গল্প:- বাল্য কালের বউ সিজিন ২ পর্ব:-(১)

0
3219

গল্প:- বাল্য কালের বউ সিজিন ২ পর্ব:-(১)
লিখা:- সোহরাব আল ইসলাম

আম্মু তুমি বলছো ছোট বেলা নিশির সাথে আমার বিয়ে হয়ছে। কিন্তু আজ অব্দি নিশিকে তো আমি দেখে নাই। আমি কলেজে গেলে অনেক মেয়ে আমার সাথে প্রেম করতে চাই। এখন কি আমি ওদের সাথে প্রেম করবো! নাকী তুমি নিশির সাথে আমার দেখা করিয়ে দিবে? (আমি)

আম্মু:- তুই অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকলে তোর চোখ তুলে ফেলবে নিশি। এখন ভালোই ভালোই সময় আছে মন দিয়ে পড়া শোনা করে যা।

আমি:- আম্মু তুমি এই একটা কথা আমাকে ১৩ বছর ধরে বলে যাচ্ছো। আদো নিশির সাথে আমার কোন দিন দেখা হবে কিনা তা জানিনা।

আম্মু:- হবে হবে অপেক্ষার ফল মিষ্টি হয়, আমি যেইটা বলি এখন তুই কান খুলে শোনে রাখ।

আমি:- কান খুলা আছে বলে ফেলো। আমার মনে হয়না এই জীবনে আর নিশির সাথে আমার আর কোন দিন দেখা হবে।

আম্মু:- ঠিক আছে আমি তোকে কালকে নিশির ছবি আর ঠিকনা দিব। আর তুই নিশিকে তোর কোন পরিচয় দিবি না যদি তোর সাথে নিশির দেখা হয়।

আমি:- কেন পরিচয় দিব না কেন?

আম্মু:- তোদের কাবিনে কিছু নিয়ম আর শর্ত লিখা আছে।

আমি:- কিসের শর্ত আর কিসের নিয়ম।

আম্মু:- তুকে বলা যাবেনা, এখন রুমে গিয়ে শুয়ে পর আগামী কাল সকালে নিশির ছবি আর ঠিকানা দিয়ে দিব। আমার কাছে আজকে কুরিয়ার করে মমতা নিশির কিছু ছবি আর ঠিকানা দিয়েছে। আগামী কাল সকালে তোকে দিব তখন মন ভরে দেখে নিস কেমন?

আমি:- ঠিক আছে, আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সোজা নিজের রুমে চলে এসেছি। আহা কি আনন্দ লাগছে। আজ কত দিন পর আমার বাল্য কালের বউকে দেখতে পারবো। এখন মনের সূখে একটু ঘুম দেয়, সকালে তারা তারি ঘুম থেকে ওঠতে হবে। তার আগে ছোট করে আমার পরিচয়টা দিয়ে নেয় কেমন। আমাদের পরিবার যোথ পরিবার, আমি বাবা মার এক মাত্র ছেলে। আর আমার আরো দুই চাচা আছে মেজু চাচার কোন মেয়ে নেই। ছোট চাচার একটা মেয়ে আছে ও ছোট থেকে ওর নানুর বাসায় থাকে। আমি সোহরাব_আল_ইসলাম, এখন অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। আব্বু ব্যবসা করে মা ঘরে থাকে, এতক্ষন যাকে নিয়ে কথা হয়ছে মানে আমার বাল্য কালের বউ নিশি। নিশির সাথে আমার ছোট থাকতে বিয়ে হয়ছে। নিশি কিন্তু আমার রক্তের সম্পর্কে কেও নই। তবে আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে ছোট বেলা আমি নিশিকে বউ বলে ডাকতাম তাই আম্মু কাওকে না জানিয়ে নিশির সাথে আমার বাল্য কালে বিয়ে দিয়ে দিছে। যখন সবাই জানতে পারছে তখন আম্মু ছারা এই বিয়েটা কেও মেনে নিতে পারেনি। আব্বু মাঝে মধ্যে আম্মুর সাথে ঝগড়া করে আমার বাল্য কালের বিয়ে নিয়ে। নিশি ছোট বেলা তো অনেক নাদুস নুদুস ছিলো দেখতে মাশাল্লাহ। এখন কেমন হয়ছে সেইটা আল্লাহ ভালো যানে। যাক অনেক ঘুম পাচ্ছে একটু ঘুমিয়ে নেয় সকালে বাকী কথা হবে। নিশির কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি ঠিক মনে নেয়। সকালে ঘুম ভাঙছে ফজরের আজান শোনে, ঘুম থেকে ওঠে নামায পড়তে গেলাম। নামায শেষ করে বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে নিচে এসেছি।

আম্মু:- তুই নাস্তা কর আমি ঠিকানা আর ছবি তোর ছোট মাকে দিয়ে পাঠিয়ে দিতেছি। শোন বাবা তুই কিন্তু নিশিকে ছারা আর কাওকে বউ হিসাবে মানবি না।

আমি:- ঠিক আছে, আম্মু চলে গেছে! তবে আম্মু প্রায় এই কথাটা বলে আমি যেন নিশিকে ছারা আর কাওকে বউ হিসাবে না মানি। কিন্তু কেন বলে তা জিগেস করলে বলে আমি যা বলছি তাই আর কিছু জানতে চাইবি না। যাক বসে বসে আমি নাস্তা করতেছি ছোট মা এসে আমার হাতে একটা সাদা খাম দিয়ে বলে,, (আমি ছোট চাচিকে ছোট মা আর মেঝো চাচিকে মেঝো মা বলে ডাকি)

ছোট মা:- সোহরাব এই খামটা তোমার আম্মু দিয়েছে, বলছে এইটার ভীতরে নিশির সব ঠিকানা আর ছবি দিয়ে রাখছে। তুমি এই ঠিকানা গিয়ে নিশিকে দেখে আসতে।

আমি:- ঠিক আছে উম্মা ছোট মাকে একটা পাপ্পি দিয়ে সোজা বেড়িয়ে পরলাম আমার ১০ বছরের ভালোবাসার মানুষের কাছে। বাহিরে এসে খামটা খুলে আগে ঠিকানা দেখছি। আরে এই তো কুমিল্লা কাছেই আছে তাহলে বাইকটা নিয়ে যেতে পারি। আগে একটু নিশিকে দেখি না এখন দেখবো না একে বারে ঠিকানা মোতাবেগ গিয়েই দেখবো। না এখন ছবিটা দেখবেনা ছবিটা আবার খামের ভীতরে ঢুকিয়ে নিয়েছি। বাইকটা বের করে সোজা রওনা দিলাম ঠিকানা মত। আজ কত দিন পর নিশিকে দেখতে পারবো। যেখানে কুমিল্লা আসতে সময় লাগে ৩ ঘন্টা সেখানে আমি দুই ঘন্টা চলে আসলাম। বাড়ীর ঠিকানা মোতাবেগ এসে খাম থেকে ছবিটা বের করেছি। বাহা নিশি তো অনেক সুন্দর হয়েছে। যাই বাড়ীর ভীতরে ঢুকি নিজের বাল্য কালের বউকে দু চোখ ভরে দেখবো। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল বাজাতেই একজন ভদ্র মহিলা এসে দরজা খুলে দিয়েছে।

মহিলা:- কাকে চাই?

আমি:- এয়ে মানে তখনি একজন বলে,,,,

আরে সোহরাব তুমি এখানে এসো বাবা ভীতরে এসো। নিশির সাথে দেখা করতে এসেছো? (একজন ভদ্র পুরুষ)
আরে এমন ভাবে কি দেখছো আমি তোমার রফিক আঙ্কেল। আর ওনি হচ্ছে তোমার মমতা আন্টি।

আমি:- কিন্তু আপনাদের চেহারা কেমন চেন্জ লাগছে আমার তো আপনার চেহারা চেনার কথা?

রফিক আঙ্কেল:- কি করে চিনবে সেই কত বছর আগে দেখছো?

মমতা আন্টি:- বাবা সোহরাব তুই আমাকে চিন্তে পারিস নি?

আমি:- (দেখে তো মনে হচ্ছে সবাই ড্রামা করছে তাতে আমার কি? আমি আমার বাল্য কালের বউকে দেখতে পেলে হয়ছে। আর এই ছবির সাথে ম্যাচিং করলে হয়ছে) হ্যা আন্টি চিন্তে তখনি সুফায় বসে থাকা মেয়েটা দাঁড়িয়ে গেছে। একটে জীন্স আর টপ পড়া। ছবির সাথে চেহারার একদম মিল আছে। তবে ছোট বেলার নিশির সাথে কোন মিল নেই যেই নিশি রেহেঙা ছারা কোন কিছুই পড়তে চাইত না আর সেই নিশি এখন জীন্স টপ পড়ে।

নিশি:- কেমন আছো সোহরাব?

আমি:- ভালো, তুমি কেমন আছো নিশি?

নিশি:- কে নিশি আর আমার নাম তো প্রিয়া।

আমি:- মানে তোমার নাম প্রিয়া হলো কবে তখনি,,

রফিক আঙ্কেল:- সোহরাব ওর পুরা নাম প্রিয়া ইসলাম নিশি তুমি ওকে ছোট বেলা নিশি বলে ডাকতে।

আমি:- ও মনে পড়েছে, আচ্ছা আঙ্কেল তাহলে আমি যাই, নিশি বাই তবে নিশি তুমি কি আমাকে একটু বাহির পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসবে?

নিশি:- হ্যা চলো যখনি দরজা দিয়ে বের হব তখনি চেয়ে দেখি আব্বু ভীতরে ঢুকতেছে আমি তো আব্বুকে দেখে ভয়ে একদম চুপসে গেছি। তারপরও ভয়ে ভয়ে আব্বুকে জিগেস করেছি আপনি এখানে?

আব্বু:- আসলে রাতে তোর আম্মু আমাকে সব বলছে তাই সব ভূলে চলে এলাম। মা নিশি তুমিও চলো আমাদের সাথে। আজ থেকে তুমি আমাদের বাড়ীতে থাকবে।

রফিক আঙ্কেল:- বাল্য কালের বিয়েতে তো কেও উপস্থিত ছিলাম না। আপা আর মমতা মিলে বিয়েটা দিয়েছে। আমি রাতে একটা পার্ঠির আয়োজন করে রাখছি সেখানে সোহরাব আর প্রিয়ার আবার বিয়ে দিয়ে দিব।

আব্বু:- ঠিক আছে তাই হবে যদি আপনি ভালো মনে করেন?

আমি:- একবার তো বিয়ে হয়ছে তাহলে আবার বিয়ে কেন? আর আম্মু এখানে নেই তাই বিয়ে করতে পারবো না আবার।

আব্বু:- তোর বউকে তুই যত খুশি বিয়ে করবি তাতে সমস্যা কি?

আমি:- একবার বিয়ে হয়ছে তাহলে আবার বিয়ে করার কি দরকার?

আব্বু:- তুই কি কাবিনের লিখা নিয়মের কথা গুলা ভূলে গেছিস?

আমি:- কি নিময় আমি কি করে বলবো? আর যাই হোক এখন আমি বিয়ে করতে পারবো না। আমি এখুনি বাড়ী চলে যাবো। আম্মুকে সাথে নিয়ে এসে তারপর নিশিকে নিয়ে যাবো? ঠিক তখনি নিশি এমন এক কথা বলে যা আমি বিপাকে পড়ে গেলাম এখন কি করবো?

চলবে,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে