#গল্পের_নাম_প্রেমের_শুরু
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্বঃ২৩ অন্তিম পর্ব
বিছানায় শুয়ে সিলিং ফ্যানের দিকে তাকিয়ে আছে ইলহামের চাচা ইবরাহীম মিয়া।এই গ্রামের সকলেই তাকে এই নামেই চিনে থাকে মানুষটির অবস্থা শোচনীয়। ইলহাম এই মানুষটির দিকে নিষ্পলক ভাবে তাকিয়ে আছে মানুষটির কতো তেজ ছিল যখন গ্রামে সে বের হতো তখন এই গ্রামের প্রতিটি মানুষ তার ভয়ে কোনো কথা বলতোনা অথচ আজ এই ব্যক্তিটি এভাবে বিছানায় পরে আছে।ভেবেই একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ইলহাম একটা চেয়ারে বসে পরলো হিয়া ইবরাহিম মিয়ার মাথার কাছে বসে বললো,
~চাচা,কেমন আছেন?
ইবরাহিম মিয়া হিয়ার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বললেন,
~ভালো নেই মা তোমার বাবা যে আমাকে নিতে এসেছে।
তার কথা শুনে ইলহামের চাচী হুহু করে কেঁদে উঠলো হিয়া চাচার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
~এসব কথা বললে চাচী কষ্ট পায়।
ইবরাহিম মিয়া ছলছল নয়নে বললেন,
~ইলহাম আসে নি?
হিয়া মুচকি হেসে বললো,
~ওই যে চেয়ারে বসে আছে।
ইবরাহিম মিয়ার চোখের দৃষ্টি কমে গেছে তাই সে ইলহামকে ঠিকঠাক মতো দেখতে পাচ্ছেনা হিয়া ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বললো,
~ইলহাম কাছে আয় চাচা তোকে দেখবে।
ইলহাম বিরক্তিকর নিশ্বাস ছেড়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালো তারপর বিছানার কাছে এসে দাড়াতেই ইবরাহিম মিয়া তাকে দেখতে পেলো।ইলহামকে দেখে তার এক হাত বাড়িয়ে দিলো ইলহাম একবার হিয়ার দিকে তাকালো হিয়া চোখের ইশারায় বুঝালো হাতটা ধরতে।ইলহাম না ইচ্ছা থাকা সত্যেও সে হাতটা ধরে বিছানায় বসে পরলো ইবরাহিম মিয়া বললেন,
~শুনেছি তুমি বিবাহ করেছো তা তোমার বউ কোথায়?
ইলহাম বললো,
~বাহিরে আছে।
ইবরাহিম মিয়া নিজ স্ত্রী দিকে তাকিয়ে বললেন,
~নিয়ে আসো আমাদের বাড়ির বড় বউকে।
ইলহামের চাচী দেরি না করে হেমন্তিকে ডাকতে চলে যায়।ইবরাহিম মিয়া ইলহামের দিকে তাকিয়ে বললো,
~আমার উপর তোমার রাগটা কিন্তু জায়েজ আমি যা করেছি তা ক্ষমার যোগ্য না নিজ ভাইকে গ্রাম থেকে বের করে দিয়েছি শুধুমাত্র জমির লোভে।
ইলহাম অন্য দিকে মুখ করে আছে আবারো সেই তিক্ততায় ভরা স্মৃতি গুলো মনে পরছে হিয়ার চোখেও জল।ইবরাহিম মিয়া বললেন,
~আমার সময় শেষ হয়ে আসছে যে কোনো সময় হয়তো এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে পারি তাই মাফ চেয়ে নিচ্ছি। নিজ ভাইয়ের কাছে তো মাফ চাইতে পারিনি কিন্তু তোমাদের কাছে হাতজোড় করে মাফ চাইছি।
ইলহাম চোখ বন্ধ করে আছে তার নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে মনে হচ্ছে কেউ তার বুকে চাকু দিয়ে আঘাত করছে বাবা-মার মুখটা ভেসে আসছে।হিয়া চোখের পানি ফেলছে তবুও নিজেকে সামলে বললো,
~বাবা-মা বলেছে ক্ষমা করা মহৎ গুন আর আমরা যাতে সেই গুনটা নিয়ে এই ধরনীতে বেঁচে থাকি।আমি কিছুই মনে রাখিনি চাচা আপনিও ভুলে যান।
ইবরাহিম মিয়ার চোখের কোণ দিয়ে পানি গড়িয়ে বালিশে পরলো সে উৎসুক দৃষ্টিতে ইলহামের দিকে তাকিয়ে আছে ইলহাম নিজ হাত ছাড়িয়ে বললো,
~আপনি যা করেছেন তা ক্ষমার অযোগ্য কিন্তু বাবা আপনাকে মাফ করে দিয়েছিল তাই আমারও কোনো দ্বায় নেই।
বলে সে একদন্ডও রুমে থাকলেনা দ্রুতপায়ে রুম থেকে বের হয়ে আসলো হেমন্তি ঘরে প্রবেশ করতে যাবে ইলহামকে এভাবে বের হয়ে যেতে দেখে সে একটু ভয় পেলো।
ইলহামের চাচী হেমন্তিকে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলো হেমন্তিকে ইবরাহিম মিয়ার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেই ইবরাহিম মিয়া বললেন,
~ইশরাকের মা,সিন্দুকটা খুলে আমার মায়ের নেকলেসটা নিয়ে আসো।
ইলহামের চাচী আঁচল থেকে চাবি নিয়ে সিন্দুক খুলে একটা নেকলেসের বক্স বের করে হেমন্তির পাশে দাড়ালো।ইবরাহিম মিয়া বললেন,
~বড় বউমার হাতে দেও।
ইলহামের চাচি হেমন্তির হাতে সেটা দিতেই হেমন্তি বললো,
~এসবের কোনো দরকার ছিল না আমি এটা নিতে পারবোনা।
ইবরাহিম মিয়া বললেন,
~বড় বউমা এটা তোমার হক এই বাড়ির বড় বউকে এই নেকলেসটা দেওয়া এই বাড়ির নিয়ম।
হেমন্তি হিয়ার দিকে তাকালো হিয়া সম্মতি পোষন করলো হেমন্তি আর কিছুই বললো না।
_________♥___________
ইলহাম পুকুরপাড়ে দাড়িয়ে আছে কিছু বিষাক্ত স্মৃতি ভুলতে সে কিছু মধুর স্মৃতি মনে করার চেষ্টা করছে।কতো দুষ্টমি করেছে এই পানিতে নেমে বাবা কতো সুন্দর আগলে রাখতো তাকে মায়ের কতো বকুনি যে সে খেয়েছে তার হিসেব নেই।এসব ভাবতেই ইলহাম চোখ দুটো বন্ধ করে আশেপাশের পরিবেশের ঘ্রাণটা নিতে থাকলো।কিছুক্ষণ সেভাবে থেকে চোখ খুলে নিজের পাশে হিয়াকে আবিষ্কার করলো হাসিহাসি মুখ করে মেয়েটা দাড়িয়ে আছে। ইলহাম বুঝতে পারেনা এই মেয়েটির মন এতো উদার কেন?যে তাকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করবে তাকেও আগলে রেখে বাঁচতে শিখে। কী আজব মেয়েটা?এতোটা ভালো কী করে হতে পারে একটা মানুষ?ইলহামের নিস্তব্ধতা দেখে হিয়া বললো,
~আর কতোক্ষন এখানে দাড়িয়ে থাকবি?ভিতরে চল ভালোই ঠান্ডা পরেছো চাচী গরম গরম ভাঁপা পিঠা বানিয়েছে।
ইলহাম বললো,
~তুই এখানে আসলি কেন?কতো পিচ্ছিল এই জায়গাটা।
হিয়া বললো,
~এই জায়গাটায় কতো স্মৃতি জড়িয়ে আছে তাই না?
ইলহাম বললো,
~কতো সুন্দর ছিল সেই সময়গুলো।
হিয়া বললো,
~এখনো সময়গুলো অনেক সুন্দর ইলহাম শুধু উপভোগ করতে হবে।
ইলহাম হেসে হুম বললো তারা দুজনই উঠানের দিকে হাঁটতে লাগলো ইলহামের নাকে পিঠার সুমিষ্টঘ্রাণ আসতে লাগলো।
হেমন্তি ইলহাম সহ সবাই পাটি বিছিয়ে বসে পরেছে সবাই আড্ডা আর পিঠা খেতে ব্যস্ত।হেমন্তি পিঠা গুলো খেয়ে অনেক মজা পেয়েছে সে তো ভেবেছে পিঠার সব রেসিপি চাচির কাছ থেকে নিয়ে যাবে।যাতে ঢাকা গিয়ে এই সব ট্রাই করতে পারে ইলহাম বললো,
~আমরা কালকে সকালে রওনা দিবো।
ইশরাক বললো,
~সে কী ভাইয়া আজই তো আসলে?
ফারুক বললো,
~নাহ আর থাকা যাবেনা আমার অফিস আছে যেতেই হবে।
জান্নাত বললো,
~তোমরা আর কয়েকদিন থেকে গেলে অনেক খুশি হতাম।
হিয়া বললো,
~আমরা আবার আসার চেষ্টা করবো।
জান্নাত আর কথা বাড়ালোনা এ ব্যাপারে তারা সবাই অন্যবিষয় নিয়ে কথা বলতে শুরু করলো।
রাত পোহিয়ে সকালের আর্বিভাব ঘটলো হেমন্তি আড়মোড়া ভেঙে বিছানা ছেড়ে উঠে পরলো ঘরের জানালাটা খুলে দিতেই কুয়াশা দেখতে পেলো ঠান্ডা বাতাস তার শরীরকে নাড়িয়ে দিলো।দ্রুত সে নিজ শালটা গায়ে জড়িয়ে নিয়ে হাত ব্রাশ নিয়ে বের হতে নিবে আরেকবার পিছন ফিরে ঘুমন্ত ইলহামকে দেখে মুচকি হেসে বাহিরের কলপাড়ে চলে গেলো।হাত-মুখ ধুতেই ইলহামের চাচী এসে হাজির তার হাতে চায়ের কাপ।হেমন্তি তার হাত থেকে চায়ের কাপ নিয়ে তাতে চুমুক দিলো ইলহামের চাচি মুচকি হেসে আবার রান্নাঘরে চলে গেলো হেমন্তি সকালটাকে উপভোগ করতে লাগলো।
দুপুর ১২টায় তারা সব গুছিয়ে গাড়িতে উঠে বসেছে ইলহামের চাচী ইশরাক আর জান্নাত তাদের বিদায় জানাতে বাসার বাহিরে এসে দাড়িয়েছে।হেমন্তি জান্নাতের হাত ধরে বললো,
~তুমি অবশ্যই আমাদের বাসায় যাবে।
জান্নাত বললো,
~হ্যা যাবো ভাবি।
তারা রওনা হলো বাসার উদ্দেশ্যে হেমন্তি গাড়ির সীটে হেলান দিয়ে রইলো। ফারুকের কাঁধে মাথা রেখে আছে হিয়া অনেক খারাপ লাগছে শরীরটা।হেমন্তি ভাবছে আবারো সেই কোলাহল পূর্ণ শহরে ফিরে যেতে হবে যেখানে নানান ব্যস্ততা রয়েছে।
ঠিক ৪টায় তারা ঢাকায় পৌছালো ফারুক আর হিয়া নিজ বাসায় ফিরে গেলো হেমন্তি অনেক বলেছে তাদের থেকে যেতে কিন্তু হিয়া রাজি হয়নি।হেমন্তি বাসায় এসে পুরো ঘর পরিষ্কার করে নিজে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শুয়ে পরলো হঠাৎ করেই শরীরটা খারাপ লাগছে ইলহামও বাহিরে গিয়েছে।হেমন্তি চোখ বন্ধ করে নিলো তার দুচোখে ঘুমের রাজ্য নেমে আসলো।
ইলহাম চাবি দিয়ে দরজা খুলে ঘরে প্রবেশ করলো দরজা বন্ধ করে সে রুমে এসে দেখতে পেলো হেমন্তি ঘুম।ইলহাম তাকে না জাগিয়ে নিজে ফ্রেশ হয়ে নিলো দুপুরের খাবার বাহির থেকে করে এসেছে তাই কোনো চিন্তা নেই।ইলহাম হেমন্তির পাশে শুয়ে তাকে নিজ বাহুডরে আবদ্ধ করে নিলো হেমন্তি পরম আবেশে ইলহামের বুকে ঘুমিয়ে রইলো।
____________♥_________________
দিন কাটতে লাগলো নদীর স্রোতের মতো ইলহাম আর হেমন্তির ভালোবাসাটাও আরো গভীর হতে লাগলো।তাদের এই খুনশুটি ভরা সংসারে অনেক সুখ রয়েছে তারা নিজ পরিবারকে নিয়ে অনেক সুখেই আছে।
কিন্তু আজকের দিনটা তাদের অনেক টেনশনে ফেলে দিয়েছে ফারুক হাসপাতালের কড়িডরে পায়চারি করছে কারণ হিয়ার ডেলিভারি হবে।তাকে কিছুক্ষণ আগেই ওটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সিজার ছাড়া উপায় নেই।রক্ত দিতে গিয়েছে ইলহাম রক্তের প্রয়োজন পরতে পারে তাই আগে থেকে সব ব্যবস্থা করে রাখছে তারা।হেমন্তি একপাশে দাড়িয়ে আছে মনের ভিতর ঝড় বয়ে যাচ্ছে সে শুধু দোয়া করছে বাবু আর হিয়া যাতে সুস্থ থাকে।কেয়া,তানভীর,ইমরান খান,ইরিনা বেগম চলে এসেছেন হাসপাতালে রেহেনা বেগম বার বার ছেলের কাছে গিয়ে বলছে কোনো টেনশন না করতে সব ঠিক হয়ে যাবে।তবুও ফারুকের পা থামছেনা সে বার বার ওটির সাথে গিয়ে দাড়িয়ে পরছে মনটা আনচান করছে হিয়ার জন্য। কতো কষ্ট সহ্য করেছে মেয়েটা এই বাবুটা যাতে সহিসালামত এই পৃথিবীর আলো দেখতে পায় তাই।ইলহাম হেমন্তির পাশে এসে বসে পরলো হেমন্তি ইলহামের দিকে তাকাতেই ইলহাম বললো,
~সব ঠিক হবে আর হিয়ার কিছুটি হবে না।
হেমন্তি কিছু বলতে যাবে তার আগেই তার বমি বমি ভাব চলে আসলো সে মুখ চেপে ওয়াশরুমের দিকে ছুটলো তা দেখে ইলহাম তার পিছে ছুটবে ইরিনা বেগম তাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন,
~তুমি এখানে বসো আমি দেখছি।
ইলহাম আর এগিয়ে গেলোনা ইরিনা বেগম ওয়াশরুমে গিয়ে দেখলো হেমন্তি চোখে-মুখে পানি দিচ্ছে ইরিনা বেগম হেমন্তির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
~এখন কেমন লাগছে?
হেমন্তি বললো,
~বেশ একটা ভালো না কিছুদিন যাবত এরকমই হচ্ছে।
পাশ থেকে একজন মহিল বললো,
~আমার মনে হয় উনি প্রেগন্যান্ট।
হেমন্তি সেই মহিলার কথায় বিষম খায় ইরিনা বেগম মুচকি হেসে বললেন,
~দোয়া করবেন আপা আমার মেয়ের জন্য।
সেই মহিলাটি মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায় ইরিনা বেগম হেমন্তিকে নিয়ে সোজা চলে যায় ডাক্তারের কাছে সকল কিছু খুলে বলতেই ডাক্তার তাকে টেস্ট করাতে দেয়। তখনই হেমন্তির ফোন বেজে উঠলো হেমন্তি ইরিনা বেগমকে বললো,
~মা চলো উনি ফোন করেছেন।
ইরিনা বেগম বললেন,
~সব রির্পোট কালকে এসে আমি নিয়ে যাবে।
হেমন্তি মাথা দুলালো ইলহামদের কাছে চলে আসলো হেমন্তিকে দেখে ইলহাম বললো,
~তোমার কী হয়েছিল?
পাশ থেকে ইরিনা বেগম বললেন,
~কালকে সব জেনে যাবে এখন বাবুকে দেখতে হবে।
হেমন্তি বললো,
~কী বাবু হয়েছে?
ইলহাম বললো,
~ছেলে হয়েছে এখনই ডাক্তার নিয়ে আসবে।আর আপু একদম ঠিক আছে
কিছুক্ষন পর সাদা টাওয়ালে লেপটিয়ে বাবুকে নিয়ে আসলো ডাক্তার ফারুকের কোলে দিতেই ফারুকের চোখ বেয়ে পানি পরলো।ফারুক বললো,
~হিয়ার সাথে দেখা করতে পারবো?
ডাক্তার বললেন,
~আজকে না কাল সকালে আমরা তাকে কেবিনে দিয়ে দিবো তখন দেখা করতে পারবেন।
ফারুক বললো,
~কোনো টেনশনের কারণ তো নেই।
ডাক্তার বললেন,
~কোনো টেনশন নেই।
ফারুক আলতো হাসলো ডাক্তার চলে গেলো ফারুকের কোল থেকে বাবু নিয়ে নিলো রেহেনা বেগম সবাই বাবুকে দেখছে ইলহাম দূর থেকে বাবুকে দেখছে তা দেখে হেমন্তি বললো,
~আপনি এখানে কেন দাড়িয়ে আছেন আসুন বাবুকে কোলে নিন?
ইলহাম বললো,
~বাবু অনেক ছোট নিতে পারবোনা।
হেমন্তি বললো,
~আমি ধরে রাখবো আসুন।
হেমন্তি ইলহামের কোলে বাবুকে দিয়ে দিলো ইলহাম বাবুকে দেখতে লাগলো ছোট ছোট হাত-পা তার নরম নরম গাল একটা ছোট্ট পুতুল।
___________♥______________
সকালে হিয়াকে কেবিনে দেওয়া হলো হিয়ার জ্ঞান ফিরেছে সবাই তাকে ঘিরে দাড়িয়েছে।বাবু হিয়ার পাশে রাখা আছে হিয়া বাবুকে দেখছে তার এতো মাসের কষ্ট আজ সফল হয়েছে।বাবুর কপালে চুমো দিতেই কেয়া বললো,
~বাবুর নাম কী রাখবে?
হিয়া ফারুকের দিকে তাকিয়ে বললো,
~আপনি বলে দিন আমাদের রাজকুমারের নাম।
ফারুক বললো,
~ফারদিন আরাফাত❤️❤️।
সবাই খুশি হয়ে বললো,
~বেশ সুন্দর নাম।
হেমন্তির এতো খুশীর মধ্যেও অনেক টেনশনে আছে ইরিনা বেগম রির্পোট আনতে গিয়েছে।রির্পোট যদি নেগেটিভ আসে তাহলে তার মনটাই ভেঙ্গে যাবে।
তখনই ইরিনা বেগম রুমে প্রবেশ করলো হেমন্তি এগিয়ে গেলো তার দিকে ইরিনা বেগম হালকা হেসে বললেন,
~আরো একটা সুখবর রয়েছে যে।
সবাই ইরিনা বেগমের দিকে মুখ তুলে তাকালো হেমন্তি বুঝে ফেললো সে মা হতে চলেছে আপনাআপনি তার হাতটা পেটে চলে গেলো।কেয়া বললো,
~কী সুখবর মা?
ইলহাম ভ্রুকুচকে ইরিনা বেগমর দিকে তাকালো ইরিনা বেগম বললেন,
~হেমন্তি মা হতে চলেছে।
সবাই অবাক নয়নে হেমন্তির দিকে তাকিয়ে আছে হেমন্তি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললো। হিয়া বললো,
~আমি অনেক খুশী হয়েছে হেমন্তি ধন্যবাদ এতো বড় একটা সুখবর দেওয়ার জন্য।
কেয়া বললো,
~খালা হচ্ছি আমার তো প্রমোশন হয়ে গেলো।
ইলহাম এখনো একই ভাবে দাড়িয়ে আছে হেমন্তি তার দিকে আড়চোখে তাকালো ফারুক ইলহামের কাঁধে হাত রেখে বললো,
~হেমন্তির কাছে যাও তোমার জন্য অপেক্ষা করছে সে।
ইলহাম এক পা দুপা করে হেমন্তির দিকে এগিয়ে গেলো হেমন্তির পাশে গিয়ে দাড়িয়ে বললো,
~আমিযা শুনেছি তা কী সত্যি?
হেমন্তি মাথা দুলায় ইলহাম হেমন্তির হাত ধরে তাকে কেবিনের থেকে বের হয়ে গেলো খালি একটা জায়গায় নিয়ে গিয়ে সে আষ্টেপৃষ্ঠে হেমন্তিকে জড়িয়ে ধরে বললো,
~আমি বাবা হবো হেমন্তি তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।
হেমন্তি ইলহামের পিঠে হাত রেখে বললো,
~আমাদের পরিবার যে সম্পূর্ণ হতে চলেছে।
ইলহাম হেমন্তিকে ছেড়ে দিয়ে তার কপালে অধরা যুগল ছুইয়ে দিয়ে বললো,
~আমাদের জীবনে আবারো #প্রেমের_শুরু হলো।
হেমন্তি কিছু না বলে ইলহামকে জড়িয়ে ধরলো তাদের দুজনের চোখেই পানি এ পানি যে ভালোবাসা জয়ের কারণে এসেছে।তাদের এই সংসারটা যাতে অটুট থাকুক এই দোয়া রইলো তাদের এই ছোট্ট প্রাণটা যাতে তাদের জীবনে খুশীর জোয়ার নিয়ে আসুক।পাশাপাশি ভালো থাকুক হিয়া,ফারুক আর তাদের নবজাতক রাজকুমার।কেয়া আর তানভীরের জীবনেও যাতে ভালোবাসার কমতি না থাকে।প্রতিটি মানুষ বেঁচে থাকুক এই ধরনীতে নিজ ভালোবাসার মানুষের হাতটি আকড়ে ধরে❤️❤️।
সমাপ্ত
(অবশেষে শেষ হলো গল্পটি আপনাদের ভালোবাসা পেয়ে এই গল্পটি লেখার আগ্রহ পেয়েছি।এতো এতো ভালোবাসার জন্য ধন্যবাদ অবশ্যই আবার ফিরে আসবো নতুন কিছু নিয়ে ততদিন পর্যন্ত আল্লাহ হাফেজ)
(বিদ্রঃকেমন হয়েছে জানাবেন। ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading 🤗🤗)