#চোখের আড়ালে
#Maishara_jahan
Part………7
রিমান হাসতে হাসতে বলে_আমার দুই প্যাক খেয়েই এই অবস্থা। মাহুকে দেখে নিজেকে সামলাতে পারছি না। তাহলে আরাব আর তৃষার খাবারে এটা মিশিয়ে দিলে কি হবে। ওদের তো কোনো বাঁধাও নেয়। স্বামী স্ত্রী বলে কথা৷
রিমান দুলতে দুলতে যাচ্ছে। রিমি এসে রিমানকে ধরে বলে_ভাইয়া এমন করছিস কেনো?
রিমাম ভালো করে কিছু ক্ষন তাকিয়ে বলে_ একজনকে সামলানো যাচ্ছিলো না, এখানে দুজন রিমি কি করে সামলাবো?
রিমি ব্রু কুঁচকিয়ে বলে_ ভাইয়া তুই উল্টা পাল্টা কিছু খেয়েছিস তাই না?
রিমান _ না সত্যি আমি কিছু খায়নি।
রিমি _তাহলে নড়াচড়া না করে সোজা হয়ে দাঁড়া তো দেখি।
রিমান _ আমি তো নড়াচড়া করছি না। তুই এক জায়গায় স্থির থাক, এতো দুলছিস কেনো?
রিমি _আমি দুলছি?
রিমান _শুধু তুই না, পার্টির সবাই দুলছে। গান ও বাজছে না তাও দুলছে। আমার কি মনে হয় জানিস?
রিমি বিরক্তি নিয়ে বললো _কি?
রিমান হাসি দিয়ে রিমির কানের কাছে এসে বলে_মনে হয় মাটির নিচে ভুমিকম্প হচ্ছে। তাই মাটি নড়ছে আর সবাই দুলছে, শুধু আমি ছাড়া।
রিমি রিমানের বাহুতে একটা ঘুষি মেরে বলে_কুত্তা এখন এসব আজেবাজে জিনিস খাওয়া শিখেছিস?দাঁড়া আমি বাবাকে বলছি।
তখনি ফারহান এসে বলে_কি সারা ক্ষণ বাবা বাবা করিস? রিমান এটা ভুল করে খেয়ে ফেলেছে।
রিমি _এই জন্যই তো বাবাকে বলবো। ভুল করে বিয়ার খেতে পারলে, কোনো দিন যদি ভুল করে বিষ খেয়ে নেয় তখন? এই ভুল যেনো না হয় তাই বলবো।
রিমান হাসতে হাসতে বলে_ ওকে বলে দে। তাহলে আমিও বলে দিবো।
রিমি_আমার তেমন কোনো গোপন কথা নেয়।
রিমান হাসতে হাসতে রিমির কাঁধে হাত রেখে বলে_ আছে আছে, অনেক কিছু আসে।
রিমি_ কি শুনি
রিমান_জানিস ফারহান ওর রুমে সাদা রঙের একটা ডাইরি আছে সেই ডাইরির মাঝখানে লেখা আছে যে আমি..
আর কিছু বলার আগেই রিমি রিমানের মুখ চেপে ধরে বলে _আমি বাবাকে কিছু বলবো না ভাইয়া। তুমি কোথায় যাচ্ছিলে যাও যাও।
ফারহান_মুখের সামনে থেকে হাত সরা। রিমান কি ছিলো ডাইরিতে।
রিমান রিমির হাত সরিয়ে বলতে নেয় ‘লেখা ছিলো, আমি প্রেমে পড়েছি তার’ আর কিছু বলার আগেই রিমি আবারো মুখ চেপে ধরে তাড়াহুড়ো করে বলে_দেখ ভাইয়া তুই বলে দিলে কিন্তু আমিও বাবাকে বলে দিবো,তুই মদ খাছ, গান্জা খাছ আবার সিগারেট, ইয়াবা, বটকা সব খেয়েছিস৷
রিমান হাত সরিয়ে হতভম্ব হয়ো বললো_এই সব আমি আবার কবে খেলাম৷ আমি চা,দুধ,জুস কোল্ট ড্রিং আর পানি ছাড়া কিছু খায় না।
রিমি _সেটা তুই জানিস। কিন্তু বাবা তো আর জানে না। বাবাকে এইসব বললে আর তোর অবস্থা দেখলে বিশ্বাস তো করবেই, উল্টো তকে লাথি দিয়ে বের করে দিবে।
ফারহান রিমানকে টান দিয়ে তার কাছে এনে বলে_ ও তোকে ভয় দেখাচ্ছে। তুই বল পরে আর কি লেখা ছিলো?
রিমান ফারহানকে ধাক্কা দিয়ে বলে_ সর, তোকে আমি আর রিমি বাবাকে গিয়ে এইসব বলে আমাকে ঘর থেকে বের করে দিক।
ফারহান _ও তোকে ভয় দেখাচ্ছে। তুই রিমান, আর রিমান কোনো দিন ভয় পায় না। তুই কি ভয় পাছ?
রিমান দুই জনের দিকে তাকিয়ে বলে_ না ভয় তো পায় না।
ফারহান _তাহলে বল
রিমান _ আমি এমনে অনেক সাহসী কিন্তু ড্রিংক করার পরে একটু ভিতু হয়ে গেছি।
ফারহান _ মানুষের ড্রিংকস করার পরে সাহস বাড়ে আর তোর কমে।
রিমান_হ্যাঁ, কারন আমি আলাদা। কমন মানুষ না, লাইক ইউ। সর আমাকে যেতে দে।
বলে রিমান ফারহানকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। ফারহান রিমির হাত ধরে উপরে নিয়ে যাচ্ছে। রিমি যেতে চাচ্ছে না। ফারহান জোর করে নিয়ে যাচ্ছে। যখন দেখেছে আশেপাশে কোনো মানুষ নেয় তখন রিমিকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছে। রিমি নিচে নামার জন্য ছটফট করছে। বার বার ছাড়েন ছাড়েন বলছে। আবার ফারহানের বুকে কিল ঘুষিও মারছে। ফারহান রিমিকে ছাদে নিয়ে গিয়ে নামায়।
রিমি যেতে চাইলে ফারহান রিমির হাত ধরে জোরে টান দিয়ে নিজের সামনে এনে বলে_তুই প্রেম করিস?
রিমি বিরক্তি নিয়ে বলে_না।
ফারহান আরো জোরে হাত চেপে ধরে বলে, _ সত্যি করে বল।
রিমি এক গ্রাস বিরক্তি নিয়ে বলে _সত্যি করি না।
ফারহান _তাহলে ডাইরিতে কি লিখেছিস, কাওকে পছন্দ করিস।
_কাওকে পছন্দ করলেই কি প্রেম করা হয় নাকি।
ফারহান হাত ছেড়ে দিয়ে বলে_কাকে পছন্দ করিস?
_না।
ফারহান রাগে রিমির সামনে এসে তার দিকে আঙুল দেখিয়ে বলে_দেখ রিমি মিথ্যা বলবি না,খুব খারাপ হবে কিন্তু। কাওকে পছন্দ করিস কিনা বল?
রিমি রাগে বলে_ হ্যাঁ করি তাতে আপনার কি?
ফারহান অন্য দিকে তাকিয়ে বলে_ কাকে? ছেলেটা কে?
_সেটা আপনার না জানলেও চলবে।
_বলতে বলছি কিন্তু।
_ শুনেন আমি যাকে পছন্দ করি তাকেই এখনো জানায়নি তো আপনাকে কিভাবে জানাবো। হাজার জোরা জোরি করলেও বলবো না। আর আপনি আমাকে জোরা জোরি করবেনি বা কেনো। এটা আমার একান্ত পার্সোনাল বিষয়।
এটা বলে রিমি চলে যায়। ফারহান ছাদেই দাঁড়িয়ে আছে।
____
রিমান এক গ্লাস জুসের মধ্যে মদ মিশিয়ে দিয়ে আরাবের কাছে যায়। গ্লাসটাকে এগিয়ে দিয়ে মাতাল কন্ঠে বলে_ আরাব এটা তোর জন্য এনেছি খা।
রিমানকে এমন দুলতে দেখে আরাব রিমানকে ধরে বলে_ কি হয়েছে এমন করছিস কেনো।
_বেশি কিছু না, দোল দোল দুলনি রোগ হয়েছে৷ তুই জুসটা খা।
আরাব রিমানকে চেয়ারে বসিয়ে বলে_অসুস্থ হয়ে গেলি নাকি। জুসটা আমার না তোর খাওয়া উচিত।
এটা বলে রিমানের হাত থেকে জুসটা নিয়ে রিমানকে জোর করে খায়িয়ে দেয়। রিমান কিছু ক্ষন ধ্যান ধরে বসে থেকে বলে_আগে একজনকে দুটো করে দেখছিলাম এখন তিনটে করে দেখছি।
কান্না করার মতো কন্ঠ করে বলে_আম্মাআআ আগে আমি ঘুরছিলাম এখন পুরো দুনিয়া ঘুরছে।কেনো এলাম আমি এখানে।
আরাব_কিরে বেশি খারাপ লাগছে।
রিমান উঠে আরাবকে ধাক্কা দিয়ে বলে_দুরর শালা, তোর ভালো করতে নেয়।
আরাব রিমানের যাওয়া দেখছে, তখন ফারহান ও এসে দাঁড়ায়। এবার রিমান রাগে জুসের মধ্যে একটু বেশি মদ মিশিয়ে দেয়। পরে নিয়ে এসে আরাবকে দেয়। দিয়ে বলে_আমার পেট ফুল খবরদার যদি আমাকে দিয়েছিস তো।
আরাব জুসটা নিয়ে ফারহানকে দিয়ে বলে_তোর শরীর টাও তো খারাপ লাগছে,তুই খা।
ফারহান রাগে জুসের গ্লাসটা নিয়ে এক ডোকে খেয়ে ফেলে। খেয়ে রিমানের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর বলে_এটার টেস্ট এমন কেনো?
রিমান রাগে আরাবকে আর ফারহানকে একটা করে লাথি দিয়ে চলে যায়। এবার একটু বেশিই মিশিয়ে নিয়ে আসে। এসে গ্লাসটা রাগে আরাবের হাতে দিয়ে বলে_দুজনের খাওয়া হয়ে গেছে এবার তুই খা।
তখনি ফারহান পড়ে যেতে নিয়ে নিজেকে সামলে ফেলে। আরাব ফারহানকে ধরে বলে_কি হয়েছে।
ফারহান _জানি না, মাথাটা কেমন চক্কর দিয়ে উঠলো।
আরাব_কাজের কারনে মনে হয় কিছু খাসনি। নে আরেকটু জুস খা।
বলে এটাও ফারহানকে খায়িয়ে দেয়।এবার রিমান রাগে চুপচাপ দাঁড়িয়ে দুজনকে দেখছে। কিছু ক্ষন তাকিয়ে থেকে চুপচাপ চলে যায়৷ এবার পুরো ওয়াইন জুসের বোতলে করে নিয়ে এসেছে। রিমান এসে আরাবকে চুপচাপ দেখছে। আরাব রিমানের দিকে ফিরে বলে_ কি হয়েছে?
এবার রিমান আরাবকে ধরে পুরো বোতল মুখে ডুকিয়ে, পুরোটা জোর করে খায়িয়ে দেয়। খাওয়ানো শেষ হলে রিমান আরাবকে ছেড়ে দেয়। আরাব কাশতে কাশতে বলে_কি ছিলো এটা, জুসের মতো তো টেস্ট ছিলো না।
রিমান _তাড়াতাড়ি হঠাৎ করে খায়িয়েছি তো তাই টেস্ট বুঝতে পারিসনি।
ফারহান তার কোর্ট খুলে, টাই টেনে অর্ধেক নিচে নামিয়ে বলে_ভাই হঠাৎ করে আমার অনেক গরম লাগছে কেনো জানি। আর নিজেকে পাগল পাগল লাগছে।
রিমান _জীবনের প্রথম তোর নিজেকে ঠিক লেগেছে। আচ্ছা আমার কাজ আছে, আমি আসছি।
গিয়ে আরেকটা জুসের গ্লাসে ওয়াইন মিলিয়ে রিমান রিমিকে খুজে থাকে। পরে বলে_ না থাক রিমিকে দিয়ে পাঠালে ছুছো নিজেই খেয়ে ফেলবে। আমিই যাই। ইশশশ কতো কাজ করি আমি। রিমান তুই মহান।
বলে তৃষার কাছে যায়। সে মন খারাপ করে বসে আছে। রিমান জুসটা এগিয়ে দিয়ে বলে_তৃষা জুসটা খাও ভালো লাগবে।
তৃষা _ রিমান ভাইয়া আপনি খান। মুড নেয়।
রিমান _সেই জন্যই তো দিচ্ছি। না মানে, আমি আর একটু খেলে, এখন তো তার তিনটে করে দেখতে পারছি। পরে চোখে শরসে ফুল ছাড়া কিছুই দেখবো না। খাও তো।
তৃষা জুসটা নিয়ে বলে_মাঝে মাঝে আপনি কি যে বলেন তা হয়তো আপনি নিজেও জানেন না৷ আচ্ছা জুসটা আমি খাবো।
রিমান তৃষার দিকে তাকিয়ে আছে। তৃষা রিমানের দিকে তাকিয়ে, জুসটা খেয়ে বলে_এবার খুশি।
রিমানও হেঁসে হেঁসে চলে যেতে নিয়ে টেবিলের সাথে ধাক্কা খেয়ে ধপাস করে পড়ে যায়। তৃষা দাঁড়িয়ে যায়। রিমান নিচে এমন ভাবে শুয়ে পড়ে যেনো কিছু হয়নি, বিছানায় শুয়ে আছে। মুখ ভরা হাসি দিয়ে উঠে। তৃষা চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করে _
রিমান ঠিক আছো তো?
রিমান _আমার আবার কি হবে। আমি ইচ্ছে করে পড়েছি, এটা দেখার জন্য যে পড়ে কেমন লাগে।
তৃষা_কেমন লাগে?
রিমান কান্নার মতো ভাব করে বলে_ব্যাথা লাগে।
বলে টেবিলকে একটা লাথি দেয়। লাথি দিয়ে ব্যাথায় তার পা ছাকাতে লাগে। তারপর লেংড়িয়ে লেংড়িয়ে চলে যায়।
রিমান ডান্স ফ্লোরে গিয়ে সবার সাথে ওরা ধুরা ডান্স করতে থাকে। আরাব আর রিমান এসে রিমানকে চেপে ধরে বলে_সত্যি করে বল আমাদের কি খায়িয়েছিস?
রিমান _আমি যেটা খেয়েছি।
দুজন মারছে আর বলছে _ এইসব উল্টো পাল্টে জিনিস মিথ্যা কেনো খায়িয়েছিস?
ফারহান রিমানকে ঘুষি দিয়ে বলছে_এখন বাবা আমাকে ঘরে ঢুকতে দিবে না আজকে৷
রিমান_দুজনকে ধাক্কা দিয়ে বলে_শালা তোরাই তো বলতি ‘বাঁচবো একসাথে,মরবো একসাথে, যা করবো একসাথে’ তাহলে এখন নেশাটা আমি একা করবো কেনো?আমিও প্রথম ট্রাই করলাম তাই তোদের ও করালাম। ইনজয় কর একটু পর পার্টি শেষ হয়ে যাবে।
তিনজনে পাগলের মতো নাচছে। ফারহান রিমিকে তার ক্লাস মেট এর সাথে কথা বলতে দেখে। ফারহান গিয়ে রিমির হাত ধরে বাড়ির বাহিরে বাগানে নিয়ে যায়৷ রাতের অন্ধকার আর বাগানে ছোট ছোট লাইট এর হালকা হালকা আলো বাগানের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে।
রিমিকে একটা শিউলি ফুলের গাছের নিচে নিয়ে, গাছের সাথে রিমিকে লাগিয়ে, রিমির মুখের কাছে গিয়ে বলে _ ঐ ছেলেটাকে ভালোবাসিস তাই না?
রিমি সন্দেহের নজরে বলে_ আপনি কি নেশা করেছেন?
_এটা আমার প্রশ্নের জবাব না।
_আগে আপনি উওর দিন, নিশা করেছেন?
_প্রশ্নটা আমি আগে করেছি।
_তাহলে উওরটাও আগেই দিয়ে দিন।
_হ্যাঁ করেছি নিশা। তোর ভাই মিথ্যা বলে খায়িয়েছে। এখন বল ভালোবাসিস ঐ ছেলেকে।
_আমি কাকে ভালো বাসলাম আর না বাসলাম তাতে আপনার কি? যেতে দিন আমাকে।
রিমি যেতে নেয়, ফারহান আরো শক্ত করে ধরে বলে_ না বলে যেতে পারবি না তুই।
রিমি ক্লান্ত হয়ে বলে_না বাসি না। ও শুধু আমার ফ্রেন্ড। এখন যেতে দিন।
_আরেকটা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যা।
_কি?
_আমাকে এতো ঘৃণা কেনো করিস?
_ঘৃণা তো করি না।
_তো ভালোবাসিস?
রিমি ফারহানের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে_ ফারহান আপনি নিজেও জানেন না নেশায় কি উল্টো পাল্টা বলছেন নিজেও জানেন না। পরে হুশ ফিরলে আফসোস করবেন।
_কোনো সমস্যা নেয়।
_কিন্তু আমার সমস্যা আছে।
বলে চলে যেতে নেয়, ফারহান হাত ধরে ফেলে বলে_দাঁড়া তোকে একটা জিনিস দেখায়।
_ কি?
_একমিনিট।
ফারহান রিমিকে ছেড়ে গাছ ধরে ছাকাতে থাকে। আর অনেক গুলো শিউলি ফুল ঝড়ে পড়তে থাকে। খুশিতে মন ভরে যায়। আমি আঁচল পেতে অনেক গুলো ফুল নিজের আঁচলে ভরে নিয়। গাছের উপরে তাকিয়ে দেখি পুরো গাছ ফুলে মম করছে৷
ফারহান আমার সামনে এসে বলে_এই হাসিটাই দেখতে চেয়েছিলাম তোর ঠোঁটে।
রিমির মাথা থেকে ফুল গুলো সরাতে সরাতে বলে_সাদা শাড়িতে আর এই জোসনার লাভায় তোকে পরীর মতো লাগছে। তার মধ্যে চারপাশে ফুল আর ফুলের গন্ধ। সত্যি সত্যি আমি নেশায় রিমি মনে করে কোনো জ্বীন বা পরীকে নিয়ে আসিনি তো?
আমি একটু হেঁসে বলে _নেশায় পাগল হয়ে গেছেন আপনি।
ফারহান হঠাৎ করেই আমাকে জরিয়ে ধরে। শক্ত করে নিজের বাহুতে আবদ্ধ করে ফেলে। আমিও ফারহানকে জরিয়ে ধরতে নিয়েও ধরি নি৷ ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দৌড়ে চলে যায়। ফারহান দাঁড়িয়ে আছে।
_____
আরাব বসে বসে তৃষাকে খেয়াল করছে। সে অদ্ভুত অদ্ভুত আচরন করছে। সবার সাথে অনেক বেশি বেশি হেঁসে কথা বলছে,দুষ্টুমি করছে। এমনকি সবার সাথে নাচাও শুরু করে দিয়েছে।
আমি গিয়ে তৃষার কোমরে ধরে মাতাল কন্ঠে বলি_এক্সকিউজ মি গাইস, পার্টির এন্ড এখানেই। আপনাদের সবার অসংখ্য ধন্যবাদ এখানে আসার জন্য।
তৃষা হেঁসে বলে_ আরেকটু থাকনা, মজা হচ্ছে,ভালো লাগছে।
_কিন্তু আমার লাগছে না। সো পার্টি এখানেই শেষ।
সবাই বাই বলে চলে যেতে থাকে। সাথে মাহুয়াও, জিসানও আছে৷ রিমান এসে মাহুয়ার হাত ধরে জিসানকে বলে_ she is my girl, understand. এর দিকে নজর দিলে তোর খবর আছে।
তখনি মাহুয়ার বাবা মিঃ ইয়ামিন এসে বলে_বাবা ও তোমার না আমার মেয়ে। হাতটা ছেড়ে দেও।
রিমান হাত ছেড়ে দিয়ে মাতাল কন্ঠে বলে_ আংকেল সরি সরি। সরি আংকেল সরি।
মিঃ ইয়ামিন_ ঠিক আছে । মাহুয়া চল মা।
রিমান _আংকেল একটা কথা।
_কি?
_ সরি আংকেল।
_বললাম তো ঠিক আছে।
মাহুয়ার বাবা মাহুয়াকে নিয়ে যেতে থাকে তখনি রিমান আবার ডাক দিয়ে বলে_ আংকেল একটা অনেক জরুরি কথা।
মাহুয়ার বাবা ফিরে বলে_কি?
_অনেক অনেক সরি আংকেল।
মাহুয়ার বাবার রাগ হয় তাও কিছু না বলে বিরক্তি নিয়ে বলে_এতো বার সরি বলার দরকার নেয়।
মাহুয়াকে নিয়ে বাহিরে চলে যায়। রিমান দৌড়ে গিয়ে বলে_ আংকেল সব কিছু বলেছি বাট যেটা বলার দরকার সেটাই বলেনি।
_আবার কি?
রিমান দুই হাত জরো করে কান্না করে বলছে _সরি আংকেল।
মাহুয়ার বাবা রাগে বলে_আর এক বার সরি বললে তোমার একদিন কি আমার এক দিন।
_ওকে ওকে আর বলবো না, সরি বলার জন্য সরি।
মাহুয়ার বাবা বিরক্ত হয়ে মাহুয়াকে গাড়ির ভিতরে বসিয়ে নিজে বসে। রিমান কাছে গিয়ে বলে _আচ্ছা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাটা বলি যাওয়ার সময়?
মাহুয়ার বাবা একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলে _ বলো।
_আমাকে ক্ষমা করবেন।
এটা শুনে মাহুয়ার বাবা কিছু না বলেই গাড়ি চালিয়ে চলে যায়। রিমান ও একটু পিছনে পিছনে যায়। তারপর নিচে বসে কান্না করতে থাকে আর বলতে থাকে_আংকেল আমি তো সরি বলেনি। ও আংকেল সরি। রিমান কিছু একটার আওয়াজ পেয়ে সাইডে তাকিয়ে দেখে ফারহান বসে বসে নিচে পড়ে থাকা ফুল গুনছে।
চলবে______