#চন্দ্ররঙা_প্রেম_২
#পর্বঃ১
#আর্শিয়া_সেহের
-“মামা দেখো, ওই মেয়েটার সাথে ওই ছেলেটা দুষ্টুমি করছে। মেয়েটা কান্না করে দিবে তো। ওই দুষ্টু ছেলেটাকে কিছু বলো তো গিয়ে।”
পাঁচ বছর বয়সী ভাগ্নি সাঁঝের কথায় সেদিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো রুশান। সাঁঝের ভাষায় ছেলেটা যে দুষ্টুমি করছে সেটা আসলে অসভ্যতামি। শপিং মলের মতো পাবলিক প্লেসে মেয়েটার ওড়না ধরে টানছে,বাজে ভাবে স্পর্শ করছে। রুশানের শরীর রাগে রি রি করে উঠলো । কিন্তু সেই রাগ ছেলেটার প্রতি না,সেই রাগটা মেয়েটার প্রতি। ছেলেটাকে কষে একটা থাপ্পড় মেরে দিলেই তো হয়।
রুশান সাঁঝকে নিয়ে এগিয়ে গেলো সেদিকে। কড়া গলায় বললো,
-“এই যে মিস্টার, পাবলিক প্লেসে এগুলা কেমন অসভ্যতামি? মেয়েটার থেকে দূরে যান।”
মেয়েটা চমকে তাকালো রুশানের দিকে। পেছন থেকে ছেলেটা বিশ্রী ভঙ্গিতে বললো,
-“মেয়েটার নাগর নাকি তুই? তোর জ্বলে কেন?”
রুশান এটুকুতেই বুঝে গেল ছেলেটা চরম মাত্রার বেয়াদব। সাঁঝ পাশে আছে তাই রুশান বহু কষ্টে নিজের ক্রোধ সামলে বললো,
-“দেখুন ,আমি আপনার সাথে ভদ্র ভাবে কথা বলছি। আপনি দয়া করে অভদ্রদের মতো আচরণ করবেন না। আর মেয়েদেরকে সম্মান করতে শিখুন। তাদের সাথে এরকম অসভ্যতামি করে অভদ্রতার পরিচয় দিবেন না। ”
ছেলেটা তেড়ে এলো রুশানের দিকে।রুশানের কলার ধরে বললো,
-“আমারে ভদ্রতা শিখাইতে আসছোস তুই? তুই জানোস আমি কে? চিনোস আমারে? এই এলাকার লোকেরা যার নাম শুনলেই কেঁপে ওঠে সেই আহাদ মুন্সির ছোট ছেলে আরিয়ান আমি। বেশি কথা বলবি তো একদম পুঁতে ফেলবো। আর আমার হবু বউয়ের সাথে আমি যা ইচ্ছা করবো। তোরে কেউ দেখতে বলছে?”
হবু বউ কথাটি শুনেই রুশান কিছুটা দমে গেলো। আরিয়ানের পেছনে দাঁড়িয়ে মেয়েটি এসব দেখে কাঁপছে। এগুলোর ঝাল তো তারই সহ্য করতে হবে।
সাঁঝ কোমড়ে হাত দিয়ে সামনে এসে বললো,
-“এই দুষ্টু ছেলে,আমার মামার কলার ছাড়ো। ছাড়ো বলছি।”
আরিয়ান এইটুকু মেয়ের কথায় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো। রুশান আলগোছে নিজের কলার ছাড়িয়ে নিলো আরিয়ানের হাত থেকে। বিদ্রুপের হাঁসি হেঁসে বললো,
-“বাপের পরিচয়ে আর কয়দিন ভাই? পারলে নিজের একটা পরিচয় বানান।”
রুশান আরিয়ানকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সাঁঝের হাত ধরে উল্টো হাঁটা শুরু করলো। কিছু একটা ভেবে আবার পেছনে ফিরে মেয়েটাকে উদ্দেশ্যে করে বললো,
-” দোষ এসব ছেলেদের না। দোষ আপনাদের মতো মেয়েদের যারা নিজেদের সম্মান ধরে রাখার জন্য কঠিন হতে পারে না। মুখ বুঁজে সহ্য করে এই অসম্মান।”
রুশানের কথায় মাথা উঁচু করে তাকালো মেয়েটি। একরাশ অসহায়ত্ব ফুটে রয়েছে সে চোখে। তার ভাসা ভাসা চোখ দুটো যেন অনেক কিছুই বলতে চায়।
রুশান সেই চোখের দিকে বেশিক্ষণ তাকাতে পারলো না। ধুপধাপ পা ফেলে প্রস্থান করলো সেখান থেকে।
….
বাইক চালিয়ে একটি রিক্সার পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় রিক্সায় বসা মেয়েটির ওড়নার একপ্রান্ত উড়ে এসে রুশানের মুখে পড়লো। পাতলা জর্জেটের ওড়নাটি রুশানের মুখের সাথে লেগেই চলে বেশ কিছু দূর। যানবাহন ভর্তি রাস্তায় হঠাৎ এমন বিপত্তির সম্মুখীন হয়ে মেজাজ বিগড়ে গেলো রুশানের। কোনো রকমে বাইক থামিয়ে পেছন দিকে তাকালো। রিক্সাটা তার থেকে বেশ কিছুটা দূরে।
সকালের শপিং মলের ঘটনার পর থেকেই তার মেজাজ বিগড়ে আছে। সাঁঝকে বাড়িতে রেখে সে একটা দরকারি কাজে বেরিয়েছে। এখানেও বাঁধা বিপত্তি।
রিকশাওয়ালা কাছাকাছি আসতেই রুশান রিকশায় বসা মেয়েটির দিকে তাকালো। কাকতালীয় ভাবে এটি সকালের সেই মেয়েটিই। মেয়েটির শরীরে এখন জর্জেটের ওড়নার জায়গায় একই রঙের সুতির ওড়না জড়ানো।
মেয়েটি রুশানকে দেখে রিকশা থেকে নেমে এলো। ভাড়া চুকিয়ে রুশানের সামনে এসে দাঁড়ালো। মাথা নিচু করে বললো,
-“সরি। আমার জন্য আপনাকে আবারও ভোগান্তিতে পরতে হলো।”
রুশান ভ্রু কুঁচকে বললো,
-“ওড়না কয়টা লাগে? আপনার ওড়নার জন্য তো আমার এক্সিডেন্টও হতে পারতো ,তাইনা?”
মেয়েটি চকিতে মাথা তুলে বললো,
-“ছি ছি। এসব বলবেন না। আমি সত্যিই বুঝতে পারিনি। আসলে জর্জেটের ওড়নায় আমার অস্বস্তি হচ্ছিলো বিধায় আমি ব্যাগ থেকে সুতি ওড়না বের করে শরীরে জড়াচ্ছিলাম। তখনি ওড়নাটা উড়ে গেলো। আমি আসলে সামলাতে পারিনি।”
রুশান এগিয়ে এসে ওড়নাটা মেয়েটির হাতে দিয়ে বললো,
-“জর্জেটের ওড়নায় সমস্যা হয় তো পড়েছেন কেন? আর সুতি ওড়না কাছে থাকার পরও জর্জেটের ওড়না পড়ার কোনো কারন তো দেখছি না।”
মেয়েটি নিঃশব্দে ওড়নাটা নিয়ে নিলো। রুশানের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো ভাষা আপাতত তার জানা নেই।রুশান কিছুক্ষণ উত্তরের অপেক্ষা করে আবারও বললো,
-“এই যে মিস..”
-“পিহুক। পিহু বলতে পারেন।”
-“আচ্ছা মিস পিহু, উত্তর তো দিলেন না।”
পিহু ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
-“কারনটা আরিয়ান। ও জোর করে এই ওড়না পড়িয়েছে আমাকে।আর আমারও মেনে নিতে হয়েছে।”
রুশান স্পষ্ট দেখলো পিহুর চোখে পানি টলমল করছে। বেশ অবাক হলো সে। হবু বরের কথা বলতে গিয়ে কাঁদার কারন কি?
রুশান বেশ আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞাসা করলো,
-“সে তো আপনার হবু বর। তাহলে আপনার সাথে এখনি এরকম ব্যবহার কিভাবে করে? আর আপনিও বা মেনে নেন কিভাবে? তাছাড়া আপনার পরিবার? তারা কিভাবে পারলো এরকম নোংরা মানসিকতার একটা মানুষের সাথে আপনার বিয়ে ঠিক করতে?”
পিহু এদিক ওদিক তাকিয়ে কান্না আটকালো। ভারী গলায় বললো,
-“সে অনেক কথা। আমাদের রাজি না হয়ে কোনো উপায় নেই।সবটা না শুনলে আপনিও বুঝবেন না।”
রুশান হাতঘড়িটার দিকে তাকালো। তাকে জরুরি একটা কাজে যেতে হবে। আবার এই মেয়েটির কথাগুলোও তার শুনতে ইচ্ছে করছে। যদি মেয়েটিকে কোনোভাবে সাহায্য করা যায়।
রুশান পিহুকে একটু অপেক্ষা করতে বলে কাউকে ফোন করলো। ওপাশ থেকে রিসিভ হতেই রুশান বললো,
-“তনিম,আজকে আমার আসাটা কি খুব জরুরী? তোমরা কোনোভাবে কাজটা হ্যান্ডেল করতে পারবে না?”
রুশানের কথায় তনিম আশেপাশে একনজর তাকালো। তারপর একটু সাইডে এসে বললো,
-“আপনি আসলে ভালো হয়, স্যার।”
-“দেড় ঘন্টা পরে আসি তাহলে? আই হোপ তুমি ম্যানেজ করতে পারবা।”
বলেই ফোন কেটে দিলো রুশান। তনিম পড়লো মহা ফ্যাসাদে। তবুও খুব কষ্টে সামলে নিলো সবটা। রুশান তার সমবয়সী হওয়া সত্ত্বেও ছেলেটাকে সম্মান করতে ভালো লাগে তার। ভীষণ বুদ্ধিমান এই ছেলেটির কাজে মুগ্ধ তনিম।
রুশান বাইকটি পার্ক করে পিহুর দিকে এগিয়ে এলো। আশেপাশে নজর দিয়ে বললো,
-“একটা কফিশপে গিয়ে বসি? যদি আপনার সমস্যা না হয়।”
পিহু ব্যাস্ত ভঙ্গিতে বললো,
-“আরে না না। কোনো সমস্যা নেই। তাছাড়া আপনার সাথে কথা বলে আমি বেশ হালকা হতে পারছি।”
রুশান হেঁসে পিহুর সাথে পাশের একটি কফিশপে গিয়ে বসলো। রুশান বসে ওয়েটারকে ডাকলো ইশারায়। পিহুর তখন হঠাৎ করেই চোখ পড়লো রুশানের চুলের দিকে। ঘন, কালো , সিল্কি আর বেশ বড় বড় চুল। চুল থেকে পিহুর চোখ নেমে এলো রুশানের মুখে। মোটা মোটা ভ্রুর নিচে মাঝারি আকারের চোখ। চোখের মনি পুরোপুরি কালো না। অনেকটা ছাই বর্নের। পাতলা ঠোঁট জোড়া হালকা গোলাপী।
পিহুর কপাল কুঁচকে গেলো। রুশানের ঠোঁট থেকে চোখ সরিয়ে নিলো সে। ছেলেদের ঠোঁট কেন এমন হবে? ছেলেদের ঠোঁট হবে কালচে ধরনের আর পুরু। মেয়েদের মতো পাতলা আর গোলাপী ঠোঁট ছেলেদের হওয়া উচিত নয়। এটা অন্যায়।
-“তো মিস পিহু, এবার বলুন আপনার কাহিনী। আমি শুনতে আগ্রহী।”
রুশানের কন্ঠে পিহু নড়েচড়ে বসলো। তারপর বলতে শুরু করলো,
-” আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। বাবা-মা আর তিন বোন নিয়েই সংসার। বড় আপু মানসিক ভারসাম্যহীন। একবছর আগে বড় আপুর ছেলেকে তার শ্বশুরবাড়ির উঠান থেকেই কেউ একজন চুরি করে নিয়ে যায়। তারপর থেকেই আপু পাগল। দুলাভাই আপুকে সেদিনই বাড়িতে রেখে যায়। আর কখনো নিতে আসেনি।
বোনদের মধ্যে আমি মেজো। আর আমার থেকে দু বছরের ছোট আরেকটা বোন আছে।
একদিন কোনো এক দরকারে আমাদের ভার্সিটিতে আসে আরিয়ান। সেদিনই ওর চোখ পড়ে আমার উপর। আমাকে ফলো করে করে বাড়ি পর্যন্ত আসে। কয়েকবার প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার পরও রাজি হইনি আমি। বড়লোকের বখে যাওয়া ছেলেকে কেই বা ভালোবাসতে চাইবে বলুন?আমিও চাইনি। তাই সে আমার বাড়িতে আসে প্রস্তাব নিয়ে। আরিয়ানের মতো সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানো ছেলে বিনা কারনে নিশ্চয়ই আমার জন্য প্রস্তাব নিয়ে আসবে না বাড়িতে? বাবা ওর ব্যাকগ্রাউন্ড জেনে সরাসরি না করে দেয় ওকে। সেই থেকে ওর বাবার প্রতিও ক্ষোভ জন্ম নেয়। একদিন সুযোগ বুঝে বাবার এক্সিডেন্ট করিয়ে দেয় আরিয়ান।”
এটুকু বলেই অঝোরে কেঁদে উঠলো পিহু। রুশান এখন অনেকটাই পেয়ে গেছে তার প্রশ্নের উত্তর। পিহু আস্তে আস্তে সামলে নিলো নিজেকে। এর মধ্যেই ওয়েটার কফি নিয়ে চলে এলো। পিহু বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো কফি মগের উপর দিয়ে উড়ে চলা ধোঁয়ার দিকে।
ওয়েটার ছেলেটি চলে যেতেই পিহু আবারও বলতে শুরু করলো,
-“বাবা একটি কম্পানিতে চাকরি করতো। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিও সে ছিলো। হঠাৎ তার এই এক্সিডেন্টে আমাদের অবস্থা কেমন হয়েছিলো বুঝুন একবার। তার উপর বড় আপুও আমাদের বাড়িতে। মায়ের ও বিভিন্ন ধরনের রোগ আছে। সব মিলে অকুল পাথারে পড়ে গেলাম। আমার ছোট বোনকে মামা নিয়ে গেলো সাথে করে। ওর সমস্ত ভরনপোষনের দায়িত্ব মামা নিলেন। প্রথম দিকে আমাদেরকে মামা-খালা-চাচা সবাই বেশ সাহায্য করলেও আস্তে আস্তে তারাও সরে গেলেন। ছোট বোনটা আমাদের কাছে আসতে চাইলেও পরিস্থিতি ভেবে তাকে কড়া কড়া কথা শুনাই যাতে কষ্ট পেয়ে ও দূরেই থাকে।
এসবের মধ্যেও আরিয়ান বেশ কয়েকবার বাড়িতে এসেছে। সংসারের সব দায়িত্ব সে নিবে শুধুমাত্র আমাকে তার সাথে বিয়ে দিতে হবে এই শর্তে। এক সময় আমরাও হাঁফিয়ে উঠলাম।একটি পরিবারের একজন বয়স্কা মহিলা,একজন পঙ্গু পুরুষ,একজন মানষিক ভারসাম্যহীন মেয়ে আর একটা যুবতী মেয়ে কতদিন লড়তে পারে সমাজের সাথে বলতে পারেন? আমরা হেরে গেলাম। নানা জায়গায় চাকরির খোঁজ করেও একটা চাকরি হলো না আমার। শেষমেষ কোনো উপায় না পেয়ে মা আরিয়ানের দ্বারস্থ হলেন। সেই থেকে সংসার ভালো চললেও অর্ধমৃত হয়ে বেঁচে রইলাম আমি। আর কিছুদিন পরই আরিয়ানের সাথে বিয়ে আমার।”
রুশান দীর্ঘশ্বাস ফেললো একটা। সত্যিই এই দুনিয়ায় এক একজন এক একরকমের কষ্ট নিয়ে দিনাতিপাত করে। একজন কখনোই অন্য জনের কষ্ট পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারে না। সবার কাছে মনে হয় তার কষ্টটাই সবচেয়ে বেশি।
পিহু চোখ মুছলো। রুশান কফির মগে একবার চুমুক দিয়ে বললো,
-“আচ্ছা আপনার পড়াশোনা কতদূর?”
-“এইতো অনার্স তৃতীয় বর্ষে আছি। ম্যানেজমেন্টে।”
রুশান কিছুক্ষণ ভেবে বললো,
-” আমি যদি আপনার জন্য কোনো চাকরির ব্যবস্থা করতে পারি তাহলে কি আপনি আরিয়ান নামক সমস্যাটা উপড়ে ফেলতে পারবেন?”
পিহুর চোখ চকচক করে উঠলো। ও তো মুক্তিই চায়। রুশান পিহুর চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“আমি হয়তো আপনার চোখ পড়তে পেরেছি। আপনি আপনার বা আপনার গার্ডিয়ানের নাম্বারটা আমাকে দিয়ে যান।আমার দুলাভাইয়ের অফিসে আমি আপনার জন্য একটা চাকরির ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবো। কাল সকালে আপনাকে জানিয়ে দিবো ফোন করে।”
পিহু কৃতজ্ঞতার হাঁসি হেঁসে তার নিজের নাম্বার দিয়ে দিলো রুশানকে। ছেলেটাকে বড্ড বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে তার। রুশান একবার হাতঘড়ির দিকে তাকালো। টাইমটা দেখে পিহুর দিকে তাকিয়ে বললো,
-“আমার একটা দরকারি কাজ আছে। যেতে হবে এখন। আপনি কফি শেষ করে ধীরে সুস্থে বাড়ি যান। আসি।”
রুশান তড়িঘড়ি করে উঠে কাউন্টারে বিল পেমেন্ট করে কফিশপ ছেড়ে বেরিয়ে গেলো।
পিহু একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো রুশানের দিকে। যেখানে আত্মীয়-স্বজন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সেখানে অচেনা একটা ছেলে ওকে সাহায্য করতে চেয়েছে এটাই বা কম কিসে?
…
-“পাপা জানো? আজকে শপিং মলে একটা দুষ্টু লোক মামার কলার ধরেছিলো।”
শান টাই ঢিল করতে করতে বললো,
-“ওরে বাবা তাই নাকি? তা তোমার ব্রেভ মামা দুষ্টুটাকে কিছু বলেনি?”
সাঁঝ দুই হাত বুকে বেঁধে মুখ বাঁকিয়ে বললো,
-“উঁহু। কিচ্ছু বললো না। আমাকেও ঝগড়া করতে দিলো না।ওখানে একটা আন্টি ছিলো বুঝেছো? ওই আন্টিকে দেখেই মামা কিছু বলেনি। মেয়ে দেখলে মিউ মিউ করে শুধু।”
রুমঝুম শানের জন্য শরবত নিয়ে এসে দুজনের কথপোকথন শুনলো। শরবতের গ্লাস শানের হাতে দিয়ে রুমঝুম মেয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। চোখ ছোট ছোট করে বললো,
-” আমার ভাই মেয়ে দেখলে মিউ মিউ করে? বাপ বেটি মিলে এসব কথা বলিস? ”
সাঁঝ দু’হাতে মুখ চেপে বললো,
-“আমি কখন বললাম এসব? আমি তো বলিনি।”
রুমঝুম মুখ বাঁকিয়ে বললো,
-“আমি সব শুনেছি। আমার ভাই আসুক আজ। সব বলে দিবো।”
শান শরবত শেষ করে হাঁসতে হাঁসতে বললো,
-“তোমার মামা অন্য মেয়েদের সামনে মিউ মিউ করছে শুনলে তোমার পুনম আন্টি কোমড় বেঁধে নেমে পড়বে তোমার মামাকে মারার জন্য। যেমনটা তোমার মাম্মা করে মাঝে মাঝে।”
রুমঝুম রাগী চোখে তাকালো শানের দিকে। শান দাঁত বের করে হেঁসে ওয়াশ রুমে ঢুকে পড়লো। সাঁঝ কিছু না বুঝেই হেঁসে লুটোপুটি খেলো বিছানার উপর।
চলবে………
(ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই।)