গল্প:-বিয়ের_বন্ধন_Session_2 পর্ব:-(০৩)

0
1330

গল্প:-বিয়ের_বন্ধন_Session_2 পর্ব:-(০৩)
লেখা_AL_Mohammad_Sourav
!!
চুক্তি অনুযায়ী আমি শ্বশুড় বাড়ীতে ঘর জামাই হিসাবে থাকবো। তবে আমি ঘর জামাই থাকতে একদম রাজি নয়। যেই করে হোক বউকে বুঝিয়ে রাজি করিয়ে আমাদের বাড়ীতে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আমার বউ যে ঘার তেরা! জানি কাজটা কঠিন হবে কিন্তু আমার পক্ষে তা সম্বভ করতে হবে। নিচে বসে মোবাইলে মেসেজিং করছি হঠাত খেয়াল করলাম আমার পেছনে দাঁড়িয়ে কেও আমার মেসেজিং দেখছে তাকিয়ে দেখি আমার শ্বশুড় আব্বা দাঁড়িয়ে আছে। মোবাইলটা পকেটে ঢুকাবো তখনি শ্বশুড় আব্বা হাত ধরে বলে,,,

শ্বশুড়:- জামাই বাবা জ্বি কার সাথে এমন রোমান্টিক মেসেজিং করতেছো?

আমি:- (কিছুটা তুতলাতে তুতলাতে বলতেছি,,,) কোথায় কার সাথে মেসেজিং করছি আমি তো আমার দোস্তের সাথে মেসেজিং করছি।

শ্বশুড়:- আমাকে বোকা পায়ছো বাবাজ্বি দোস্তের সাথে এমন রোমান্টিক মেসেজিং করে কেও? দেখি তোমার মোবাইলটা দাও তো দেখি তোমার কেমন দোস্ত।

আমি:- আব্বাজান কি বলছেন আপনি আমাকে অবিশ্বাস করছেন? নেন মোবাইল হাতে দিয়ে সোজা হাটা দিয়েছি রুমের দিকে শ্বশুড় আমার মোবাইল হাতে পেয়ে খুটে খুটে সব দেখছে আমি রুমে এসেছি তখনি দেখি তসিবা কি যেনো খুঁজতেছে! আমি নিজে থেকে জিজ্ঞেস করেছি তসিবা কিছু খুঁজতেছো?

তসিবা:- নাহ!

আমি:- ঠিক আছে তাহলে আমি বের হবো আমার একটু কাজ আছে এলাকা একটু ভালো করে ঘুরে আসি কেমন।

তসিবা:- শুনেন আপনি কি আমার মোবাইলটা দেখছেন?

আমি:- নাহ তো মনে হয় তোমার আব্বুর হাতে তোমার মোবাইলের মত একটা মোবাইল দেখেছি! (তখনি তসিবা আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলে)

তসিবা:- আব্বুর হাতে আমার মোবাইল গেলো কি করে?

আমি:- তোমার আব্বুকে জিজ্ঞেস করো তাহলে জানতে পারবে। আচ্ছা আমি একটু বের হলাম তখনি শ্বশুড় আব্বা দরজার সামনে এসে কন্ক করতেছে।

শ্বশুড়:- মা তসিবা রুমে আছিস একটু বের হবি মা। (আমি আর তসিবা দুজনে বের হয়েছি)

তসিবা:- জ্বি আব্বু বলেন কি হয়ছে? (তসিবার দিকে মোবাইলটার স্কিনের কিছু মেসেজ দেখিয়ে বলে)

শ্বশুড়:- দেখ তো তোর জামাই মোবাইলে কার সাথে এত রোমান্টিক মেসেজ করছে?

আমি:- আব্বাজান মোবাইলটা তো আপনার মেয়ের আমার মোবাইল তো আমার সাথেই আছে দেখেন এইটা আমার মোবাইল। (তখনি শ্বশুড় আব্বা মোবাইলটাকে ভালো করে দেখে বলে)

শ্বশুড়:- তসিবা তোর মোবাইল এইটা? (তসিবা কিছু বলছে না চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে) আজ থেকে তোর মোবাইল ব্যাবহার করা বন্ধ। বাবা জামাই আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও আমি তোমাকে ভুল বুঝেছি। তসিবা তোমাকে বলি তুমি এখন সব কিছু বাধ দিয়ে সৌরভকে ভালোবেসে সংসার করবে বলে দিলাম। (শ্বশুড় আব্বা তসিবাকে আরো কিছু বকা জকা করতেছে)

আমি:- আব্বাজান আপনি কোনো চিন্তা করবেন নাহ আমি তসিবাকে সব কিছু বুঝিয়ে দিবো। তখন শ্বশুড় আব্বা চলে গেছে তখনি তসিবা আমার ক্লার ধরে বলে,,,

তসিবা:- ঐ তুকে না বলছি আমার বাবা মায়ের সামনে আমার সাথে খারাপ আচরন করবি! আর তুই আমার মোবাইল আব্বার কাছে দিয়েছিস কেনো?

আমি:- আপনি থেকে সোজা তুই ভালো বলছো অন্তত তুমি বলতে পারতে! আর তুমি কি ভাবছো তুমি যা বলবে আমি তাই করবো জীবনেও না আমি আমার মত করে চলবো কিন্তু তুমি চলবে আমি যেভাবে বলবো সেইভাবে। আর তোমার মন জয় করাটা আমার চুটকির ব্যাপার কিন্তু আমি করবোনা তুমি নিজেই আমাকে পাওয়ার জন্য আকুল ব্যাকুল হয়ে পড়বে।

তসিবা:- তাই এতটা কনফিডেন্স ভালো তাহলে আমিও কথা দিতেছি তোমাকে আমি এক বছরের মধ্যে ডির্ভোস দিয়ে বাড়ী থেকে বের করবো আমার জীবন থেকে ছুড়ে ফেলে দিবো। আর তোমাকে জেল হাজতের মশার কামড় খাওয়াই ছাড়বো।

আমি:- ঠিক আছে দেখা যাবে কে জিতে তবে তুমি হারলে তোমার কপালে অনেক দুঃখ আছে। তোমাকে আমি আমাদের বাড়ীতে নিয়ে সব কাজ করাবো কাপড় দুআ থেকে রান্না বান্না এমন কি ফ্লোর পর্যন্ত পরিস্কার করাবো ঠিক কাজের মেয়ের মত করে রাখবো তোমাকে।

তসিবা:- তুমি হারলে তোমাকে জেল হাজতে একদম নোংরা যায়গায় রাখতে বলবো ঠিক প্রশ্রাবের যায়গার সাথে যাতে করে সব বাজে ডেংগু মশা গুলি তোমাকে কামড়িয়ে কামড়িয়ে খায়। আর দূর্গন্ধে তোমার পেট খারাপ হয় নাকে সারাক্ষন দূর্গন্ধ লেগে থাকে।

আমি:- ঠিক আছে সময় হলে দেখা যাবে এখন আমি বের হলাম এলাকাটা একটু ঘুরে আসি। (আমি বেড়িয়ে আস্তেছি তখনি আমার সাটের বোতামের সাথে তসিবার গলার হার লেগে আছে আর তসিবা আমার দিকে আমি তসিবার দিকে তাকিয়ে আছি। কিছুক্ষণ দুইটি চোখ অনেক কিছু বলে যাচ্ছে কিন্তু দুজনের চোখের ভাষা বুঝার দুজনের সময় নেই।

তসিবা:- তুমি ইচ্ছে করে আমার চেইনের সাথে তোমার বোতাম লাগিয়ে দিয়েছো?

আমি:- আমার তো মনে হচ্ছে তুমি নিজেই কথার ফাকে লাগিয়ে দিয়েছো এখন আমাকে বলছো?

তসিবা:- আমার ভয়ে গেছে তোমার সাটের বোতামে চেইন লাগিয়ে রাখতাম। দেখি সরো তোমার মুখ দেখতে আমার ঘৃনা করে যাও তুমি কোথায় যাবে।

আমি:- হ্যা যাচ্ছি তোমাকে দেখলে আমার ঘৃনা হয় কথাটা বলে বেড়িয়ে এসেছি বাড়ী থেকে রাস্তায়। একা একা হাটতেছি নতুন যায়গা নতুন পরিবেশ ভালোই লাগছে এলাকাটা। কিছুটা একা একা হেটে ঘুরে ঘুরে দেখলাম বিয়ের জন্য সাত দিনের ছুটি নিয়েছি অফিস থেকে কাল থেকে অফিসে যেতে হবে। ঘন্টা খানেক ঘুরে সন্ধায় বাসায় গেলাম দেখি শ্বশুড় শ্বাশুড়ি দুজনে নিচে বসে আছে আমি সালাম দিয়েছি ওনারা উত্তর নিয়েছেন।

শ্বশুড়:- বাবা সৌরভ কোথায় গেছিলে?

আমি:- এই তো আপনাদের এলাকাটা একটু ঘুরে আসলাম।

শ্বাশুড়ি:- সৌরভ তুমি কোথাও ঘুরতে গেলে সাথে তসিবাকে নিয়ে যাবে কারন সবাই তোমাকে চিনার দরকার তুমি যে তসিবার বর।

আমি:- ঠিক আছে আম্মাজান তাই করবো তখন চাচা শ্বশুড় আর চাচি শ্বাশুড়ি এসেছে। ওনাদের একটা মেয়ে আছে নাম রিপা দেখতে নাকী অনেক সুন্দর নাকী তবে আমি দেখিনি রিপার এখন পরীক্ষা চলতেছে।

চাচা শ্বশুড়:- ভাইজান রিপার তো পরীক্ষা শেষ ওর জন্য ভালো দেখে একটা পাত্র খুঁজে নিয়েন। আগামী কাল রিপা আমাদের বাড়ীতে আসবে। (ওনারা কথা বলছে আমি রুমে চলে আসতেছি)

শ্বশুড়:- হ্যা তবে রিপা আসুক তারপর ওকে জিগেস করে করতে হবে ওর পছন্দের কেও আছে কীনা যদি না থাকে তাহলে আমরা বিয়ের জন্য ছেলে খুঁজবো। তসিবাকে আমরা জিগেস না করে ভুল করেছি তসিবা একটা ছেলেকে ভালোবাসে এখনো সৌরভকে বর হিসাবে মেনে নিতে পারছেনা। (কথাটা শুনে আমি সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে গেছি তার মানে তসিবা তার অমতে বিয়ে দিয়েছে! নাহ ওনারা তসিবার সাথে অন্যায় করেছে রুমে গিয়ে দেখি রুমটা ফাকা তসিবা গেলো কোথায়? দুর যেখানে খুশি সেখানে যাক আমার কি বলে শুয়ে পড়েছি কিছুক্ষণ পর মহারানী এসে বলছে,,,)

তসিবা:- তোমাকে আম্মু ডাকছে খাবার খেতে।

আমি:- ঠিক আছে চলো যাই।

তসিবা:- খাবার টেবিলে সবার সামনে আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করবে কিন্তু?

আমি:- তোমার কথা আমি শুনতে যাবো কেনো?

তসিবা:- না শুনলে ঘুমের মাঝে গলা টিপে মেরে ফেলবো। তখন বুঝবে কেমন মজা এখন আসো কথা কম বলে(তসিবা আমি দুজনে নিছে গেলাম। খাবার টেবিলে বসেছি সাথে সবাই বসেছে। খাবার খেতেছি আমি পানির মগটা ধরবো তখনি তসিবা ইচ্ছে করে আমার হাতের সাথে ধাক্কা দিয়েছে আর মগটার সব পানি টেবিলে পরে গেছে)

আমি:- স্যরি আমি বুঝতে পারিনি।

তসিবা:- তুমি ইচ্ছে করে পানিটা ফেলেছো এখন বলতেছো বুঝতে পারোনি?

আমি:- তসিবা তুমি কি বলছো?

তসিবা:- আব্বু ও রুমে আমাকে বলছে যে ঘর জামাই থাকবেনা যদি থাকে তাহলে অনেক খারাপ আচরন করবে সবার সাথে। আর এখন বলছে খাবার টেবিলে এসে সব কিছুতে পানি ফেলে দিবে তার প্রমান তো পেলেন এখুনি।

শ্বশুড়:- সৌরভ তুমি কাজটা ঠিক করোনি তোমার ঘর জামাই থাকতে হবে চুক্তি অনুযায়ী তুমি তসিবার মন জয় না করা পর্যন্ত ঘর জামাই থাকবে। এখন সবার খাবার নষ্ট করছো কেনো তার জন্য আজ সারা রাত তুমি ছাদের উপর ঘুমাবে।

আমি:- কিন্তু?

শ্বশুড়:- কোনো কিন্তু নেই তোমাকে আমি ভালো মনে করেছি কিন্তু তুমি তা নও। তোমার জন্য যদি আমার মেয়ে একটু চোখের পানি আসে তাহলে তোমাকে সবচেয়ে খারাপ অবস্তা করবো।

আমি:- ঠিক আছে তাই হবে বলে আমি রুমে চলে এসেছি। আমার পিছু পিছু তসিবা এসেছে এসে বলে,,,

তসিবা:- কি বলেছিলাম মনে আছে তো আমার সাথে পাঙ্গা নিতে এসেছো? যাও এখন গিয়ে ঠান্ডার মাঝে ছাদের উপর গিয়ে থাকো।

আমি:- সমস্যা নেই সময় আমারো আসবে তখন বুঝবে বলে ছাদে চলে এসেছি। আজকের রাতটা ছাদের উপর কাটিয়ে দিয়েছি সারা রাত মশার কামড় আর ভয়ে ভয়ে শরীরের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। ছাদের দরজাটা খুলতে গেছি দেখি বন্ধ আরে দরজা কে বন্ধ করেছে? তসিবাকে ফোন করছি কিন্তু রিসিব হচ্ছে না। বসে আছি প্রায় ঘন্টা খানেক পর দরজাটা চাচা শ্বশুড় এসে দরজা খুলে দিয়েছে।

চাচা শ্বশুড়:- জামাই সৌরভ কেমন মশা গুলার পেচ ভরেছে আজকে তোমাকে পেয়ে?

আমি:- মনে হয় ১ বছর আর খাইতে হবেনা। রাগ দেখিয়ে রুমে দিকে এসেছি রুম ফাকা ঢুকে শাওয়ার নিতে চলে গেছি এক ঘন্টা যাবত শাওয়ার নিয়েছি। একদম ফ্রেশ হয়ে বের হয়েছি তখনি তসিবার সাথে সুন্দর দেখতে একটা মেয়ে এসেছে রুমে।

তসিবা:- কেমন মশা গুলি তোমাকে খেলো বলে হাসি।

আমি:- মশা গুলি যেমন খেয়েছে তা যেনে তোমার কি? তুমি তো অনেক খুশি তাইনা।

তসিবা:- হ্যা অনেক খুশি! এই হচ্ছে আমার চাচাত বোন রিপা আর রিপা তোর দুলাভাই আল মোহাম্মদ সৌরভ।

আমি:- হাই রিপা কেমন আছো?

রিপা:- ভালো আপনি মনে হয় ভালো নেই।

আমি:- হ্যা ঠিক বলছো তবে তুমি কিন্তু তোমার বোনের থেকে অনেক সুন্দর ( তসিবাকে রাগাবার জন্য বলছি)।

রিপা:- ধন্যবাদ আপনাকে তাহলে এখন আমি যাই পরে কথা হবে।

আমি:- ঠিক আছে! রিপা চলে গেছে তখনি তসিবা বলে,,,

তসিবা:- রিপা আমার থেকেও সুন্দর দেখতে?

আমি:- হ্যা তোমার থেকে অনেক সুন্দর যদি তোমার আগে রিপাকে দেখতাম তাহলে রিপাকে বিয়ে করতাম তোমার মত মেয়েকে বিয়ে করে আমার জীবনটা তেজপাতা হয়ে যাচ্ছে। দেখি সরো আমি অফিসে যাবো বলে সোজা বেড়িয়ে এসেছি নিছে দেখি রিপা একা বসে আছে আমি বের হবো তখনি রিপা বলে,,,

রিপা:- ভাইয়া একটু দেখেন তো আমার চোখে কি একটা পড়ছে আমার চোখ জ্বলতেছে। (কাছে গিয়ে ওর চোখে ফু দিতেছি তখনি তসিবা সিঁড়ি দিয়ে নামছে আমি তসিবাকে দেখে রিপাকে ছেড়ে চলে আসতেছি ঠিক তখনি,,,)
!!
To be continue,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে