গল্প:- নব_দম্পতি পর্ব:-(০৯)
লেখা:- AL Mohammad Sourav
!!
তসিবার হাব ভাব আমার মুটেও সুবিধার লাগছেনা! যেই বউটা আমাকে ছাড়া কিছুই বুঝত না এখন সেই বউটা আমাকে পাত্তা দেয়না। রুমে বসে আছি কিছুক্ষণ পর তসিবা এসেছে। আচ্ছা তুমি কি সত্যি তসিবা নাকী তোমার জমজ বোন?
তসিবা:- মানে?
আমি:- আমার কেনো জানি তোমাকে নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে। কেনো জানি মনে হচ্ছে তুমি আমার বউ তসিবা না ওর কোনো জমজ বোন হবে।
তসিবা:- জ্বিনা আমার কোনো বোন নেই আমি আপনার বউ তসিবা ইসলাম। আগে বোকা ছিলাম এখন কিছুটা চালাক হয়েছি তবে সব কিছুর জন্য সাহেদকে ধন্যবাদ দিতে হবে। (চালাক না ছায় আমার এখন জ্বলে কোনো মতে রিপাকে ভাগাইতে পারলে হয়ছে এরপর শালা সাহেদের অবস্থা কি করি দেখো। মনে মনে কথা গুলি ভাবছি তখনি তসিবা বলে) আরে আপনি তো এখনো কাপড় চেন্জ করেন নাই যান গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসেন।
আমি:- ইচ্ছে হচ্ছেনা ফ্রেশ হতে! আর আমার জন্য তোমার কোনো চিন্তা আছে? সব চিন্তা তো সাহেদকে নিয়ে করছো? আমাকে ফোন করে কোনো দিন কিস করেছো? (তখনি তসিবা আমার কাছে এসে আমার কপালে আর গলাই হাত দিয়ে বলতেছে)
তসিবা:- আপনার শরীর ভালো আছে তো নাকী জ্বর টর এসেছে?
আমি:- দেখি মজা করোনা আমি সিরিয়াছ ভাবে বলছি।
তসিবা:- ও তাই বলেন আপনি রিপাকে বলতেছেন ফোনে। আমি ভাবছি আমাকে বলছেন তাই স্পর্শ করে দেখছিলাম তার জন্য সরি। আপনি কথা বলেন আমি নিচে গিয়ে কাজ করি।
আমি:- তসিবা আমি তোমাকে বলছি আর ফোনে কথা বললে হাতে বা কানে মোবাইল থাকবে।
তসিবা:- তাহলে কানে ঐটা কি? (তখনি মনে পড়েছে কানে ব্লুথুটা এখনো লাগানো আছে) আচ্ছা আপনি কথি বলেন আমি নিচে যাই দেরি হলে আম্মা বকা বকি করবে।
আমি:- আরে আমার কথাটা তো শুনো কে শুনে আমার কথা তসিবা বেড়িয়ে গেছে। আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে গেছি সবার সাথে বসে কিছু গল্প করেছি তসিবা মোবাইল কার সাথে মেসেজ করছে আর হাসতেছে। রাতের ডিনার করে রুমে এসেছি দেখি আজকেও তসিবা নিচে যায়গা করেছে ঘুমাবে বলে। কি হলো আবার আজকেও নিচে ঘুমাবে নাকী? (তখনি তসিবা কুল বালিশটা এনে দিয়ে বলে)
তসিবা:- যদি জড়িয়ে ধরে ঘুমাতে হয় তাহলে নেন এই কুল বালিশটা জড়িয়ে ধরে ঘুমান। আমার কাছে এসে ভুল করেও শুইবেন না বলে দিলাম।
আমি:- কথা গুলি মনে থাকবে তো?
তসিবা:- মনে রাখার দরকার নেই কিছু দিনের মধ্যে আমি সাহেদের কাছে চলে যাচ্ছি। আচ্ছা আপনি ঘুমান আমি সাহেদের সাথে একটু ফোনে কথা বলে আসি।
আমি:- বাহিরে যেতে হবেনা তুমি রুমে কথা বলো। আমি ইয়ার ফোন লাগিয়ে গান শুনছি। তসিবা কথা বলছে আমি তাকিয়ে দেখি অনেক হাসা হাসি করছে। চোখ গুলি বন্ধ করে শুয়ে আছি কখন যে ঘুমিয়ে গেছি বলতে পারবোনা। সকালে ঘুম থেকে উঠে নামায পড়ে এসেছি। তসিবার সাথে এখন তেমন কথা হয়না যখনি তসিবা ফ্রি থাকে তখনি কানে মোবাইল লাগিয়ে রাখে আর কথা বলে। আমি রেডি হয়ে অফিসে আসবো তখনি তসিবা বলে,,,।
তসিবা:- একটা কথা বলার ছিলো আপনার কাছে কি আমার কথা শুনার সময় আছে?
আমি:- কি বলতে চাও তা সোজা সুজি বলো।
তসিবা:- আজকে তো ডক্টরের কাছে যাওয়ার কথা ছিলো। এখন কি আপনি আমাকে নিয়ে যেতে পারবেন?
আমি:- কেনো আমার সাথে যাবে কেনো যাকে তুমি এত ভালোবাসো আর দিনে রাতে ফোনে কথা বলতে থাকো তার সাথে যাও।
তসিবা:- কিন্তু বাড়ীর সবাইকে কি বলে বের হবো?
আমি:- যা বলার বলবে তাতে আমার কি? আমি গেলাম বলে বেড়িয়ে এসেছি। অফিসে এসেছি আর কারো সাথে কোনো কথা বলিনি মুড খারাপ হয়ে আছে। আজকে অনেকের সাথে রাগা রাগি করেছি বিকালের দিকে বাড়ীতে ফোন করেছি। ভাবি রিসিব করেছে।
ভাবি:- সৌরভ বলো কেনো ফোন করেছো?
আমি:- ভাবি তসিবা কোথায়?
ভাবি:- আমার সামনে আছে।
আমি:- তসিবাকে বলেন রেডি হতে আমি এসে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো। (তখনি ভাবি বলে)
ভাবি:- কি তসিবাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে! তুমি না তসিবাকে দেখতে পারোনা তাহলে এত তাড়াতাড়ি ডাক্তারের কাছে যেতে হবে কেনো?
আমি:- আরে দূর সব সময় দুই লাইন বেশি বুঝেন। যেইটা বলছি সেইটা করেন। ফোনটা রেখে কাজ গুলি করেছি কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি করে বেড়িয়ে গেলাম। বাড়ীতে আসতে আসতে সন্ধা হয়ে গেছে দরজাটা খোলা আছে আমি ভিতরে ঢুকে দেখি আম্মু ভাবি নিচে বসে আছে। আম্মা দরজা খোলা কেনো?
আম্মা:- তোর বউকে জিগেস কর কেনো খোলা রাখছে।
আমি:- তসিবা খোলা রাখছে তাহলে আমার জন্যই মনে হয়। আচ্ছা আমি রুমে যাই সিঁড়ি দিয়ে উপরে যেতেছি দেখি তসিবা নামছে।
তসিবা:- আপনি এসে গেছেন?
আমি:- হ্যা তুমি নিচে বসো আমি কাপড়টা চেন্জ করে আসছি। তসিবা নিচে গেছে আমি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে এসেছি।
আম্মা:- সৌরভ সন্ধা বেলা কোথায় যাওয়া হচ্ছে শুনি?
আমি:- এসে বলবো আর সব তসিবা আসো। বলে তসিবার হাত ধরে বাহিরে নিয়ে এসেছি। তুমি দ্বাড়াও আমি বাইক নিয়ে আসছি।
তসিবা:- বাইকে করে যাবোনা আমি গাড়ীতে করে যাবো।
আমি:- ঠিক আছে গাড়ী নিয়ে আসছি। তসিবা গাড়ীতে বসেছে। আমি গাড়ী চালাচ্ছি তসিবা চুপ করে বসে আছে। হাসপাতালে এসেছি তসিবা তুমি ভিতরে যাও আমি আসছি।
তসিবা:- নাহ আমার সাথে যাবেন প্লিজ চলেন।
আমি:- ঠিক আছে! তসিবাকে নিয়ে ভিতরে গেছি কিছুক্ষনের মধ্যে ডক্টরের চেম্বারে গেলাম। ডক্টর তসিবার পিঠ দেখে বলে,,,।
ডাক্তার:- বাহ খুব তাড়াতাড়ি দাগ গুলি মুছে গেছে আর স্কিনটা ঠিক আগের মত হয়ে গেছে। আপনি তো অনেক লাকি কারন এমন একটা বর পেয়েছেন আপনাকে খুব কেয়ার করে।
তসিবা:- হ্যা খুব কেয়ার করে।
ডাক্তার:- মিস্টার আপনাকে ধন্যবাদ এতটা কেয়ার করার জন্য। এখন শুধু মেডিসিন দিতেছি এই গুলি শেষ হলে আর কোনো মেডিসিন লাগবেনা।
আমি:- ঠিক আছে! মেডিসিন গুলি নিয়ে নিলাম ডক্টরের বিজিট দিয়ে দুজনে বেড়িয়ে এলাম।
তসিবা:- আমার একজনের সাথে দেখা করতে হবে।
আমি:- সাহেদের সাথে?
তসিবা:- আপনি কি করে বুঝলেন?
আমি:- বুঝতে পারি। সাহেদ কোথায় আছে?
তসিবা:- মেসেজ করে বলছে হাসপাতালের সামনে আছে।
আমি:- ও আচ্ছা! দুজনে বেড়িয়ে এসেছি। দেখি সাহেদ ছেলেটা দাঁড়িয়ে আছে। সাহেদের হাতে একটা শপিং ব্যাগ আছে।
তসিবা:- হাই সাহেদ।
সাহেদ:- হাই। তসিবা ওনি তোমার কি লাগে? (যখনি আমি বলতে ছিলাম যে আমি তসিবার স্বামী ঠিক তার আগে তসিবা বলে)
তসিবা:- আমার কাজিন ওনার নাম আল মোহাম্মদ সৌরভ। (তসিবার উপর আমার অনেক রাগ উঠছে আমি রাগি চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। তখনি তসিবা বলে) আপনি এখানে একটু দ্বাড়ান আমি সাহেদের সাথে কিছু কথা বলে আসি। সাহেদ এদিকে এসো বলে সাহেদের হাত ধরে টেনে আমার কাছ থেকে কিছুটা দূরে টেনে নিয়ে গেছে।
আমি:- তসিবা আমি গাড়ীতে আছি তোমার কথা বলা শেষ হলে এসো। দূর থেকে ডেকে কথা গুলি বলে আমি গাড়ীতে এসে বসেছি। প্রায় ১০ মিনিট পরে তসিবা এসেছে হাতে ঐ শপিং ব্যাগটা নিয়ে এসেছে। গাড়ীতে বসে আমাকে বলছে।
তসিবা:- দেখছেন সাহেদ আমাকে জন্য কত সুন্দর চুড়ি গিফট করছে। চুড়ি গুলি দেখতে অনেক সুন্দর তাইনা? (চুপ করে গাড়ী চালাচ্ছি তসিবা চুড়ি গুলি হাতে দিচ্ছে কিন্তু হাতের ভিতরে ঢুকছেনা)
আমি:- বাহ তোমার লাভার তোমার হাতের মাপ জানেনা।
তসিবা:- না জানুক তাও তো আনছে তাইনা? (তখনি চুড়ি পড়তে গিয়ে একটা চুড়ি ভেঙে গেছে আর ওর হাত হাল্কা কিছুটা কেটে গেছে। আমি গাড়ীটা সাইট করেছি)
আমি:- চুড়ি গুলি হাতে দেওয়ার কি বেশি প্রয়োজন ছিলো? যেহেতু চুড়ি গুলি ছোট সেহেতু হাতে দিতে গেছো কেনো? দেখি হাতটা তসিবা দেখাচ্ছেনা আমি জোর করে ওর হাতটা দেখছি। আমার পকেট থেকে রুমালটা বের করে ওর হাতটা বেদে দিয়েছি।
তসিবা:- আসলে সাহেদের কোনো দোষ নেই আমাকে ফোন করেছিল কিন্তু আমি হাতের মাপ বলিনি তাই ছোট হয়ে গেছে।
আমি:- কথা কম বলে চুপ করে বসো। গাড়ীটা নিয়ে একটা শপিং মহলের সামনে দ্বাড় করিয়েছি।
তসিবা:- এখানে নিয়ে আসলেন কেনো?
আমি:- চুপ করে আমার সাথে আসো। তসিবা কোনো কথা বলছেনা আমি ওকে নিয়ে শপিংয়ের জন্য লেডিস দোকানে ঢুকেছি।
তসিবা:- আমার কিছু লাগবেনা আর সাহেদ আমাকে বলছে বিয়ের পর অনেক কিছু দিবে।
আমি:- আর একবার যদি সাহেদের নাম মুখে আনো তাহলে কিন্তু?
তসিবা:- কিন্তু কি আমাকে তাড়িয়ে দিবেন দেন আমার জন্য ভালো হবে।
আমি:- তাড়িয়ে দিবো কেনো মুখে কসটেপ লাগিয়ে দিবো। আমাদের দুজনের ঝগড়া দেখে দোকানের আরো মানুষজন তাকিয়ে আছে। তসিবা চুপ করে আছে আমি দুইটা চুড়িদার নিলাম একটা সাদা আরেকটা নেবিব্লু।
তসিবা:- এই গুলো কার জন্য নিচ্ছেন?
আমি:- রিপার জন্য রিপার খুব পছন্দ চুড়িদার। তখনি তসিবা চেহারাটা কালো করে নিয়েছে। তসিবাকে নিয়ে চুড়ির দোকানে গেছি। আচ্ছা ঐ চুড়ি গুলা ২৬ সাইজের দেন তো?
তসিবা:- ২৬ মাপ তো আমার হাতের।
আমি:- রিপার হাতের মাপপ ২৬। তখনি তসিবা কিছুটা মন খারাপ করে নিয়েছে।
দোকানদার:- এক রকমের দিবো নাকী?
আমি:- সাদা নেবিব্লু মিলিয়ে দেন দুই ডজন চুড়ি দেন।
তসিবা:- এত চুড়ি দিয়ে কি করবেন?
আমি:- রিপা চুড়ি পড়তে বেশি পছন্দ করে তাই। তসিবা মন খারাপ করে নিয়েছে। আমি দাঁড়িয়ে নিজের মত করে চুড়িদার গুলির সাথে মেচিং করে দুই ডজন চুড়ি নিলাম।
তসিবা:- রিপাকে তো চুড়িদার পড়তে দেখিনি আর চুড়িও পড়েনা।
আমি:- এখন থেকে পড়বে। এখন তুমি আসো তসিবাকে নিয়ে গাড়ীতে এসেছি তসিবা চুপ চাপ বসে আছে ঘন্টা খানেক পরে বাড়ীতে এসেছি। তসিবা এই শপিং ব্যাগ গুলি রুমে নিয়ে রাখো।
তসিবা:- অন্যের জিনিস আমি নিবো কেনো?
আমি:- এখন রুমে নিয়ে রাখো আগামীকাল রিপা এসে নিয়ে যাবে।
তসিবা:- ঠিক আছে! তসিবা শপিং ব্যাগ নিয়ে দরজার সামনে গেছে আমি গাড়ীটা পার্কিং করে গিয়ে দেখি ভাবি এসে দরজাটা খুলে দিয়েছে।
ভাবি:- বাব্বাহ এত শপিং দেবরজ্বি তুমি তো বলো তসিবাকে ভালোবাসোনা আর এখন দেখছি শপিং আবার বাচ্চা হবে।
আমি:- ভাবি আপনার মাথায় কিছুই নেই। তখনি আম্মা এসেছে
আম্মা:- সৌরভ তোর কাছে নাকী টাকা নেই আর এখন এই মেয়েটার জন্য এত কিছু কিনে এনেছিস। আমি যখনি তোর কাছে কিছু বলি তুই তো পাত্তা দেসনা আর এখন বউয়ের জন্য সব কিছু হয়। এই মেয়ে তুই বোবা হয়ে এত কিছু কিনে আনছিস কেনো? তখনি তসিবা বলে,,,!
তসিবা:- আম্মা এই গুলা তো রিপার জন্য ওনি কিনছে আমাকে বকা ঝকা করছেন কেনো?
আম্মা:- তুমি বোবা না তুমি কথা বলতে পারো? এতদিন আমাদের সাথে বোবা সেজে অভিনয় করেছো? (তসিবা কথা বলে নিজেই অবাক হয়ে গেছে আমি তাকিয়ে দেখি তসিবা ভয়ে একদম চুপসে গেছে) তখনি আম্মা এমন এক কথা বলে তসিবা কি ভয় পাবে আমি নিজেই থমকে যায়। To be continue,,,