❌ কপি করা নিষেধ ❌
“গানের ওপারে তুমি”
পর্ব- ১
(নূর নাফিসা)
.
.
আমি তোমার বিরহে রহিব বিলীন,
তোমাতে করিব বাস,
দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী,
দীর্ঘ বরষ মাস।
যদি আর কারে ভালোবাস,
যদি আর ফিরে নাহি আস,
তবে, তুমি যাহা চাও, তাই যেন পাও,
আমি যত দুঃখ পাই গো…
রবীন্দ্র সংগীতটি আবারও শুনলো ‘উম্মে ইয়ানাত’ ফেসবুক আইডিতে ইয়ানাতের কণ্ঠে। খুব মিষ্টি কণ্ঠ মেয়েটির। প্রশান্ত বনে সুখের ডানা ঝাপটানো পাখির মতোই সুরেলা তার সুরধ্বনি। বেশ মনে ধরেছিলো মিহিরের। প্রাণে প্রাণ বেঁধে নেওয়ার ইচ্ছেটাও জেগেছিলো প্রবলতর। অবশ্য কণ্ঠের জন্যই মনে ধরা নয়। এর অন্যতম কারণ, তার সংগীত জগতের অগ্রগতির পেছনে এই ইয়ানাতের অবদান খুব বেশি। অথচ এখন তারই বিরহে অভিমানে ডুবে আছে মিহির নিজেই!
জিনিয়া তাবাসসুম এসে ছেলেকে ডেকে গেলেন রাতের খাবার খেয়ে নেওয়ার জন্য। নির্লিপ্ততার সাথে মিহির জবাব দেয়,
“আসছি, মা।”
চিন্তিত মা চুপচাপ চলে যান খাবার প্লেটে দিতে। ছেলেটাকে আজকাল বড্ড উদাসীন দেখায়। হাসিখুশি ভাবটা যেন একদমই চোখে পড়ে না। কাজের ব্যস্ততা কাটালেই যেন ক্লান্তি আর উদাসীনতা নিষ্ঠুরভাবে ঘিরে রাখে ছেলেটাকে। একা বসে বসে বড্ড ভাবেন এই মা। ছেলের এবং নিজের একাকীত্ব দূর করার চিন্তায়ও মশগুল থাকেন ভীষণ।
মাকে জবাব দিয়ে নির্লিপ্ত মিহির ওয়াশরুমে যায় চোখেমুখে পানি ছিটাতে। মনের বিষণ্ণতার রেশটুকু যেন প্রায়ই চোখের পাতায় ক্লান্তির ভার নামাতে ব্যস্ত হয়ে উঠে। ছোট থেকেই গানের প্রতি অন্যরকম নেশা কাজ করতো তার। খেলাধূলায়ও মিহির ছিলো দুর্দান্ত। তবে খেলাধূলা আঁকড়ে ধরে বড় হয়নি। পড়াশোনার পাশাপাশি সংগীতের নেশায় মত্ত ছিলো সে। শৈশব কৈশোরের খেলাধূলার সময়টুকু হারিয়ে এলেও সংগীত ছাড়েনি। ভালো আগ্রহ ছিলো বিধায় শিক্ষকরা প্রায়ই ক্লাসে গান গাওয়াতো। কেউ কেউ উৎসাহ দিতো, প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে ভালো কিছু হবে একসময়। স্কুল কলেজের প্রোগ্রাম গুলোতে মাঝে মাঝে অংশগ্রহণ করতো মিহির। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেওয়ার পরই মায়ের কাছে বায়না ধরে গিটার কিনে দিতে। একটু সংকোচ বোধও ছিলো পারিবারিক অবস্থার কারণে। বাবার অবস্থা অবশ্য ভালোই ছিলো। তবে বাবাকে হারিয়ে ফেলেছে কৈশোরে পদার্পণের পরপরই। দৈনন্দিন আয়ের উৎসটা হারিয়ে গেছে তখন থেকেই। দাদার জমিতে পাশাপাশি তিন ছেলের তিনটা ভবনই আছে শুধু। নিজস্ব আয়ে যে যতটুকু পেরেছে, ভবনের বহুতল সৃষ্টি করেছে। মিহিরের বাবার গড়ে তোলা এই শহরের বর্গাকৃতির তিনতলা একটা ভবনই তাদের ঠিকানা। মাসে মাসে বাড়ি ভাড়া আর বাবার চাকরির বেতনে বেশ সচ্ছল ছিলো তখন পরিবারটা। বাবা হারিয়ে যাওয়ার পর আয়ের পরিমাণ ঢের কমে আসায় স্বচ্ছল পরিবারটা বেশ হিসেবনিকেশের মাধ্যমে চলতে লাগলো। চাচাদের সাথেও সম্পর্ক ভালো ছিলো না মিহিরের। বাবা মারা যাওয়ার পর চাচারা এই অংশটুকুও কিনে দখল করতে চেয়েছিলো। মিহিরের মা, জিনিয়া তাবাসসুমকে পিত্রালয়ে ফিরে যাওয়ার জন্য বলেছিলো। জমির উপযুক্ত দাম দিয়ে দিবেন তারা ছেলেটার জন্য। কিন্তু স্বামীর ঘর ছাড়তে চায়নি জিনিয়া তাবাসসুম। একরকম বিরোধে থেকেই কঠোরভাবে বাঁচতে শুরু করেছেন ছেলেকে নিয়ে। তাদের ভবনের পাঁচটা ফ্ল্যাট ভাড়ায় চলতো। একমাত্র এই আয়েই মা ছেলের সংসার চলতে শুরু করে। ছেলেটাকে একটা ভালো পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারলে হয়তো মায়ের মনটা শান্তিতে ছেঁয়ে যাবে। এর আগে শান্তি শব্দটাকে মুঠোয় ধরার তৃপ্তি মিলছিলো না তার। ছেলের ভালো মন্দের দিকে বিশেষ নজর রেখে একক জোরে হিসেবনিকেশের মধ্য দিয়ে চালিয়ে নিচ্ছিলেন সংসার। মিহিরের জ্ঞান যখন বয়সের সাথে ধীরে ধীরে পরিপক্কতা লাভ করতে শুরু করেছে, তখন তার বায়নাগুলোর পরিমাণও কমে যেতে ধরেছে। দেখছেই তো, মায়ের আয় নেই। উল্টাপাল্টা খরচের উৎসটাও তার নেই। কিন্তু ভারি শখের জিনিসগুলো বায়নায় নিয়ে আসার তীব্র ইচ্ছা থাকে তার। গিটারের ইচ্ছেটাও সেইভাবেই প্রকাশ পায়। ছেলের শখের ইচ্ছায় আপত্তি রাখেনি এই মা। সবটা তো ছেলেরই। বাবা নেই পাশে, এই আবদারগুলো পূরণ আর করবেইবা কে? তারই তো দেখতে হবে সবটা। দিলো ছেলেকে গিটার কিনে। শর্ত একটাই, পড়াশোনাটা ঠিকঠাক করতে হবে। ছেলে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হলো, পড়াশোনাও ভালোই চালিয়ে গেলো। গিটার নিয়ে ঘুরাফেরাও ভীষণ প্রিয় হয়ে রইলো। বন্ধুদের সাথে গানের আড্ডা, প্রোগ্রামে স্বেচ্ছায়ই টুকটাক অংশগ্রহণ ভালোই চলতে থাকলো। অংশগ্রহণকৃত আয়োজন হতে ছোট ছোট কিছু পুরস্কারও এলো ঘরে। এসবই যেন ইচ্ছেকে আরও তীব্রতর করতে লাগলো একজন বিশেষ ব্যক্তি হয়ে উঠার। কিন্তু কিভাবে তা সম্ভব হবে, ভেবে পাচ্ছিলো না। গানের উপর তার বিশেষ ক্লাস হয়নি কখনো, কোনো সার্টিফিকেট নেই। কারো সূত্র ধরে গানের জগতে প্রবেশের সুযোগও পাওয়া হচ্ছিলো না। অথচ ইচ্ছেগুলো তাকে তীব্রভাবেই পেয়ে বসেছে। আয়ের একটা চিন্তাও মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো। সংসার তো কোনোভাবে চলে। বয়স তো তারও বাড়ছে, জীবনে কিছু করতে হবে। সংসারতরীর বৈঠা ধরতে হবে। কিন্তু কিভাবে?
ইউনিভার্সিটি জীবনে টুকটাক গান রেকর্ডিং করে সেটা ফেসবুক টাইমলাইনে শেয়ার করতে শুরু করলো। বন্ধুদের কাছে শেয়ার করার রিকুয়েস্টও রাখতো। কেউ কেউ কখনো শেয়ার করতো, কখনো করতো না। উপহাস করতো। ছোট-বড় বেশ কিছু ক্লিপই প্রকাশিত ছিলো টাইমলাইন জুড়ে। বিভিন্ন গানের রাজাদের ফলো করতো, খালি গলায় সুর ধরার চেষ্টা করতো। অনার্স শেষে মাস্টার্সের ভর্তি নিয়ে ছোটাছুটি কালে একটা মেয়ের সাথে আলাপ হলো তার ফেসবুকেই। মেয়েটার কণ্ঠে একটা দেশাত্মবোধক গানের এক প্যারা শুনতে পেলো ফেসবুক শেয়ারের মাধ্যমেই। কণ্ঠটা মিষ্টি বলেই অনেকে শেয়ার করেছে কিছু মিউজিক ইন্সট্রুমেন্টসকে ফোকাস করে তৈরি ভিডিওটি। মিহির সেই উম্মে ইয়ানাতের একাউন্টটিতে প্রবেশ করে পোস্টে কমেন্ট করলো,
“বিউটিফুল ভয়েস। আমারও এই ইনস্ট্রুমেন্টস এর প্রয়োজন ছিলো।”
পরে মেয়েটির টাইমলাইন জুড়ে মিষ্টি কন্ঠের আরও ক্লিপ খুঁজতে লাগলো। কিন্তু পাওয়া হলো না। ব্যক্তিত্ব ও নৈতিকতা সম্পর্কিত কিছু পোস্ট আছে মাত্র। একাউন্ট তৈরি হয়েছে মাত্র কয়েক মাস হয়। তা-ও আবার এক্টিভিটি কম। মাঝে মাঝে উঁকি দেয় হয়তো। মেয়েটির ফলোয়ারও খুব না। রেগুলার পোস্টে একশো কি দেড়শো রিয়েক্ট হয়। তবে গানের ক্লিপটা শেয়ার হওয়ায় এই পোস্টে রিয়েক্ট এসেছে হাজারের উপর। আগেরদিন শেয়ার হয়েছে, মিহিরের নজরে পড়েছে পরের দিন। এমনকি মিহির এক্টিভ থাকাকালীনই দেখলো রিয়েক্ট যেন হুড়হুড় করেই বাড়তে লাগলো! কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যাবে বুঝাই যাচ্ছে। একটু মন খারাপ হলো, তার পোস্টে সেই তুলনায় রিয়েক্টই নেই। আর এই মেয়েটার ছোট একটা ক্লিপই কত হিট হতে শুরু করেছে, যে কি না কোনো সেলিব্রিটি পর্যায়েও যায়নি। সেদিনই উক্ত কমেন্টের একটা রিপ্লাই পেলো মিহির। উম্মে ইয়ানাত হাসির রিয়েক্টে রিপ্লাই করেছে,
“ইনস্ট্রুমেন্টস লাগবে নাকি?”
অবশ্য অনেকের রিপ্লাইই দিয়েছে এই পোস্টের কমেন্টে। তার রিপ্লাইয়ে মিহির মজা পেয়ে রিপ্লাই করে,
“হ্যাঁ, লাগবে।”
পরপর ইয়ানাতের আইডি থেকে তার গানের কিছু কিছু পোস্টে রিয়েক্ট দিতে দেখা গেলো। সাথে সাথেই ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট পাঠালো মিহির। পরদিন এক্সেপ্টও হলো। এবং ইয়ানাত নিজ থেকেই ইনবক্সে টেক্সট করলো,
“ভালোই তো গাইতে দেখলাম টাইমলাইনে। কোনো সেলিব্রিটি নাকি?”
মিহির হেসে রিপ্লাই করলো,
“নাহ! সেই সৌভাগ্য কি আর আছে?”
“চেষ্টা থাকলে কেন নয়?”
“শুধু চেষ্টা করলেই হয় না। সুযোগও লাগে। আপনার প্রোফাইলের ক্লিপটা আপনার গাওয়া?”
“জ্বি।”
“সুন্দর গেয়েছেন।”
“ধন্যবাদ। সুযোগ পেলে আপনি আপনার প্রচেষ্টাকে কাজে লাগাবেন?”
মিহির আপনমনে ব্যর্থতা জাগিয়ে যেন ঈষৎ হাসে তার টেক্সট দেখে৷ পরক্ষণে প্রত্যুত্তর করে,
“শখের কাজে সুযোগ পাওয়া তো ভারি আনন্দের ব্যাপার।”
“শুধুই শখ?”
“প্রখর উদ্দীপনা সমন্বিত শখ। যদি প্রফেশনাল পর্যায়ে যাওয়া যায়, আশির্বাদ সমতুল্য।”
এ ছিলো বছর চারেক আগের কথা। টুকটাক পরিচয় ও আলাপেই তখন পরিচিত হয় ইয়ানাতের সাথে। সপ্তাহখানেক পরেই ইয়ানাত একজন গানের শিক্ষকের ঠিকানা দিয়ে তাকে দেখা করতে বলে। মিহিরের পরিচয় ইয়ানাত দিয়ে রেখেছে শিক্ষকের কাছে। সে গিয়ে নিজের পরিচয় দিলেই হবে। মিহির অবাক হয় তার দক্ষতার পরিচয়ে৷ ভাবে, আসলেই কি কোনো চমৎকার সহযোগিতার হাত ধেয়ে আসছে কি না তার উপর! ভাবনার পরক্ষণে মিহির ঠিকই যায় সেই শিক্ষক, এইচ এ রশীদ স্যারের সাথে দেখা করতে। তিনি তার পরিচয়, প্রচেষ্টা ও পরিকল্পনার সম্পর্কে জানলেন। খালি গলায় দুয়েক লাইন গাইতেও শুনলেন। পরবর্তীতে তাকে সময় করে একদিন পরিচয় করালেন মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির কিছু লোকেদের সাথে। রশীদ স্যার ইন্ডাস্ট্রির সাথে সরাসরি জড়িত নয়। তবে প্রডিউসারের সাথে ভালো সম্পর্ক আছে। তিনি একটু সাপোর্ট দিলেই তারা কাজ চালাতে আগ্রহী হলো মিহিরকে নিয়ে। প্রচেষ্টার পরও যেটুকু ঘাটতি ছিলো, সেটুকুর পূর্ণতা পেয়ে গেলো মিহির। প্রথম বছর উত্তরণের সাথে সাথে দ্বিতীয় বছরই একজন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পীর খাতায় নাম লিখিয়ে ফেললো সে। সময়টুকু যেন খুব স্বল্পই ছিলো তার বহুদিনের প্রচেষ্টার জন্য। এই মানুষগুলো তার জীবনের স্মরনীয় সম্মানিত ব্যক্তি হয়ে রইলো। এই সূত্রে পদার্পণের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যক্তি হয়ে রইলো উম্মে ইয়ানাত। মিহিরের ভাবটাও তার সাথে জমলো ভালো। উম্মে ইয়ানাতের ব্যক্তিত্ব খুবই মজবুত। কথাবার্তা বলে সব গুছিয়ে। মিহিরের খুব ভালো লাগে তার প্রতিটি বাক্য, তার কথায় কথায় ফুটে উঠা ব্যক্তিত্বকে। কৃতজ্ঞতার দিক থেকেও মেয়েটাকে সম্মান করে। সফলতার পেছনে মেয়েটার অবদান মূখ্য বলে স্বীকার করে। সে সুযোগটা না করে দিলে হয়তো সম্ভব হতো না এ পর্যন্ত পৌঁছানোর। দিনকে দিন ভালোলাগা যেন ভালোবাসায় পরিণত হয়ে যায়। যদিও ইয়ানাত অনলাইনে খুব একটা থাকে না, তবুও মিহির যখন অনলাইনে আসে ইয়ানাতের প্রোফাইল না ঘুরে যায় না। বছরখানেক পরে ইয়ানাত নিজের কন্ঠের আরও একটা ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করেছিলো টাইমলাইনে। এটা ছিলো রবীন্দ্র সংগীত *’আমারও পরানো যাহা চায়’। এটার কণ্ঠ সুরও মনে বেঁধে রেখেছে মিহির। তুলনামূলক আগেরটার চেয়ে আরও বেশি ভালো। এই পোস্টেও কমেন্ট করলো কিন্তু রিপ্লাই পাওয়া হয়নি। ইয়ানাত এই পোস্টের কাউকেই রিপ্লাই করেনি। তবে ইনবক্সে ভারি প্রশংসা তুলেছে মিহির। ক্লিপটি শুনেছে বারবার। টানা তিনটা বছরেরও বেশি কেটেছে ইয়ানাতের সাথে স্বল্প সময়ের কথাবার্তায়। একে তো তার ব্যস্ততা বেড়েছে, অন্যথায় ইয়ানাত এক্টিভ না থাকায় নিয়মিত কথা বলার সুযোগ হয় না। তবে সুযোগ ছাড়েওনি মিহির। জানাশোনার গল্প করতে বেশ আগ্রহী হয়ে থাকে। ইয়ানাতের সাথে দেখা করতে চায়, তাকে ব্যক্তিগতভাবে জানতে চায়। একটা পর্যায়ে তার মনের অনুভূতিটাও প্রকাশ করে ফেলে। কিন্তু তার পর থেকে যেন ইয়ানাত আর টুকটাক আলাপেও এগিয়ে আসে না। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটাও কাটিয়ে নিতে চাইছে। টেক্সট দেখলেও রিপ্লাই দিতে ইচ্ছুক না। মোটকথা পাত্তাই দিতে চায় না মিহিরকে। দেখাও করবে না। নিজের দাম্ভিকতার রূপটাই প্রকাশ করতে উদ্ধুদ্ধ হয়। বছরে টাইমলাইনে দু-চারটা পোস্ট করে, সেসবের মধ্যেও যেন দাম্ভিক একটা ভাব ফুটে উঠে। প্রশংসনীয় ব্যক্তিত্ব যেন হারিয়ে যাওয়ার পথে। যদিও সেসব নিয়ে মিহির অতিরিক্ত কোনো কথা বলে না। কিন্তু ইয়ানাতের সাথে সম্পর্কটা ঘনিষ্ঠ পর্যায়ে নিয়ে যেতে আকাঙ্ক্ষার সৃষ্টি হয়। এদিকে ইয়ানাতকে জিজ্ঞেস করা সত্ত্বেও সে জানালো তার কোনো মনের মানুষ নেই। আর মিহিরকেও সেই ঘনিষ্ঠতায় জড়ানোর সুযোগ দিতে চায় না। তাকে বারবার টেক্সট করতেও নিষেধ করে দিলো। যোগাযোগহীন একরকম অবহেলায়ই ঠেলে দিলো মিহিরকে। হৃদয়ের এক বিদারক ব্যাথা হয়ে জন্ম নিলো সে। উল্লেখিত কারণে ভীষণ কষ্ট পায় মিহির। হঠাৎ কেন তার এমন বদলে যাওয়া? এমন ইয়ানাতকে তো সে চিনেনি। তার যদি ব্যক্তিগত জীবনে কোনোরকম ইস্যু থাকতো, তবে তো সে জানাতে পারতো। সম্পর্কে নাহয় পছন্দ অপছন্দ নিয়ে অনীহা থাকতেই পারে, তাই বলে এভাবে ইগনোর কেন করবে? কোনো কারণে অভিমান করেনি তো তার উপর? কিন্তু কেন করবে? সে তো তার সর্বোচ্চ চেষ্টায় ইয়ানাতের সাথে সম্পর্কিত থাকতে চেয়ে এসেছে। কোনো ভুল কিংবা মন্দ ব্যবহার তার দিক থেকে হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।
চলবে।