#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং-০২
প্রিয়,
কেমন আছিস?কেমন ছিলি সেটা তো আমার জানাই আছে।জানিস ইদানীং আমি না জীবনের হিসেবটা কোনোভাবেই মিলাতে পারছি না।মেলাতে গেলেই কেমন করে জানি গড়বড় হয়ে যায়।জানি জানি!
আমার বয়সইবা হয়েছে কতটুকু যে জীবনের হিসাব মিলাচ্ছি আমি।এটাই তো বলবি তা না? জানি তো।কিন্তু কি করবো আমি বল! আজকাল আমার কেবল সময় আর সময়।সময় যেন আমার চারপাশে হাওরের পরিষ্কার পানির মতো থৈ থৈ করছে।
জানিস সেদিন আম্মু যখন আমার ছোটবেলার ফটোটা আমাকে দেখিয়েছিলেন ভেতর থেকে একটা কথায় বারবার বাজতে লাগলো।”শৈশবটাই ছিল না, ছবি দিয়ে আর কি হবে? লোক দেখানো মেকি স্মৃতিচারণ!”
সময়ের প্রবাহে আমরা বড় হতে লাগলাম।হারিয়ে যেতে লাগলো সেই সোনালী রোদ্দুরের দিনগুলো।আর বুঝতে শুরু করলাম যে কখনো ফেরা হবে না সেই ধানসিঁড়িটির তীরে,শঙ্খচিল কারাগারে!
ফিরতেও চায় না আমি আমার সেই শৈশবে।কারণ তখন যেমন ছিলাম,এখনও তেমন আছি।বরং এখন তো তখনের তুলনায় বেশ ভালোয় আছি।বুঝতে শিখেছি যে! তাই আর কারোর উপর অভিমান করে থাকি না;নিজের ভেতরে ক্ষোভ জমিয়ে রাখি না।
তবে আজকাল একটা উপসর্গ দেখা দিয়েছে___________
রাতের অন্ধকার যতই বাড়তে থাকে,
আবেগগুলো ঝড়তে থাকে।
দিনের আলো যতই ঝলমল করতে থাকে;
আবেগগুলো ততই হৃদয়ের পরতে লুকোতে থাকে!
কখনো পরিবারের কাছ থেকে আলাদা থাকতে চায় নি।কিন্তু আমাকে থাকতে হয়েছে আমার পরিবার ছেড়ে,চেনা মুখগুলোর মায়া ছাড়াতে হয়েছে দিনের পর দিন।বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।এতোটাই ক্লান্ত যে মুখে হাসি রাখতে রাখতে মুখ ব্যাথা করা শুরু করে দিয়েছে।
আজকাল নিজেকে বড্ড অচেনা মনে হয় রে আমার।মাঝে মাঝে চিন্তা করি আমি কতটা নির্লজ্জ কতটা বেহায়া হলে এতো কিছুর পরও আয়নায় নিজের সাথে নিজেকে মেলায়!
জানিস আমি নিজেকে অপরাজিত কেন বলি! কারণ দুঃখ নিয়েও যে মেয়ে হাসতে জানে সে একজন অপরাজিতা।
আচ্ছা, আমি কি আমাত্বেরই আমি’টাকে দিন দিন হারিয়ে ফেলছি?
ইতি
আমি এক শৈশব হারানো অপরাজিত কিশোরী।