। আমার নাতির এখনো বিয়ে হয়নি।
আরাব_ আপনার নাতিকে একবার ডেকে দিন পিল্জ। যদি ও আমার তৃষা না হয় তাহলে আমি চলে যাবো।
এর মাঝখানে দুটো মেয়ে সিরি দিয়ে নামে, রিমান, ফারহানদের দেখে আবার তাড়াতাড়ি উপরে উঠে যায়। বুড়ো লোকটি তার নাতিকে ডাক দেয়৷ তৃষা ফুলা ফুলা চোখ নিয়ে উপরে থেকে নিচে আসতেই আরাব তৃষাকে দেখে দৌড়ে জরিয়ে ধরে বলে _ এভাবে কেও না বলে কোথাও চলে যায়। সাহস কি করে হলো আমাকে ছেড়ে যাওয়ার। কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আমি, যানো তুমি? জীবনে আরেকবার এমন করলে মরেই যাবো।
আরাবের চোখে পানি এসে পড়েছে। তৃষা আরাবকে ধাক্কা দিয়ে বলে _ আপনি এখানে কিভাবে আসলেন?কে বললো আমি এখানে আছি? আর এতো কষ্ট করে আমাকে খুজারি বা কি দরকার ছিলো।
ফারহান দাঁড়িয়ে আছে। রিমান চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে আর দেখছে, মনে হচ্ছে থিয়েটারে মুভি দেখছে। দাদু দাঁড়িয়ে বলে _ তার মানে তৃষা তুমি সত্যি সত্যি বিয়ে করে ফেলেছো। আর আমাকে বলোও নি।
তৃষা _ দাদু আমি কোনো বিয়ে করিনি। কোনো সম্পর্ক নেয় আমার এই লোকের সাথে। চিনি না আমি ওনাকে।
দাদু একটু হেঁসে বলে_ সে তো দেখতেই পারছি। আমি তো আর অবুঝ নয়রে মা। বিয়ের কথা লুকিয়েছো কেনো?
তৃষা_ দাদু বিয়েটা এমন সময় আর এমন ভাবে হয়েছে যে আমিই কিছু বুঝতে পারিনি৷ তোমাকে বলবো কিভাবে। কিছু দিন হলো আমাদের বিয়ে হয়েছে৷ ভেবেছিলাম মা হয়তো তোমাকে জানিয়েছে।
দাদু _ তাহলে এখন মানা করছিস কেনো? কি হয়েছে?
তৃষা কিছু না বলে চুপ করে আছে। আরাব তৃষার হাত ধরে বলে _ আমাদের মধ্যে একটু ঝগড়া হয়েছিলো। একটু ধমক দিয়েছি, তাই না বলে চলে এসেছে। অনেক কষ্টে খুঁজে বের করেছি।
দাদু _ বাবার মতো অনেক রাগী হয়েছে। এতো রাগ ভালো না তৃষা। যাও স্বামীকে নিয়ে ঘরে যাও। ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট করোক তারপর কথা হবে।
এই সময় ঐ দুটো মেয়ে আবার আসে। ড্রেস চেঞ্জ করে একটু সেজেগুজে তারপর এসে বলে_ দাদু কারা উনারা।
দাদু আরাবকে দেখিয়ে বলে _ এটা তৃষার হাসবেন্ড। ও রাগ করে হাসবেন্ডকে কিছু না বলে চলে আসে। তাই ওর পিছনে খুঁজতে খুঁজতে আরাব ও চলে আসে।
এবার আরাবকে বলে_ বাবা এরা হলো আমার ছোট ছেলের মেয়ে। ছুটিতে এসেছে, বড়টার নাম আলো আর ছোটোটার নাম আশা।
আশা রিমানের দিকে তাকিয়ে বলে_ দাদু এনারা কারা?
আরাব_ এরা দুই জন আমার বন্ধু। কালো শার্ট পড়াটা ফারহান আর সাদা শার্ট পড়াটা রিমান।
আলো আশা একটু লজ্জা পেয়ে হায় বলে। ফারহান আর রিমান ও হাল্কা হেঁসে হায় বলে।
দাদু _ তৃষা তোমার স্বামীকে নিয়ে তোমার রুমে যাও। আর আলো আশা তোমরা দুজন রিমান আর ফারহানকে উপরে গেস্ট রুমটা দেখিয়ে দাও। তারপর খাবারের ব্যবস্থা করো।
আলো আশা হেঁসে ঠিক আছে বলে, রিমান আর ফারহানকে উপরে একটা রুম দেখিয়ে বলে_ আপনারা এই রুমে থাকতে পারেন। পছন্দ না হলে অন্য রুম দেখাবো?
ফারহান _ ইট’স ওকে, অন্য রুম লাগবে না। এটাই ঠিক আছে।
আলো ফারহানের দিকে হাত বাড়িয়ে বলে_ হায় আমি আলো।
ফারহান রিমানের দিকে তাকিয়ে হাত মিলিয়ে বলে_ হ্যালো আমি ফারহান।
আলোর দেখা দেখি আশাও রিমানের সামনে হাত বাড়িয়ে বলে_হায় আমি আশা।
রিমান ও হাত মিলিয়ে বলে_ আমি রিমান।
আশা রিমানের হাত ধরেই বলে_ কিছু লাগলে অবশ্যই বলবেন। আমি নিচেই আছি একটা ডাক দিলেই চলে আসবো।
রিমান হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলে_ ওকে। কিছু লাগলে অবশ্যই বলবো।
আশা _ তাহলে আসি?
রিমান হাতের দিকে ইশারা করে বলে_ ঠিক আছে।
আশা হাত ছেড়ে লজ্জা পাওয়ার মতো করে চলে যায়। আলোও ফারহানের দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে চলে যায়।
_____
তৃষা আরাবকে রুমের ভিতরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে কিছু বলতে যাবে অমনি আরাব শক্ত করে তৃষাকে জরিয়ে ধরে। তৃষা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। আরাব জরিয়ে ধরে বলে _ কেনো ছেড়ে চলে এসেছিলে। যানো কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
_ আপনার টাকা আপনাকে দিয়ে এসেছি তাহলে আর কেনো ঐখানে থাকবো?
আরাব তৃষাকে ছেড়ে দিয়ে বলে _ আমাদের কি টাকার সম্পর্ক। বিয়ে করেছি তোমাকে।
_ আচ্ছা, মনে আছে আপনার যে আমি আপনার বিয়ে করা বউ? সেই সম্মান তো আমি পায়নি। আপনি আমাকে টাকা দিয়ে কিনে এনেছিলেন আমি সেই টাকা ফিরত দিয়ে মুক্তি হয়ে গেছি।
আরাব এবার রাগে তৃষার বাহু শক্ত করে ধরে বলে _ টাকা ফিরত দিলে সম্পর্ক মিথ্যা হয়ে যায় না। তুমি এখনো আমার স্ত্রী। তাই আমাকে ছেড়ে আমি তোমাকে কোথাও যেতে দিবো না।
_ বন্ধী করে রাখবেন সারা জীবন?
_হ্যাঁ তাই রাখবো। দরকার পড়লে হাতে পায়ে বেঁধে রুমে ফেলে রাখবো। সাহস কি করে হলো আমাকে ছেড়ে যাওয়ার।
তৃষা একটু হেঁসে বললো_ যখন এ কথাটা আপনি নিচে বলেছিলেন তখন কথার মাঝে অজানা একটা ভালোবাসা দেখতে পারছিলাম। এখন কথা এখন বলছেন । কিন্তু এখন ভালোবাসাটা দেখতে পারছি না। রাগ, এতো রাগ কেনো? কি করেছি আমি? আমার অপরাধটা একটু বলুন পিল্জ? আমি এভাবে থাকতে পারছি না৷
চলবে_____