গল্প:-দুই_বধূ_এক_স্বামী পর্ব:-(০৯)
লেখা:- AL Mohammad Sourav
!!
তুই তোর দুই বউয়ের জন্য সাইন করেছিস। একটা তসিবার অপেরেশন জন্য আরেকটা মীমের জন্য। আজকে মীমের অপেরেশন হবে এতদিন তোর কাছ থেকে আমি অনেক কিছুই লুকিয়ে রাখছি আজ সব বলে দিতে চাই।
আমি:- মানে কি লুকিয়ে রাখছেন?
আব্বা:- মীম তুকে কখনো কষ্ট দিতে চাইনি! তাই তো মীম নিজে থেকে তোর সাথে তসিবার বিয়ে দিয়েছে।
আমি:- আপনি কি বলতে চাচ্ছেন কিছুই বুঝতেছিনা। মীম যদি আমাকে কষ্ট দিতে নাই বা চাই তো তাহলে কেনো আমার সাথে এমন করছে? তখনি মীমের মা বাবা দুজনে এসেছে। কি হলো বলেন এতদিন কি লুকিয়ে রাখছেন?
আব্বা:- আজ যাকে তুই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসিস সেই তসিবা কে জানিস?
আমি:- মানে তসিবা তো আপনার বন্ধুর মেয়ে।
আব্বা:- নাহ তসিবা হলো মীমের সবচেয়ে কাছের বান্ধবী!
আমি:- কি বলছেন কিন্তু তসিবা তো সব সময় মীমের সাথে খারাপ আচরন করতো।
আম্মা:- খারাপ আচরনটা তোর সামনে করেছে। যখন তুই অফিসে থাকতি তখন মীম আর তসিবা দুজনে হাসি ঠাট্টা মেতে থাকতো। যখন তুই বাড়ীতে থাকতি তখন তোর সামনে ওরা ঝগড়া করতো। এখানে তসিবাকে নিয়ে কি আমরা এসেছি নাহ তসিবা নিজে থেকে এসেছে কারন আজকে মীমের ব্রেইন টিউমারের অপেরেশন করানো হবে। তখনি তসিবার ব্যাথা উঠে যায় আর তুকে আমরা ফোন করি।
আমি:- তার মানে তুমিও জানতে?
আম্মা:- আমি যেনেছি কিছুদিন হলো।
আব্বা:- মীম তোর কষ্ট সহ্য করতে পারবেনা বলে তোর সাথে এই অভিনয় করেছে। মীম যখন জানতে পারছে ওর ব্রেইন টিউমার তখন থেকে মীম তোর সাথে বাজে ব্যাবহার করতে আরম্ভ করছে।
আমি:- কিন্তু মীম তো আমার সামনে অন্য একটা ছেলের সাথে আসা যাওয়া করেছে। আর সবার সামনে আমাকে থাপ্পড় দিয়েছে।
শ্বশুড়:- হ্যা দিয়েছে কারন তুমি যাতে মীমকে ভুলে যেতে পারো।
আমি:- সব ঠিক আছে তাহলে আমার আর আমার পরিবারের সবার নামে মামলা করার কারন কি ছিলো?
শ্বাশুড়ি:- সেইটা আমি করেছি কারনটা আমি জানতাম না তবে মীম যখন সবকিছু আমাকে খুলে বলছে তখন আমি নিজেই মামলা তুলে নিয়েছি।
আমি:- তাহলে আপনি আর মীম যে আমাদের বাড়ীতে পুলিশ নিয়ে গেছেন ঐ পুলিশ তো বলছে এখনো মামলা আছে।
আব্বা:- সব মিথ্যা বলছে। শুন তাহলে সবটা আমার কাছ থেকে।
আমি:- হ্যা বলেন।
আব্বা:- মীম কোনো দিন মা হতে পারবেনা এইটা সত্যি কিন্তু সে নিজে থেকে কিছুই করেনি। মীম যখন জানতে পারছে ও মা হবে তখন অনেক খুশি হয়েছে। তুই তখন অফিসের কাজে খুব ব্যস্ত হঠাত একদিন মীম মাথা ঘুরে পরে যায়। আমি মীমকে হাসপাতালে নেই ডাক্তার মীমকে কিছু টেস্ট দিয়েছে। সব গুলো টেস্ট করার পর যখন হাতে টেস্টের কাগজ গুলি পেয়েছে তখন মীম নিজে থেকে ভেঙে পড়ছে। সে জানতে পারলো তার গর্ভে কোনো সন্তান নয় সেইটা একটা টিউমার। আর ব্রেইনে ছোট একটা টিউমার ধরা পড়ছে। পেটের টিউমার তো কিছুদিন পরে অপেরেশন করে ফেলছে আর সাথে ডাক্তার জানিয়ে দিয়েছে কোনো দিন মা হতে পারবে না। কিন্তু ব্রেইনে যে টিউমার আছে সেইটা অপেরেশন করলে মিত্যুর সম্ভবনা ৯৫%।
শ্বাশুড়ি:- যখন ডাক্তার এই কথা বলছে তখন আমরা অনেক মানুষিক ভাবে ভেঙে পড়ি। তখন মীম সিদ্যান্ত নিয়েছে যতদিন বেচে থাকবে ততদিন তোমাকে এই কথা জানাবেনা। কারন তুমি যদি মীমের সম্পর্কে সবটা জানো তাহলে তুমি অনেক কষ্ট পাবে।
শ্বশুড়:- তখন মীম আমাদের সবাইকে দিয়ে ওয়াদা করে নেই তোমাকে আবার বিয়ে করাবে আর মীম তোমাকে ডির্ভোস দিবে। তখন মীম প্লান করে আর দিন দিন তোমার সাথে খারাপ আচরন করতে থাকে।
আমি:- আব্বা আপনি এসব কিছু জানতেন?
আব্বা:- নাহ আমি যেনেছি পড়ে মীম একদিন আমার অফিসে আসে আর সব কিছু আমাকে বলে। তখনি মীম তসিবার কথা বলে আর তসিবাকে মীম রাজি করিয়েছে তোর সাথে বিয়ে করার জন্য।
আমি:- কিন্তু কোনো সময় তো মীমের ব্রেইন টিউমারের লক্ষন দেখিনি।
আব্বা:- দেখবি কি করে? তুই মীমের সাথে কতটুকু সময় কাটিয়েছিস। তুই তো তসিবার সাথে বেশি সময় কাটাতি।
আমি:- মীম আমার কাছ থেকে এসব লুকিয়ে রেখে কি প্রমান করতে চাইছে? আমাকে ভালোবাসে অনেক! আমাকে সুখে দেখতে চাইছে! নাহ আমি মনে করি মীম আমাকে দোকা দিয়েছে। মীম যদি আমাকে সত্যি ভালোবাসতো তাহলে আমাকে সব জানানোর দরকার ছিলো।
আব্বা:- জানালে তো তুই আরো কষ্ট পায়তি। তুই যখন বাবা হতে পারবি না যেনে মীমকে থাপ্পড় দিয়েছিস তখনি মীম তোর কাছ থেকে দূরে চলে যেতে চাইছে।
শ্বাশুড়ি:- মীমের অবস্থা দিন দিন এতটা খারাপ হয়ে যাচ্ছিলো যার কারনে মীম তোমাদের বাড়ী থেকে চলে এসেছে যাতে করে তুমি কিছুই জানতে না পারো। মীমের প্রতি তোমার যেনো নতুন করে আর মায়া মহাব্বত না হয়।
শ্বশুড়:- সব কিছু তো তোমাকে আমরা বলে দিলাম এখন তো মীমকে ক্ষমা করা যায় নাকী?
আব্বা:- সৌরভ আজ মীমের অপেরেশন হচ্ছে মীমের বেচে থাকার সম্ভবনা মাত্র ৫% এবার ওকে ক্ষমা করাটা তোর উচিত।
আম্মা:- তোর সূখের কথা চিন্তা করে মীম তার কাছের বান্ধবীকে তোর সাথে বিয়ে দিয়েছে। মীম তুকে অনেক ভালোবাসে ওকে ক্ষমা করে দে বাবা।
আমি:- ক্ষমা তো আমার চাওয়া দরকার কারন মীমের সাথে অন্যায়টা আমি করেছি। মীমকে অনেক কথা শুনিয়েছি।
আব্বা:- দোয়া কর যাতে মীম বেচে থাকে আর তসিবার দুইটা বাচ্ছা হয়। তাহলে দুই বউ দুইটা সন্তান পাবে তখনি অপেরেশনের রুম থেকে একজন ডাক্তার বেরিয়েছে। সৌরভ ঐ তো মীমের কেবিন থেকে ডাক্তার বেরিয়েছে। আমি দাঁড়িয়েছি আব্বা আম্মা আর মীমের মা বাবা গেছে। তখনি তসিবার রুম থেকে একজন মহিলা ডাক্তার বেরিয়ে এসেছে।
ডাক্তার:- মিস্টার সৌরভ আপনি?
আমি:- হ্যা।
ডাক্তার:- Congress মিস্টার সৌরভ আপনার টুইন বেবি হয়ছে দুইটা মেয়ে।
আমি:- তসিবা কেমন আছে?
ডাক্তার:- আপনি নিজেই গিয়ে দেখেন ওনি আপনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছে বলে ডাক্তার চলে গেছে। মীমের কেবিনের ডাক্তার বেরিয়ে চুপ চাপ দাঁড়িয়ে আছে। আমার তো নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তসিবার দিকে যাবো নাকী দাঁড়িয়ে শুনবো মীম ঠিক আছে কিনা! কোনটা আগে করবো ঠিক ভেবে পাচ্ছিনা!To be continue,,,
!!
কিছু কথা:- আজকে আমি খুব ব্যাস্ত তাই পর্বটা ছোট করে দিয়েছি। মাত্র অল্প কিছু সময়ে পেয়েছি লিখার জন্য। আগামী পর্বটা বড় করে দেওয়ার চেস্টা করবো ইনশাল্লাহ।