#গল্পপোকা_ধারাবাহিক_গল্প_প্রতিযোগিতা_২০২০
#বিষয়_ধারাবাহিক_গল্প
ক্রীড়াবেগ পর্ব ১
#কলমে_রিয়া_খাতুন
লোকারণ্যে ভিড় ঠেলে এক ঝলক দেখা রপ্তাপনী লাল শাড়ি এবং লাল সিঁদুরে অপরূপা সজ্জায় সজ্জিত হয়েছিল….।চিত্তাকুল হয়ে পড়লো শান্তশ্ত্রু, একবার তার কাছে যাওয়ার জন্য,ঝলকটাকে একটুু স্পর্শাকাঙ্ক্ষায়…..।
.………
……
…
..
এই যে মিস্টার শ্ত্রুবাবু স্ক্রু ঢিলা করে দেবো, আমাকে না ছারলে। জোর করে চিৎকার করতে লাগলো রপ্তা। ছাড়ো না… কেউ চলে আসবে।
নাঃ! আমার গিফ্টটা আগে, তাড়াতাড়ি……,, না হলে ছাড়বোই না..। আমি তোমার অগ্নিসাক্ষী তথা স্বাহাদেবীর সম্মক্ষে তোমার সিঁথি লাল করে জীবনটাও লাল অর্থাৎ রঙিন করার দায়িত্ব নিয়েছি তাহলে আমি আদর করতেই পারি,বেশ করব। অধিকারের প্রমাণ দিয়ে দিলাম এবার তাড়াতাড়ি…। নাহলে কিন্তু গিফ্ট রেট বাড়..বে, অত্যন্ত শয়তানি সুরে। বেশি জ্ঞান দিতে হবে না জ্ঞানপাপী, চোখটা বোঝো, চোখটা বুঝবে কিন্তু,, উফ্!মহাজ্বালাতন! গিফ্ট- গিফ্ট এলো গো ,আমার বাবু!
ঠিক আছে। তাড়াতাড়ি দাও…..।
কোথায় গেলে রপ্তা বেরিয়ে এসো,,চিটিং হচ্ছে। বারবার বুঝতেই বলো আর আমি বুজতে থাকি। দূর! চিটিং! হবে না.., পরাজিত দীর্ঘনিঃশ্বাসের সুরে।
বেরোবো,,বেরোবো না কি মজা! কি মজা!ধরতে পারবেনা….।
কি হল দাদাবাবু খাটের তলায় কি করছেন জামা-কাপড় নিতে আসার সময় সাহ্ণি মাসি বলে উঠলো।ও দাদাবাবু..।
<৩ বছর ৯ মাস আগে>
ইউ আর আনডার্ অ্যারেস্ট, মি.শান্তশ্ত্রু রায়। আপনাকে থানায় যেতে হবে আমাদের সঙ্গে,
গো…।
…
..
..
এই প্রথম তোমাকে ছেড়ে ছয় মাস জেলে থাকতে হল কিন্তু তোমার অন্যতম ভালোবাসা; ডায়রিটা। সকাতরানুরোধ তথা করুণপরিস্থিতির শিকার প্রাপ্তি হেতু ঐ ছোট্টবস্তু নামক প্রাণকে রাখতে পেরেছিলাম শুধু।
ডায়েরিটা তিন বছর পর সুযোগ হয়নি নয়; তোমার নিষেধাজ্ঞা অতিক্রম করার সুযোগ হয়নি,আজ তোমার বিনা অনুমতিতেই পরার সুযোগ নিলাম, পারলে ক্ষমা কর…।
প্রথম পৃষ্ঠাটা খুলতেই শুরু হল, আমাদের সেই কলেজছুটস্থল ঐন্সপার্কে দেখা, আমাদের প্রেম…। আমার দেরী করে আসা তোমার অভিমান, খুঁনসুঁটি, মজা…। তারপর আমার দেওয়া পালকটা; সেদিন গিফ্টটা লুকিয়ে রেখে একটা বেগুনি পালক দিয়েছিলাম; তবে তুমি গিফ্টটাই বারংবার প্রত্যাখান করতে। আর ছোট ছোট জিনিস গুলো তোমার কাছে অনেকটা আনন্দের ছিল।প্রত্যেক বছর লাভ অ্যানিভার্সারির গোলাপের প্রত্যেকটা পাতা তোমার কাছে অক্ষয় ,, শুধু আমি তোমার বিশ্বাসের মান রাখ… (অত্যন্ত অশ্রুবেগে অশ্রুস্নাত হয়ে)
প্রত্যেকটা তারিখ এবং আমার দেওয়া তোমার অতিপছন্দের তেঁতুল চকলেটের কাগজটাও তুমি রেখেছো,, সত্যিই। হে ঈশ্বর(বিস্মৃত সহ করুণাবেগে)মাঝে মাঝে উপহার দেওয়ার প্রত্যাখ্যানের বিষয়টিকেও নথিবদ্ধ করেছো(অশ্রুহ্ণিত ঠোঁটে হালকা হাসি হেসে)….।
আমার ছোট্ট ছোট্ট ভালোলাগাকে আপন করে, তুমি আমার ভরসায় বাড়ি থেকে চলে এলে..,, শুধুই অদ্ভুত লাগত, বিয়ের পর তোমাকে যখন কোনো দামী উপহার দিতাম, তখনি তুমি মুখটা কালো করে বসে থাকতে আর মনে আছে ফুলশয্যার দিন পর্যন্তও তুমি রাগান্বিত হয়ে ; তারপর অ্যাকসেপ্ট করেছিল। আর একটা ছোট্ট তেতুল চকলেট আর বাড়ি ফেরার পর একটু আদর দিলেই তুমি যেন পরিপূর্ণ হয়ে উঠতে। আর ভাবতাম মেয়েরা বুঝি সর্বদা উপহারে খুশি থাকে; তোমাকে না দেখলে হয়ত এই ধারনাটা সর্বদা অটুট থাকতো আর জীবনসঙ্গীনীর ধারনাটাও হয়তো ক্ষীন হয়ে যেতো। দিনের পর দিন তোমাকে আরও যেন অন্যভাবে চিনি আর তোমাকে আরও বেশি বেশি করে কাছে পেতে ইচ্ছা করে…। কিন্তু আমি হয়তো….,, মনমধ্যে কথাটা সম্পূর্ণ করার আগে হঠাৎ করে শান্ত অদ্ভুতার দৃষ্টি হানলো শেষ শেষ কয়েকটা পৃষ্ঠার দিকে……..।
শান্ত প্রথম আড়াই বছর আমাদের জীবনটা রঙিন নয়, পরিপূর্ণ রাঙিত ছিলাম আমরা…।আমি নিজেকে সৌভাগ্যবতী বলে মনে করতাম,, কিন্তু না, আমিই ভুল ছিলাম…।
তুমি আমাকে বলেছিলে মিথ্&শ্রয় কোম্পানির এম্প্লয়, দেখিয়েও ছিলে অফিসটা, আবার অফিসেও নিয়ে গিয়েছিলে ……।
কিন্তু এম্প্লয়; হ্যাঁ! অতি হাস্যকর ব্যাপার তুমি নয়, অফিসটায় ‘তুমি’ নামক তোমার বন্ধু এমপ্লয় ছিল …। আর তুমি ওদের টাকা দিয়ে রেখেছিলে, যাতে আমি বা কোন কারনে আমার পরিবার ওখানে যায়, তাহলে… তো……,,,
গল্পটা তুমিই বেশ ভালোই সাজিয়ে রেখেছিলে, বাকিটা বেশ ক্লিয়ার হবে এবার তোমার…।
////,,////,,,///,,///,,///,,///,,///,,////,,///,,//,,///,,,
১৪ই সেপ্টম্বর আমাদের তৃতীয় বিবাহবার্ষিকীতে তোমার আসতে একটু দেরি হওয়ায় মোড়ের মাথায় একটু অপেক্ষা করতে বলেছিলে…। সেদিন ঈশ্বরের কৃপাবশতঃ তোমার একটু নয়;অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছিল। সেদিন হঠাৎ করে একটা ফোন পেয়ে আকুল হয়ে সোজা মাসির কাছে চলে গিয়েছিলাম।
আসলে মজার কথা কি জানো তুমি শান্তশ্ত্রু নয়, তুমি হচ্ছ একজন ক্রিমিনাল;আইনাপরাধী, প্রত্যহ তোমার কাজ মহিলাদের পাশবিক অত্যাচার করে খুন করা,, তাই তো শান্ত! সরি! সরি! ভিলেন…!
সেদিন আমার কাছে অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসে।নেটওয়ার্কের কারুন্যতায় অস্পষ্টতার মাধ্যমে এইটুকুই বুঝতে পারলাম, সাহ্ণি মাসির কোনো বিপদ হয়েছে…..,,গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেখলাম, কয়েকজন গ্রামের লোক ওনাকে ঘিরে ধরে আছে। আমাকে দেখে সকলে বলল ,,”এর মেয়ে চলে এসেছে এবার একে নিয়ে চলো থানায়।” কারণ অনুসন্ধানের জন্য তৎপর হলে এক ব্যাক্তি বলে ওঠে, ছদ্মবেশিনী সঙ্গে একটা বাক্স নিয়ে পালাচ্ছিল…,,আমাদের সন্দেহ হওয়াতে ওনাকে আমরা অনুসরণ করলাম আমাদের দেখে ছুটে পালাতে গিয়ে টাকার বাক্সটা পড়ে গেল। প্রথমতঃ আমাদের দেখে ছদ্মবেশিনীর ঊর্ধ্বশ্বাসে ছোটা এবং পরে অতগুলো টাকা দেখে সন্দেহ হওয়াতে আমরা পুলিশে খবর দিচ্ছিলাম, হঠাৎ করে উনি বলে আমার মেয়েকে ফোন করো ও এলে, আমাকে নিয়ে যেও তাই আপনাকে খবর দিলাম। ছদ্মবেশের আড়ালে বয়স্কাকে দেখে আমরা একটু সহানুভূতির খাতিরে এতক্ষণ অপেক্ষা করছিলাম,, না হলে….,,
আচ্ছা আচ্ছা চুপ করুন আপনারা আমাকে একটু আলাদা করে কথা বলতে দিন। আমি যদি কোন যথোপযুক্ত প্রমাণ পাই তাহলে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি,, আমি ওনাকে জেলে পাঠাবো ,,,একটু ক্রোধিত কন্ঠে রপ্তা বলল। আসলে ভদ্রস্থ ছাপটা অবিশ্বাসের প্রশ্নটা করতে দেয়নি ।মাসিকে পাশে নিয়ে একটু জল খাইয়ে একটু শ্বাসগতিটা কমিয়ে বললাম,, কি হয়ে…?? কথা সম্পূর্ণ না হতেই উনি বললো, ‘তুমি আমাকে জেলে দাও বৌমা। দয়া করে জেলে দাও।’ এরকম কেন বলছো, আমাকে বলবো না তো,, বলবে না তো কি হয়েছে ?? তাহলে মিথ্যা কেস সাজিয়ে আমিও তোমার সঙ্গে জেলে যাবো..।
না! না! তুমি চুপ করো মা,, কি সব বলছো!আমাকে ক্ষমা করে দাও,মা ।আমি তোমাকে যে কি বল…। মাসি আমি তোমাকে এভাবে হারাতে চাই না সত্যিটা বল,, মাসির অসম্পূর্ণ কথাটায় যেন হারানোর স্ম্লান গলায় বললাম আমি।
উচ্চারিত হারানো শব্দটির স্পর্শকাতরতা তথা ‘সির’ পূর্বর শব্দটির প্রতি টানই সত্যিটা বলতে সাহায্য করেছিল…।
মুখোশের গোপন পর্দাটা সহজে যাতে ছিদ্রযুক্ত না হয়ে পড়ে,, তাই তো মাসির বাড়ি ফেরার সময় কোন কারণে ওই অবস্থায় দেখে ফেললে, মাসিকে তুমি একগুচ্ছ টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করতে চেয়েছিলে আর বলেছিলে টাকা নিয়ে এখান থেকে চলে না গেলে মাসিকে প্রাণে মেরে ফেলবে…..।
(অগ্ৰসারিত)
বিঃদ্রঃ- (আসলে অধিক ডটের ব্যাবহার
পাঠকবৃন্দের পঠনের সুবিধার জন্য। একটু স্বীয়ছন্দানুযায়ী পাঠ করলে তা স্বচ্ছ হবে,, তাই সংলাপের ক্ষেত্রেও ভাবসংলাপ উপস্থাপিত হয়েছে, পরবর্তী পর্বেও তার প্রয়োগ হতে পারে।।)
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share