গল্প:-একটু অধিকার পর্ব:-(০৫)

0
3190

গল্প:-একটু_অধিকার পর্ব:-(০৫)
লেখা:- AL Mohammad Sourav
!!
কাঁচের ভাংগা টুকরা গুলি না তোলে তসিবা সিঁড়ি দিয়ে উপরে চলে যাচ্ছে। তখনি দাদি বলে এই তসিবা তোমাকে কি বলছি তুমি শুনোনি? কাঁচের টুকরা গুলি কে তোলবে শুনি? দিন যত যাচ্ছে তত বেশি শিয়ানা হচ্ছে এই মেয়েটা। তসিবা দাদির কথা কোনো আমলে নেইনি বরং হেটে উপরে চলে গেছে।

আম্মা:- সৌরভ তসিবাকে নিয়ে যখন ওদের বাড়িতে যাবি তখন তসিবাকে রেখে চলে আসবি। ওর সাহোস দেখ তোর দাদির কথা অমান্য করে চলে গেছে।

দাদি:- এরপরেও তোমরা সবাই বলবে এই মেয়েকে বাড়ির বউ হিসাবে মেনে নিতে?

আব্বা:- তিন মাস সময় দিয়েছো দেখো কি হয়। এমনো হতে পারে তোমরা বউ শ্বাশুরী দুজনে ছোট বউয়ের কথায় উঠবস করতে হবে। মেয়েটি নতুন মাত্র এই বাড়িতে এসেছে ওকে একটু শান্তি দিয়েছো তোমরা?

দাদি:- জশিম তুই চুপ থাক! সব তোর জন্য হয়েছে যেনে শুনে একটা বেয়াদব মেয়েকে তো আর বাড়িতে রাখতে পারিনা।

আম্মা:- সেই সুযোগ আমি দিচ্ছিনা দুইদির পরে সৌরভ তসিবাকে ওর বাড়িতে রেখে চলে আসবি। কি আসবি তো? তখনি তসিবা এসেছে কিন্তু কিছুটা সাজগুজ করে এসেছে। আমি তসিবার দিকে তাকিয়ে আছি তখনি একটা চোখ টিপ দিয়েছে আমাকে কিন্তু দাদি বলে।

দাদি:- এই তসিবা তুমি আমাকে চোখ মারছো কেনো?

তসিবা:- আপনাকে কেনো চোখ মারতে যাবো! আমি তো আমার স্বামীকে চোখ মারছি। তসিবার কথা শুনে সবাই হাসা হাসি শুরু করে দিয়েছে।

আম্মা:- তসিবা তুমি গিয়ে কাপড় চেন্জ করে এসেছো কেনো?

তসিবা:- কাপড় চেন্জ করলেও কয়ফত দিতে হবে?

আম্মা:- কারণ এখন তো তুমি কোথাও যাচ্ছোনা তাহলে চেন্জ করলে কেনো?

তসিবা:- আমার শাড়ি পড়ে থাকতে ভালো লাগেনা তাই চেন্জ করে এসেছি।

আম্মা:- বিয়ের পর মেয়েরা শাড়ি পড়ে আর তোমার ভালো লাগেনা। এখন বলো তোমাকে যে আম্মা কি বলছে তুমি শুনোনি?

তসিবা:- শুনেছি তো।

আম্মা:- তাহলে কাজটা না করে চলে গেছো কেনো?

তসিবা:- কি কাজ করতে বলছে? ওনি তো কোনো কাজের কথা বলেনি। ওনি বলছে চোখ টিপ দিয়েছি কেনো? সেইটার উত্তর তো দিয়েছি।

দাদি:- এই তুমি কি কানে কম শুনো? তুমি যখন উপরে যাচ্ছিলে তখন কি বলেছি শুনতে পাওনি?

তসিবা:- কানে কম শুনলে আপনাদের কথা গুলি শুনছি কি করে। আর গ্লাসটা তো আপনি ইচ্ছে করে ভাংগছেন আপনি নিজেই উঠিয়ে নিলে পারেন।

আম্মা:- এই মেয়ে একদম কথায় কথায় জবাব দাও কেনো? তুমি যেমন বেয়াদব তেমন ঝগড়াটে। কথা কম বলে গ্লাসের টুকরা গুলি উঠিয়ে নাও।

তসিবা:- এত কিছু না বলে সোজা বলে দিলে হত তাহলে এতক্ষনে পরিষ্কার করা হয়ে যেত। আপনাদের মত শ্বাশুরী আর দাদি শ্বাশুরীর জন্য নতুন বউরা বেয়াদব ঝগড়াটে হয়।

আম্মা:- তুমি কি বলছো?

তসিবা:- যা শুনছেন তাই বলছি! বলে তসিবা টুকরা গুলি নিয়ে চলে গেছে! আম্মা আমাকে কিছু বলতে চাইছে তখনি আমি বলি।

আমি:- আম্মা আমি গেলাম তোমরা তোমাদের কাজ করতে থাকো বলে চলে এসেছি। আমি বাহিরে এসে একটু একটু হাসতেছি তসিবার সাহোস দেখে আমি অবাক হচ্ছি। তবে যাই বলিনা কেনো তসিবার চোখে একটা আলাদা জাদু আছে তাকলে আর চোখ সরানো যায়না। অফিসে এসেছি বসে কাজ করতেছি তখনি স্যারের ডাক। স্যারের রুমেের সামনে গিয়ে অুনমতি নিয়ে ভিতরে গেলাম।

স্যার:- সৌরভ আমাদের মেরিজ এনির্ভাসির জন্য আমি কিছুটা ব্যস্ত থাকবো। কিছুদিন ঠিক মত অফিসে আসতে পারবোনা তুমি একটু খেয়াল রেখো কেমন।

আমি:- ঠিক আছে স্যার।

স্যার:- আর যদি বেশি জুরুরী দরকার পরে তাহলে আমাকে ফোন করো কেমন।

আমি:- ঠিক আছে! তাহলে স্যার আমি এখন যাই। স্যার কাছ থেকে এসে কাজে মনোযোগী হলাম হঠাত মনে হলো আমার মোবাইলটা খাবার টেবিলের উপর রেখেছিলাম আর উঠানো হয়নি। লেন লাইন দিয়ে একটা ফোন করে বলে দেয় মোবাইলটা আম্মার কাছে রাখতে। ফোন করেছি রিং হতে হতে শেষ হয়ে গেছে আবার ফোন করেছি এবার রিং হতেই রিসিভ করেছে। হ্যালো হ্যালো বলছি কোনো উত্তর আসছেনা তখনি মনে হলো মোবাইলটা তসিবার কাছে। তখনি বলি তসিবা কথা বলছোনা কেনো?

আপনি কি করে বুঝলেন আমি তসিবা?

আমি:- সেইটা তোমার বুঝতে হবেনা এখন আমার মোবাইলটা আম্মার কাছে দিয়ে দিবে।

তসিবা:- আপনার মোবাইলের লকটা খুলবো কি করে?

আমি:- জানিনা, আর তুমি আমার মোবাইলের লক খুলে কি করবে?

তসিবা:- সেইটা আপনার জানা লাগবেনা! এখন বলেন পাসওর্য়াড কি দিলে লকটা খুলবে।

আমি:- ফালতু পেচাল পাড়ার সময় নেই! মোবাইলটা আম্মার কাছে দিয়ে দিবে বলে ফোনটা কেটে দিলাম। জানিনা আজকে আমার মোবাইলটার কি হয় কি আর হবে মোবাইলের লক খুলতে পারবেনা আর কিছু করতে পারবেনা। কাজে মন দিলাম দেখতে দেখতে সন্ধা ৬টা বাজে কাজ গুলি গুচিয়ে নিয়েছি। অফিস থেকে বেড়িয়ে সোজা বাড়িতে এসেছি কলিং বেল চাপ দিবো তখনি দরজাটা খুলছে চেয়ে দেখি তসিবা।

তসিবা:- আমি জানতাম আপনি এসেছেন!

আমি:- বাইকের আওয়াজ শুনেছো তাই জানতে পেরেছো। এখন আমার মোবাইলটা কোথায়?

তসিবা:- গ্রামের মেয়ে বলে আমাকে বোকা ভাবাটা ঠিক হবেনা।

আমি:- জানি তুমি কেমন! এখন রাস্তা থেকে সরো।

তসিবা:- আজ রাতে খেলা দেখাবো আপনাকে?

আমি:- তুমি তো দাদির সাথে থাকবে! খেলা দাদি তোমাকে দেখাবে। এখন আমার মোবাইলটা নিয়ে এসো। তখনি আম্মা আমাদের দেখেছে কথা বলছি দুজনে।

আম্মা:- কিরে দরজায় দাঁড়িয়ে কি ফুসুরফাসুর করছিস বউয়ের সাথে। ভিতরে আয় আর তোর দাদি তোকে মানা করছেনা তসিবার সাথে কথাবার্তা না বলতে।

আমি:- কথা তো তসিবা বলছে আমি শুধু উত্তর দিচ্ছি।

আম্মা:- ঐটাও দিবিনা!

আমি:- ঠিক আছে! তসিবা আমার দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে! আমি চলে এসেছি তসিবা পিছু পিছু এসেছে।

আম্মা:- তসিবা তুমি দাঁড়িয়ে আছো কেনো? যাও গিয়ে দেখো রান্না কত টুকু হয়ছে।

তসিবা:- হ্যা যাচ্ছি! যাবার সময় তসিবা ইচ্ছে করে আমার পায়ে পাড়া দিয়ে গেছে। আমি ব্যাথায় ককরিয়ে উঠেছি। তসিবা হাসতে হাসতে চলে গেছে। তসিবার মুচকা হাসিটার একটু অন্যরকম ভালো লাগার কাজ করে।

ভাবি:- কি ভাই বউয়ের দিকে তাকিয়ে আছো যে? প্রেমে টেমে পড়ে গেলে না তো?

আমি:- আমি ওর প্রেমে তুমিওনা!

ভাবি:- চোখ বলছে এক কথা আর মুখে বলছো এক কথা। সমস্যা নেই নাও তোমার মোবাইল।

আমি:- হ্যা দাও মোবাইলটা হাতে নিয়ে রুমে যেতে যেতে নেট অন করেছি তখনি চেয়ে দেখি বন্ধুদের মেসেজ আসতেছে একের পর এক। একজনেরটা সিন করেছি দেখি লেখা শুভকামোনা রইলো নতুন জীবনের। মানে কি বলে নতুন জীবন মানে কি? সবার একিই রকম মেসেজ তখনি কিছু কমেন্টস এসেছে যখনি কমেন্টস সিন করেছি মাথাটা হ্যাঙ্গ হয়ে গেলো। আমার ফেসবুকে রিলেশন স্ট্যাটাস দিলো কে? তখনি মনে পড়েছে মোবাইলটা তো তসিবার কাছে আছে কিন্তু তসিবা তো পাসওর্য়াড জানেনা তবে কি ভাবি দিয়েছে ভাবি তো আমার মোবাইলের পাসওর্য়াড জানে। তখনি ভাবি এসেছে।

ভাবি:- ভাই এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?

আমি:- ভাবি তুমি কি আমার মোবাইলের পাসওর্য়াড তসিবাকে দিয়েছো?

ভাবি:- হ্যা তসিবা চেয়েছে! আর তুমি নাকি তসিবাকে তোমার মোবাইল দিয়ে গেছো আর তসিবা পাসওর্য়াড ভুলে গেছে তাই আমাকে জিগেস করছে আমি দিয়ে দিয়েছি। কেনো কোনো সমস্যা হয়ছে?

আমি:- সমস্যা না খালি দেখেন কি করছে ওর আইডি এড করে আমার আইডির সাথে মেরিড রিলেশন স্ট্যাটাস দিয়েছে।

ভাবি:- এতে সমস্যা কি তসিবা তো ভালো কাজ করেছে। সত্যি তুমি অনেক লাকি আজকাল মেয়েরা তো বিয়ের পরে নিজেকে অবিবাহিত রাখতে পছন্দ করে আর তসিবা তো নিজেই দিয়ে দিয়েছে।

আমি:- মজাটা দেখাচ্ছি বলে তসিবাকে ডাক দিলাম। এক ডাকে তসিবা দৌরে আমার কাছে চলে এসেছে।

দাদি:- সৌরভ ওকে ডাকছিস কেনো?

আমি:- দরকার আছে বলে তসিবার হাত ধরে টেনে আমার রুমে নিয়ে গেলাম। দাদি আম্মা সহ সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তসিবা অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি ওকে টেনে রুমে এনে এক ধাক্কা দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দিয়েছি। তসিবা নিচে পড়ে হাতের কুনিতে আর হাটুতে ব্যাথা পেয়েছে।

তসিবা:- কি করেছি আমি এমন ভাবে ছুড়ে মারলেন কেনো আমাকে?

আমি:- তোমাকে কে বলছে আমার ফেসবুকে রিলেশন স্ট্যাটাস চেন্জ করতে?

তসিবা:- ও এই কথা! আমি ইচ্ছে করে চেন্জ করেছি কারণ আমাদের বিয়ের কথা শুধু বাড়ির লোকেরা জানলে হবে নাকী? আপনার বন্ধুরা সবাই জানতে হবে। আর তাছাড়া আপনার সাথে কয়েকটা মেয়ে অনেক রাত অব্দি মেসেজ করে। তাদেরও জানা উচিত আপনি একজন বিবাহিত ছেলে।

আমি:- যার তার সাথে মেসেজ করবো তাতে তোমার কি? তোমাকে তো কোনো অধিকার দেয়নি তাহলে বিয়ের কথা প্রকাশ করার তুমি কে?

তসিবা:- আপনি আমার স্বামী আপনার সব কিছুতেই আমার অধিকার আছে। আরে বাহ আপনার রুমটা ও সরি আমাদের রুমটা অনেক সুন্দর তো। আজ থেকে আমি এই রুমে থাকবো খরুস দাদির রুমটা এতটুও সুন্দর নাহ।

আমি:- থাকাচ্ছি বলে তসিবার দুই হাত ধরে নিয়ে দেওয়ালের সাথে ধাক্কা দিয়ে দ্বাড় করিয়েছি।

তসিবা:- আমার ব্যাথা লাগছে ছাড়ুন।

আমি:- তোমার মত বেহায়া মেয়েদের আবার ব্যাথা লাগে? আগে বলো তোমার সাহোস হলো কি করে? তখনি চেয়ে দেখি তসিবা কান্না করে দিচ্ছে চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। একটা সহজ উপায় পেয়ে গেছো চোখের পানি বের করা। তুমি বুঝতে পেরে গেছো তোমার চোখের পানি আমার খারাপ লাগে তাই কান্না শুরু করছো?

তসিবা:- দেখুন।

আমি:- কি দেখবো হ্যা বলেই আমি আরো শক্ত করে ওর দুই হাত চেপে ধরেছি। তখন তসিবা কিছু বলছেনা চোখের পানি পড়া আরো বেড়ে গেছে তখন আমি ছেড়ে ঘুরে গেছে তখনি তসিবার মাথাটা আমার পিঠের সাথে লাগিয়েছে। আমাকে একদম স্পর্শ করবেনা বলে আমি সরে গেছি তখনি একটা ছোট করে আওয়াজ হয়ছে পেছনে তাকিয়ে দেখি তসিবা ফ্লোরে পড়ে আছে আর বাম হাতের চুড়ি গুলি ভেংগে হাতের ভিতরে ঢুকে গেছে। To be continue,,,

গল্প:-একটু অধিকার পর্ব:-(০৫

( প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি আমার গল্প পরে ভালোলেগে থাকে তাহলে আরো নতুন নতুন গল্প পড়ার জন্য আমার facebook id follow করে রাখতে পারেন, কারণ আমার facebook id তে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গল্প, কবিতা Publish করা হয়।)
Facebook Id link ???

https://www.facebook.com/shohrab.ampp

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে