গল্প:- বাল্য কালের বউ সিজন ২ পর্ব:- (২)
লিখা:- সোহরাব আল ইসলাম
।
বাল্য কালে তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়ছে তো কি হয়ছে? এখন আবার বিয়ে করতে তোমার সমস্যা কি? সবাই যেহেতু আমাদের আবার বিয়ে দিতে চাচ্ছে তাহলে এই বিয়েটা আমাদের আবার নতুন করে করা উচিত। (নিশি)
আমি:- দেখো নিশি বিয়ে করতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু এক গুরু বার বার জবাই করার কি দরকার? আর তাছারা এখানে আম্মু নেই। তাহলে আবার বিয়েটা কি করে করি বলো?
নিশি:- আন্টিকে আমরা ফোনে বলে দিব। আর আগামী কাল তো সকালে আমি সহ তোমাদের সাথে তোমার বাড়ীতে যাবো। তখন আন্টি আমাকে দেখে আর কিছুই জিগেস করবে না। বরং আন্টি অনেক খুশি হবে।
আমি:- দেখো নিশি তুমি তো সব ভূলেই গেছো? তুমি তো এমন ছিলেনা আম্মুকে এখন আন্টি বলো আর নিশি থেকে প্রিয়া হয়ে গেলে কি করে?
নিশি:- আমাকে তোমার এখন ভালো লাগেনি তাই তুমি এমন করতেছো ঠিক আছে তোমার সাথে আমার বিয়ে করার কোন ইচ্ছে নেই। ডেট মম আমি উপরে চললাম। সোহরাবকে বলো সে যেন চলে যায়।
আব্বু:- না মা এমনটা করে না, আচ্ছা সোহরাব বিয়ে করতে তোর আপত্তি কোথায়? আর তুই তো চাস নিশি তোর বউ হয়ে সারা জীবন তোর সাথে থাকুক?
আমি:- হ্যা আমি চাই, কিন্তু আব্বু আমার আর নিশির বিয়ে তো বাল্য কালে একবার হয়ছে তাহলে এখন কেন আবার বিয়ে? যদিও নতুন করে বিয়ে করতে হয় তাহলে আমি ঢাকা গিয়ে বিয়ে করবো। এখানে কোন বিয়ে করতে পারবো না!
রফিক আঙ্কেল:- দেখো বাবা আমি বলিকি বিকালে আমাদের বাসায় একটা পার্টি দিয়েছি তুমি আসবে বলে। ঐ পার্টিতে তুমি নিশিকে হাতের আঙুলে আংটি পড়িয়ে দিলে হবে। তাহলে সবাইকে বলতে পারবো বাল্য কালে ওদের বিয়ে হয়ছে এখন আংটি পড়িয়ে শ্বশুড় বাড়ীতে নিয়ে গেছে।
আব্বু:- হ্যা সোহরাব এই কাজটা করতে হবে আর সমাজ বলে তো কিছু আছে নাকি?
আমি:- ঠিক আছে, তখনি নিশি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। এত বছর পর নিশিকে কাছে পেয়েছি কিন্তু কেন জানি মনে হচ্ছেনা আমাকে নিশি জড়িয়ে রাখছে। নিশি চলো তোমার সাথে আমি আলাদা কিছু কথা বলবো।
নিশি:- হ্যা চলো কি কথা বলবে? তখনি,,,
আব্বু:- বাবা সোহরাব এদিকে আয় তোর সাথে আমার আলাদা কিছু কথা আছে বলে আব্বু আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে এসেছে।
আমি:- এমন ভাবে হাত ধরে টানা টানি করছেন কেন?
আব্বু:- আমি যদিও এই বিয়েটা মেনে নিতে চাইনি কিন্তু তুমি আমার এক মাত্র সন্তান বলে এই বিয়েটা মেনে নিয়েছি। এখন কোন জামেলা করলে আমি কিন্তু আর সহ্য করবো না।
আমি:- কি জামেলা করতেছি আমি তো নিশির সাথে একটু কথা বলতে চাচ্ছিলাম।
আব্বু:- যা বলবে বাড়ীতে গিয়ে সব কথা বলবে এখানে কোন কথা হবে না।
আমি:- ঠিক আছে, চুপ চাপ বসে আছি কিছুক্ষনের মধ্যে নিশিদের বাড়ীতে অনেক মানুষজন জরো হয়ে গেলো। আমার আর নিশির সাথে বাল্য কালে বিয়ে হয়ছে এইটা সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে।
রফিক আঙ্কেল:- নাও সোহরাব নিশিকে আংটি পড়িয়ে দাও।
আমি:- হ্যা দিতেছি, আমি নিশিকে আংটি পড়াচ্ছি আর আমার বুকের ভীতর কেমন কেমন করছে। নিশি আমাকে আংটি পড়িয়ে দিয়েছে। আমি আম্মুকে ফোন করতে পারতেছিনা আব্বু আমার মোবাইল নিয়ে রেখে দিছে।
নিশি:- আজকে আমি অনেক খুশি উম্মা সবার সামনে আমার গারে কিস করে দিছে।
আমি:- ঠিক আছে আব্বু অনুষ্টান তো শেষ তাহলে আমি নিশিকে নিয়ে তাহলে ঢাকা চলে যাই। আচ্ছা আব্বু আম্মু তো বলেছিলো নিশির সাথে দেখা হলে পরিচয় না দিতাম। কিন্তু এখন তো সব ওল্টা পাল্টা হয়ে গেলো?
আব্বু:- আসলে তোর আম্মু তোকে সারর্প্রাইজ দিতে চাইছে।
আমি:- ও আচ্ছা নিশি তোমার সব কিছু গুচিয়ে নাও। নিশি গিয়ে ওর সব কিছু গুচিয়ে নিয়েছে। আমি নিশিকে নিয়ে ঢাকা চলে এসেছি রাত ১০টার দিকে। দরজায় দাঁড়িয়ে কলিং বেল বাজাতেই ছোট মা এসে দরজা খুলে বলে,,,
ছোট মা:- সোহরাব তুমি কাকে সাথে নিয়ে এসেছো?
আমি:- নিশি আমার বাল্য কালের বউ এখন থেকে নিশি আমাদের বাড়ীতে থাকবে। নিশিকে নিয়ে ভীতরে ঢুকেছি সবাই বসে আছে শুধু আম্মু নেই। নিশিকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি।
নিশি:- আমি কোন রুমে থাকবো?
আমি:- আচ্ছা তোমাকে যে ছোট বেলা আমি একটা রকেটের চেইন দিয়েছি ঐ চেইনটা কোথায়?
নিশি:- ঐটা তো হারায় ফেলছি সেই কবে।
আমি:- আচ্ছা তুমি সত্যি আমার সেই বাল্য কালের বউ তো?
নিশি:- কেন এই কথা বলছো কেন?
আমি:- এমনিতেই তোমার কি ছোট বেলার কোন কথায় মনে নেই?
নিশি:- সব আছে আমি তো আন্টিকে খুঝতেছি তখনি চেয়ে দেখি আম্মু এসেছে।
আম্মু:- বাহা নিশি কেমন আছিস তুই মা আয় আমার বুকে আয়। আমি রুমে চলে এসে খাঠের উপর শুয়ে শুয়ে নিশির ছোট বেলার দুষ্টমি গুলা মিস করতেছি। এই নিশির সাথে বাল্য কালের নিশির আকাঁশ পাতাল ব্যাবদান। রুমে শুয়ে আছি রাত ১১টা বাজে এমন সময় এমন সময় জুয়েল ফোন করছে,,
জুয়েল:- দোস্ত তারা তারি চলে আয় ভূতের আড্ডায়।
আমি:- কেন কোন পার্টি আছে আছে নাকী?
জুয়েল:- তারা তারি আয় আজকে সব পরী আকাঁশ থেকে নিচে নেমে এসেছে।
আমি:- দোস্ত নিশিকে পেয়ে গেছি এখন আর এসবের দরকার নেই। আচ্ছা আগামী কাল কলেজে দেখা হবে। বলে ফোনটা রেখে দিয়েছি মনটা খারাপ করে ঘুমিয়ে গেছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে নামায পড়ে এসে ফ্রেস হয়ে নিচে নামছি।
নিশি:- রাতে তুমি হঠাত করে কোথায় চলে গেছো?
আমি:- সারা দিন জার্নি করেছি তাই ঘুমিয়ে গেছিলাম।
নিশি:- এখন তুমি কি করবে?
আমি:- নাস্তা করে কলেজে যাবো।
নিশি:- আমি তোমার সাথে তোমাদের কলেজে যাবো।
আমি:- আমাদের কলেজে অন্য কোন আওট মানুষ ঢুকতে দেয়না।
নিশি:- তাহলে বিকালে আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে।
আমি:- ঠিক আছে, নাস্তা করে আমি বাহির হয়ে চলে আসলাম। বাইকটা নিয়ে বের হয়ছি কিছুক্ষনের মধ্যে কলেজে চলে এসেছি। বাইকটা রেখে সোজা ক্লাসে ঢুকে গেছি। কিছু লেকচার শুনে বাহিরে বসে আড্ডা দিতেছি।
জুয়েল:- দোস্ত তুই তো কাল রাতে ভূতের আড্ডায় যাসনি। তবে আমাদের কলেজে অনার্সে ফাস্ট ইয়ারে একটা মেয়ে এসেছে দেখতে একদম যাক্কাস।
আমি:- দেখ আমাকে এসব বলে কোন লাভ নেই দেখি উঠ বলে ঘুরে দাঁড়িয়েছি তখনি এক ধাক্কা,,,,
ও মা গু মরে গেলাম, এই কানা নাকী চুখে দেখতে পান না। মেয়ে দেখলে ধাক্কা খেতে ইচ্ছে করে।
আমি:- সরি মেম দেখতে পায়নি, আমি আপনার বই গুলা তুলে দিতেছি, যখনি নিচে বসতে যাবো তখনি আবার মাথায় টুকা খেয়েছি। তখনি আমার বুকের হার্ট বিট বেরে গেছে। আরে ছোট বেলার সেই রোগটা আবার শুরু হয়ে গেলো নাকী। তারা তারি করে উঠে এক দৌর আর মেয়েটা পেছন থেকে আমাকে ডাকতেছে। বাইকটা নিয়ে সোজা রওনা দিয়েছি। তারা তারি করে বাড়ীতে এসে বাইকটা রেখে ভীতরে ঢুকে আম্মু বলে এক ডাক দিয়েছি আর বাড়ীতে সবাই জরো হয়ে গেছে।
আম্মু:- কিরে কি হয়ছে?
আমি:- আমার ছোট বেলার সেই রোগটা আবার আজকে কলেজে দেখা দিয়েছে।
আম্মু:- মানে তোর বুকের হার্ট বিট লাফাচ্ছে? কিন্তু তা কি করে সম্বব কারন,,
আমি:- হ্যা, আম্মু সত্যি বলছি,,, তখনি দরজার কলিং বেল বেজে উঠেছে আমি গিয়ে দরজা খুলে দিয়েছে। তাকিয়ে দেখি জুয়েল কিরে তুই আসলি কেন এখন?
জুয়েল:- শালা তোকে কত ডাকছি পেছন থেকে তুই শুনিস নি কেন? মেয়েদের চেইন চুরি করে আনতে তোকে কে বলছে?
আমি:- মানে কিসের চেইন? আর কার চেইন কোন মেয়ের চেইন? ওল্টা পাল্টা বলতেছিস কেন?
জুয়েল:- কলেজে যেই মেয়ের সাথে ধাক্কা খেয়েছিস ঠিক তখনি জুয়েলকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বাড়ীর ভীতরে ঢুকে গেছে ঐ মেয়েটা আমার কাছে এসে সবার সামনে আমার কালার টেনে ধরে মাথায় একটা টুকা দিয়ে বলে,,,
মেয়ে:- আমার মাথার সাথে কেও এক বার টুকা খেলে আমি তাকে দ্বীতীয় বার টুকা দিবই সে যেই হোক। তাই মিথ্যা কথা বলে আপনার বুন্ধুকে দিয়ে আপনার বাড়ীতে এলাম। এবার আমার কাজ হয়ে গেছে আমি চলে যাই। আর ঠিক তখনি নিশি এসে ঐ মেয়েটাকে,,,,
।
চলবে,,,,
ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।