চাঁদের_আলোয়_জোছনা_ভাঙে পর্ব ৬২

0
1666

চাঁদের_আলোয়_জোছনা_ভাঙে পর্ব ৬২
লেখা আশিকা জামান

অঙ্কন গভীরঘুমে নিমগ্ন। অনন্যা ড্রয়িংরুম পার হয়ে সেদিকেই যাচ্ছিলো। অনিক সোফার এক মাথায় বসে থুঁতনিতে হাত ঠেঁকিয়ে অবিন্যস্ত কিছু চিন্তায় মগ্ন।

অন্বেষা সোফার অপর মাথায় শান্ত হয়ে বসে আছে। একটু পর পর আবার অনিকের দিকে নীরব দৃষ্টি বিনিময় হচ্ছে। এবার ব্যাপারটা বেশ অস্বস্তিকর পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। সে উঠে অঙ্কনের ঘরের দিকে পা বাঁড়ায়।

অনিক মাথা উঁচু করে একবার তাকায়। এরপর দ্বিধাগ্রস্ত গলায় বলল, ” কোথায় যাচ্ছেন? বসুন।”

অন্বেষা, ঠাঁই দাঁড়িয়ে পড়ে। ভ্রুকুঁচকে পেছনে তাকায়। ওঁকে এভাবে তাকাতে দেখে অনিক আবার বলল, ” অনন্যা, আপনার ভাইয়াকে নিয়ে আসুক তারপর যা বলার বলুন। ততক্ষনে না হয় আমরা অপেক্ষা করি।”

অন্বেষা বেজায় লজ্জা পেয়ে যায়। সত্যিই’তো তার এখন ওই ঘরে যাওয়াটা অনুচিত! মাথা নিচু করে সে অনিকের পাশে প্রায় গাঁ ঘেঁষে বসে পড়ে। কিঞ্চিৎ পরেই আৎকে উঠে সরে বসে।

অনিক ভ্রু কুঁচকে তাকায় অজান্তেই মুখ হাঁ হয়ে যায়। হো হো করে হেসে উঠে। অন্বেষা নাক কুঁচকে কিছুক্ষণ অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে। এরপর নিজেও হাসে।

কয়েক রাত নির্ঘুম কাটিয়ে আজ প্রায় সারাদিন-ই পরে পরে ঘুমুচ্ছে অঙ্কন। কিছুক্ষণ উঠে বসলেই কেমন যেন একরাশ ক্লান্তিরা ভর করছে। শরীর কেমন যেন আজকাল নিয়ন্ত্রণে বাহিরে চলে যাচ্ছে। হয়তো বিক্ষিপ্ত মন-ই এর জন্য দায়ী।
অনন্যা বিছানায় অঙ্কনের মাথার কাছে বসে পড়ে। ঘুমন্ত চেহারার দিকে তাকিয়ে আর ডাকতে ইচ্ছে করছে না। তবে উপায় নেই। কপালে আলতো হাত ছু্ঁয়ে দেয়। তার কয়েক সেকেন্ড পরেই হাত’টা শক্ত হাতের মুঠোয় চাপা পড়ে। চোখ না খুলেই অস্ফুটস্বরে বলে,
” অনন্যা!”

অনন্যা অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকায়। অজান্তেই মুখ হাঁ হয়ে যায়। ততক্ষণে সে ধরফরিয়ে উঠে বসেছে। বাচ্চাদের মতো চোখ কচলাতে কচলাতে বলল, ” অনন্যা, তুমি কখন এসেছো!”

” এই, একটু আগে!” অনন্যা উঠে দাঁড়ায়।
” আমার সাথে এসো।”

অঙ্কন অবাক চোখে তাকায়। ইদানীং অনন্যার পাগলাটে রুপটা আর দেখা যায়না। হয়তো কয়েক মাসে বয়সের চাইতে মানসিক বয়সটা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। এরকম টাই সে দেখতে চেয়েছিল তবে আজ বড় মিস করছে সেই পাগলাটে, চঞ্চলমতি অনন্যার কোমল রুপটাকে। হঠাৎ অধৈর্য্য হয়ে সে অনন্যার হাত টেনে ধরে। মুহুর্তের মাঝেই খুব কাছে চলে যায়। এতোটাই কাছে যতোটা কাছে গেলে একজন আরেকজনের নিঃশ্বাস শুনতে পায়। দু’হাতে অনন্যার মুখমন্ডল চেপে ধরে সে। অজান্তেই গভীর কালো কুচঁকুচেঁ দু’টো চোখের দিকে নিবিড়ভাবে তাকায়। অঙ্কন জানে ঐ চোখ দু’টোতে এক আকাশ অভিমান জমিয়ে নীরব দৃষ্টি বিনিময় হচ্ছে।
” অনন্যা, কী হয়েছে? যাব কোথায়?”

” আন্টি বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। সব আমার জন্য।” অনন্যা ঠোঁট কামড়ে শান্ত চোখে তাকিয়ে বলল।

অঙ্কনের হাত শিথিল হয়ে আসে। মুহূর্তেই মাঝেই চোয়াল শক্ত হয়ে উঠে। ” আগে পিছে না ভেবেই কেন সবকিছুর জন্য তুমি নিজেকেই দায়ী করো! এইরকম কথা শুনতে আমার ভালো লাগেনা তবু বারবার তুমি একই ভুল করো।”
অঙ্কন উঠে দাঁড়ায়। অনন্যা শান্তভঙ্গীতে ড্রয়িংরুমের দিকে পা বাড়ায়।

আজই অনিকের সাথে প্রথম দেখা তাও আবার এরকম জটিল পরিস্থিতিতে। অঙ্কনের এবার লজ্জাই লাগছে নিজেদের পারিবারিক সমস্যায় এবার উনাকেও বিব্রত হতে হচ্ছে।
একে একে সকল আত্নীয় স্বজন ও সম্ভাব্য সকল যায়গায় ফোন করে যখন কোণ খুঁজ পেলো না তখন অন্বেষা একরকম হতাশ ভঙ্গিতেই বসে পড়লো। অঙ্কন ভেতরে ভেতরে চিন্তিত হলেও বাহিরে তা প্রকাশ করলো না।

অনন্যা ‘র চোখ মুখের অবস্থা দেখে অনিক কিছু বলতেও পারছে না। এদিকে বাবা- মা তাড়া দিচ্ছে বাড়ি ফেরার। কী বলবে সে! হতাশ হয়ে উঠে দাঁড়ায়। এলোমেলো পায়চারি করতে থাকে। এরপর হঠাৎ মনে করার ভঙ্গিতে বলল,
” অঙ্কন, আমার মনে হচ্ছে আপনার মা তার কোন ঘনিষ্ঠ আত্নীয়ের বাসাতেই আছে?”

” সবাইকেই তো ফোন করলাম কেউ-তো কিছু বলল না। কোন আশ্বাস দিতে পারলো না। উলটো ছোট মামা ফোনে শাসালেন তার বোনের কিছু হলে আমরা দায়ী। উনি কাউকেই ছাড়বেন না।” অন্বেষা কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল।

কথাটা শোনামাত্র অনিক তীর্যকভাবে তাকায়।
” আচ্ছা, আপনার ছোট মামা যা বলেছে তার সাথে বাকি সবার কথাবার্তার কিছু রকমভেদ চোখে পড়েছে কি?”

” কী আর চোখে পড়বে। বিপদে পড়লে গাধাও লাথি দেয় এটাই ন্যারাচাল!” অন্বেষা নখ খুটতে খুটতে বলল।

” এক্সাক্টলি, একটু বিষয় টা নিয়ে ভাবুন। কারো কথায় সন্দেহজনক কিছু থাকলেও থাকতে পারে। আমার যতদূর মনে হচ্ছে উনি কোন নিকট আত্নীয়’র বাসাতেই আছেন তবে চাচ্ছেন না ব্যাপার’টা আপনারা জানুন।”

অঙ্কন কথাটা শুনেই সচকিত হয়ে তাকালো। ” আমার মনে হচ্ছে মা ছোট মামার বাসাতেই আছে। কজ অন্য কেউ আমাদের সাথে ফোনে উত্তেজিত হয়ে কথা বলে নাই সবাই কম বেশি দুঃখ প্রকাশ করেছে। আর উনি উলটো আমাদের শাসালেন।”

” এক্সাক্টলি আমি সেটাই মিন করছিলাম।”

” অন্বেষা, একটা কথা বলতো সেদিন ঠিক কী হয়েছিল?”

” কী আবার ফুপু আর বাবা দু’জনে মিলে মা’কে কথা শুনিয়েছিল। আর মা, বাবা আর তোর প্রতি কতটা সেন্সিটিভ তুই তো জানিস ভাইয়া। নিতে পারেনি। বাবা চলে গেলে মা যে কখন বাড়ি ছেড়ে গেল বুঝতেও পারলাম না”

অঙ্কন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,” আমি মামার বাসায় যাচ্ছি। তুই বাসায় চলে যা।”

” আমিও যাব তোমার সাথে। আই থিংক আমার যাওয়াটা উচিৎ। ” অনন্যার বলা কথাটা শুনে অনিক চমকে উঠে। এ ভারী জ্বালা হলো মা বাবা খুব রাগ করবে। কিন্তু এখানে সে বাঁধাই বা দেয় কিভাবে? একরাশ দ্বিধা নিয়ে অঙ্কনের দিকে তাকায়।

অঙ্কন হয়তো সে চোখের ভাষা বুঝতে পারে। দীর্ঘ শ্বাস ফেলে অনন্যার দিকে সরু চোখে তাকিয়ে বলল,
” বাসায় যাও। জেদ করোনা। ফিরতে রাত হবে।”

” আমি বলেছি যখন তখন নিশ্চয়ই যাব। ভাইয়া তুই অন্বেষাকে পৌছে দিয়ে বাসায় ব্যাক কর। আমি অঙ্কনের সাথে যাচ্ছি।”

অঙ্কন, অনিক দু’জনেই চমকে তাকায়। অনন্যার এই জেদের কথা সবার’ই জানা। তাই না পেরে অনিক আর ওঁকে কিছু বললো না।

” অনন্যা, আমি জানি না তোমাকে দেখে মা কী রিয়েক্ট করবে তাই তোমাকে আনতে চাইনি। কিন্তু তুমি কথাই শুনলে না।” অঙ্কন ইতস্তত করে বলল।

” সেটা আমি বুঝে নিব তোমাকে অহেতুক চিন্তা কে করতে বলেছে!”

কথাটা শোনামাত্র অঙ্কন সরু চোখে তাকায়। অনন্যা বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে। সন্ধ্যে জমে গেছে। চারপাশে আধাঁর ছেঁয়ে ধরলো বলে!

” সেটাই! আমাকে কেউ বলে দিবে তারপর আমি চিন্তা করব।”

” আমি সেভাবে কিছু মিন করিনি! তুমি কী রেগে গেলে !”

” নাহ্” অঙ্কন নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে তাকায়।
” নামো! এসে পড়েছি।”

অনন্যা বাহিরের দিকে তাকায়। একটা বহুতল ভবনের পার্কিং লটে গাড়ি পার্ক করে ওঁরা লিফটে উঠে পড়ে।

সাততলার ডানদিকের ফ্ল্যাটে বেশ কয়েকবার কলিং বেল বাজার পর দরজা খোলা হয়।

ওঁদের দেখেই আরজু আহমেদ চোখ কপালে তুলে বললেন, ” তোমরা এখানে?”

অঙ্কন কিছু না বলেই তার মা’কে ডাকতে লাগলেন।

” আশ্চর্য অঙ্কন, আমি যা বলার ফোনেই তো বলেছি তোমার মা এখানে না। তবুও এভাবে ডেকে যাচ্ছ বুঝলাম না।”

অঙ্কনের ডাকে তার মা বের হয়ে এলেন না তার বদলে এলেন সুমি সম্পর্কে তার মামি।
উনি এসেই স্বামীর কান্ডকারখানা দেখে হতবাক।
” আশ্চর্য অঙ্কন এসেছে, সাথে মেয়েটাও আছে তুমি এখন পর্যন্ত বসতে বলো নাই। কেমন মানুষ তিনি।”

আরজু, স্ত্রীর চোখ অনুসরণ করে ভ্রু কুঁচকে অনন্যার দিকে একবার তাকিয়ে ফের চোখ নামিয়ে নেয়।

অনন্যাকে নিয়ে ততক্ষণে মামি সোফায় বসে গেছে। তবে অঙ্কন বসলো না। বরং বিরক্তিভরা চোখে তাকিয়ে বলল, ” মামা, আমি জানি মা এখানেই আছে। প্লিইজ তাকে আসতে বলুন। না হয় আমিই খুঁজে নিয়ে আসছি।”

” এত কনফিডেন্স! ভালো খুব ভালো। তোমার মতো সুপুত্র থাকতে আমার বোন বাসা থেকে চলে আসে কী করে অঙ্কন! লেট মি এক্সপ্লেইন!”

অঙ্কন কথা না বাড়িয়ে উদ্ধত ভাবে ডানদিকের বেডরুমের দিকে পা বাড়ায়।

” কোথায় যাচ্ছ তুমি বললাম না তোমার মা নেই।” অঙ্কন কথাটা কানেই নিলো না।
উচ্চস্বরে তার মা’কে ডাকতে লাগল।

” এই ছেলে দাঁড়াও ! তোমার উপর আমার অনেক ক্ষোভ। আমার বোনকে কী ভেবেছো কী? তার কোন আত্নসম্মানবোধ নেই। তার গোটা জীবন তোমার জন্য উৎসর্গ করে কী দাম পেল!
তুমি আমার বোনের সেন্টিমেন্টের কী দাম দিলে! তুচ্ছ কারণে আমার বোনকে কাঁদিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে চলে গেলে…
ভালো লায়েক হয়েছো, সুপারস্টার টাকা পয়সার অভাব নেই এখন আমার বোনের কী মূল্য। অতীত ভুলে যেওনা, আমার বোন না থাকলে আজ হয় বখে যাওয়া মাস্তান গুন্ডাই হতে! নয়তো মায়ের মতো কবরে থাকতে হতো।কেউ ফিরেও তাকাতো না। কেবল আমার বোন দয়া করেছিলো বলে!”

অঙ্কন স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। মাথাটা কেমন চক্কর দিয়ে উঠে। আজ এতবছর পর অতীত টা যেন আয়নার মত সামনে এসে দাঁড়িয়েছে নয়তো সে ভুলেই গিয়েছিলো।

এর কয়েকমুহুর্ত পরেই অনীলা দৌড়ে আসে। অঙ্কন নিষ্পলক তাকিয়ে থাকে। এই মানুষটা কে সে কষ্ট দিয়েছে। যে তিল তিল করে তাকে নিজের হাতে গড়েছে। কেন করেছে সে! কারো দয়ায় বেঁচে থেকে এতোটা ঔদ্ধত্য তার দেখানো অনুচিত কেন বারবার ভুলে যায়!

অঙ্কনের ঘোর কাটে। ঠাঁস করে চড় খাওয়ার শব্দে। আরজু অপমানটা নিতে পারলো না। গাল হাত দিয়ে তাকিয়ে রইলো বোনের নৃশংস রুপের দিকে।
” অঙ্কন আমার আর ইমতিয়াজের সন্তান! আর একবার এই ধরনের নোংরা কথা বলার চেষ্টা করবি তো আমি জীবনেও তোর মুখ দেখব না।”

আরজু কেবল অস্ফুটস্বরে উচ্চারণ করলো,
” আপা!”

” আমার ছেলে আমাকে বুঝতে দে। তোকে এত কথা কে বলতে বলেছে। আমি আমার ছেলেকে ভালোবাসি এখানে দয়ার প্রসঙ্গ তুই তুললি কী করে! তোর মন এত নোংরা। ছিঃ তুই আমার ভাই না।” অনীলা ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে ছেলের দিকে। কেমন মাথা নিচু করে ফ্লোরের দিকে চেয়ে আছে। আজ আরজু যা বলল তারপর কী করে ছেলেকে সামলাবেন উনি এখন সেটাই ভাবছেন। সমস্ত রাগ অভিমান গলে জলের মতো হয়ে গেছে ছেলের মুখে মা ডাক শুনে।

অনন্যা কিছুক্ষণ ফ্যাঁল ফ্যাঁল করে চেয়ে থাকল। যা শুনছে তাতে ওঁর মাথা ধরার যোগাড়। তবে এটুকু নিশ্চিত কোন এক দুঃসহ অতীত অঙ্কনকে কুঁড়ে কুঁড়ে খায় যেটা অনন্যাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি সে।
অনন্যা উঠে দাঁড়ায় অনীলার কাছে গিয়ে হাত জড়িয়ে ধরে, ” আন্টি, প্লিজ আপনি আমার জন্য অঙ্কনকে ভুল বুঝবেন না। ওঁ আপনাকে খুব ভালোবাসে। আপনাকে ছাড়া সে ভালো নেই আপনি তো জানেন। আপনি তো ওঁকে ভালো চিনেন। প্লিজ বাড়ি ফিরে চলুন। আর রাগ পুষে রাখবেন না।”

অনীলা সরুচোখে তাকায় অনন্যার সহজ সরল মুখপানে। যতবার তাকাচ্ছে ততবার মনে হচ্ছে কী যেন এক ভুল হতে যাচ্ছে। হয়তোবা উনি কোন ভুল করছেন।
অনন্যা আবার বলল,
” আন্টি, আমি নেক্সট উইকে চলে যাচ্ছি। আমি হয়তো আপনার আশা ভরসা বিশ্বাস কিছু রাখতে পারিনি। পারলে এই মেয়েটাকে একবার ক্ষমা করবেন। হয়তো আর দেখা হবে না। যদি বেঁচে থাকি তবে সারাজীবন আমি আপনাকে মনে রাখব। একবার যখন আমি আমার এই মা’কে ভালোবেসেছি তখন ভুলতে চাইনা। আমার আপনার প্রতি বিশ্বাস আছে আপনি সময়মতো ঠিক সিদ্ধান্তই নেবেন। আপনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন তা আমার শিরোধার্য। আমি কোন বাঁধা দেব না। আমার ভালোবাসার দু’টো মানুষকে এইভাবে আলাদা দেখলে দূরদেশে থেকেও আমি শান্তি পাবোনা। আমি তাদের জীবন থেকে বহুদূরে চলে গিয়েই যদি শুনি তারা ভালো আছে সুখে আছে তবেই শান্তি পাব। ”

অনীলার চোখ দু’টো জ্বলতে থাকে উনি আর অনন্যাকে কিছু বলতে দেন না। তার পূর্বেই অনন্যাকে জড়িয়ে ধরে আধভাঙ্গা গলায় বলেন , ” এত কথা কেন বলো তুমি?”

” যদি আর সময় না পাই!” কথাটা শুনার সাথে অনীলা দু’চোখের জল ছেড়ে দিয়ে অনন্যাকে বুকে টেনে নেন। একজীবনে এত ভালোসার ঋণ তার পক্ষে শোধ করা সম্ভব না।

আরজু এই মিলনমেলা দেখে বহু আগেই নিজের ঘরে চলে গেছেন। এবার সুমিও উঠে যায়।
চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে