চন্দ্ররঙা প্রেম পর্ব-২০

0
1942

#চন্দ্ররঙা_প্রেম
#পর্বঃ২০
#আর্শিয়া_সেহের

রুশান রুমঝুমকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বসে আছে। হাত-পা কাঁপছে অস্বাভাবিক গতিতে। রুমঝুম ভাইকে জড়িয়ে ধরে চুপচাপ বসে আছে। মেঘা রুশানের পায়ের দিকটাতে বসে আছে। শান দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে।

রুশান‌ ক্ষনকাল চুপ থেকে বিরবির করে বললো,
-“আপু ভাইয়া মরে নি। ভাইয়া বেঁচে আছে। আমি দেখেছি ভাইয়াকে। ”
রুমঝুম রুশানের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
-“আমি জানি ভাইয়া বেঁচে আছে। ভাইয়াকে আমি নিয়ে এসেছি।”

রুশান তড়িৎ গতিতে রুমঝুমকে ছেড়ে উঠে বসলো। বিস্ময়কর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,
-“ভাইয়াকে কি করে পেয়েছো তুমি? ও তো আরমানের কাছে। ও তো আরমানের লোক। ভাইয়া আমাদের চিনে না তো আপু।”

বলতে বলতে রুশান কেঁদে উঠলো। রুমঝুম মুচকি হেঁসে বললো,
-“ভাইয়া আমাদের না চিনলে তোকে কে বাঁচালো?”
রুশানের এতক্ষণে মনে হলো,’আসলেই তো। কে বাঁচালো ওকে?”

শান রুশানের কাছে এগিয়ে এলো। রুশানের মুখে হাত বুলিয়ে বললো,
-“সেদিনের কথা কিছু মনে আছে?”
রুশান চোখ বন্ধ করে পুরোটা মনে করলো।
সেদিন আরমান ওকে বেধড়ক পিটিয়েছিলো। রুশান প্রচন্ড ব্যাথায় অজ্ঞান হওয়ার আগে আবছা চোখে দেখেছিলো রুমেলকে ওর দিকে এগিয়ে আসতে। এরপর আর কিছুই মনে নেই ওর।

রুশান মেঘা,শান আর রুমঝুমকে সবটা বললো। শান রুশানের দিকে তাকিয়ে হালকা হাসলো। রুশানের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললো,
-“তোমার সাথে হওয়া প্রতিটি অত্যাচারের বদলা তুমি নিজ হাতে নিবে।”
রুশানের চোখ চকচক করে উঠলো শানের কথা শুনে।

মেঘা এক সাইডে গিয়ে রেজাউল সাহেবকে ফোন করলেন। এতো খুশির সংবাদ তাকে না জানালে হবে?
রেজাউল সাহেব প্রথমবারেই ফোন রিসিভ করলেন। ছেলেমেয়েদের খবর জানার জন্য এতোক্ষণ চাতকের মতো চেয়ে ছিলেন ফোনের দিকে।

-“আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল। আমি মেঘা।”
-“হ.. হ্যাঁ মেঘা বলো। ওদের পেয়েছো? পেয়েছো আমার ছেলেমেয়েকে?”
মেঘা মুচকি হেঁসে বললো,
-“পেয়েছি তো। আপনার ছেলে মেয়ে সবাইকে পেয়েছি। সাথে আরেকজনকে পেয়েছি।”

রেজাউল সাহেব অধীর আগ্রহে জিজ্ঞাসা করলেন,
-“আর কাকে পেয়েছো ,মা?”
-“রুমেল। আপনার হারানো সন্তানকে।”

রেজাউল সাহেব ক্ষণিকের জন্য বোবা হয়ে পড়লেন। কি বলবেন? অবাক হবেন নাকি খুশি হবেন? বুঝতে পারলো না। তার প্রথম সন্তান,তার পিতৃত্বের অনুভূতি জাগানো প্রথম মানিক। রেজাউল সাহের হঠাৎ করেই কেঁদে উঠলেন। তার বিশ্বাসই হচ্ছে না যে এতো বছর পর তার ছেলে ফিরে আসবে।

মেঘা রুশানের দিকে ইশারা করে জিজ্ঞেস করলো সে বাবার সাথে কথা বলবে কি না?
রুশান মাথা হেলিয়ে হ্যাঁ বোঝালো।
মেঘা ফোন হাতে রুশানের পাশে বসলো। রেজাউল সাহেবের উদ্দেশ্যে বললো,
-“রুশানের সাথে কথা বলুন , আঙ্কেল।”

রেজাউল সাহেব কান্না আটকালেন। ছেলে-মেয়েদের সামনে কান্না করা লজ্জার ব্যাপার। রুশান বেশ কিছুক্ষণ বাবার সাথে কথা বলে ফোনটা রুমঝুমের কাছে দিলো।
রেজাউল সাহেব হসপিটালের ঠিকানা চাইলো রুমঝুমের কাছে। রুমঝুম হসপিটালের ঠিকানা দেওয়ার পর রেজাউল সাহেব বললেন,
-“আমি রাতের মধ্যেই তোর মা’কে নিয়ে চলে আসবো।”
রুমঝুমের ইচ্ছে করলো না ওই মহিলার মুখ দেখার তবুও বাবার সামনে না করতে পারলো না। নতমুখে বললো,
-“আচ্ছা, সাবধানে এসো তোমরা।”

রুশান আড়চোখে চেয়ে বললো,
-“তোমরা মানে?কে কে আসছে?”
-“বাবা আর মা।”
রুশান ক্ষিপ্ত বাঘের মতো তেতে উঠে বললো,
-“খবরদার আপু। ওই মহিলা যেন আসে না। উনি আসলে আমি এখনি এখান থেকে চলে যাবো।বাবাকে বারন করো ওই মহিলাকে আনতে।”

রুমঝুমকে কিছু বলতে হলো না। রেজাউল সাহেব সবটাই শুনেছেন। তবে ছেলের এতো রেগে থাকার কারন বুঝলেন না। তারপরও ছেলেকে শান্ত করতে বললেন,
-“আমি একাই আসছি। ওকে শান্ত হতে বল।”

রুশান শান্ত হলো। রেজাউল সাহেব ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেললেন ড্রয়িং রুমে বসে। উপরে তাহমিনা বেগমের রুমের দরজায় একনজর তাকিয়ে বেরিয়ে গেলেন বাড়ি থেকে। যেতে যেতে কাজের মেয়েকে বললেন,
-“দরজা আটকে দে। রাতে আমি নাও ফিরতে পারি। তবে যখন ফিরবো আমার ভরা সংসার নিয়ে ফিরবো। তোর ম্যাডামকে বলে দিস।”

এতো বছরের কাজের জীবনে আজ প্রথম মেয়েটা রেজাউল সাহেবকে হাসতে দেখলো। তার চোখে মুখে ফুটে ওঠা আনন্দের ঝলকানি দেখলো। আহা! কাউকে এমন খুশি হতে দেখলেও কতই না ভালো লাগে।

শান,মেঘা,রুমঝুম অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রুশানের দিকে। নিজের মা’কে এতো ঘৃনা করার কারন কেউই বুঝতে পারছে না। তাহমিনা বেগম যতই খারাপ হোক রুশানকে ভীষণ ভালোবাসে। রুশানও তো তার মাকে ভালোবাসতো। হ্যাঁ,রুমঝুমের সাথে হওয়া অন্যায় দেখে মায়ের প্রতি তার ঘৃনা জন্মেছে এটা ঠিক কিন্তু তাই বলে এতোটা?

রুমঝুম রুশানের কাঁধে হাত রাখলো। রুশান মাথা নিচু করে আছে। রুমঝুমের স্পর্শে রুশান হালকা নড়ে উঠলো কিন্তু মাথা উঁচু করলো না। মাথা নিচু রেখেই বললো,
-“আমি জানি তোমরা কি ভাবছো। চলো আজ তোমাদেরকে সেই সময়টা থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি যে সময়টা থেকে ওই মহিলা মানে আমার তথাকথিত মা আমাকে ঘুরিয়ে এনেছিলো কিছুদিন আগে।

আজ থেকে বিশ বছর পূর্বের কথা। রুমেল ভাইয়ার তখন বছর পাঁচেক বয়স। সেই সময়টাতে তোমার মা রেহনুমার গর্ভে এসেছিলে তুমি। রুমেল ভাইয়া ছিলো আব্বুর জান।‌ হঠাৎ তোমার আগমনী বার্তায় রুমেল ভাইয়া মুখ ফুলালো।‌ সে চায় না তার ভালোবাসায় কেউ ভাগ বসাতে আসুক।
কিন্তু সে না চাইলেই কি হবে? সৃষ্টিকর্তা তো চেয়েছিলো তুমি আসবে। তাই সকল বাঁধা পেরিয়ে চলে এলে এ পৃথিবীতে। কিন্তু বাঁচলো না তোমার মা। তোমাকে মা ছাড়া দুনিয়ায় রেখে চললেন ওপারে আর তার সবটুকু মমতা বোধহয় রুমেল ভাইয়ার অন্তরে রেখে গেলেন। রুমেল ভাইয়া তার অপরিপক্ক হাতে তুলে নিলো তোমায়‌। সেই যে তোমায় হাতে তুলে নিলো তারপর এগারোটা বছর তার হাতেই গড়ে উঠেছো তুমি।

তোমার তিন মাস বয়সের সময় আব্বুর মনে হলো তোমাদের দুজনেরই একটা মা প্রয়োজন। পাঁচ-ছয় বছরের একটা ছেলে আর তিন মাসের একটা মেয়েকে তিনি একা হাতে কিভাবে সামলাবেন? তাছাড়া বড় আম্মুকে হারিয়ে আব্বু ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছিলো। ব্যবসা বাণিজ্যেও লস হচ্ছিলো। রুমেল ভাইয়ার জন্য আব্বু কাঁদতেও পারতো না। আব্বুকে কাঁদতে দেখলেই রুমেল ভাইয়া কাঁদতো আর আব্বুর হাত ধরে কান্নার কারন জিজ্ঞেস করতো। আব্বুকে সারাদিন বলতো তার মা’কে এনে দিতে।

এই সবকিছু আব্বু বলেছিলো আমার সো কল্ড মা’কে। তবুও তোমাদের প্রতি তার একবিন্দু ভালোবাসা জাগে নি। তোমাদের না তোমাদের না। শুধুমাত্র ভাইয়ার। তার দূর্বিষহ দিনগুলো নেমে এসেছিলো আব্বু দ্বিতীয় বিয়ে করার পর মানে আমার মা’কে ঘরে আনার পর।

মা সবসময় ভাইয়ার উপর অত্যাচার করতো। ভাইয়া যদি মায়ের কথা না শুনতো তাহলে মা তোমার উপর অত্যাচার করতো। তুমি ছিলে ভাইয়ার উইক পয়েন্ট। তাই তোমার প্রতি অত্যাচার দেখে ভাইয়া দমে যেতো। মায়ের সব কথা মুখ বুঁজে মেনে নিতো। একটু ওলটপালট হলেই তোমাকে খাবার দিতো না মা । এই ভয়ে ভাইয়া শত কষ্ট সহ্য করতো। তুমি তো দুধের শিশু ছিলে। তুমি কিভাবে জানবে বলো এসব?

আব্বু বাড়িতে থাকতো না তেমন। এজন্য তোমাদের দিকে তেমন খেয়াল দিতে পারনি। একে একে কেটে যায় তিনটি বছর। এরপর দুনিয়াতে এলাম আমি। আমার আসার পর আব্বুও ঘরমুখো হলো। তবে ততদিনে হারিয়ে গেছে আগের রুমেল। একটা বাচ্চা ছেলের বদলে যাওয়ার জন্য তিনটি বছর নেহাৎই কম নয়।
আমি মায়ের জান ছিলাম অথচ তোমাদের সাথে কুকুরের মতো ব্যবহার করতো। তবুও ভাইয়া কতটা ভালোবাসতো আমাকে।

জানো আপু, ভাইয়ার একটা আলাদা পৃথিবী ছিলো? সেই পৃথিবীতে না‌ ছিলো কোনো বাবা,আর না ছিলো কোনো মা। সেই ছোট্ট পৃথিবীর একচ্ছত্র আধিপত্য তুলে দিয়েছিলো তার একমাত্র বোন রুমঝুমের হাতে। পড়াশোনা,সৎ মায়ের নিত্যদিনের অত্যাচার আর একমাত্র বোন নিয়েই তার দিন কাটতো।

তার সেই ছোট্ট পৃথিবীতে সে আমাকেও জায়গা দিয়েছিলো। মা আমাকে সেদিন কেঁদে কেঁদে বলেছে, ভাইয়া একহাতে তোমাকে ধরে আর অন্য হাতে আমায় বুকে আগলে নিয়ে সারা বাড়ি হেঁটে বেরাতো। তার ছোট্ট পৃথিবীটা নিয়ে সে একপা দু’পা করছ ঘুরতো।

আম্মু প্রথম আমাকে নিতে বারন করতো ভাইয়াকে। কিন্তু ভাইয়া চুরি করে নিতো। টুপ করে চুমু খেয়ে চলে যেতো মাঝে মাঝে। তবে কয়েকদিন পর থেকে মা আর ভাইয়াকে বারন করতো না আমাকে নিতে। বিনা কষ্টে তার ছেলে বড় হয়ে যাবে এটা ভেবেই হয়তো বারন করেনি।

গুটি গুটি পায়ে বছর এগুতে থাকলো।তোমার সেদিন এগারো তম জন্মদিন ছিলো। ভাইয়া আব্বুর থেকে তোমার জন্য কিছু টাকা চেয়েছিলো। আব্বু ভাইয়ার হাতে হাজার পাঁচেক টাকা দিয়ে ব্যবসার জন্য কুমিল্লা চলে গেলো সেদিন। তোমাকে আর আমাকে বাসায় রেখে ভাইয়া তোমার জন্য কেক আনতে দোকানে গিয়েছিলো। তোমার খালাতো বোনের জন্মদিনে গিয়ে কেক দেখে তুমিও নাকি ভাইয়ার কাছে বায়না করেছিলে কেক খাওয়ার। ভাইয়া তোমার সেই বায়নাই পূরন করতে গিয়েছিলো সেদিন। কিন্তু আফসোস! সেই যাওয়াটাতেই সে পার করে দিলো গোটা নয়টি বছর। তুমি আর আমি ভাইয়ার পথ চেয়ে কতশত দিন পার করে দিয়েছি কিন্তু,ভাইয়া আর ফেরেনি। তাকে ফিরতে দেয়নি। কে দেয়নি জানো? ”

-“হুম। মা দেয়নি।”
নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বললো রুমঝুম।
রুশান কিছুটা চমকে উঠলো। বললো,
-“তুমি সব জানো?”
-“না। শুধু এটুকুই জানি।”
মেঘা দু’হাতে মুখ চেপে কাঁদছে। এতোটাও নিষ্ঠুর মানুষ হয়? আরে, ভালোবাসতে সম্পর্ক লাগে নাকি? ছোট ছোট নিষ্পাপ বাচ্চা দেখলে তো এমনিতেও ভালোবাসতে মন চায়। তবে কিছু কিছু সৎ মায়েরা এমন করে কিভাবে? মেঘার কেন যেন খুব কষ্ট হলো রুমেলকে ভেবে। ছেলেটা সেই ছোট থেকে কষ্ট পেয়েছে। সে যদি কোনো ম্যাজিক জানতো তাহলে এক নিমিষেই রুমেলের সব কষ্ট শেষ করে দিতো।

রুমঝুম কাঁদছে না আজ। এগুলোর সাথে তো সে অভ্যস্ত। রুমেল নিরুদ্দেশ হওয়ার পর সমস্ত অত্যাচার সহ্য করতে হয় রুমঝুমকে। তাকে বাঁচানোর মানুষটা যে হারিঢয়ে গিয়েছিলো।

শান নির্বাক। যে মায়ের পায়ের নিচে জান্নাত দিয়েছেন আল্লাহ সেই মায়েরও এমন রুপ হয়? তার কাছে তার মা শ্রেষ্ঠ কিন্তু অপর প্রান্তে অন্য কারো কাছে তার মা ই সবচেয়ে ঘৃন্য।

শান এগিয়ে এলো রুশানের দিকে। প্রশ্ন ছুঁড়ে বললো,
-“আরমানকে তোমার মা কিভাবে চিনতো? আর রুমেলকে কেন উনার হাতে তুলে দিয়েছিলো?”

রুশান তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,
-“দুইটি কারনে।
১. রুমেল ভাইয়াকে আরমান টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছিলো।আর আমার মা তো টাকার কাঙাল।
২. আব্বুর সম্পত্তির একজন ভাগীদার কমানোর জন্য।

তাছাড়া তার ছেলেও তো তখন বড় হয়ে গেছে। আটটা বছর যে ছেলেটি তার ছেলেকে মানুষ করেছে সেই ছেলেটির আর কোনো প্রয়োজন রইলো না তার কাছে। দু’টো ছেলেমেয়ে একসাথে হারালে তার দিকে আঙুল উঠবে ভেবে আপুকে রেখে দিলো। নতুবা সেদিন আপুকেও হয়তো তুলে দিতো আরমানের হাতে।

আরমান ভাইয়াকে দেখেছিলো শপিং মলে। আম্মু তাকে বকে বকে কাজ করাচ্ছিলো। সেদিন শপিং এর বিল আরমান দিয়ে দিয়েছিলো। ব্যাস এতেই আম্মু খুশিতে আটখানা। আরমান কথায় কথায় জেনে নিলো ভাইয়া আম্মুর সৎ ছেলে। তারপর সুযোগ বুঝে তিনি আম্মুর কাছে ভাইয়াকে কিনে নেওয়ার কুপ্রস্তাব দেয়। টাকার কথা শুনে ওই লোভী মহিলাও রাজি হয়ে যায়।

আরমানের একটা কিশোর ছেলের দরকার ছিলো। গরম টগবগে রক্তে ভরপুর একটা ছেলে। কুৎসিত মস্তিষ্কের লোকটা সেই ছেলেকে অত্যাচার করে আনন্দ পাবে এজন্য দরকার ছিলো। আর কপাল দোষে সেই ছেলেটি হলো আমাদের ভাইয়া।

সেদিন আরমান আমাকে মেরে খুব মজা পাচ্ছিলো। পৈশাচিক আনন্দ পাচ্ছিলো লোকটা। ও একটা অসুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ। একটা বদ্ধ উন্মাদ। একটা জানোয়ার।”

রুশানের চোখে মুখে একরাশ রাগের আভা ফুটে উঠলো কথা গুলো বলতে বলতে।
ধীর পায়ে এগিয়ে এলো শান। রুশানের কাঁধে হাত রেখে বললো,
-“দেখো তোমার মায়ের সাথে তোমরা কি করবা এটা সম্পূর্ণ তোমাদের ব্যাপার। তার শাস্তি তোমাদের হাতে।
তবে তোমাকে এটুকু বলতে পারি যে, এবার আরমানের সহ্য করার পালা। আর মজা নেওয়ার পালা আমাদের। প্রস্তুত তো তুমি?”

রুশান কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো শানের মুখের দিকে ।তারপর ধীরে ধীরে প্রসারিত হলো তার ঠোঁট। শানের ইঙ্গিত বুঝতে পেরেছে সে। মেঘা আর রুমঝুম হয়তো কিছু বুঝলো বা বুঝলো না। তারা ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলো শুধু।

চলবে……

(ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে